ঢাকা, বুধবার ০৯ এপ্রিল ২০২৫
২৬ চৈত্র ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৬

ঢাকা, বুধবার ০৯ এপ্রিল ২০২৫
২৬ চৈত্র ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৬

জার্মানির বর্তমান চ্যান্সেলর ওলাফ শোলজ ছাড়াও নির্বাচনী লড়াইয়ে যারা

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
জার্মানির বর্তমান চ্যান্সেলর ওলাফ শোলজ ছাড়াও নির্বাচনী লড়াইয়ে যারা
সংগৃহীত ছবি

আগামী রবিবার জার্মানিতে অনুষ্ঠিত হবে নির্বাচন। এবারের নির্বাচনের অন্যতম প্রধান ইস্যু হচ্ছে অভিবাসী নিয়ন্ত্রণ এবং জার্মানির অর্থনীতি পুনরুজ্জীবিত করা। এমন চ্যালেঞ্জ সামনে রেখে এবারের নির্বাচনে লড়ছেন চারজন প্রার্থী।

তারা হলেন— বর্তমান চ্যান্সেলর ওলাফ শোলজ, বিরোধীদলীয় নেতা ফ্রেডরিখ মার্জ, বর্তমান ভাইস চ্যান্সেলর রবার্ট হাবেক এবং কট্টর ডানপন্থী দলের নেতা অ্যালিস ভাইডেল।

 

ওলাফ শোলজ : ৬৬ বছর বয়সী শোলজ ২০২১ সাল থেকে জার্মানির চ্যান্সেলর। মধ্য-বামপন্থী সোশ্যাল ডেমোক্রেটিক দলের এই নেতার সরকার পরিচালনার অভিজ্ঞতা রয়েছে। তিনি হামবার্গের মেয়র এবং জার্মানির শ্রম ও অর্থমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। চ্যান্সেলর হিসেবে দায়িত্ব নিয়ে তিনি দ্রুত অপ্রত্যাশিত সংকট মোকাবেলা করেছেন।

ইউক্রেনে রুশ হামলার পর তিনি জার্মানির সেনাবাহিনীকে আধুনিকীকরণের প্রচেষ্টা শুরু করেন। তার সরকার জ্বালানি সংকট সমাধান এবং উচ্চ মূল্যস্ফীতি মোকাবেলার চেষ্টা করে। কিন্তু অভ্যন্তরীণ কোন্দলের কারণে তার তিন দলীয় জোট সরকার গত নভেম্বরে ভেঙে যায়।

ফ্রেডরিখ মার্জ : ৬৯ বছর বয়সী এই বিরোধীদলীয় নেতা নির্বাচনী প্রচারণায় বেশ এগিয়ে আছেন।

জনমত জরিপে এগিয়ে আছে তাঁর মধ্য-ডানপন্থী ইউনিয়ন ব্লক। অ্যাঙ্গেলা মার্কেল ২০২১ সালে সরে যাওয়ার পর ক্রিস্টিয়ান ডেমোক্রেটিক ইউনিয়ন পার্টির নেতা হন মার্জ। তিনি দলকে আরো রক্ষণশীল দিকে পরিচালিত করেছেন। নির্বাচনী প্রচারণায় অভিবাসন প্রতিরোধকে প্রধান ইস্যু বানিয়েছেন। তবে সরকার পরিচালনায় তাঁর অভিজ্ঞতার ঝুলি শূন্য।

রবার্ট হাবেক : ৫৫ বছর বয়সী হাবেক পরিবেশবাদী গ্রিনদের প্রার্থী। তিনি জার্মানির বর্তমান ভাইস চ্যান্সেলর এবং অর্থনীতি ও জলবায়ু মন্ত্রী। তিনি ২০১৮ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত গ্রিনদের সহনেতা ছিলেন। দলের জনপ্রিয়তা বাড়ানোর ক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন। তবে ২০২১ সালে তিনি চ্যান্সেলর নির্বাচনে না দাঁড়িয়ে জার্মানির বর্তমান পররাষ্ট্রমন্ত্রী আনালিনা বেয়ারবককে মনোনয়ন দেন।

