মায়ানমারে ত্রাণ কার্যক্রমে বৃষ্টির বাধা

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
মায়ানমারে ত্রাণ কার্যক্রমে বৃষ্টির বাধা
ছবি : এএফপি

মায়ানমারে ভয়াবহ ভূমিকম্পের পর টানা বৃষ্টিপাত ত্রাণ কার্যক্রমকে ব্যাহত করছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ।

২৮ মার্চের শক্তিশালী ভূমিকম্পে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩,৪৭১ জনে। আহত হয়েছে অন্তত ৪,৬৭১ জন এবং নিখোঁজ অন্তত ২১৪ জন।

জাতিসংঘের মানবিক সহায়তা প্রধান টম ফ্লেচার সোশ্যাল মিডিয়া এক্সে বলেন, ‘ধ্বংসস্তূপের নিচ থেকে এখনো মৃতদেহ উদ্ধার হচ্ছে।

মানুষ খোলা আকাশের নিচে ঘুমাচ্ছে। তাদের এখনই সহায়তা দরকার।’

প্রতিবেশী দেশ চীন, ভারতসহ দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বিভিন্ন দেশ ইতিমধ্যে ত্রাণ ও উদ্ধার সহায়তা পাঠিয়েছে।

থাইল্যান্ডেও ভূমিকম্পের প্রভাবে ২৪ জন মারা গেছে।

এর মধ্যে ১৭ জন একটি নির্মাণাধীন ভবন ধসে প্রাণ হারায়। এ ছাড়া ভূমিধসে এখনো ৭৭ জন নিখোঁজ রয়েছে বলে জানিয়েছে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ।

জাতিসংঘের মানবাধিকার সংস্থা জানিয়েছে, জান্তা সরকারবিরোধী এলাকাগুলোতে ত্রাণ প্রবেশে বাধা দেওয়া হচ্ছে এবং যুদ্ধবিরতির ঘোষণার পরও সামরিক হামলা চলছে।

জান্তা সরকারের কোনো মুখপাত্র এ বিষয়ে মন্তব্যের অনুরোধে সাড়া দেননি।

রাজনৈতিক অস্থিরতা ও অভ্যন্তরীণ সংঘাতে ক্ষত-বিক্ষত মায়ানমারে প্রায় ৩ কোটি মানুষের জন্য বর্তমানে জরুরি মানবিক সহায়তা প্রয়োজন।

‘ফ্রি বার্মা রেঞ্জার্স' নামের একটি ত্রাণ সংস্থা বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে জানিয়েছে, যুদ্ধবিরতির ঘোষণার পরও বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার কারেনি এবং শান রাজ্যে সেনাবাহিনী বিমান হামলা চালালে অন্তত পাঁচজন নিহত হয়। দুর্যোগে আন্তর্জাতিক সহায়তার পাশাপাশি অভ্যন্তরীণ স্থিতিশীলতা জরুরি হয়ে উঠেছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

ওয়াক্ফ বিলের প্রতিবাদে উত্তাল কলকাতা

    পোড়ানো হলো মোদি-অমিতের কুশপুতুল
অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
ওয়াক্ফ বিলের প্রতিবাদে উত্তাল কলকাতা

ওয়াক্ফ আইনের বিরোধিতা করে কলকাতার রাজপথ অবরোধ করার পাশাপাশি ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের কুশপুতুল পোড়ানো হয়েছে।

গতকাল জুমার পর কলকাতার ধর্মতলার টিপু সুলতান মসজিদ ও জাকারিয়া স্ট্রিটের নাখোদা মসজিদের পক্ষ থেকে ধর্মতলায় সড়ক অবরোধ করা হয়। ওই অবরোধ থেকেই হাতে প্ল্যাকার্ড, ফেস্টুন নিয়ে প্রধানমন্ত্রী এবং নরেন্দ্র মোদি সরকারের বিরুদ্ধে লাগাতার স্লোগান, শাউটিং চলতে থাকে। একসময় প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কুশপুতুল পুড়িয়ে প্রতিবাদ জানান বিক্ষোভকারীরা।

এরপর রাজভবনে গিয়ে রাজ্যপাল ড. সি ভি আনন্দ বোসের কাছে স্মারকলিপি জমা দিতে যায় পাঁচজনের প্রতিনিধি দল। তাদের দাবি, অবিলম্বে ওয়াক্ফ বিল প্রত্যাহার করতে হবে এবং এ বিষয়ে রাজ্যপাল যেন দেশের প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে অবগত করেন।

