তরুণদের বিশ্বনেতা ড. মুহাম্মদ ইউনূস

বিশেষ প্রতিনিধি
বিশেষ প্রতিনিধি
শেয়ার
তরুণদের বিশ্বনেতা ড. মুহাম্মদ ইউনূস
ড. মুহাম্মদ ইউনূস

চুরাশিতেও টগবগে তারুণ্যে ভরপুর তিনি। এখনো প্রাণবন্ত, কর্মমুখর। বয়সের ভারে ন্যুব্জ না হয়ে বরং তিনি তারুণ্যকে অবগাহন করেছেন। তারুণ্যের শক্তিতে বিশ্বাসী বলেই এখনো তিনি নিজেই একজন টগবগে তরুণ।

এ জন্যই সৃজনশীলতা আর উদ্ভাবনীতে ভরপুর তিনি। সারাক্ষণ পৃথিবীর কল্যাণ নিয়ে ভাবেন। এখন তিনি বাংলাদেশের দায়িত্বে। তিনি ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
শুধু বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা নন, তিনি বিশ্ব তারুণ্যের আইকন। তরুণদের বিশ্বনেতা। ড. মুহাম্মদ ইউনূসের দর্শনের মূল ভিত্তি হলোতারুণ্যের অফুরন্ত শক্তিকে কাজে লাগানো। তিনি বিশ্বাস করেন, তরুণদের মেধা, চিন্তা, সৃষ্টিশীলতা ও উদ্ভাবনকে কাজে লাগালেই বিশ্ব বিকশিত হবে।
যুদ্ধ, হানাহানি, জলবায়ুর ঝুঁকি, দারিদ্র্য থেকে মুক্তি পেতে দরকার তরুণদের জন্য সুযোগ সৃষ্টি, তাঁদের নীতিনির্ধারণে যুক্ত করা। তরুণদের জন্য সুযোগ সৃষ্টির লক্ষ্যে সারা জীবন কাজ করে যাচ্ছেন ড. ইউনূস। ড. মুহাম্মদ ইউনূস যা কিছু করেছেন, যা কিছু ভেবেছেন, সব কিছু তারুণ্যের স্বপ্নকে ঘিরে। আর এখন দেশ পরিচালনায় তরুণদের সামনে এনে সারা বিশ্বের জন্য উদাহরণ সৃষ্টি করলেন শান্তিতে নোবেলজয়ী এই প্রাজ্ঞজন। আগামী দিনে বিশ্ব বদলের মডেল হবে বাংলাদেশ।

