ঢাকা, বৃহস্পতিবার ১০ এপ্রিল ২০২৫
২৭ চৈত্র ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৬

ঢাকা, বৃহস্পতিবার ১০ এপ্রিল ২০২৫
২৭ চৈত্র ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৬

মালয়েশিয়ায় কর্মী পাঠাতে হাতিয়ে নিয়েছেন ১৪২ কোটি টাকা

তৌফিক হাসান
তৌফিক হাসান
শেয়ার
মালয়েশিয়ায় কর্মী পাঠাতে হাতিয়ে নিয়েছেন ১৪২ কোটি টাকা

রাজনীতির মাঠের পাশাপাশি জনশক্তি রপ্তানিতেও ত্রাস হয়ে উঠেছিলেন লোটাস কামাল নামে পরিচিত আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক অর্থমন্ত্রী আবু হেনা মোহাম্মদ (আ হ ম) মুস্তফা কামাল। মন্ত্রীর দায়িত্বে থেকে একই সঙ্গে চালাতেন অরবিটালস এন্টারপ্রাইজ (আরএল-১১৩) ও অরবিটালস ইন্টারন্যাশনাল (আরএল-১৪৫৭) নামের দুটি রিক্রুটিং এজেন্সি। তবে এ দুই এজেন্সির কোনোটিই তাঁর নিজের নামে ছিল না। একটি তাঁর স্ত্রী কাশমেরী কামাল ও আরেকটি মেয়ে নাফিসা কামালের নামে।

এই দুটি এজেন্সিই ছিল মালয়েশিয়া সিন্ডিকেটের অংশ, যে সিন্ডিকেটের মাধ্যমে তিনি মালয়েশিয়ায় কর্মী পাঠানোর নামে অনৈতিকভাবে ১৪২ কোটি টাকা হাতিয়ে নিতে সক্ষম হন।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সাবেক অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের স্ত্রী কাশমেরী কামাল রিক্রুটিং এজেন্সি অরবিটালস এন্টারপ্রাইজের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের দায়িত্বে ছিলেন। আর মেয়ে নাফিসা কামাল দায়িত্বে ছিলেন রিক্রুটিং এজেন্সি অরবিটালস ইন্টারন্যাশনালের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের।

জনশক্তি রপ্তানির ব্যবসায়ীরা জানান, দুটি এজেন্সি প্রথম থেকে সিন্ডিকেটের সদস্য ছিল না।

২০০৯ সালে বন্ধ হওয়ার পর ২০১৫ সালে মালয়েশিয়ায় বাজার যখন আবার চালু হয় তখন কর্মী পাঠানোর কাজ পায় ১০টি রিক্রুটিং এজেন্সি। সে সময় আওয়ামী লীগ সরকারের পরিকল্পনামন্ত্রীর দায়িত্বে মুস্তফা কামাল। মন্ত্রিত্বের প্রভাব খাটিয়ে স্ত্রী কাশমেরী কামালের রিক্রুটিং এজেন্সি অরবিটালস এন্টারপ্রাইজকে সিন্ডিকেটের অংশ করেন। সে সময় থেকে কর্মী পাঠানোর নামে অর্থ লুটের খেলায় মেতে ওঠে এই ১০ এজেন্সির সিন্ডিকেট, যার মূল হোতা ছিলেন আ হ ম মুস্তফা কামাল।

ব্যবসায়ীদের ভাষ্য, সে সময় মালয়েশিয়ায় কর্মী পাঠানোর জন্য কর্মিপ্রতি ৩৭ হাজার টাকা নির্ধারণ করেছিল সরকার। কিন্তু সিন্ডিকেটভুক্ত এজেন্সিগুলো কোনো কর্মীর কাছ থেকেই চার লাখ টাকার কম নেয়নি।

