ঢাকা, মঙ্গলবার ০৪ মার্চ ২০২৫
১৮ ফাল্গুন ১৪৩১, ০৩ রমজান ১৪৪৬

অভিবাসন নিয়ন্ত্রণে জার্মানিতে প্রস্তাব পাস, বিক্ষোভে হাজারো মানুষ

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
অভিবাসন নিয়ন্ত্রণে জার্মানিতে প্রস্তাব পাস, বিক্ষোভে হাজারো মানুষ
সিডিইউর সদর দপ্তরের সামনে হাজার হাজার মানুষ সমবেত হয়ে বিক্ষোভ দেখায়। ছবি : এএফপি

অভিবাসন নিয়ন্ত্রণে জার্মানির রাজনৈতিক দল সিডিইউর এক প্রস্তাবনা দেশটির সংসদে পাস হয়েছে। ২৩ ফেব্রুয়ারি নির্বাচনকে সামনে রেখে দেশটির রাজনৈতিক অঙ্গনে অভিবাসন একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। এমন আলোচনার মাঝেই পাস হলো এই প্রস্তাব।

সংসদে রক্ষণশীল দল সিডিইউর আনা প্রস্তাবে অভিবাসন নিয়ন্ত্রণে, বিশেষ করে অনিয়মতে পথে জার্মানিতে প্রবেশ ঠেকাতে এবং যাদের আশ্রয় আবেদন বাতিল হযেছে তাদের নিজ নিজ দেশে ফেরত পাঠাতে বেশ কিছু পদক্ষেপের কথা বলা হয়েছে।

বুধবার সংসদের প্রস্তাবটির পক্ষে ৩৪৮টি এবং বিপক্ষে ৩৪৫টি ভোট পড়ে। ১০ জন সংসদ সদস্য ভোট দানে বিরত থাকেন।

চ্যান্সেলর ওলাফ শোলজের এসপিডি ও গ্রিন পার্টির বিরোধিতা সত্ত্বেও কট্টর ডানপন্থী দল এএফডি ও এফডিপির সমর্থন থাকা সংসদে পাশ হয় আইনটি।

সাম্প্রতিক সময়ে জার্মানির বেশ কয়েকটি শহরে হামলার ঘটনার জেরে এমন প্রস্তাবনা দিয়েছে দলটি।

গত কয়েক মাসে বিভিন্ন শহরে হামলার ঘটনায় বেশ কয়েকজন নিহত হয়ছে। এসব ঘটনায় অভিবাসীদের জড়িত থাকার বিষয়ে অভিযোগ রয়েছে। সব মিলিয়ে আসছে নির্বাচনে জার্মানির রাজনৈতিক অঙ্গনে অভিবাসন একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। এদিকে নির্বাচনকে সামনে রেখে করা জনমত জরিপে প্রথম স্থানে রয়েছে ফ্রিডরিশ ম্যার্ৎসের সিডিইউ/সিএসইউ।

প্রস্তাবনায় দেশটির সীমান্ত সুরক্ষিত করতে ও বেআইনি প্রবেশ ঠেকাতে বেশ কিছু প্রস্তাবনা দেওয়া হয়। এর মধ্যে রয়েছে সীমান্তে স্থায়ী নিয়ন্ত্রণ আরোপ, শেঙেন জোনে মুক্ত চলাচল বন্ধ করা এবং বৈধ কাগজপত্র ছাড়া যারা জার্মানিতে প্রবেশ করেছে তাদের তাৎক্ষণিকভাবে প্রত্যাবাসন। 

প্রস্তাবনায় আরো রয়েছে, আশ্রয় আবেদন বাতিল হয়ে যাওয়ার পর যাদের দেশত্যাগের বাধ্যবাধকতা রয়েছে তাদের আটক করা এবং যেসব অভিবাসী অপরাধের সঙ্গে যুক্ত তাদের বসবাসের অনুমতি সীমিতকরণ। 

কট্টর ডানপন্থী দল এএফডির সমালোচনা করেছে সিডিউ/সিএসইউ। দলটি বলছে, ‘জেনোফোবিয়া ও ষড়যন্ত্র উসকে দিতে গণহারে অভিবাসনের জন্য তৈরি হওয়া সমস্যাটির অপব্যবহার করছে এএফডি।