যখন বাংলাদেশ এক কঠিন সময়ে, স্বৈরাচারের জগদ্দল পাথরের পৃষ্ঠে দেশের জনগণ, মুক্তির পথ খুঁজে না পাওয়ায় হতাশা সবার মধ্যে, ঠিক সেই সময় বাংলাদেশের তারুণ্যের এক অভূতপূর্ব জাগরণ হলো। জুলাই বিপ্লব আসলে তারুণ্যের বিপ্লব, তাদের সম্মিলিত বিক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ। প্রচলিত ঘুনে ধরা ব্যবস্থা, দুর্নীতি, অনিয়ম, স্বেচ্ছাচারিতা আর ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে তারুণ্যের প্রতিবাদ। এই প্রতিবাদের ভাষা, তরুণদের স্বপ্ন এবং আকাঙ্ক্ষা অনেকেই বুঝতে পারেননি, এখনো পারছেন না অনেকে। কিন্তু বুঝতে পেরেছিলেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। আর এ কারণেই তিনি তরুণদের এই আন্দোলনকে মনে-প্রাণে সমর্থন জানিয়েছিলেন। তিনি জানতেন, তরুণরাই পারবেন বাংলাদেশের বুক থেকে পাথর নামাতে। অবশেষে তরুণরা যখন সাড়ে ১৫ বছরের জগদ্দল পাথরের মতো চেপে থাকা ফ্যাসিবাদের কবল থেকে বাংলাদেশকে মুক্ত করেন, তখন তাঁরা একজন নেতা খুঁজছিলেন, যে নেতা তরুণদের সঙ্গে নিয়ে বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারবেন নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণের পথে। তরুণদের ভাবতে সময় লাগেনি। মুহূর্তের মধ্যে তাঁরা ঠিক করেন ড. ইউনূসই হবেন তাঁদের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা। কিন্তু প্রশ্ন হলো, এই মানুষটি নিজের মধ্যে গুটিয়ে থাকা স্বভাবের, প্রচার বিমুখ। তিনি নিজের কাজ নিয়ে মেতে থাকতে পছন্দ করেন। মানবতার কল্যাণে, বিশ্ব কল্যাণের জন্য তিনি আত্মোৎসর্গকারী এক প্রাণ। এ ধরনের রাজনীতির ডামাডোলের মধ্যে নিজেকে জড়াবেন? এর আগেও ২০০৭ সালে তাঁকে অনুরোধ জানিয়েছিলেন তৎকালীন সেনা কর্মকর্তারা। কিন্তু সেই অনুরোধ তিনি প্রত্যাখ্যান করেছিলেন। তিনি সাফ বলে দিয়েছিলেন, রাজনীতি আমার কাজ নয়, আমার কাজ যেটা মানুষের কল্যাণ, সেটা আমি করছি। কিন্তু এবার তিনি মুখ ফিরিয়ে নিতে পারলেন না। না বলতে পারলেন না। এর প্রধান কারণ হলোতারুণ্যের প্রতি তাঁর অকৃত্রিম ভালোবাসা এবং তারুণ্যের প্রতি তাঁর বিশ্বাস। আর তরুণদের এই বিজয়কে চূড়ান্ত বন্দরে নেওয়ার জন্য অভিভাবকের দায়িত্ব নিলেন তিনি। ৮ আগস্ট বিমানবন্দরে নেমেই তিনি সরাসরি বললেন, তরুণদের মতামত নিতে হবে এবং সব কর্মকাণ্ডে তরুণদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে। তিনি বলেন, সিদ্ধান্ত গ্রহণের কেন্দ্রে থাকবে তরুণরা। মূলত ড. মুহাম্মদ ইউনূসের আগ্রহের কারণেই উপদেষ্টা পরিষদে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে নেতৃত্বদানকারী বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কয়েকজন সদস্যকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। বিভিন্ন সংস্কার কমিশনে অন্তর্ভুক্ত করা হয় তরুণদের। এ নিয়ে অনেকেই সমালোচনা করেছেন বটে, কিন্তু শেষ পর্যন্ত এই সিদ্ধান্ত সারা বিশ্বে প্রশংসিত হয়েছে। রাষ্ট্রক্ষমতার কেন্দ্রে তারুণ্যর অবস্থান বিশ্বের জন্য এক অনন্য উদাহরণ। এটি ড. মুহাম্মদ ইউনূসের হঠাৎ করে কোনো সিদ্ধান্ত নয়, বরং সারা জীবন তিনি যে বিশ্বাস এবং চিন্তাকে লালন করেছেন, তারই প্রায়োগিক রূপ। ড. মুহাম্মদ ইউনূস সারা জীবন তারুণ্যের শক্তিতে বিশ্বাস করেছেন। তরুণদের ওপর নির্ভর করতে চেয়েছেন। তিনি তাঁর বক্তৃতাগুলোতে বলেছেন, তরুণরা এই পৃথিবীকে বদলে দেবে। ড. মুহাম্মদ ইউনূসের একটি কথা সারা বিশ্বে অত্যন্ত জনপ্রিয়। তিনি সব সময় বলে থাকেন, আমাদের চিন্তা-ভাবনাগুলো সেকেলে প্রচলিত, কিন্তু তরুণরা নতুন ভাবনা নিয়ে আসে, নতুন উদ্ভাবন নিয়ে আসে এবং সেটি পৃথিবীকে বদলে দিতে পারে। ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কর্মযজ্ঞে তরুণদের প্রতি রয়েছে এক ধরনের নির্ভরতা এবং অগাধ বিশ্বাস। তিনি তরুণদের সম্মান দেন। তাঁদের চিন্তা-ভাবনাগুলো অনুধাবন করেন। তাঁদের মতামতকে গুরুত্ব দেন। একটি নতুন চিন্তাকে স্বাগত জানান।

ড. মুহাম্মদ ইউনূস তাঁর সব কর্মকাণ্ডের কেন্দ্রে রেখেছেন তরুণদের। তিনি সব সময় বিশ্বাস করেন, তরুণরাই পারেন, তরুণরাই পারবেন। আর এ কারণেই তিনি হয়ে উঠেছেন বিশ্ব তারুণ্যের কণ্ঠস্বর। কারণ তিনি তরুণদের ভাষা পড়তে পারেন, তাঁদের চিন্তাকে মূল্যায়ন করেন। বিশ্বের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে তরুণরা জ্ঞানী, গুণী, বিজ্ঞজন এবং সমাজের বিভিন্ন ক্ষেত্রে সফল ব্যক্তিদের বক্তব্য শুনতে চান নানা উপলক্ষে। আর সেই আগ্রহের তালিকায় সবার ওপরে আছেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। বিশ্বের ৬০টির বেশি বিশ্ববিদ্যালয়ে এখন সামাজিক ব্যবসা ক্লাব রয়েছে। বিশ্বের এমন কোনো প্রান্ত নেই, যেখানে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ড. মুহাম্মদ ইউনূস বক্তব্য দেননি। বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে তাঁকে আচার্য পদে সম্মানিত করা হয়েছে। বেশ কটি বিশ্ববিদ্যালয়ের তিনি ভিজিটিং প্রফেসর। ড. মুহাম্মদ ইউনূস যে তরুণদের আইকন, বিশ্ব তরুণদের নেতা, তার প্রমাণ পাওয়া যায় বিশ্বে চার হাজারেরও বেশি সামাজিক ব্যবসার ল্যাব প্রতিষ্ঠিত হওয়ার মধ্য দিয়ে, যা তরুণদের দ্বারাই পরিচালিত। মূলত ড. মুহাম্মদ ইউনূসের ক্ষুদ্রঋণ কার্যক্রম থেকে সামাজিক ব্যবসা, সামাজিক ব্যবসা থেকে তিন শূন্য তত্ত্ব সবই তরুণদের ঘিরে।