বাংলাদেশ জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো বলছে, ২০১৫ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশিদের জন্য মালয়েশিয়ার বাজার চালু ছিল। এ সময় বাংলাদেশ থেকে তিন লাখ ৪৬ হাজার ৩২৩ জন কর্মী মালয়েশিয়ায় গেছেন। এর মধ্যে কতজন কর্মী মুস্তফা কামালের এজেন্সি পাঠিয়েছিল তার হিসাব পাওয়া যায়নি।

তবে সে সময় বেশিসংখ্যক কর্মী পাঠাতে পারেনি বলে জানান জনশক্তি ব্যবসায়ীরা।

১০১ এজেন্সির সিন্ডিকেটে স্ত্রীর সঙ্গে নিয়েছিলেন মেয়েকে : ২০১৫ সালে চালু হওয়া মালয়েশিয়ার বাজার ২০১৮ সালে বন্ধ হয়ে গেলেও ২০২২ সালে আবার এই বাজার চালু হয়। সে সময় আগের ১০ এজেন্সির সিন্ডিকেটের সাতটি এজেন্সি বাদ পড়ে যায়। বাকি তিন এজেন্সির মধ্যে মন্ত্রিত্বের প্রভাবে টিকে থাকে স্ত্রী কাশমেরী কামালের নামের এজেন্সি অরবিটালস এন্টারপ্রাইজ। সে সময় ১০টি এজেন্সির পরিবর্তে ২৫টি এজেন্সি কর্মী পাঠানোর সুযোগ পাবে বলে জানায় মালয়েশিয়া সরকার। কিন্তু কোন ২৫টি এজেন্সি এই সুযোগ পাচ্ছে তা ঘোষণা করা হয় না। এ সময় ২৫ এজেন্সির সিন্ডিকেট-এর বিরুদ্ধে আন্দোলন গড়ে তোলে বঞ্চিত রিক্রুটিং এজেন্সিগুলো। তাদের আন্দোলন ও দাবির মুখে আরো ৭৫টি বেসরকারি রিক্রুটিং এজেন্সি ও সরকারি রিক্রুটিং এজেন্সি বাংলাদেশ ওভারসিজ এমপ্লয়মেন্টকে (বোয়েসেল) কর্মী পাঠানোর সুযোগ দেয় মালয়েশিয়া সরকার। এ সুযোগ কাজে লাগান সাবেক এই অর্থমন্ত্রী। মেয়ে নাফিসা কামালের নামে লাইসেন্স নেওয়া অরবিটালস ইন্টারন্যাশনালকে ৭৫ বেসরকারি রিক্রুটিং এজেন্সির সঙ্গে যুক্ত করে ফেলেন। এর ফলে ১০১ রিক্রুটিং এজেন্সির সিন্ডিকেটে দুটি এজেন্সিই হয়ে যায় আ হ ম মুস্তফা কামাল বা লেটাস কামালের।

১০ হাজারের অটো অ্যালোকেশনে ১৪২ কোটি টাকা আয় : ২০২২ সালে মালয়েশিয়ার বাজার চালু হওয়ার পর ২০২৪ সালের ৩১ মে দুর্নীতি ও অনিয়মের কারণে বন্ধ হয়ে যায় এই বাজার। এই সময়ের মধ্যে বাংলাদেশ থেকে চার লাখ ৯৫ হাজার ৪০৫ জন কর্মী মালয়েশিয়ায় পাঠানো হয়।

বিএমইটির তথ্য, এই চার লাখ ৯৫ হাজার ৪০৫ জনের মধ্যে ১০ হাজার ১০০ কর্মী পাঠিয়েছে মুস্তফা কামালের দুই এজেন্সি অরবিটালস এন্টারপ্রাইজ ও অরবিটালস ইন্টারন্যাশনাল। এজেন্সি দুটির নামে মালয়েশিয়ায় ১১ হাজার ৩৮৭ জন কর্মী পাঠানোর চাহিদাপত্র দেওয়া হয়েছিল।