অ্যালিস ভাইডেল : ৪৬ বছর বয়সী ভাইডেল অভিবাসনবিরোধী অলটারনেটিভ ফর জার্মানির হয়ে প্রথমবারের মতো চ্যান্সেলর নির্বাচন করছেন। ২০১৩ সালে দলে যোগ দেন এই অর্থনীতিবিদ। দলটি ২০১৭ সালে যখন প্রথমবারের মতো পার্লামেন্টে আসন জেতে, তখন থেকে তিনি সংসদীয় দলের সহনেতা। এ ছাড়া ২০২২ সাল থেকে তিনি দলের সহনেতার দায়িত্ব পালন করছেন।

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

জার্মানিতে এসপিডিকে নিয়ে সরকার গঠনে রাজি সিডিইউ-সিএসইউ

ডয়চে ভেলে
ডয়চে ভেলে
শেয়ার
জার্মানিতে এসপিডিকে নিয়ে সরকার গঠনে রাজি সিডিইউ-সিএসইউ
রাজধানী বার্লিনে বুধবার দুই পক্ষ থেকেই জোটের গঠনের বিষয়ে ঘোষণা দেওয়া হয়। ছবি : এএফপি

নির্বাচনের পর কয়েক সপ্তাহ ধরে চলা আলোচনা ও দর-কষাকষির পর জার্মানির মধ্য বামপন্থী দল সোশ্যাল ডেমোক্রেটিক পার্টিকে (এএসপিডি) সঙ্গে নিয়ে সরকার গঠনে একমত হয়েছে রক্ষণশীল খ্রিস্টীয় গণতন্ত্রী দল (সিডিইউ) ও তাদের বাভারিয়া রাজ্যের সিস্টার কনসার্ন খ্রিস্টীয় সামাজিক দল (সিএসইউ)। 

রাজধানী বার্লিনে বুধবার দুই পক্ষ থেকেই জোটের গঠনের বিষয়ে ঘোষণা দেওয়া হয়। সিডিইউর দলনেতা ফ্রেডরিখ মেৎস, সিএসইউর দলনেতা মার্কোস স্যোডার ও এসপিডির রাজনীতিবিদ সাসকিয়া এসকেন ও ক্লিংবাইল এ সময় উপস্থিত ছিলেন। জোটের ঘোষণার সময় দেওয়া বক্তৃতায় ফ্রেডরিখ মেৎস বলেন, ‘জোট সরকার আমাদের দেশকে আরো এগিয়ে নিয়ে যাবে।

জার্মানির নতুন সরকারের জোটে কোন কোন দল থাকছে, সে বিষয়টি রাজনৈতিক অঙ্গনে গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষ করে ডোনাল্ড ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষমতা গ্রহণের পর উদ্ভূত রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক অস্থিরতায় কারা জার্মানির, অর্থাৎ ইউরোপের শক্তিশালী অর্থনীতির এই দেশটির নেতৃ্ত্বে আসছেন, তা অনেক বেশি মনোযোগ আকর্ষণ করেছে।

২৩ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত মধ্যবর্তী নির্বাচনে সর্বাধিক প্রায় ২৯ শতাংশ ভোট নিয়ে চালকের আসনে রয়েছে সিডিউই-সিএসইউ। সেই হিসেবে ফ্রেডরিখ মেৎ হতে যাচ্ছেন জার্মানির পরবর্তী চ্যান্সেলর।

তার আগে জোটে মতানৈক্যের জেরে ভেঙে পড়েছিল এসপিডির নেতৃত্বাধীন ওলাফ শোলজের সরকার।

সংবাদমাদ্যমের খবরে বলা হয়, জোট গঠনের আলোচনায় মূল গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ছিল অর্থনৈতিক পরিস্থিতি। জানা গেছে, দুই দলই সরকারের সরকারি ঋণ নিয়ে, জার্মান ভাষায় শুলডেনব্রেমজে, কঠোর সাংবিধানিক নীতি তৈরিতে একমত হয়েছে। এই নিয়মে পরিবর্তন আনা গেলে জার্মান সরকার প্রতিরক্ষা খাতে ব্যয়ের পরিমাণ বাড়াতে পারবে।

সেই সঙ্গে এই অবকাঠামো ও পরিবেশ সুরক্ষা খাতে ৫০০ বিলিয়ন ইউরোর একটি প্যাকেজ তৈরি করতে পারবে সরকার। 

ফ্রেডরিখ মেৎস বলেন, ‘আমাদের সামনে একটি শক্তিশালী পরিকল্পনা রয়েছে, যেটি নিয়ে আমরা আমাদের দেশকে যৌথভাবে সামনে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারবে।’