১৯৭৪ সালে যখন তিনি ক্ষুদ্রঋণ কার্যক্রম শুরু করেছিলেন, তখন তিনি তরুণ ছিলেন এবং নিজের ওপর আস্থা রেখেছিলেন। আমরা যদি গ্রামীণ ব্যাংকের কাঠামো বিশ্লেষণ করি তাহলে দেখব, এখানে তারুণ্যের উদ্দীপনা এবং তারুণ্যের স্ফুরণ। তরুণরাই সৃজনশীল, তাঁরা নতুন ভাবনা ভাবতে পারেন, তাঁরা বৃত্তের বাইরে গিয়ে নতুন কোনো পরিকল্পনা গ্রহণ করতে পারেন। সমাজ ও রাষ্ট্রের জঞ্জাল, আবর্জনা পরিষ্কার করতে পারেন। এ জন্যই তরুণদের রাষ্ট্র পরিচালনার নেতৃত্বে আনার পক্ষে ড. ইউনূস।

ড. ইউনূসের সামাজিক ব্যবসা কার্যক্রম মূলত তরুণনির্ভর। একটি কথা শান্তিতে নোবেলজয়ী এই অর্থনীতিবিদ সব সময় বলেন, তা হলো—‘তরুণরা চাকরি খুঁজবে না, তারা চাকরি দেবে। তারা একেকজন উদ্যোক্তা হবে। এই উদ্যোক্তা হওয়ার তত্ত্ব এবং উদ্যোক্তার মাধ্যমে সামাজিক ব্যবসার বিকাশই যে বিশ্বের অর্থনীতিকে বদলে দিতে পারে তা আজ সবাই স্বীকার করছেন।

ড. মুহাম্মদ ইউনূসের চিন্তা-ভাবনা সুদূরপ্রসারী, দূরদৃষ্টি সম্পন্ন। যার জন্য সাদা চোখে এই ভাবনাগুলো বোঝা যায় না। ড. ইউনূস বিশ্বাস করেন, তারুণ্যের কর্মশক্তি, তাঁদের উদ্দীপনা, তাঁদের সাহস এবং প্রবীণদের অভিজ্ঞতা মিলেমিশে একটি সুন্দর পৃথিবী বিনির্মাণ সম্ভব। সেই সুন্দর পৃথিবীর জন্য তিনি স্বপ্ন দেখেন এবং সেই স্বপ্ন যাত্রায় তিনি একজন বীর লড়াকু যোদ্ধা। এই লড়াইয়ে তিনি অনেক বিজয় অর্জন করেছেন। শুধু বাংলাদেশে নয়, বিশ্বের তরুণসমাজ এখন নানাভাবে হতাশাগ্রস্ত।

কিন্তু ড. মুহাম্মদ ইউনূস বাংলাদেশের ক্ষেত্রে যেন এ ব্যাপারে অনবদ্য সুযোগ পেয়েছেন। তিনি দায়িত্ব গ্রহণের পর বারবার তরুণদের উদ্দীপ্ত করছেন, তরুণদের সুযোগ সৃষ্টি করেছেন। তাঁদের মতামতকে রাষ্ট্রীয় সিদ্ধান্ত গ্রহণে যুক্ত করেছেন। রাষ্ট্রের নীতিনির্ধারণী জায়গায় এনেছেন তরুণদের। আমরা এখন অনেক কিছুই নতুন দেখছি। নতুনকে গ্রহণ করতে আমাদের এক ধরনের অনভ্যস্ততা থাকে, থাকে অনীহা। কিন্তু এটিই হবে আগামীর বাংলাদেশের ভিত্তি। অভিজ্ঞতা এবং তারুণ্যের সৃজনশীলতার মেলবন্ধনই নতুন করে বাংলাদেশ বিনির্মাণ হচ্ছে সবার অলক্ষ্যে। এর ফল আমরা পাব আরো পরে।