জনশক্তি ব্যবসায়ীরা বলছেন, মুস্তফা কামালের দুই এজেন্সির নামে ১০ হাজার ১০০ কর্মী পাঠানোর তালিকা থাকলেও প্রকৃত তথ্য ভিন্ন। তাঁর দুই এজেন্সি থেকে ১০০-র বেশি কর্মী মালয়েশিয়ায় পাঠানো হয়নি। বাকি ১০ হাজার কর্মীর অটো অ্যালোকেশনে পাওয়া চাহিদাপত্র অন্যান্য এজেন্সির কাছে বিক্রি করা হয়। এর মাধ্যমে তিনি কর্মিপ্রতি এজেন্সিগুলোর কাছ থেকে এক লাখ ৫২ হাজার টাকা আদায় করেছেন। এই এক লাখ ৫২ হাজার টাকার মধ্যে ১০ হাজার টাকা স্বাস্থ্য পরীক্ষার নিবন্ধন, ছাড়পত্র এবং সরকারি বিভিন্ন ফি বাবদ খরচ দেখানো হয়েছে। বাকি এক লাখ ৪২ হাজার টাকা মুস্তফা কামালের পকেটেই গেছে। কর্মিপ্রতি এক লাখ ৪২ হাজার টাকা হিসাবে ১০ হাজার কর্মীর হিসাব দাঁড়ায় ১৪২ কোটি টাকা। অর্থাৎ ১০ হাজার কর্মীর অটো অ্যালোকেশনের চাহিদাপত্র বিক্রির ক্ষেত্রে তিনি ১৪২ কোটি টাকা আয় করতে সক্ষম হয়েছেন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক রিক্রুটিং এজেন্সির ব্যবসায়ী কালের কণ্ঠকে বলেন, আমিসহ আরো কয়েকটি এজেন্সির মালিক লোটাস কামালের এজেন্সির মাধ্যমে কর্মী পাঠিয়েছি। প্রত্যেক কর্মীর জন্য এক লাখ ৫২ হাজার টাকা গুনে দিয়েছি। তিনি এক টাকাও কম নেননি। টাকা কখনো তাঁর হাতে দিয়েছি, কখনো আবার তাঁর ম্যানেজারদের কাছে দিয়ে এসেছি।

মালয়েশিয়ায় কর্মী পাঠাতে সিন্ডিকেট করে অনৈতিকভাবে অতিরিক্ত অর্থ আদায় সম্পর্কে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্টারন্যাশনাল রিক্রুটিং এজেন্সিজের সাবেক যুগ্ম মহাসচিব ফখরুল ইসলাম কালের কণ্ঠকে বলেন, এই সিন্ডিকেট তারা তৈরি করেছিল তাদের পুরো আধিপত্য বিস্তার করে, যেন অর্থ লুট করতে পারে এবং সেটা মুস্তফা কামালসহ আরো অনেকে মিলে করেছেন। একজন কর্মীকে বিদেশে যেতে চার থেকে ছয় লাখ টাকা দিতে হয়েছে। এই টাকার মধ্যে প্রত্যেককে আলাদা করে এক লাখ ৫২ হাজার টাকা সিন্ডিকেটের ফি দিতে হয়েছে। এই দেড় লাখ টাকা না দিতে হলে একজন কর্মী দুই থেকে তিন লাখ টাকায় যেতে পারত।

তিনি আরো বলেন, আমরা জনশক্তি রপ্তানিকারক ব্যবসায়ীরা চাই, এই সিন্ডিকেটের মূল হোতাদের বিরুদ্ধে তদন্ত করে তাদের আইনের আওতায় আনা হোক।

 

 