তিনি আরো বলেন, ‘জোটের এই চুক্তি দেশের নাগরিকদের কাছে একটি শক্তিশালী বার্তা। এটি ইউরোপীয় মিত্রদের কাছেও একটি চিহ্ন। পদক্ষেপ নেওয়ার মতো একটি সরকার পেতে যাচ্ছে জার্মানি।

এদিকে গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়, নতুন সরকারে মোট আটটি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পেতে পারে এসপিডি। সিডিইউ ছয়টি ও সিএসইউ তিন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পেতে পারে। চ্যান্সেলর হিসেবে সামনে থেকে নেত্বৃত্ব দেবেন সিডিইউর ফ্রেডরিখ মেৎস।

মন্তব্য

ব্রিটেনে প্রথম ইউনিভার্সাল থিম পার্ক তৈরির ঘোষণা

    কর্মসংস্থান ও অর্থনীতিতে বিপুল প্রভাবের আশা
স্কাই নিউজ
স্কাই নিউজ
শেয়ার
ব্রিটেনে প্রথম ইউনিভার্সাল থিম পার্ক তৈরির ঘোষণা
শিল্পীর আঁকা চিত্রকর্মে থিম পার্ক ও রিসোর্ট কেমন দেখাবে তার ধারণা। ছবি : ইউনিভার্সাল

যুক্তরাজ্যের বেডফোর্ডশায়ারে ইউরোপের প্রথম ইউনিভার্সাল ব্র্যান্ডের থিম পার্ক ও রিসোর্ট নির্মাণের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার একে ‘ঐতিহাসিক’ দিন হিসেবে বর্ণনা করেছেন। স্কাই নিউজ বুধবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।

প্রতিবেদন অনুসারে, ২০৩১ সালে পার্কটি চালু হলে এটি যুক্তরাজ্যের সবচেয়ে জনপ্রিয় পর্যটনকেন্দ্রে পরিণত হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

পাশাপাশি এটি হবে ইউরোপের প্রথম ইউনিভার্সাল ব্র্যান্ডের থিম পার্ক ও রিসোর্ট।

সরকার জানিয়েছে, এটি ব্রিটিশ অর্থনীতিতে প্রায় পাঁচ হাজার কোটি পাউন্ড যুক্ত করবে। এ ছাড়া এটি প্রায় ২৮ হাজার কর্মসংস্থান সৃষ্টি করবে, যার মধ্যে নির্মাণ পর্বে ২০ হাজার ও চালু হওয়ার পর আতিথেয়তা ও সৃজনশীল খাতে আরো আট হাজার জনের কর্মসংস্থান হবে। পুরনো একটি ইটভাটার জায়গায় গড়ে ওঠা এই প্রকল্পে ৫০০ কক্ষবিশিষ্ট হোটেল এবং খুচরা পণ্যের দোকান ও বিনোদনকেন্দ্রও থাকবে।

বেডফোর্ডশায়ারে এদিন এক বক্তৃতায় প্রধানমন্ত্রী স্টারমার বলেন, ‘এ বিনিয়োগ ব্রিটিশ অর্থনীতিতে প্রবৃদ্ধি আনবে এবং স্থানীয় জনগণের জন্য হাজারো কর্মসংস্থান সৃষ্টি করবে।’

তিনি আরো বলেন, ‘এই কর্মসংস্থান যেন প্রয়োজনমাফিক মানুষের হাতে যায়, যা ব্রিটেনকে কাজের জায়গায় পরিণত করার পরিকল্পনার অংশ।’

তবে এই প্রকল্পে সরকার কত পরিমাণ অর্থ ব্যয় করেছে, সে বিষয়ে স্পষ্ট কিছু জানায়নি। চ্যান্সেলর র‍্যাচেল রিভস জানান, ‘আর্থিক বিষয়াদি গোপনীয়।

স্কাই নিউজের মার্কিন মূল কম্পানি কমকাস্টের মালিকানাধীন ইউনিভার্সাল জানিয়েছে, বেডফোর্ড শহরের দক্ষিণে ৪৭৬ একরজুড়ে গড়ে ওঠা এই পার্ক ২০৫৫ সালের মধ্যে যুক্তরাজ্যের অর্থনীতিতে পাঁচ হাজার কোটি পাউন্ড অবদান রাখবে এবং চালুর প্রথম বছরেই সাড়ে আট মিলিয়ন দর্শনার্থী আকর্ষণ করবে বলে তারা আশা করছে। তবে এই প্রকল্প এখনো হাউজিং, কমিউনিটি ও স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের পরিকল্পনা অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে।