এদিনের প্রতিবাদে মুসলিম নেতাদের তরফ থেকে স্পষ্ট বলা হয়, আমরা এ আইন মানি না, এ আইন মুসলিমবিরোধী। এ আইনে আমাদের মসজিদ, কবরস্থান, দরগা নিয়ে নেওয়া হবে।

তাদের অভিযোগ, কেন্দ্রে নরেন্দ্র মোদি যে সরকার চালাচ্ছে সে সরকার শুধু মুসলমানদের খারাপ চাইছে। সরকার যে ওয়াক্ফ বিল নিয়ে এসেছে সেই বিলের কোনো দরকার ছিল না। স্বাধীনতার আগে থেকেই ভারতে ওয়াক্ফ বিল ছিল। তাদের দাবি, এই ওয়াক্ফ সম্পত্তি মুসলমানদের সম্পত্তি ছিল, আছে এবং আগামী দিনেও থাকবে।

মন্তব্য

যুক্তরাষ্ট্র-ইসরায়েলের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান সৌদির

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
যুক্তরাষ্ট্র-ইসরায়েলের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান সৌদির
সংগৃহীত ছবি

ফিলিস্তিনিদের নিজ ভূমি থেকে উচ্ছেদে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের প্রস্তাবকে প্রত্যাখ্যান করেছে সৌদি আরব। শুক্রবার (১১ এপ্রিল) তুরস্কের আন্তালিয়াতে ‘গাজা যুদ্ধ বন্ধে’ বিভিন্ন দেশের মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকে এ বিষয়ে নিজের অবস্থান স্পষ্ট করেন সৌদি আরবের পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রিন্স ফয়সাল বিন ফারহান।

তিনি জানান, ফিলিস্তিনের গাজার মানুষকে বেঁচে থাকার ন্যূনতম প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র থেকেও বঞ্চিত করা হচ্ছে। যুদ্ধবিরতি চুক্তির সঙ্গে গাজায় নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য প্রবেশকে কোনোভাবেই মেলানো যাবে না।

গাজায় যেন কোনো বাধা ছাড়া খাদ্য ও অন্যান্য পণ্য প্রবেশ করে সেটি নিশ্চিত করতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।

আরো পড়ুন
সংস্কার ও নির্বাচন মুখোমুখি করবেন না : নুর

সংস্কার ও নির্বাচন মুখোমুখি করবেন না : নুর

 

দখলদার ইসরায়েলের সঙ্গে হামাসের যুদ্ধবিরতি করতে মধ্যস্থতা করছে কাতার, মিসর ও যুক্তরাষ্ট্র। প্রিন্স ফয়সাল বিন ফারহান জানিয়েছেন, এ নিয়ে এ দেশগুলোর ওপর তাদের আস্থা আছে এবং তারা এতে সমর্থন জানান।

সম্মেলনে অংশ নেওয়া দেশগুলোর মন্ত্রীরা একটি যৌথ বিবৃতি দেন।

সেখানেও সবাই উল্লেখ করেন গাজা, পূর্ব জেরুজালেম এবং পশ্চিমতীর থেকে কোনো ফিলিস্তিনিকে জোরপূর্বক উচ্ছেদ করাকে প্রত্যাখ্যান করেন তারা। এছাড়া বর্তমান প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসের নেতৃত্বাধীন ফিলিস্তিনি অথরিটির (পিএ) সাথে এ তিনটি অঞ্চলকে একীভূত হওয়ার আহ্বানও জানিয়েছেন তারা। 

এছাড়া ইসরায়েল দখলদার বাহিনী হিসেবে ফিলিস্তিনের দখলকৃত অঞ্চলে যেসব বসতি স্থাপন ও সম্প্রসারণ করছে সেগুলোরও নিন্দা জানিয়েছেন তারা।

প্রসঙ্গত, দখলদার ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু ও যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প একাধিকবার বলেছেন, গাজাবাসীকে তাদের নিজ ভূমি থেকে সরিয়ে অন্য দেশে নিয়ে যাবেন এবং গাজাকে একটি আধুনিক শহরে পরিণত করবেন।

এবার তাদের এই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করল সৌদি।

সূত্র : সৌদি গেজেট
 

প্রাসঙ্গিক
মন্তব্য

শুল্কযুদ্ধ : নাকালে নারাজ চীন

    মার্কিন পণ্য আমদানিতে শুল্ক বাড়িয়ে ১২৫ শতাংশ করার ঘোষণা দিয়েছে বেইজিং
অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
শুল্কযুদ্ধ : নাকালে নারাজ চীন
ছবি : এএফপি