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

পাল্টাপাল্টি শুল্কারোপ

যুক্তরাষ্ট্রের ১০৪%, জবাবে চীনের ৮৪%

কালের কণ্ঠ ডেস্ক
কালের কণ্ঠ ডেস্ক
শেয়ার
যুক্তরাষ্ট্রের ১০৪%, জবাবে চীনের ৮৪%

কয়েক ডজন দেশের ওপর চাপানো প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের পাল্টা শুল্ক গতকাল বুধবার থেকে কার্যকর হয়েছে। এর মধ্যে চীনের পণ্যে আরোপিত ১০৪ শতাংশ শুল্কও রয়েছে।

এদিকে চীনা পণ্যে যুক্তরাষ্ট্রের ১০৪ শতাংশ শুল্কারোপের জবাবে এবার সব ধরনের মার্কিন পণ্যে ৮৪ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়েছে চীনের অর্থ মন্ত্রণালয়। আজ বৃহস্পতিবার থেকে নতুন এই শুল্ক কার্যকর করা হবে বলে জানিয়েছে চীন সরকার।

প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ২ এপ্রিল বিশ্বের প্রায় সব দেশের পণ্যে পাল্টা শুল্ক আরোপ করেন। ওই দিন বাংলাদেশি পণ্যেও ৩৭ শতাংশ শুল্কারোপ করা হয়। ট্রাম্পের আরোপ করা শুল্কের একাংশ সেদিনই কার্যকর হয়ে যায়। বাংলাদেশসহ বাকি অংশ গতকাল থেকে কার্যকর হলো।

বিশ্বব্যাপী বাণিজ্যযুদ্ধের আঁচ

এদিকে বিশ্লেষকদের মতে এর মধ্য দিয়ে বিশ্বে পুরোদমে বাণিজ্যযুদ্ধ শুরু হয়ে গেছে। এ ছাড়া যুক্তরাষ্ট্র, চীন পাল্টাপাল্টি শুল্কারোপের এই ঘটনার মাধ্যমে দুই দেশের মধ্যে আবারও বাণিজ্যযুদ্ধ শুরু হলো বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। বৈশ্বিক অর্থনীতিতে বিষয়টি নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে বলেও মনে করছেন তাঁরা।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট কয়েকটি দেশের সঙ্গে আলোচনার প্রস্তুতি নিলেও বৈশ্বিক বাণিজ্যযুদ্ধ এড়ানো যায়নি।

ট্রাম্পের এই শাস্তিমূলক শুল্ক কয়েক দশক ধরে বিরাজমান বিশ্ব বাণিজ্যের ধারায় ভূমিকম্প ঘটিয়েছে।  বিশ্বব্যাপী মার্কিন পাল্টা শুল্ক কার্যকর হওয়ার প্রথমদিনেই এর আঁচ লেগেছে বিশ্ববাজারে। অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের দাম চার বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন পর্যায়ে পৌঁছেছে। গতকাল ব্রেন্টের অপরিশোধিত তেলের দাম কমে ব্যারেলপ্রতি ৬০ ডলারে বিক্রি হয়েছে, যা করোনাকালে ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের পর সর্বনিম্ন। বিশ্লেষক অ্যাশলে কেলি বলছেন, হোয়াইট হাউস চায় তেলের দাম আরো কমে যাক।
কারণ এটাই যুক্তরাষ্ট্রের জন্য লাভজনক হবে।

ট্রাম্পের চালু করা নতুন শুল্কের ধাক্কায় শেয়ারবাজারেও উথালপাথাল দেখা যাচ্ছে। বিশ্বজুড়ে স্টক এক্সচেঞ্জগুলোতে দরপতন হচ্ছে। গতকাল সকালে এশিয়ার শেয়ারবাজারে আবারও পতন হয়েছে। মূলত ট্রাম্প চীনের প্রতিশোধমূলক শুল্কের জবাবে চীনের পণ্যে অতিরিক্ত, অর্থাৎ মোট ১০৪ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঘটনার জেরে গতকাল সকালেই এশিয়ার শেয়ারবাজারে পতন হয়েছে।