বিক্ষোভ
এদিকে প্রস্তাব পাসের পর সিডিইউ সদর দপ্তরের বাইরে প্রতিবাদ করেছে কয়েক হাজার মানুষ। বৃহস্পতিবার দলটির সদর দপ্তরের সামনে হাজার হাজার মানুষ সমবেত হয়ে বিক্ষোভ দেখান। অতি ডানপন্থীদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে কাজের অভিযোগে সিডিইউর বিরুদ্ধে এই প্রতিবাদ তাদের। বিক্ষোভকারীদের দাবি, ১৩ হাজার মানুষ প্রতিবাদে সামিল হয়েছিল। অন্যদিকে পুলিশ জানায়, ছয় হাজার মানুষ বিক্ষোভে যোগ দিয়েছে।

বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ
এএফডির সাহায্য নিয়ে খসড়া বিল পাস করানোর পর সিডিইউয়ের প্রবল সমালোচনা করেন চ্যান্সেলর ওলাফ শোলজ। গ্রিন পার্টি ও অনেকগুলো মানবাধিকার সংগঠন ও চার্চও এর সমালোচনা করেছে। তাদের বক্তব্য, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর সমঝোতা হয়েছিল, অতি ডানপন্থীদের সঙ্গে সমন্বয় করে কেউ চলবে না। সেই সমঝোতা ভেঙেছেন ম্যার্ৎস।

এখনো পর্যন্ত জার্মানির প্রধান রাজনৈতিক দলগুলো এই সমঝোতা মেনে চলেছে। গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে হাতিয়ার করে নাৎসিদের উত্থানের কথা মাথায় রেখে তারা এই সমঝোতা করে।

‘ডাপন্থীবিরোধী জোট’ বৃহস্পতিবারের প্রতিবাদের ডাক দিয়েছিল। তাদের দাবি, এএফডির সঙ্গে কোনো সহযোগিতা নয়।

এই বিক্ষোভের সংগঠক ক্যারোলিন মোসার ম্যার্ৎসকে অভিযুক্ত করে বলেছেন, তিনিই এএফডির অতি ডানপন্থাকে সামাজিক দিক থেকে গ্রহণযোগ্য করে দিচ্ছেন।

ম্যার্ৎসের জনসভায় বিক্ষোভ
অন্যদিকে ড্রেসডেনে কয়েক হাজার বিক্ষোভকারী ম্যার্ৎসের জনসভায় বিক্ষোভ দেখিয়েছে। ম্যার্ৎস সেখানে নির্বাচনী প্রচারের জন্য গিয়েছিলেন।

বিক্ষোভকারীরা ড্রেসডেনের রাস্তায় স্লোগান দেন, ম্যার্ৎস হলেন গণতন্ত্রের বিপদের কারণ, তার লজ্জিত হওয়া উচিত।

সূত্র : ইনফোমাইগ্রেন্টস, ডয়চে ভেলে

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

বন্ধ সীমান্ত ক্রসিংয়ে পাকিস্তানি-আফগান বাহিনীর গোলাগুলি, সেনা নিহত

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
বন্ধ সীমান্ত ক্রসিংয়ে পাকিস্তানি-আফগান বাহিনীর গোলাগুলি, সেনা নিহত
তোরখাম সীমান্ত ক্রসিংয়ে আফগানিস্তান ও পাকিস্তানের সীমান্তরক্ষীরা পাহারা দিচ্ছেন। ফাইল ছবি : এএফপি

পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের নিরাপত্তা বাহিনীর মধ্যে সম্প্রতি বন্ধ হওয়া প্রধান সীমান্ত ক্রসিং তোরখামে গোলাগুলি হয়েছে। এতে একজন নিহত ও বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। 

আফগানিস্তানের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সোমবার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেছে, আফগান নিরাপত্তা বাহিনীর একজন সদস্য নিহত হয়েছেন এবং আরো দুজন আহত হয়েছেন। এ ছাড়া নাম প্রকাশ না করার শর্তে দুই পাকিস্তানি নিরাপত্তা কর্মকর্তা বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেছেন, পাকিস্তানের নিরাপত্তা বাহিনীর কয়েকজন সদস্যও এ সংঘর্ষে আহত হয়েছেন।