ইউনিভার্সাল স্থানীয় কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে কাজ করে আতিথেয়তা (হসপিটালিটি) খাতে শিক্ষার্থীদের প্রশিক্ষণের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। ইউনিভার্সালের বিখ্যাত চলচ্চিত্রগুলোর মধ্যে রয়েছে ‘উইকেড’, ‘মিনিয়ন্স’, ‘ওপেনহেইমার’, ‘ব্রিজেট জোনস’, ‘ফাস্ট অ্যান্ড ফিউরিয়াস’ ও ‘জুরাসিক ওয়ার্ল্ড’। এ ছাড়া বর্তমানে ইউনিভার্সালের পাঁচটি থিম পার্ক রয়েছে—ফ্লোরিডার অরল্যান্ডো, হলিউড, জাপান, বেইজিং ও সিঙ্গাপুরে।

স্কাই নিউজ ব্রেকফাস্টে উইলফ্রেড ফ্রস্টকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে সংস্কৃতিমন্ত্রী লিসা ন্যান্ডি এই প্রকল্পকে ‘বৃহৎ চুক্তি’ হিসেবে আখ্যা দেন। তিনি বলেন, ‘এই ঘোষণা এমন এক সময় এলো, যখন বৈশ্বিক অর্থবাজার এক অস্থির সময় পার করছে—এমনটা মানুষের জীবদ্দশায় খুব কমই দেখা গেছে।’

এ ছাড়া সরকার বলেছে, এই থিম পার্কের কর্মীদের প্রায় ৮০ শতাংশ স্থানীয়দের মধ্য থেকে নিয়োগ দেওয়া হবে এবং এটি অক্সফোর্ড-ক্যামব্রিজ করিডরকে সমর্থন দেবে, যা জানুয়ারিতে চ্যান্সেলর পুনরুজ্জীবিত করেন। পাশাপাশি সরকার থিম পার্কটির আশপাশের অবকাঠামোয় ‘বৃহৎ বিনিয়োগের’ প্রতিশ্রুতিও দিয়েছে। যাতে এটি সহজে সংযুক্ত ও প্রবেশযোগ্য হয়।

ঘোষণাটি এসেছে এমন এক সময়, যখন সরকার সম্প্রতি নিকটবর্তী লুটন বিমানবন্দরের সম্প্রসারণে অনুমোদন দিয়েছে। কমকাস্ট করপোরেশনের প্রেসিডেন্ট মাইক ক্যাভানাহ বলেন, ‘যুক্তরাজ্যের কেন্দ্রে এই অবিশ্বাস্য ইউনিভার্সাল থিম পার্ক ও রিসোর্ট গড়ে তোলার পরিকল্পনায় আমরা অত্যন্ত উচ্ছ্বসিত। এটি আমাদের যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক পার্ক ব্যবসাকে শক্তিশালী করে ইউরোপে আমাদের অবস্থান সম্প্রসারিত করবে।’

তিনি আরো বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার, চ্যান্সেলর র‍্যাচেল রিভস, বিনিয়োগমন্ত্রী পপি গুস্তাফসন, সংস্কৃতিমন্ত্রী লিসা ন্যান্ডি ও তাদের টিমের নেতৃত্ব ও সহযোগিতার জন্য আমরা কৃতজ্ঞ—আমরা একসঙ্গে মিলে একটি অসাধারণ গন্তব্য তৈরি করতে যাচ্ছি।’

মন্তব্য

গাজার আবাসিক ভবনে ইসরায়েলি হামলা, নিহত ২৯

বিবিসি
বিবিসি
শেয়ার
গাজার আবাসিক ভবনে ইসরায়েলি হামলা, নিহত ২৯
৯ এপ্রিল গাজা সিটির শুজাইয়া এলাকায় একটি আবাসিক ভবনে ইসরায়েলি হামলাস্থলে উদ্ধার তৎপরতা। ছবি : এএফপি

ইসরায়েলের বিমান হামলায় গাজা সিটির পূর্বাংশে একটি বহুতল আবাসিক ভবনে কমপক্ষে ২৯ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে একটি স্থানীয় হাসপাতাল। হামাস নিয়ন্ত্রিত সিভিল ডিফেন্স সংস্থা জানিয়েছে, স্থানীয় সময় বুধবার সকালে শুজাইয়ার আল-হাওয়াশি মসজিদের কাছে এই হামলা চালানো হয়।