এরপর ইউরোপের শেয়ারবাজারে লেনদেন শুরু হওয়ার পর পরই সূচকের পতন হয়। যুক্তরাজ্যের লন্ডনভিত্তিক আঞ্চলিক সূচক প্যান-ইউরোপীয় স্টকস ৬০০ কমেছে ৩.৪ শতাংশ। আঞ্চলিক এই সূচকের অন্তর্ভুক্ত সব খাতের শেয়ারের দামেই নেতিবাচক প্রবণতা চলছে। এ ছাড়া আঞ্চলিক স্বাস্থ্যসেবা, খনি ও তেল ও গ্যাস খাতের সূচকগুলো ব্যাপক হারে পড়ে গেছে। এর মধ্যে স্বাস্থ্যসেবা, খনি, তেল ও গ্যাস খাতের শেয়ারের দাম যথাক্রমে ৫.৩ শতাংশ, ৩.৩ শতাংশ ও ৪.৬ শতাংশ কমেছে। এর প্রভাব পড়েছে অন্যান্য বাজারেও। মন্দা দেখা দেবে বলেও আশঙ্কা করা হচ্ছে। ইউরোর বিপরীতে কমেছে ডলারের দাম।

এদিকে বিশ্ববাজারে গতকাল সোনার দাম বেড়েছে। অবশ্য ২ এপ্রিলে সোনার দাম পড়ে গিয়েছিল।

বিভিন্ন দেশের প্রতিক্রিয়া

চীন জানিয়েছে, এই দ্বন্দ্ব্ব সমাধানে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে তারা যোগাযোগ করতে ইচ্ছুক। এই লক্ষ্যে চীন গতকাল বাণিজ্য বিষয়ক শ্বেতপত্র প্রকাশ করেছে। শ্বেতপত্রে চীন বলেছে, চীন সব সময়ই চেষ্টা করেছে, মার্কিন-চীন বাণিজ্য যেন সব সময় উভয়ের জন্য লাভজনক হয়। শ্বেতপত্রে আরো বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের এই পাল্টা শুল্কের বৈশ্বিক বাণিজ্যব্যবস্থা, নিরাপত্তা ও বৈশ্বিক সরবরাহব্যবস্থার স্থিতিশীলতা বিনষ্ট হবে।

এদিকে ট্রাম্পের চাপিয়ে দেওয়া শুল্কের ধাক্কা সামাল দিতে ভিয়েতনাম, ইসরায়েল, আর্জেন্টিনার মতো কিছু দেশ মার্কিন পণ্যের ওপর শুল্ক কম করেছে। ভারতও কিছু পণ্যে শুল্ক কম করেছে।

তবে ট্রাম্পের অতিরিক্ত শুল্কারোপের প্রতিক্রিয়ায় এবার পাল্টা শুল্ক আরোপ করেছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। ইউরোপের ২৭টি দেশের এই জোট যুক্তরাষ্ট্রের সয়াবিন, মোটরসাইকেল ও সৌন্দর্যপণ্যেও পাল্টা শুল্ক আরোপের বিষয়টি গতকাল অনুমোদন দিয়েছে। এ ছাড়া যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি করা কয়েকটি যানবাহনের ওপর গতকাল থেকে ২৫ শতাংশ হারে শুল্কারোপ করেছে কানাডা।

অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্রের পাল্টা শুল্কে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের নিয়ম লঙ্ঘিত হয়েছে বলে অভিযোগ করেছে রাশিয়া। বিশেষ করে, চীনা পণ্য আমদানির ওপর ১০৪ শতাংশ শুল্ক আরোপ করাটা কোনোভাবেই আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের রীতির মধ্যে পড়ে না বলে মনে করে দেশটি।

 