গত রাতে রমজান মাসের প্রথম কর্মদিবসে তোরখাম সীমান্তে এ গোলাগুলি হয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ এই ট্রানজিট পয়েন্ট পাকিস্তান গত মাসে বন্ধ করে দিয়েছিল আফগানিস্তানের নতুন সীমান্ত চৌকি নির্মাণ নিয়ে দ্বন্দ্বের কারণে। রমজানে সাধারণত পাকিস্তান থেকে আফগানিস্তানে খাদ্যপণ্যের আমদানি সাধারণত শীর্ষে থাকে। তীব্র শীতে সীমান্তের উভয় পাশে প্রয়োজনীয় পণ্য ভর্তি প্রায় পাঁচ হাজার ট্রাক আটকা পড়েছিল।

জাতিসংঘের মতে, এই সংঘর্ষ আফগান অর্থনীতিতে সংকট আরো গভীর করতে পারে, যখন লাখ লাখ মানুষ ক্ষুধার্ত এবং দেশটির প্রায় অর্ধেক জনগণের মানবিক সহায়তার প্রয়োজন।

অতীতেও মারাত্মক গোলাগুলি ও ক্রসফায়ারের পর দুই দেশ তোরখাম ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় চামান সীমান্ত ক্রসিং বন্ধ করে দিয়েছিল। পাকিস্তানের দাবি, তারা আফগান ভূখণ্ড থেকে আক্রমণের সম্মুখীন হচ্ছে। তবে এই অভিযোগ তালেবান সরকার অস্বীকার করে।

এর আগে ডিসেম্বরে পাকিস্তানি সামরিক বিমান আফগান ভূখণ্ডে হামলা চালিয়ে কয়েক ডজন লোককে হত্যা করে।

এদিকে কাবুলের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র আব্দুল মতিন কানি সোমবার পাকিস্তানকে গত রাতের সহিংসতার জন্য অভিযুক্ত করেছেন। এরপর আফগান নিরাপত্তা বাহিনী ‘প্রতিরক্ষামূলক অবস্থানে’ চলে যায় এবং সংলাপের প্রচেষ্টা ব্যর্থ হওয়ার পর প্রতিক্রিয়া জানায় বলে তিনি জানিএছেন।

অন্যদিকে নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন পাকিস্তানি কর্মকর্তা দ্য অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসকে বলেছেন, তালেবান বিনা উসকানিতে পাকিস্তানের সীমান্ত চৌকিতে স্বয়ংক্রিয় অস্ত্র দিয়ে গুলি চালিয়েছে। এরপর পাকিস্তানিরা পাল্টা গুলি চালায়।

পাকিস্তানের খাইবার জেলার চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের সভাপতি ইউসুফ আফ্রিদির মতে, এখন পর্যন্ত তোরখাম ক্রসিং বন্ধের ফলে কমপক্ষে ১৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের ক্ষতি হয়েছে। পাশাপাশি আফগানিস্তানের নাঙ্গারহার চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্টের প্রধান নির্বাহী শাকিরুল্লাহ সাফি বলেন, ক্রসিং বন্ধের কারণে আফগান ব্যবসায়ীরা প্রতিদিন পাঁচ লাখ মার্কিন ডলার লোকসান করছেন। পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্যের পরিমাণ ছিল ১.৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলারেরও বেশি।

সূত্র : আলজাজিরা

মন্তব্য

ট্রাম্পের পরিকল্পনা মোকাবেলায় আরব শীর্ষ কূটনীতিকদের বৈঠক

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
ট্রাম্পের পরিকল্পনা মোকাবেলায় আরব শীর্ষ কূটনীতিকদের বৈঠক
মিসরের রাজধানী কায়রোতে আরব লীগের সদর দপ্তরে এক অধিবেশনে আরব পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা অংশ নিচ্ছেন। ফাইল ছবি : এএফপি

কায়রোতে আরব পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা সোমবার এক বৈঠকে মিলিত হন, যেখানে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের গাজা দখল ও সেখানকার বাসিন্দাদের বিতাড়নের পরিকল্পনার বিরুদ্ধে করণীয় নির্ধারণে আলোচনা হয়। এএফপির প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