ড. ইউনূসের নিজের কোনো রাজনৈতিক অভিপ্রায় নেই। কিন্তু তিনি মনে করেন, বাংলাদেশকে এগিয়ে নিতে গেলে তারুণ্যের সৃষ্টি সুখের উল্লাস প্রয়োজন। আর এ কারণেই তরুণদের রাজনৈতিক দলের উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন। বয়সের ব্যারিকেড উপড়ে ফেলে তরুণদের অনুধাবন করা এবং তরুণদের হৃদস্পন্দন বুঝতে পারা একটি অনন্য যোগ্যতা। নতুন চিন্তা, নতুন পরিকল্পনাকে যাঁরা স্বাগত জানাতে পারেন, পরিবর্তনে যাঁরা ভয় পান না, তাঁরাই আধুনিক অগ্রসর মানুষ। ড. ইউনূস তেমনি একজন অগ্রসর মানুষ। তিনি নতুন সম্ভাবনার দুয়ার খুলতে সব সময় আগ্রহী। তরুণরা সব সময় পথ দেখান। আমরা যদি বাংলাদেশের ইতিহাস বিশ্লেষণ করি তাহলে দেখব, ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন, একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধ, নব্বইয়ের গণ-আন্দোলন এবং চব্বিশের বিপ্লবসবই তারুণ্যের জয়গাথা। কাজেই তরুণরা যে পারেন সেটি নতুন করে পরীক্ষার কিছুই নেই। বিশ্বকে বদলে দিতে পারেন তরুণরা। কিন্তু তাঁদের দিতে হবে সেই সুযোগ। সেই সুযোগ সৃষ্টি করে দেওয়ার এক পথপ্রদর্শক হলেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। আর এ কারণেই সারা বিশ্বে তরুণরা যখন এক আদর্শ হাতড়ে বেড়ান, তাঁদেরকে যখন কেউ আশাবাদী করে না, ভরসা দেয় না, তাঁদের দমিয়ে রাখতে চায়, ঠিক সে সময় একটি মুখের প্রতিছব্বি তাঁদের উদ্বেলিত করে। আর তিনি হলেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। যিনি জীবনভর তারুণ্যের অর্গল মুক্তির গান গেয়ে যাচ্ছেন। তরুণদের মেধা, চিন্তা ও কর্মশক্তিতে যাঁর আস্থা সব সময়। আর সে কারণেই তিনি এখন বিশ্ব তারুণ্যের কণ্ঠস্বর, তারুণ্যের বিশ্বনেতা। বাংলাদেশে তরুণরা আজ চালকের আসনে। সামনে এটিই হবে বিশ্ব মডেল।

 

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার মামলা

খালাসের রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের লিভ টু আপিল

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
খালাসের রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের লিভ টু আপিল

দুই দশক আগে ঢাকার বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের সমাবেশে গ্রেনেড হামলা মামলার বিচারিক আদালতের রায় অবৈধ ঘোষণা করা হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিলের অনুমতি চেয়ে পৃথক আবেদন (লিভ টু আপিল) করেছে রাষ্ট্রপক্ষ।

এসব আবেদন গতকাল বুধবার আপিল বিভাগের চেম্বার আদালতের কার্যতালিকায় শুনানির জন্য ছিল বলে সাংবাদিকদের জানান আসামিপক্ষের আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির। এ মামলায় সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুত্ফুজ্জামান বাবরের আইনজীবী ছিলেন তিনি। 

গত বছর ১ ডিসেম্বর বিচারিক আদালতের রায় অবৈধ ঘোষণা করে রায় দেন বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি সৈয়দ এনায়েত হোসেনের হাইকোর্ট বেঞ্চ।

রায়ে বলা হয়, আইনের ভিত্তিতে মামলার অভিযোগ গঠন করা হয়নি। ফলে বিচারিক আদালতের বিচার অবৈধ। তাই বিচারিক আদালতের ডেথ রেফারেন্স নাকচ এবং আসামিদের আপিল মঞ্জুর করা হলো। এ রায়ের ফলে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুত্ফুজ্জামান বাবরসহ বিচারিক আদালত যাঁদের সাজা দিয়েছিলেন, তাঁদের সবাইকে খালাস দেওয়া হয়।

খালাসের এ রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করা উচিত বলে সেদিন মন্তব্য করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান।

২০০৪ সালের ২১ আগস্ট আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার সমাবেশে গ্রেনেড হামলা চালিয়ে ২৪ জনকে হত্যা করা হয়। আওয়ামী লীগের দাবি, এ হামলা ছিল রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। এই হামলায় আওয়ামী লীগের মহিলাবিষয়ক সম্পাদক, সাবেক রাষ্ট্রপতি (প্রয়াত) জিল্লুর রহমানের স্ত্রী আইভি রহমানসহ ২৪ জন নিহত হন।

আহত হন দলের তিন শতাধিক নেতাকর্মী। ঘটনার পরদিন মতিঝিল থানায় হত্যা ও বিস্ফোরক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে দুটি মামলা করা হয়। ২০১৮ সালের ১০ অক্টোবর মামলার রায় হয়। রায়ে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুত্ফুজ্জামান বাবর, উপমন্ত্রী আবদুস সালাম পিন্টুসহ ১৯ জনের মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। এ ছাড়া বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এবং বিএনপির চেয়ারপারসনের তৎকালীন রাজনৈতিক সচিব প্রয়াত হারিছ চৌধুরীসহ ১৯ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ দেন বিচারিক আদালত।
সেই সঙ্গে ১১ পুলিশ ও সেনা কর্মকর্তাকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেওয়া হয়। এই রায়ের বিরুদ্ধে আসামিদের আপিল-জেল আপিল ও ডেথ রেফারেন্সের ওপর শুনানির পর সব আসামিকে খালাস দিয়ে রায় দেন উচ্চ আদালত।