চীনসহ বিশ্বের শতাধিক দেশের ওপর নানা হারে ‘রিসিপ্রক্যাল ট্যারিফ’ আরোপ করেছিল মার্কিন প্রশাসন। যদিও চীন বাদে অন্য দেশগুলোর ওপর সেই শুল্ক তিন মাসের জন্য স্থগিত করেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। তবে চীনের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৪৫ শতাংশে। শুল্কযুদ্ধে থেমে নেই চীনও।

মার্কিন পণ্য আমদানিতে শুল্ক বাড়িয়ে ১২৫ শতাংশ করার ঘোষণা দিয়েছে এশিয়ার দেশটি। চীনের অর্থমন্ত্রী আজ শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের পণ্যের ওপর শুল্ক বৃদ্ধির এ ঘোষণা দিয়েছেন।

ফলে বৈশ্বিক আলোচনার কেন্দ্রে থাকা শুল্কযুদ্ধ নতুন মোড় নিল। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শুল্কযুদ্ধে পিছু হটছে না বেইজিং।

কারণ বিকল্প থাকায় হোয়াইট হাউসের সিদ্ধান্ত তাদের ওপর সামান্যই প্রভাব ফেলবে।

তারা বলছেন, পাল্টাপাল্টি শুল্কারোপের ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে বাণিজ্য যুদ্ধ বেড়েছে। চীন আগেই ট্রাম্পের শুল্ক তীরের কাছে মাথা নত না করে শেষ পর্যন্ত লড়ে যাওয়ার অঙ্গীকার করেছিল। এরপর থেকে চীনের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্যযুদ্ধ কেবলই তীব্র হয়েছে।

অর্থনীতিবিদরা আগেই বলেছিলেন, যুক্তরাষ্ট্রের ঘোষণার পাল্টায় অন্য দেশগুলোও নতুন করে ব্যবস্থা নেবে। এতে নতুন করে একটি বাণিজ্য যুদ্ধের ঝুঁকি তৈরি করবে। বিশ্ব অর্থনীতির নাজুক দশার মধ্যে নতুন চাপ তৈরি করবে ট্রাম্পের শুল্ক।

প্রশ্ন হলো কেন বেইজিং ডোনাল্ড ট্রাম্পের শুল্ক আরোপের বিরুদ্ধে পিছু হটছে না? এই প্রশ্নের উত্তরে বলা যায়, কারণ চীনের তেমন দরকারই নেই।

চীনের নেতাদের ভাষ্য, তারা কোনো জুলুমবাজের কাছে মাথা নত করতে আগ্রহী নন।

ট্রাম্প প্রশাসনকে বারবার তারা ‘জুলুমবাজ’ আখ্যা দিয়েছেন। বাণিজ্য যুদ্ধে চীনের অবস্থান শক্তিশালী; যা অন্য দেশগুলোর নেই।

বিবিসির বিশ্লেষণে বলা হয়েছে, শুল্কযুদ্ধ শুরুর আগে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি অনেক বেশি ছিল, তবে বাস্তবে এটি চীনের মোট জিডিপির মাত্র ২%।

তবে এটাও সত্য যে, কমিউনিস্ট পার্টি এখনই যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে একটি বাণিজ্যযুদ্ধে জড়াতে চাইবে না। বিশেষ করে এমন সময়ে যখন চীন নিজেই একটি গুরুতর অর্থনৈতিক সংকট মোকাবেলা করছে। বহু বছরের রিয়েল এস্টেট সংকট, অতিরঞ্জিত আঞ্চলিক ঋণ এবং তরুণদের বেকারত্বের মতো সমস্যাও রয়েছে।

তবু, সরকার জনগণকে বলেছে যে, তারা যুক্তরাষ্ট্রের আক্রমণের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলার শক্তিশালী অবস্থানে রয়েছে।

চীন এটাও জানে যে, তাদের আরোপিত শুল্কগুলো মার্কিন রপ্তানিকারকদের ওপরও আঘাত হানবে।

ট্রাম্প তার সমর্থকদের বলছেন, চীনকে সহজেই শুল্ক দিয়ে নত করা যাবে, কিন্তু বাস্তবে তা ভুল প্রমাণিত হয়েছে। বেইজিং আত্মসমর্পণ করতে যাচ্ছে না।

চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং শুক্রবার স্পেনের প্রধানমন্ত্রী পেদ্রো সানচেজকে বলেছেন, ‘চীন ও ইউরোপীয় ইউনিয়নকে ট্রাম্প প্রশাসনের একতরফা জুলুমবাজ আচরণের বিরুদ্ধে একযোগে প্রতিরোধ গড়ে তোলা উচিত।’