আরব লীগের একটি সূত্র এএফপিকে জানায়, মন্ত্রীরা ‘প্রস্তুতিমূলক ও পরামর্শমূলক’ একটি অধিবেশনে অংশ নেন, যেখানে যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজা পুনর্গঠনে আরব পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা হয়। ২৪ লাখ ফিলিস্তিনিকে গাজা থেকে উচ্ছেদ না করেই এ পরিকল্পনা বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেওয়া হবে।

সূত্র আরো জানায়, বৈঠকে গণমাধ্যমকর্মীদের প্রবেশাধিকার ছিল না এবং আলোচ্য পরিকল্পনা মঙ্গলবারের সম্মেলনে আরব নেতাদের অনুমোদনের জন্য উপস্থাপন করা হবে।

আরো পড়ুন
গাজা যুদ্ধবিরতির পর ইসরায়েলে প্রথম প্রাণঘাতী হামলা

গাজা যুদ্ধবিরতির পর ইসরায়েলে প্রথম প্রাণঘাতী হামলা

 

বৈঠকের আগে মিসরের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বাদর আবদেলআত্তি জর্দান, বাহরাইন, তিউনিসিয়া, ইরাক, ইয়েমেন ও ফিলিস্তিনের শীর্ষ কূটনীতিকদের সঙ্গে পৃথকভাবে আলোচনা করেন। মিসরের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, এসব বৈঠকে আবদেলআত্তি গাজায় ফিলিস্তিনিদের উচ্ছেদ না করেই ‘প্রাথমিক পুনরুদ্ধার প্রকল্প’ এগিয়ে নেওয়ার আহ্বান জানান। 

এদিকে ট্রাম্প বিশ্বব্যাপী নিন্দার মুখে পড়েছেন।

কারণ তিনি গাজা দখল করে ভূখণ্ডটিকে ‘মধ্যপ্রাচ্যের রিভিয়েরা’ বানানোর এবং ফিলিস্তিনিদের মিসর ও জর্দানে স্থানান্তরের পরিকল্পনার কথা বলেছেন। তার এই পরিকল্পনার বিরোধিতায় আরবদেশগুলো ঐক্যবদ্ধ হয়েছে এবং গত মাসে রিয়াদে আরব নেতাদের একটি পরামর্শমূলক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে ফিলিস্তিনি স্বার্থ রক্ষায় যৌথ প্রচেষ্টার বিষয়ে আলোচনা হয়।

আরো পড়ুন
গাজায় সব ধরনের মানবিক সহায়তা প্রবেশ বন্ধ ঘোষণা ইসরায়েলের

গাজায় সব ধরনের মানবিক সহায়তা প্রবেশ বন্ধ ঘোষণা ইসরায়েলের

 

এ ছাড়া কায়রোতে রবিবার এক সংবাদ সম্মেলনে আবদেলআত্তি জানান, গাজা পুনর্গঠনের পরিকল্পনা প্রস্তুত এবং এটি আরব নেতাদের সম্মেলনে অনুমোদনের জন্য উপস্থাপন করা হবে।

আরো পড়ুন
বিশ্বজুড়ে ট্রাম্পের প্রস্তাব নিন্দিত

বিশ্বজুড়ে ট্রাম্পের প্রস্তাব নিন্দিত

 

অন্যদিকে সম্প্রতি ট্রাম্প তার অবস্থান কিছুটা নরম করার ইঙ্গিত দিয়েছেন।

তিনি বলেছেন, ‘আমি মনে করি, এটি একটি কার্যকর পরিকল্পনা, তবে আমি কাউকে এটা মানতে বাধ্য করছি না, আমি শুধু বসে থাকব এবং সুপারিশ করব।’

আরো পড়ুন
গাজায় যুদ্ধবিরতির প্রথম ধাপ শেষের পথে, বাড়ছে অনিশ্চয়তা

গাজায় যুদ্ধবিরতির প্রথম ধাপ শেষের পথে, বাড়ছে অনিশ্চয়তা

 
মন্তব্য

পাকিস্তানে নারী আত্মঘাতীর হামলায় সেনা নিহত

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
পাকিস্তানে নারী আত্মঘাতীর হামলায় সেনা নিহত
আফগানিস্তান ও ইরান সীমান্তবর্তী বেলুচিস্তান খনিজসম্পদে সমৃদ্ধ হলেও অর্থনৈতিকভাবে অবহেলিত অঞ্চল হিসেবে পরিচিত। ফাইল ছবি : এএফপি