 

মন্তব্য
সংস্কারে এখনো লিখিত মতামত দেয়নি বিএনপিসহ বড় দলগুলো

রাজনৈতিক দলের সঙ্গে ঐকমত্য কমিশনের সংলাপ শুরু আজ

নিখিল ভদ্র
নিখিল ভদ্র
শেয়ার
রাজনৈতিক দলের সঙ্গে ঐকমত্য কমিশনের সংলাপ শুরু আজ

সংস্কার কমিশনগুলোর করা সুপারিশ চূড়ান্ত করতে আজ বৃহস্পতিবার থেকে আনুষ্ঠানিক সংলাপ শুরু করছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। প্রথম দিনের সংলাপে অংশ নেবে লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এলডিপি)। লিখিত মতামত পাওয়ার পর অন্য দলগুলোকে সংলাপে ডাকবে কমিশন। তবে এখনো বিএনপিসহ বড় রাজনৈতিক দলগুলোর অনেকে লিখিত মতামত জমা দেয়নি বলে জানা গেছে।

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের পক্ষে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ ও সমন্বয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার কালের কণ্ঠকে জানান, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সুপারিশগুলো চূড়ান্ত করতে বৃহস্পতিবার থেকে আনুষ্ঠানিক সংলাপ শুরু হচ্ছে। সংসদ ভবনের এলডি হলে এই সংলাপে প্রথম দিনে অংশ নেবে এলডিপি। আগামী শনিবার দুটি এবং রবিবার একটি দল সংলাপে অংশ নেবে। পর্যায়ক্রমে সব দলকে আমন্ত্রণ জানানো হবে।

ঐকমত্য কমিশনের চেয়ারম্যান প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনুস সংলাপে থাকছেন না। সংলাপে নেতৃত্ব দেবেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ। তিনি আরো জানান, এ পর্যন্ত ১৫টি দল মতামত জমা দিয়েছে। আজ সকাল ১০টায় লিখিত মতামত জমা দেওয়ার কথা জানিয়েছে জামায়াতে ইসলামী।
বিএনপি ও জাতীয় নাগরিক পার্টিসহ (এনসিপি) অন্য দলগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ চলছে। দ্রুতই তারা মতামত জমা দেবে বলে জানিয়েছে। দ্রুততম সময়ের মধ্যে লিখিত মতামত জানানো হবে বলে জানিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ। কালের কণ্ঠকে তিনি বলেন, জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের দেওয়া সংস্কার প্রস্তাবগুলোর ওপর আমাদের দলীয় মতামত প্রস্তুত করা হচ্ছে। যুগপত্ আন্দোলনের শরিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা সাপেক্ষে যেকোনো দিন সেগুলো কমিশনে জমা দেওয়া হবে।
তিনি আরো বলেন, মতামতের জন্য যে ছক করা কাগজ (স্প্রেডশিট) দেওয়া হয়েছে, তাতে মতামত দিলে স্পষ্ট হওয়া যাবে না। বরং বিভ্রান্তি ছড়াবে। সে কারণে আমরা আপত্তি জানিয়েছি। বিভ্রান্তি এড়াতে বিস্তারিত আকারে মতামত জানানো হবে।

গণতন্ত্র মঞ্চের অন্যতম সংগঠক ও বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, ঐকমত্য কমিশনের পক্ষ থেকে সংস্কার বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশগুলোর মতামত চাওয়া হয়েছে। কমিশনের সুপারিশগুলো নিয়ে আমাদের পার্টি ফোরামে আলোচনা হয়েছে। আমরা দলীয়ভাবে মতামত দেওয়ার বিষয়ে এরই মধ্যে কমিশনকে জানিয়েছি। জোটগতভাবে সংলাপে অংশগ্রহণের প্রস্তুতির কথা জানিয়েছেন বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাধারণ সম্পাদক ও বাম গণতান্ত্রিক জোটের শীর্ষ নেতা রুহিন হোসেন প্রিন্স। কালের কণ্ঠকে তিনি বলেন, কমিশনের পক্ষ থেকে পাঠানো সুপারিশগুলোর বিষয়ে লিখিতভাবে মতামত জানানো হবে।