জবাবে সানচেজ বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য উত্তেজনা ইউরোপের সঙ্গে চীনের সহযোগিতায় কোনো বাধা হওয়া উচিত নয়।’

তাদের বৈঠকটি হয় বেইজিংয়ে, ঠিক সেই সময় যখন চীন আবারও যুক্তরাষ্ট্রের পণ্যের ওপর শুল্ক বাড়ানোর ঘোষণা দেয়—যদিও তারা জানিয়েছে, ভবিষ্যতে মার্কিন শুল্ক বৃদ্ধির জবাবে তারা আর প্রতিক্রিয়া দেখাবে না।

আগামী সপ্তাহে শি জিনপিং মালয়েশিয়া, ভিয়েতনাম ও কম্বোডিয়া সফর করবেন—যেসব দেশ ট্রাম্পের শুল্কনীতির কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

তাঁর মন্ত্রীরা ইতিমধ্যে দক্ষিণ আফ্রিকা, সৌদি আরব ও ভারতের নেতাদের সঙ্গে বাণিজ্য সহযোগিতা বাড়ানোর বিষয়ে বৈঠক করেছেন।

এ ছাড়া চীন ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের মধ্যে আলোচনার খবর পাওয়া গেছে—যেখানে ইউরোপে চীনা গাড়ির ওপর শুল্ক তুলে দিয়ে তার পরিবর্তে ন্যূনতম মূল্য নির্ধারণের চিন্তা করা হচ্ছে, যাতে নতুন করে পণ্যের দাম কমিয়ে ‘ডাম্পিং’ বন্ধ করা যায়।

সংক্ষেপে, চারদিকে তাকালেই বোঝা যায়—চীনের হাতে অনেক বিকল্প রয়েছে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, এই পারস্পরিক শুল্ক আরোপ এখন প্রায় অর্থহীন হয়ে পড়েছে, কারণ দুই দেশের মধ্যকার অনেক বাণিজ্য ইতিমধ্যেই বন্ধ হয়ে গেছে। তাই দুই পক্ষের এই পাল্টাপাল্টি শুল্ক আরোপ এখন মূলত প্রতীকী হয়ে দাঁড়িয়েছে।

চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মাও নিং গত দুই দিন ধরে সামাজিক মাধ্যমে চেয়ারম্যান মাওয়ের ছবি ও ভিডিও পোস্ট করেছেন। এর মধ্যে রয়েছে কোরিয়ান যুদ্ধ চলাকালীন একটি ভিডিও, যেখানে মাও যুক্তরাষ্ট্রকে বলছেন, ‘এই যুদ্ধ যতদিনই চলুক না কেন, আমরা কখনোই আত্মসমর্পণ করব না।’

এই ভিডিওর ওপর তিনি নিজেই মন্তব্য করেছেন, ‘আমরা চীনা। আমরা উসকানিতে ভয় পাই না। আমরা পিছু হটব না।’

যখন চীনের সরকার চেয়ারম্যান মাওয়ের ভাবমূর্তি সামনে আনে, তখন বোঝা যায়—তারা সত্যিই বিষয়টিকে গুরুত্ব সহকারে নিচ্ছে।

মন্তব্য

অপরাধ ছিল না, তবু ফিলিস্তিনি কিশোরের ৯ বছরের বন্দিজীবন

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
অপরাধ ছিল না, তবু ফিলিস্তিনি কিশোরের ৯ বছরের বন্দিজীবন
ফাইল ছবি : এএফপি

ছুরি হামলায় জড়িত থাকার অভিযোগে আটক হওয়া ফিলিস্তিনি কিশোর আহমাদ মানাসরা দীর্ঘ নয় বছর জেল খাটার পর মুক্তি পেয়েছেন। কারাগারে থাকাকালীন তিনি মারাত্মক মানসিক সমস্যায় ভুগলেও আগাম মুক্তির আবেদন বারবার প্রত্যাখ্যান করা হয়েছিল।

১৩ বছর বয়সে আটক হয়েছিলেন আহমাদ। এখন তার বয়স ২৩।

বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) তাকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন তার আইনজীবী খালেদ জাবারকা।

অধিকৃত পূর্ব জেরুজালেমের বাসিন্দা আহমাদ ২০১৫ সালে পিসগাত জি’ভ নামক অবৈধ বসতির কাছে তার চাচাতো ভাই হাসান মানাসরার সঙ্গে ছিলেন, যিনি তখন দুই ইসরায়েলিকে ছুরিকাঘাত করেন।