পাকিস্তানে এক আত্মঘাতী নারী হামলাকারী আধাসামরিক বাহিনীর গাড়িবহর লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছে। এতে অন্তত একজন সেনা সদস্য নিহত ও চারজন আহত হয়েছেন। দেশটির অস্থির দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রদেশ বেলুচিস্তানে সোমবার এ হামলা হয়। এএফপির প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

জ্যেষ্ঠ প্রশাসনিক কর্মকর্তা বিলাল শব্বির এএফপিকে বলেন, বেলুচিস্তানের কালাত জেলায় ফ্রন্টিয়ার কর্পস (এফসি) বাহিনীর একটি গাড়িবহরকে লক্ষ্য করে এক আত্মঘাতী নারী হামলাকারী বিস্ফোরণ ঘটায়। এতে অন্তত একজন এফসি সদস্য নিহত ও চারজন আহত হয়েছেন। এ ছাড়া স্থানীয় পুলিশ কর্মকর্তা হাবিব বাবাইও হতাহতের সংখ্যার বিষয়টি এএফপিকে নিশ্চিত করেছেন।

এদিকে এ হামলার দায় এখন পর্যন্ত কোনো গোষ্ঠী স্বীকার করেনি।

তবে বেলুচিস্তান লিবারেশন আর্মি (বিএলএ) ওই অঞ্চলের সবচেয়ে সক্রিয় বিদ্রোহী সংগঠন হিসেবে পরিচিত এবং তারা প্রায়ই নিরাপত্তা বাহিনী ও অন্যান্য প্রদেশ থেকে আসা পাকিস্তানিদের ওপর প্রাণঘাতী হামলা চালায়।

অন্যদিকে পাকিস্তানে নারী আত্মঘাতীর হামলার ঘটনা বিরল। তবে বিএলএ আগে নারী যোদ্ধাদের ব্যবহার করে হামলা চালিয়েছে। প্রতিবেদন অনুসারে, ২০২২ সালের এপ্রিলে করাচিতে কনফুসিয়াস ইনস্টিটিউটের প্রবেশপথে একটি গাড়িতে বিস্ফোরণ ঘটিয়ে এক নারী আত্মঘাতী হামলাকারী তিনজন চীনা শিক্ষাবিদ ও তাদের পাকিস্তানি চালককে হত্যা করে।

ওই হামলার দায় বিএলএ স্বীকার করেছিল।

এ ছাড়া বিদেশি অর্থায়নে পরিচালিত বিভিন্ন জ্বালানি প্রকল্পেও বিএলএ হামলা চালিয়েছে, বিশেষ করে চীনের বিনিয়োগে পরিচালিত প্রকল্পগুলোতে। তাদের অভিযোগ, দেশের সবচেয়ে দরিদ্র অঞ্চল বেলুচিস্তানের প্রাকৃতিক সম্পদ বহিরাগতরা শোষণ করছে, অথচ স্থানীয় বাসিন্দাদের উন্নয়ন থেকে বাদ রাখা হচ্ছে।

এএফপি বলেছে, পাকিস্তানের নিরাপত্তা বাহিনী দীর্ঘদিন ধরে সাম্প্রদায়িক, জাতিগত ও বিচ্ছিন্নতাবাদী সহিংসতার বিরুদ্ধে লড়াই করছে। আফগানিস্তান ও ইরান সীমান্তবর্তী বেলুচিস্তান খনিজসম্পদে সমৃদ্ধ হলেও অর্থনৈতিকভাবে অবহেলিত অঞ্চল হিসেবে পরিচিত।

এ ছাড়া গত বছর পাকিস্তানে এক দশকের মধ্যে সবচেয়ে প্রাণঘাতী বছর ছিল, যেখানে সহিংসতার ঘটনায় এক হাজার ৬০০ জনের বেশি নিহত হয়। এদের মধ্যে ৬৮৫ জন নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য ছিলেন বলে ইসলামাবাদভিত্তিক সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড সিকিউরিটি স্টাডিজ জানিয়েছে। সহিংসতার বেশির ভাগই আফগানিস্তান সীমান্তবর্তী এলাকায় সংঘটিত হয়েছে, আর বড় শহরগুলোতে হামলার ঘটনা এখন তুলনামূলক কমে এসেছে।