সূত্র মতে, জাতীয় ঐকমত্য কমিশন গত ১৫ ফেব্রুয়ারি থেকে কাজ শুরু করে। তারা সংবিধান, নির্বাচনব্যবস্থা, বিচার বিভাগ, জনপ্রশাসন ও দুর্নীতি দমন কমিশনের দেওয়া প্রতিবেদনগুলো থেকে গুরুত্বপূর্ণ ১৬৬টি সুপারিশ চিহ্নিত করে। এর মধ্যে সংবিধান সংস্কার সংক্রান্ত ৭০টি, নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার বিষয়ে ২৭টি, বিচার বিভাগ সংক্রান্ত ২৩টি, জনপ্রশাসন-সংক্রান্ত ২৬টি এবং দুর্নীতি দমন কমিশন সংক্রান্ত ২০টি সুপারিশ রয়েছে। ওই সুপারিশগুলো ছক আকারে বিন্যস্ত করা হয়েছে। ওই ছকগুলো গত ৬ মার্চ ৩৪টি রাজনৈতিক দল ও জোটের কাছে পৌঁছে দেওয়া হয়। এর মধ্যে জামায়াতে ইসলামী, এনসিপিসহ ১২টি দল নিবন্ধিত নয়। নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের সংখ্যা ৪৯। কমিশনের পক্ষ থেকে আগামী ১৩ মার্চের মধ্যে রাজনৈতিক দল এবং জোটগুলোকে তাদের মতামত জানানোর জন্য বলা হয়। তবে নির্ধারিত সময়ে সাতটি দল মতামত দিলেও পরবর্তী সময়ে আরো আটটি দল মতামত জমা দিয়েছে। অন্যরা অতিরিক্ত সময় নিয়েছে।

কমিশন সূত্র জানায়, ঐকমত্য কমিশনের চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে কমিউনিস্ট লীগ, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টি, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক পার্টি, বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি (বিজেপি), ইনসানিয়াত বিপ্লব বাংলাদেশ, হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ ও বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টির পক্ষ থেকে এখনো কিছুই জানানো হয়নি। এ পর্যন্ত মতামত জমা দেওয়া ১৫টি দল হলো এলডিপি, খেলাফত মজলিস, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ, জাকের পার্টি, ভাসানী অনুসারী পরিষদ, জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলন (এনডিএম), আমজনতার দল, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জেএসডি), বাংলাদেশ লেবার পার্টি, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস, আমার বাংলাদেশ পার্টি (এবি পার্টি), নাগরিক ঐক্য, জাতীয় গণফ্রন্ট ও বাংলাদেশ জাসদ।

মতামত দেওয়ার জন্য সময় নিয়েছে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, এনসিপি, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, গণফোরাম, গণসংহতি আন্দোলন, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (মার্ক্সবাদী), বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ), বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, গণ অধিকার পরিষদ (জিওপি), জাতীয় মুক্তি কাউন্সিল, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), ১২ দলীয় জোট, গণতান্ত্রিক বাম ঐক্য ও জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট।

 

মন্তব্য
অর্থ উপেদষ্টা

দেশীয় শিল্প সুরক্ষার বাজেট দেওয়া হবে

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
দেশীয় শিল্প সুরক্ষার বাজেট দেওয়া হবে
সালেহউদ্দিন আহমেদ

আগামী অর্থবছরের বাজেটে বেসরকারি খাতে বিনিয়োগ ও দেশীয় শিল্প সুরক্ষায় নজর দেওয়া হবে। পাশাপাশি সামাজিক সুরক্ষা ভাতা বাড়ানো হবে বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ।

আগামী বাজেটে ব্যক্তি খাতের করমুক্ত আয়সীমা বাড়িয়ে পাঁচ লাখ টাকার করার প্রস্তাব দিয়েছেন দৈনিক পত্রিকার সম্পাদক ও টেলিভিশনের শীর্ষ নির্বাহীরা। একই সঙ্গে বাজেটে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ, বাজেট বক্তব্যের কলেবর কমানো, বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থান বৃদ্ধি এবং নির্ভুল ডাটা-পরিসংখ্যান তৈরির উদ্যোগ নেওয়ার সুপারিশ করেছেন তাঁরা।

গণকাল বুধবার সচিবালয়ে অর্থ উপদেষ্টার দপ্তরে অনুষ্ঠিত এক প্রাক-বাজেট আলোচনায় তাঁরা এসব সুপারিশ তুলে ধরেন। সভা পরিচালনা ও শুভেচ্ছা বক্তব্যের সময় অর্থসচিব ড. খায়েরুজ্জামান বলেন, মূল্যস্ফীতি ৮ শতাংশে নেমে আসবে আগামী জুনে। আমাদের রপ্তানি ও রেমিট্যান্স বাড়ছে। আলোচনায় সভাপতিত্ব করেন ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ।

অর্থ উপদেষ্টা বলেন, আমরা এমন একটি বাজেট দিয়ে যেতে চাই যেটি পরবর্তী সময়ে রাজনৈতিক সরকার যে-ই আসুক, যেন ছুড়ে ফেলে দিতে না পারে, আমরা সেভাবেই একটি বাজেট দিতে চাই। আগামী বাজেটে আমরা প্রবৃদ্ধির দিকে নজর দিচ্ছি না, বরং আমরা মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণকেই প্রধান অগ্রাধিকার হিসেবে দেখছি। আমরা দেশীয় শিল্প সুরক্ষার একটি বাজেট দিতে চাই। মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ এবং উৎপাদনমুুখিতাকে গুরুত্ব দেওয়া হবে।