সংস্থাটি আরো জানায়, নিহতদের মধ্যে আটটি শিশু রয়েছে, আহত হয়েছে ৬০ জনের বেশি এবং ধ্বংসস্তূপের নিচে এখনো অনেক মানুষ আটকা পড়ে আছে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। শুজাইয়া থেকে ধারণ করা ভিডিওতে দেখা যায়, ধুলামাখা ছোট ছোট শিশুর মরদেহ অসহায় স্বজন ও উদ্ধারকর্মীরা ধ্বংসস্তূপ থেকে বের করে নিয়ে আসছেন।

অন্যদিকে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী জানায়, তারা ‘একজন শীর্ষস্থানীয় হামাস সন্ত্রাসীকে’ লক্ষ্য করে আঘাত হেনেছে, যিনি ওই এলাকায় হামলার পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নের দায়িত্বে ছিলেন। তারা আরো দাবি করে, বেসামরিক লোকজনের ক্ষতি কমাতে ‘নির্ভুল অস্ত্র’ ব্যবহারসহ বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছিল।

এ ছাড়া সেনাবাহিনী হামাসকে আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে অভিযুক্ত করে বলেছে, হামাস ইচ্ছাকৃতভাবে সাধারণ জনগণকে মানব ঢাল হিসেবে ব্যবহার করছে। হামাসও বলেছে, ইসরায়েলি সেনাবাহিনী ‘একটি রক্তাক্ত হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে।

২৬ বছর বয়সী আয়ুব সালিম এএফপিকে বলেন, যে ভবনটিতে হামলা করা হয়েছে, সেটি ছিল অতি জনাকীর্ণ একটি এলাকা, যেখানে তাঁবু, বাস্তুচ্যুত মানুষ ও ঘরবাড়িতে পূর্ণ ছিল। একাধিক ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে হামলা চালানো হয়েছে এবং সব দিকে তার ধাতব টুকরা ছড়িয়ে পড়ে। ধুলা ও বিশাল ধ্বংসযজ্ঞে এলাকা ঢেকে গিয়েছিল, কিছুই দেখা যাচ্ছিল না, শুধু মানুষের চিৎকার আর আতঙ্ক। এটি নিঃসন্দেহে এক ভয়াবহ হত্যাকাণ্ড।

গত সপ্তাহে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী শুজাইয়া ছেড়ে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়ার পর হাজার হাজার মানুষ ওই এলাকা ছেড়ে পালিয়ে গিয়েছিল। সেনাবাহিনী বলেছিল, তারা ‘সন্ত্রাসী অবকাঠামো ধ্বংসে শক্তি প্রয়োগ করছে।’

হামাস নিয়ন্ত্রিত গাজা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বুধবার সকালে জানায়, আগের ২৪ ঘণ্টায় ইসরায়েলি হামলায় অন্তত ৩৩ জন নিহত হয়েছে। এতে গত ১৮ মার্চ ইসরায়েল ফের হামলা শুরুর পর থেকে নিহতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে এক হাজার ৪৮২ জনে।

এ ছাড়া গত তিন সপ্তাহে আরো তিন লাখ ৯০ হাজার মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে।

জাতিসংঘ বলছে, ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর নির্দেশ অনুযায়ী গাজার দুই-তৃতীয়াংশ এলাকা এখন ‘নো-গো জোন’ বা খালি করার আওতায় পড়েছে।

এদিকে চলমান মধ্যস্থতার অংশ হিসেবে যুদ্ধবিরতির বিষয়টি পুনরুজ্জীবিত করার চেষ্টা চলছে। ইসরায়েল দাবি করেছে, হামাস যুদ্ধবিরতির প্রথম ধাপ বাড়াতে রাজি না হওয়ায় এবং তাদের হাতে থাকা ৫৯ জন জিম্মির মধ্যে আর কাউকে মুক্তি না দেওয়ায় তারা আবার হামলা শুরু করেছে। ধারণা করা হয়, ওই ৫৯ জনের মধ্যে ২৪ জন জীবিত। আর হামাস অভিযোগ করেছে, ইসরায়েল মূল চুক্তি লঙ্ঘন করেছে। চুক্তির দ্বিতীয় ধাপে জীবিত সব জিম্মিকে মুক্তি দেওয়ার কথা ছিল এবং যুদ্ধ স্থায়ীভাবে শেষ হওয়ার কথা ছিল।