এএফপির হিসাবে, চলতি বছরে পাকিস্তানে অন্তত ৮১ জন হামলায় নিহত হয়েছেন, যাদের বেশির ভাগই নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য। তাদের ওপর রাষ্ট্রবিরোধী গোষ্ঠীগুলো হামলা চালিয়েছে।

মন্তব্য

ইউক্রেনে প্রশিক্ষণ ঘাঁটিতে রুশ হামলা, ব্যাপক প্রাণহানির শঙ্কা

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
ইউক্রেনে প্রশিক্ষণ ঘাঁটিতে রুশ হামলা, ব্যাপক প্রাণহানির শঙ্কা
ইস্কান্দার-এম লঞ্চার থেকে ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ। ছবি : রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়

ইউক্রেনীয় কর্মকর্তারা সোমবার জানিয়েছেন, যুদ্ধক্ষেত্র থেকে প্রায় ১৩০ কিলোমিটার দূরে একটি সামরিক প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে রুশ ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় অনির্দিষ্টসংখ্যক প্রাণহানি ঘটেছে। এএফপির প্রতিবেদন থেকে এই তথ্য জানা গেছে।

এক সামরিক সূত্র এএফপিকে জানিয়েছেন, শনিবারের এই হামলা ‘দিনিপ্রো শহরের বাইরে চেরকাসকে গ্রামের কাছে একটি সামরিক প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে হয়েছে।

এ ছাড়া প্রভাবশালী ইউক্রেনীয় সামরিক ব্লগার ইউরি বুটুসভ জানিয়েছেন, হামলায় ৩০ থেকে ৪০ জন সেনা সদস্য নিহত ও আরো ৯০ জন আহত হয়েছেন।

তবে সরকারিভাবে এখনো হতাহতের কোনো সংখ্যা প্রকাশ করা হয়নি।

ইউক্রেনের স্থল বাহিনীর কমান্ডার মেজর জেনারেল মিখাইলো দ্রাপাতি নিহতদের পরিবারের প্রতি ‘গভীর সমবেদনা’ জানিয়ে বলেছেন, ‘এই ট্র্যাজেডি...শত্রুর হামলার ভয়াবহ পরিণতি।’

পাশাপাশি ইউক্রেনীয় সংসদ সদস্য মারিয়ানা বেজুগলা ফেসবুকে লিখেছেন, হামলার সময় সেনা সদস্যরা সারিবদ্ধ অবস্থায় ছিলেন। তিনি কমান্ডারদের ‘অসতর্কতা’ ও ‘নতুন বাস্তবতার সঙ্গে মানিয়ে নিতে ব্যর্থতার’ জন্য দায়ী করেছেন।

অন্যদিকে সামরিক সূত্র এএফপিকে বলেছেন, ‘সেখানে কোনো সারিবদ্ধ হওয়া বা মানুষের জমায়েত ছিল না। শত্রুপক্ষ একটি ইস্কান্দার-এম ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করেছে, যাতে গুচ্ছবোমা ছিল। ধ্বংসাত্মক উপাদানগুলো বড় এলাকাজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে।’

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তিন বছর ধরে চলমান যুদ্ধে এ ধরনের আরো কয়েকটি হামলা হয়েছে।

এর মধ্যে গত বছরের সেপ্টেম্বরে পোলটাভার একটি সামরিক ইনস্টিটিউটে হামলায় প্রায় ৬০ জন নিহত হন।

দ্রাপাতি জানান, ‘অপরাধমূলক অবহেলার’ কারণে আগের হামলা থেকে শিক্ষা নেওয়া হয়নি এবং এ ঘটনায় তদন্ত শুরু হবে। কিছু সামরিক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দায়িত্ব পালনে গাফিলতির অভিযোগ এনে তিনি বলেন, ‘আমার ভেতরে ক্ষোভ দাউ দাউ করে জ্বলছে।’

তিনি আরো বলেন, ‘কেউ যেন আমলাতান্ত্রিক জটিলতার আড়ালে সত্যকে লুকানোর চেষ্টা না করে, তা আমি নিশ্চিত করব।’

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