<p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">মাছে-ভাতে বাঙালি নাকি দুটি ভাগে বিভক্ত। এক ভাগে আছে যারা শুঁটকি বলতে অজ্ঞান। অন্য ভাগের বাঙালিরা শুঁটকির গন্ধটুকুও নিতে পারে না।  মাছ, মাংসসহ যেকোনো পচনশীল দ্রব্য শুকিয়ে আহারযোগ্য উপায়ে সংরক্ষণ করা হলে সেটিকে শুঁটকি বলা যায়। আমাদের দেশে বহুল প্রচলিত মাছের শুঁটকি নিয়েই আজকের আলোচনা। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">প্রাচীন কাল থেকেই মানুষ খাদ্য সংরক্ষণ করে আসছে। খাদ্য সংরক্ষণের এসব পদ্ধতির মধ্যে অন্যতম হলো খাদ্যকে প্রখর সূর্যতাপে বা বাতাসে শুকিয়ে সংরক্ষণ করা। সাধারণত রূপচাঁদা, ছুরি, কোরাল, সুরমা, লইট্টা, বেরাগী, পুঁটি, চিংড়ি, ফাইসা, তপসি, বাইম ও ছোট পোয়া  ইত্যাদি মাছকে শুঁটকিতে রূপান্তর করা হয়। প্রতি কেজি শুঁটকি মাছ তৈরিতে প্রজাতিভেদে প্রায় তিন থেকে পাঁচ কেজি তাজা মাছ প্রয়োজন হয়। এ প্রক্রিয়ায় মাছের ভেতরের পচনশীল অংশ, যেমন</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">—</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">নাড়িভুঁড়ি, আঁষ ফেলে দিতে হয়। প্রখর রোদে শুকানোর কারণে মাছের মধ্যে থাকা ক্ষুদ্র অণুজীব নতুন করে জন্ম নিতে বা বৃদ্ধি পেতে পারে না। মাছের আকার ও প্রজাতির ভিত্তিতে মাছ শুকাতে দুই থেকে আট দিন সময় লাগে। বাছাই করা মাছকে মাদুর বা পাটির ওপর ছড়িয়ে বা রশিতে ঝুলিয়ে রাখা হয়। উপযুক্ত পরিবেশ পেলে ও সঠিক সংরক্ষণ পদ্ধতি অবলম্বন করলে শুঁটকি মাছ প্রায় ছয় মাস থেকে এক বছর পর্যন্ত খাবারের উপযোগী থাকে। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">আমাদের দেশের মানুষের বার্ষিক জনপ্রতি মাছের চাহিদা ২০ কেজির বেশি হলেও জনপ্রতি খাদ্য হিসেবে মাছ গ্রহণ করা হয় ১৮.৯৪ কেজি। এই গ্রহণ করা মাছের প্রায় ৫ শতাংশ আসে শুঁটকি থেকে। শুধু দেশেই নয়, বিদেশেও শুঁটকির বিশাল বাজার রয়েছে। রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) তথ্য অনুযায়ী, চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে (জুলাই-ডিসেম্বর) দেশ থেকে প্রায় ২৫ লাখ ৪৫ হাজার ৫১৪ মার্কিন ডলার সমমূল্যের শুঁটকি রপ্তানি হয়েছে। সিঙ্গাপুর, ভারত, দক্ষিণ কোরিয়া, যুক্তরাষ্ট্র ও থাইল্যান্ড বাংলাদেশি শুঁটকির সবচেয়ে বড় বাজার। মৎস্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, দেশে উৎপন্ন মোট মাছের অন্তত ১৫ শতাংশ শুকিয়ে শুঁটকিতে রূপান্তর করা হয়। কক্সবাজারের নাজিরারটেক, সোনাদিয়ার চর, মহেশখালী, চট্টগ্রাম নগরের কর্ণফুলী নদীর তীরবর্তী এলাকা, আনোয়ারা উপজেলা, সুন্দরবনের দুবলার চর, নাটোরের চলনবিল, সুনামগঞ্জের ইব্রাহীমপুরসহ বিভিন্ন উপকূলবর্তী এলাকা হচ্ছে শুঁটকির আঁতুড়ঘর।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">আল সানি</span></span></span></span></p> <p> </p>