ঘটনার সময় ১৫ বছর বয়সী হাসানকে এক ইসরায়েলি গুলি করে হত্যা করে, আর আহমাদকে একদল ইসরায়েলি প্রচণ্ড মারধর করে এবং তাকে গাড়িচাপা দেওয়া হয়, যার ফলে তার মাথার খুলি ভেঙে যায় এবং অভ্যন্তরীণ রক্তক্ষরণ হয়। আহমাদের রাস্তায় রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকা এবং ইসরায়েলিদের উপহাসের একটি ভিডিও ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে।

যদিও আহমাদ কাউকে ছুরি মারেননি এবং আদালতও তা স্বীকার করেছে, তবুও তাকে হত্যাচেষ্টার অভিযোগে অভিযুক্ত করা হয়।

২০২১ সালের নভেম্বর মাসে এক বন্দির সঙ্গে ঝগড়ার পর আহমাদকে প্রথম একাকী কক্ষে রাখা হয়। পরে তার পরিবার ও আইনজীবীরা জানান, তাকে দিনে ২৩ ঘণ্টা ছোট একটি কক্ষে বন্দি রাখা হতো এবং তিনি ভ্রম ও সন্দেহজনিত মানসিক সমস্যায় ভুগতেন, ঘুমোতে পারতেন না। আইনজীবী বলেন, ‘আহমাদ আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিলেন।

তার পরিবার জানায়, তাকে কয়েক মাস পরপর মানসিক চিকিৎসা কেন্দ্রের একটি ওয়ার্ডে স্থানান্তর করা হতো এবং সেখানে তাকে মানসিক স্থিতি বজায় রাখতে ইনজেকশন দেওয়া হতো।

২০২১ সালের ডিসেম্বরে প্রথমবারের মতো আহমাদকে একজন বাইরের চিকিৎসক দেখতে পান। ‘ডক্টরস উইদাউট বর্ডারস’-এর (এমএসএফ) ওই চিকিৎসক জানান, আহমাদ স্কিজোফ্রেনিয়ায় ভুগছেন।

তিনি সতর্ক করে বলেন, ‘কারাবন্দিত্ব অব্যাহত থাকলে আহমাদের মানসিক স্বাস্থ্যে স্থায়ী ক্ষতি হতে পারে।’

‘বিরাট স্বস্তি’
আহমাদের মুক্তি বহুদিন ধরে স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক সংস্থা—যেমন ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও জাতিসংঘ—চেয়ে আসছিল।

তবে ইসরায়েলের সুপ্রিম কোর্ট তার আগাম মুক্তির আবেদন একাধিকবার নাকচ করে দেয়। আদালত জানায়, আহমাদ ‘সন্ত্রাসবাদের’ অভিযোগে দণ্ডিত হওয়ায় তার বয়স বা মানসিক অবস্থা বিবেচনায় না নিয়েই তাকে অযোগ্য ঘোষণা করা হয়।

আহমাদের দণ্ড ঘোষণার সময় ইসরায়েলি আইন পরিবর্তন করে ১২ বছর বয়সী শিশুদেরও ‘সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে’ অভিযুক্ত করার সুযোগ রাখা হয়।

জাবারকা জানান, ইসরায়েলি কারা কর্তৃপক্ষ ইচ্ছাকৃতভাবে তাকে নাফা কারাগারের বাইরে ছেড়ে দেয়, যাতে তার পরিবার তাকে রিসিভ করতে না পারে এবং তাকে এক নির্জন জায়গায় ফেলে আসে।

পরে বীরশেবা এলাকার নেগেভ অঞ্চলে এক পথচারী তাকে খুঁজে পেয়ে তার পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করে। এরপর পরিবার তার সঙ্গে পুনরায় মিলিত হয়।

জাবারকা বলেন, ‘আমরা জানি যে সে জেলে প্রচণ্ড অসুস্থ ছিল। এখন আমরা তার স্বাস্থ্যের বিষয়ে বিস্তারিত জানার অপেক্ষায় আছি।’

অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের আঞ্চলিক পরিচালক হেবা মোরায়েফ বলেন, ‘তার মুক্তি তার এবং তার পরিবারের জন্য বিরাট স্বস্তির বিষয়।’

তিনি বলেন, ‘কারাগারে কাটানো বছরের অন্যায়, নির্যাতন, মানসিক আঘাত এবং দুর্ব্যবহার কিছুই ফিরিয়ে আনা যাবে না।’

সূত্র : আলজাজিরা

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