প্রাক-বাজেট আলোচনায় ফিন্যানশিয়াল এক্সপ্রেসের সম্পাদক শামসুল হক জাহিদ বলেন, সামনেই তো নির্বাচন। আর জুনে নতুন বাজেট। ফলে আপনারা যে বাজেট দিতে যাচ্ছেন সেটা পরবর্তী সরকারের জন্য কতটা সহায়ক হবে? যুগান্তর সম্পাদক আবদুল হাই সিকদার বলেন, বিপর্যস্ত অর্থনীতি সামলাতে আপনি সফল হয়েছেন। এ জন্য ধন্যবাদ আপনি পেতেই পারেন। আগামী বাজেট সত্যিই আপনার জন্য চ্যালেঞ্জ।

কেননা অনেক দিন ধরেই মূল্যস্ফীতি। এটা আপনি কিছুটা কমিয়ে এনেছেন। এবারের রমজানে দ্রব্যমূল্য নিয়ে যে ধরনের ভয় বা আশঙ্কা করা হয়েছিল, তা হয়নি। অনেকাংশে বাজার স্থিতিশীল রয়েছে। আসছে বাজেটে করমুক্ত আয়সীমা পাঁচ লাখ টাকা করার প্রস্তাব করেন তিনি। এ ছাড়া সামাজিক নিরাপত্তা ও সুবিধাভোগীর সংখ্যা বাড়ানো, টিসিবি কার্যক্রমের আওতা ও বাজেট বাড়ানো, আবার রেশনিং সিস্টেম ফিরিয়ে আনা যায় কি না সে বিষয়ে উদ্যোগ নেওয়ার সুপারিশ করেন তিনি।

সিনিয়র সাংবাদিক শওকত হোসেন মাসুম বলেন, একটি অর্থবছরে প্রকৃতপক্ষে কতসংখ্যক কর্মসংস্থান হয় সে হিসাবটা কখনো আমরা পাইনি। এবার আপনারা সে হিসাব দেবেন বলে আমাদের প্রত্যাশা। ১৫ বছরে গণমানুষের প্রকৃত আয় বাড়েনি। আপনারা একটা মেকানিজম করে এই হিসাবটা বের করুন যে এক অর্থবছরে কতসংখ্যক কর্মসংস্থান হয়। সবখানে সংস্কার হচ্ছে, আপনারা বাজেট বত্তৃদ্ধতার আকারে সংস্কার আনুন। ঢাউস আকৃতির বাজেট বত্তৃদ্ধতার কোনো প্রয়োজন নেই। এটা কমিয়ে আনুন। বাস্তবমুখী বাজেট দিন। ডিজিটাল বাংলাদেশের নামে যে বাজেট দেওয়া হতো সেটা ছিল অহেতুক। বাজেট উপস্থাপনের নামে দেখানো হতো এক রকমের প্রামাণ্যচিত্র।

ইনডিপেনডেন্ট টেলিভিশনের অ্যাসোসিয়েট এডিটর শামীম জাহেদী বলেন, কালো টাকা বৈধ করার ক্ষেত্রে কর সমান হবে কি না সেটায় আপনারা নজর দেবেন। দেশে এতগুলো টেলিভিশন আছে, দেড় হাজার কেবল অপারেটর আছে, সারা দেশে সাড়ে তিন কোটি বাড়ি আছে। এর ৫৪ শতাংশ বাড়িতে টেলিভিশন দেখা যায়। প্রত্যেকে ৩০০/৫০০ টাকা দিয়ে সংযোগ নেন। এখানকার টাকাটা আমরা এক টাকাও পাই না। সরকার পায় কি না আমি জানি না। এখানে একটা ব্যবস্থা নেওয়া দরকার। তাহলে আমরা কিছু টাকা পাব। সরকারও রাজস্ব পাবে।

সময়ের আলোর ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক শাহনেওয়াজ করিম বলেন, সবার জন্য সুখবর ও স্বস্তিদায়ক বাজেট দিন। করদাতাদের জন্য ট্যাক্স কার্ড প্রবর্তন করা যায় কি না ভেবে দেখুন। এটা করতে পারলে তাঁরা সম্মানিত বোধ করবেন।

ডিবিসি নিউজের সম্পাদক লোটন একরাম বলেন, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের প্রতিফলন বাজেটে থাকবে বলে আমার প্রত্যাশা। করমুক্ত আয়সীমা বাড়িয়ে পাঁচ লাখ করা হোক। বেকারত্ব কমনোর উদ্যোগ নেওয়া হোক। এ জন্য এসএমই উদ্যোক্তাদের যথেষ্ট সহায়তা দেওয়া প্রয়োজন। সামাজিক নিরাপত্তা খাতের ভাতা বাড়ানো প্রয়োজন। নয়তো বন্ধ করে দিন। এটা মিনিমাম পাঁচ হাজার টাকা হওয়া উচিত। টেলিভিশনে কোনো ওয়েজ বোর্ড নেই। একটি ওয়েজ বোর্ড এখানেও থাকা প্রয়োজন। ভারতীয় চ্যানেলগুলো এখানে দেদার চলছে, আমাদের কোনো চ্যানেল ভারতে চলে না। এখানেও কাজ করা প্রয়োজন।