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাস ইসরায়েলের দক্ষিণে নজিরবিহীন হামলা চালালে প্রায় এক হাজার ২০০ মানুষ নিহত এবং ২৫১ জন জিম্মি হয়। তার পর থেকেই ইসরায়েল হামাসকে ধ্বংস করতে সামরিক অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলছে, এ যুদ্ধে এখন পর্যন্ত গাজায় ৫০ হাজার ৮৪০ জন নিহত হয়েছে।

মন্তব্য

চীনের পাল্টা আঘাত : কাল থেকে যুক্তরাষ্ট্রের পণ্যে ৮৪ শতাংশ শুল্ক

এএফপি
এএফপি
শেয়ার
চীনের পাল্টা আঘাত : কাল থেকে যুক্তরাষ্ট্রের পণ্যে ৮৪ শতাংশ শুল্ক
চীনা ১০০ ইউয়ান নোট (লাল) ও যুক্তরাষ্ট্রের ১০০ ডলার নোট। ছবি : এএফপি

যুক্তরাষ্ট্রে চীনা পণ্যের ওপর ১০৪ শতাংশ শুল্ক কার্যকর হওয়ার কয়েক ঘণ্টা পর বেইজিং বুধবার জানিয়েছে, তারা যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানীকৃত পণ্যের ওপর শুল্ক ৩৪ থেকে বাড়িয়ে ৮৪ শতাংশ করবে।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শুল্কসংক্রান্ত সর্বশেষ পদক্ষেপ বুধবার কার্যকর হয়, যা বিশ্বের বেশ কয়েকটি প্রধান বাণিজ্যিক অংশীদারের ওপর প্রযোজ্য, যার মধ্যে চীনা পণ্যের ওপর সর্বোচ্চ ১০৪ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হয়েছে। পরে চীনের অর্থ মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানায়, ‘যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানীকৃত পণ্যের ওপর অতিরিক্ত শুল্কহার ৩৪ থেকে বাড়িয়ে ৮৪ শতাংশ করা হবে।’ এই সিদ্ধান্ত স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টা ১ মিনিট থেকে কার্যকর হবে।

চীন অতীতেও শুল্ক বৃদ্ধির বিরোধিতা করেছে এবং বুধবার জানিয়েছে, তারা তাদের স্বার্থ রক্ষায় ‘দৃঢ় ও জোরালো’ পদক্ষেপ নেবে। তাদের বিবৃতিতে আরো বলা হয়, ‘চীনের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক বৃদ্ধির এই পদক্ষেপ একের পর এক ভুল সিদ্ধান্ত এবং এটি চীনের বৈধ অধিকার ও স্বার্থের চরম লঙ্ঘন।’

ওয়াশিংটনের এই পদক্ষেপ ‘বহুপক্ষীয় নিয়মভিত্তিক বাণিজ্যব্যবস্থাকে গুরুতরভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করছে’ বলেও চীনের বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছে।

পিনপয়েন্ট অ্যাসেট ম্যানেজমেন্টের প্রেসিডেন্ট ও প্রধান অর্থনীতিবিদ ঝিওয়েই ঝাং বলেন, ‘চীন আজ স্পষ্ট বার্তা দিয়েছে, সরকার তাদের বাণিজ্যনীতি নিয়ে অনড় অবস্থানে রয়েছে।

বর্তমান বাণিজ্য সংঘাত থেকে দ্রুত ও সহজ সমাধানের কোনো সম্ভাবনা আমি দেখি না।’

তিনি আরো বলেন, ‘এই সংঘাতের প্রভাব শিগগিরই দুই দেশের অর্থনীতিতে দৃশ্যমান হবে। আন্তর্জাতিক বাণিজ্য ও বৈশ্বিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির ভবিষ্যৎ এখন অত্যন্ত অনিশ্চিত।’

এ ছাড়া চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এক পৃথক বিবৃতিতে জানায়, তারা যুক্তরাষ্ট্রের ছয়টি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানকে কালো তালিকাভুক্ত করেছে, যার মধ্যে রয়েছে শিল্ড এআই ইনকরপোরেশন ও সিয়েরা নেভাডা করপোরেশন।

বিবৃতিতে বলা হয়, এই প্রতিষ্ঠানগুলো হয় তাইওয়ানে অস্ত্র বিক্রি করেছে, নয়তো দ্বীপটির সঙ্গে ‘সামরিক প্রযুক্তি’ সহযোগিতায় যুক্ত ছিল।

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