<p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">আমনের ভরা মৌসুমে পাইকারি বাজারে চালের দাম বেড়েছে। গত এক মাসে খুচরা পর্যায়ে চিকন (মিনিকেট) চালের দাম বস্তাপ্রতি ৩৫০ থেকে ৫০০ টাকা বেড়েছে। চিকন চাল সর্বোচ্চ কেজিতে সাত থেকে ১০ টাকা এবং মাঝারি ও মোটা চালের দাম সর্বোচ্চ পাঁচ-ছয় টাকা বেড়েছে। এতে নিত্যপণ্যের উচ্চমূল্যে চাপে থাকা ভোক্তারা আরো চাপে পড়েছে। অত্যাবশ্যক এই নিত্যপণ্য কিনতে বাজারে যেতে ভয় পাচ্ছে অনেক ক্রেতা। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বাজারে অন্যান্য ভোগ্য পণ্যের দাম বাড়লে মানুষ কম কিনে ব্যয় কমানোর চেষ্টা করে, কিন্তু চালের ক্ষেত্রে সেটা সম্ভব নয়। দাম যত বেশিই হোক না কেন, প্রয়োজনমতো চাল তাকে কিনতেই হবে। কঠিন বাস্তবতা হলো গরিব মানুষের আয়ের বেশির ভাগ যাচ্ছে চাল কেনায়।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">চালের পাইকারি ও খুচরা বিক্রেতারা বলছেন, গত কয়েক সপ্তাহে মিল পর্যায়ে অস্বাভাবিক দাম বেড়ে গেছে। এর প্রভাবে খুচরা ও পাইকারিতে দাম বেড়েছে। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">চালকল মালিকদের দাবি, এবার ধানের দাম বাড়তি ধরে কেনার কারণে তাঁরা চালের দাম বাড়িয়েছেন। রাজধানীর কারওয়ান বাজার, মহাখালী কাঁচাবাজার ও বাড্ডা বাজার এবং তিনটি জেলা নওগাঁ, কুষ্টিয়া ও বগুড়ার বড় পাইকারি মোকামে খোঁজ নিয়ে ও বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বাজারে জিনিসপত্রের ঊর্ধ্বমুখী দামের কারণে দীর্ঘদিন ধরে স্বল্প আয়ের মানুষ খুব কষ্টে আছে। টানা ৯ মাস দেশে খাদ্যের মূল্যস্ফীতি দুই অঙ্কের ঘরে। বর্তমানে শাক-সবজির দাম কিছুটা কমলেও অন্যান্য নিত্যপণ্যের দাম এখনো বেশি। গত মাসে সয়াবিন তেলের দামও লিটারে আট টাকা করে বেড়েছে। এর মধ্যে বাড়ল চালের দাম।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">কারওয়ান বাজারের মেসার্স ঢাকা রাইস এজেন্সির ব্যবসায়ী মো. সায়েম হোসেন কালের কণ্ঠকে বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বাজারে আমনের নতুন চাল আসার পর সরবরাহও বেড়েছে। চাহিদার তুলনায় চালের ঘাটতিও নেই। ধানের দাম বাড়ার কথা বলে সব ধরনের চালের দাম বাড়িয়েছেন মিলাররা। এতে পাইকারি ও খুচরা বাজারে দাম বেড়েছে। মিল পর্যায়ে জোরালো তদারকি করা গেলে চালের দাম কমে আসবে।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">তিনি বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">দাম বাড়ায় মিনিকেট চাল এখন ৮০ থেকে ৮৫ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে, যা এক মাস আগেও আমরা কেজি ৭২ থেকে ৭৫ টাকায় বিক্রি করেছি। মোটা চাল ব্রি-২৮ ও পাইজাম চাল দাম বেড়ে প্রতি কেজি ৬৩ থেকে ৬৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, যা এক মাস আগে ৫৭ থেকে ৫৮ টাকা ছিল। নাজিরশাইল চাল প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ৮৫ টাকায়, এক মাস আগে ছিল ৭৪ থেকে ৭৭ টাকা।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বাড্ডার খুচরা চাল বিক্রেতা মো. হুমায়ুন কবির কালের কণ্ঠকে বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">নতুন করে চালের দাম বাড়ায় বেচাকেনা কিছুটা কমেছে। দাম বেশি বলে অনেক ক্রেতা চাল কম কিনছে।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">চালের দাম সহনীয় পর্যায়ে রাখতে গত নভেম্বরে আমদানির ওপর ২ শতাংশ অগ্রিম আয়কর রেখে বাকি আমদানি শুল্ক ও নিয়ন্ত্রণমূলক শুল্ক প্রত্যাহার করে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। আশানুরূপ আমদানি না হওয়ায় চালের দামে কোনো প্রভাব পড়েনি।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">কনজিউমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) ভাইস প্রেসিডেন্ট এস এম নাজের হোসাইন বলেন, বাজারে একাধিক সংস্থা তদারকি করে, কিন্তু ভোক্তা এ থেকে সুফল পাচ্ছেন না। পণ্যের দাম বাড়লেই কর্মকর্তারা অভিযান পরিচালনা করেন। কিন্তু যে স্তরে কারসাজি হয়েছে, সেই স্তরে মনিটরিং হয় না। ফলে অসাধু ব্যবসায়ীরা ভোক্তাকে নাজেহাল করার সুযোগ পাচ্ছেন। কয়েক মাস পর রোজা শুরু হবে। এখন থেকে যদি বাজার ব্যবস্থাপনা ঢেলে সাজানো না হয়, ক্রেতারা আরো ভোগান্তিতে পড়বে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">নওগাঁ : দেশের অন্যতম চাল উৎপাদনকারী জেলা নওগাঁয় ধান-চালের বাজার ভরা মৌসুমেও নিয়ন্ত্রণে নেই। চাল ব্যবসায়ীরা নানা কৌশলে দাম বাড়াচ্ছেন। প্রকার ভেদে খুচরা বাজারে বিভিন্ন জাতের চালের দাম কেজিতে তিন থেকে ১০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">নওগাঁ পৌর খুচরা ও পাইকারি চাল বাজার ঘুরে দেখা যায়, চিকন জাতের কাটারি চাল ৭৫ থেকে ৭৮ টাকা কেজি, জিরাশাইল চাল ৭০ থেকে ৭৪ টাকা, মোটা জাতের স্বর্ণা-৫ চাল ৫৬ থেকে ৬০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া অন্যান্য ধরনের চালের দামও কেজিতে তিন থেকে পাঁচ টাকা বেড়েছে। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">নওগাঁ পৌর খুচরা চাল বাজার সমিতির সভাপতি উত্তম সরকার জানান, মিল মালিকরা তাঁদের কাছে থেকে বস্তাপ্রতি ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা বেশি দাম রাখায় খুচরা বাজারে কেজিতে চালের দাম বেড়েছে। কাটারি চিকন জাতের ৫০ কেজি চালের বস্তা গত সপ্তাহে তাঁরা তিন হাজার ৪০০ থেকে তিন হাজার ৫০০ টাকা কিনলেও দুই সপ্তাহ ব্যবধানে তা বেড়ে হয়েছে তিন হাজার ৯০০ টাকা। ফলে খুচরা বাজারে এর প্রভাব পড়েছে। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">ছাবেদুল ইসলাম নামের এক ইজি বাইকচালক বলেন, বাজারে এখন চাল কিনতে যেতেই ভয় লাগে।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">নওগাঁ জেলা চালকল মালিক গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক ফরহাদ হোসেন চকদার বলেন, বাজারে চালের আমদানি কম। সরকার যদি চাল আমদানি করে, তাহলে এমনিতেই দাম কমে যাবে। উৎপাদন কম হওয়ায় প্রয়োজনমতো ধান পাওয়া যাচ্ছে না। ফলে হাটগুলোতে কে কত দরে কিনতে পারে, তার প্রতিযোগিতা চলছে।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">কুষ্টিয়া : গত ১৫ দিনের ব্যবধানে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম চালের মোকাম কুষ্টিয়ার খাজানগরে সব ধরনের চালের দাম দুই দফায় কেজিতে চার থেকে আট টাকা বেড়েছে। আর খুচরা বাজারে মিনিকেট নামধারী চালসহ সব ধরনের চিকন চালের দামও একই হারে বেড়েছে। আমনের ভরা মৌসুমে চালের এই দাম বাড়ার পরিপ্রেক্ষিতে কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক গত ১৮ ডিসেম্বর চালকল মালিকদের ডেকে বৈঠক করেন। সেখানে চালকল মালিকরা বাজারে ধানের দাম বাড়ার কারণে চালের দাম বেড়েছে বলে দাবি করলেও জেলা প্রশাসকের অনুরোধে মিল মালিকরা ১৫ দিনের জন্য সব ধরনের চালের দাম কেজিতে এক টাকা কমানোর ঘোষণা দিয়েছিলেন। কিন্তু সেই ১৫ দিন পার হওয়ার আগেই মিল মালিকরা ৩০ ডিসেম্বর সব ধরনের চালের দাম কেজিতে আরো চার টাকা বাড়িয়ে দেন। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">জেলা চালকল মালিক সমিতির একাংশের সাধারণ সম্পাদক জয়নাল আবেদিন প্রধান কালের কণ্ঠকে বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">চালের দাম বাড়লেই আপনারা মিল মালিকদের দোষারোপ করেন। বাজারে যে ধান পাওয়া যাচ্ছে না বা বেশি দামে ধান কিনতে হচ্ছে, সেটা তো আপনারা দেখেন না। গত ১৫ দিনে সব ধরনের ধানের দাম মণে ৩০০ থেকে ৩২০ টাকা বেড়েছে। তা-ও পাওয়া যাচ্ছে না।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বগুড়া : বগুড়ার বাজারগুলোতেও চালের দামে অস্থিরতা।  </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">জেলা শহরের রাজাবাজারের পাইকারি চাল বিক্রেতারা বলছেন, পাইকারিতেই এক সপ্তাহে প্রতি কেজি চালে দাম বেড়েছে প্রায় তিন থেকে ছয় টাকা। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">কৃষি বিপণন অফিসের মতে, মিলারদের কাছে পর্যাপ্ত চাল মজুদ আছে। অযৌক্তিকভাবে বাড়ছে চালের বাজার।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বগুড়া চারমাথা গোদারপাড়া বাজারের মেসার্স শাহ চাল ভাণ্ডারের স্বত্বাধিকারী ও জেলা চাল ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি শাহ মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ জানান, বাজারে অস্থিরতা ঠেকাতে কর্তৃপক্ষের সঠিক তদারকি প্রয়োজন।  </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">দুপচাঁচিয়া মিল মালিক সমিতির সভাপতি মোবারক আলী এবং উপজেলা বণিক সমিতির সভাপতি শামছুদ্দিন আহমেদ জানান, অসৎ ইচ্ছায় বড় বড় প্রতিষ্ঠান হাজার হাজার টন চাল কিনে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করেছে। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">[প্রতিবেদনে তথ্য দিয়েছেন নিজস্ব প্রতিবেদক কুষ্টিয়া ও বগুড়া এবং নওগাঁ প্রতিনিধি] </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"> </p> <p style="text-align:left"> </p>