এটিএন বাংলার হেড অব নিউজ মনিউর রহমান বলেন, করমুক্ত আয়সীমা পাঁচ লাখ করা হোক। বাজেট বাস্তবায়ন কতটুকু হলো সেটা দেখা দরকার।

মন্তব্য
নাহিদ ইসলাম

আওয়ামী লীগ নির্বাচনে আসুক, আমরা তা প্রত্যাশা করি না

কালের কণ্ঠ ডেস্ক
কালের কণ্ঠ ডেস্ক
শেয়ার
আওয়ামী লীগ নির্বাচনে আসুক, আমরা তা প্রত্যাশা করি না
মো. নাহিদ ইসলাম

নির্বাচনে আওয়ামী লীগের অংশগ্রহণ চান না বলে জানিয়েছেন জাতীয় নাগরিক পার্টি-এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। তিনি বলেন, আমরা চাই না আওয়ামী লীগ নির্বাচনে অংশ নিক। প্রথমত, দলের ভেতরে যারা অন্যায়ের জন্য দায়ী, তাদের বিচারের মুখোমুখি করতে হবে। গত ১৭ মার্চ দ্য ডিপ্লোম্যাটকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে নাহিদ ইসলাম আরো বলেছেন, নতুন দলের চ্যালেঞ্জ নির্বাচন এবং আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক ভবিষ্যত্ নিয়ে।

আন্দোলন থেকে সরকারে, তারপর আবার রাজনীতিতে অভিজ্ঞতা জানতে চাইলে বাংলাদেশ ডিপ্লোম্যাটকে নাহিদ ইসলাম বলেন, একটি সরকারকে বাইরে থেকে দেখা আর ভেতর থেকে দেখা সম্পূর্ণ আলাদা অভিজ্ঞতা। অন্তর্বর্তী সরকার যখন দায়িত্ব নেয়, তখন বাংলাদেশের জন্য এটি অত্যন্ত সংকটপূর্ণ সময় ছিল। এটি আমার জন্যও চ্যালেঞ্জিং ছিল। আমি সময়ের দাবিতেই পদত্যাগ করে মূলধারার রাজনীতিতে ফিরেছি।

এখন আমি এই অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে ভবিষ্যত্ রাজনৈতিক পথচলা গঠন করতে চাই। নতুন রাজনৈতিক দল চালানো অবশ্যই কঠিন, তবে আমি প্রস্তুত।

নিজের দল এনসিপি সম্পর্কে নাহিদ বলেন, এনসিপি একটি মধ্যপন্থী রাজনৈতিক দল এবং আমরা এই আদর্শ বজায় রাখতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আমাদের লক্ষ্য হলো নতুন কণ্ঠস্বর, বিশেষ করে তরুণ এবং সব সামাজিক শ্রেণির ব্যক্তিদের জন্য জায়গা তৈরি করা, যারা বছরের পর বছর ধরে ঐতিহ্যবাহী রাজনীতি থেকে বাদ পড়েছে।

জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে সম্পৃক্ততা প্রসঙ্গে নাহিদ বলেন, এনসিপি এবং জামায়াতে ইসলামী সম্পূর্ণ ভিন্ন রাজনৈতিক দল এবং আমাদের এজেন্ডাও সম্পূর্ণ ভিন্ন। আমাদের মধ্যে কোনো সংযোগ নেই। কিছু দাবিতে মিল থাকতে পারে, যেমন আমরা সাংবিধানিক সংস্কার ও গণপরিষদ গঠনের পক্ষে। কিন্তু আমাদের আদর্শিক অবস্থান ভিন্ন এবং উগ্রবাদের সঙ্গে আমাদের কোনো সম্পর্ক নেই।

নির্বাচন প্রসঙ্গেও কথা বলেছেন এনসিপি প্রধান নাহিদ ইসলাম।

তিনি বলেন, আমাদের প্রধান লক্ষ্য হলো আগের শাসনামলের অপরাধীদের বিচারের আওতায় আনা। দেশে একটি স্থিতিশীল আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিশ্চিত করা এবং একটি গণপরিষদ গঠন করা। তাই নির্বাচন এনসিপির তাত্ক্ষণিক অগ্রধিকার নয়। বর্তমানে আমরা নির্বাচনের জন্য কোনো নির্দিষ্ট সময়সীমা নির্ধারণ করছি না।

সূত্র : বাংলাদেশ ডিপ্লোম্যাট

 

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