মন্তব্য

রাজশাহীর নবগঙ্গা পদ্মার পার থেকে তোলা

শেয়ার
রাজশাহীর নবগঙ্গা পদ্মার পার থেকে তোলা
একসময়ের প্রমত্তা পদ্মার রূপ এখন আর নেই। পানি শুকিয়ে কঙ্কালসার অবস্থা। জেগেছে ছোট-বড় অসংখ্য চর। অনেক জায়গায় নৌকা লাগে না, হেঁটেই পার হওয়া যায় নদী। রাজশাহীর নবগঙ্গা পদ্মার পার থেকে তোলা। ছবি : সালাহ উদ্দিন
মন্তব্য
সালাহউদ্দিন আহমদ

ধর্মনিরপেক্ষতা ও বহুত্ববাদে একমত নয় বিএনপি

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
ধর্মনিরপেক্ষতা ও বহুত্ববাদে একমত নয় বিএনপি
সালাহউদ্দিন আহমদ

রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতিতে ধর্মনিরপেক্ষতা ও বহুত্ববাদ-এর সঙ্গে একমত নয় বিএনপি। বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্ন খবর প্রকাশের পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল বুধবার দুপুরে গুলশানে দলের চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে সাংবাদিকদের কাছে দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বিষয়টি পরিষ্কার করেন।

সালাহউদ্দিন বলেন, জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের স্প্রেড শিটের ৫, ৬ ও ৭-এ সংবিধানের মূলনীতি এবং রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতিতে বহুত্ববাদের কথা বলা হয়েছে, সাম্য-মানবিক মর্যাদার কথা বলা হয়েছে। কিন্তু বহুত্ববাদসহ অন্য বিষয়গুলোর সঙ্গে বিএনপি একমত নয়।

তিনি বলেন, রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতিগুলো সংবিধানের ৮, ৯, ১০ এবং ১২এই অনুচ্ছেদগুলোতে বিধৃত আছে। সেই অনুচ্ছেদগুলোর বিষয়ে সংস্কার কমিশনে সুপারিশ করা হয়েছে যে তারা এই বিষয়গুলো পুনস্থাপন করতে চেয়েছে। যেমনএকটা প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে, ধর্মনিরপেক্ষতা ইত্যাদি বিলুপ্ত করা হোক। আমরা সেখানে বলেছি, এটাতে (ধর্মনিরপেক্ষতা) একমত নই।

কিন্তু কী কী চাই সেটাও আমরা বলেছি।

এ বিষয়ে ব্যাখ্যা দিয়ে সালাহউদ্দিন বলেন,  আমরা চেয়েছি, পঞ্চম সংশোধনীতে যেটা গৃহীত হয়েছে, সেটা পঞ্চদশ সংশোধনীর পূর্বাবস্থা, সেটা বহাল করা হোকআমরা চেয়েছি। কিন্তু সবাই মনে করেছে, ধর্মনিরপেক্ষতা বাতিলের কথা বলেছি। বিষয়টা তা নয়।

আমরা পরিষ্কার করার জন্য বলেছি, আপনাদের (সংস্কার কমিশনের) প্রতিস্থাপন বহুত্ববাদসহ অন্যান্য বিষয় এক সঙ্গে আসতে হবে। অর্থাৎ রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতি হিসেবে মহান আল্লাহর ওপর আস্থা-বিশ্বাস, জাতীয়তাবাদ, গণতন্ত্র, সমাজতন্ত্র অর্থাৎ সামাজিক ও অর্থনৈতিক ন্যায়বিচার’—এ বিষয়গুলো রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতি হিসেবে গণ্য হবে। যেটা গৃহীত হয়েছিল বাকশাল বিলুপ্তির পরে। আশা করি এ নিয়ে আর কোনো বিভ্রান্তি থাকবে না।

রাষ্ট্রপতি-প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতায় ভারসাম্য আনা

সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, সংবিধানের মূলনীতি, রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতি বিষয়ে কথা বলছি।

আমরা উপরাষ্ট্রপতি, উপপ্রধানমন্ত্রীর প্রস্তাব করেছি, দুই কক্ষ বিশিষ্ট পার্লামেন্টের প্রস্তাব করেছি, উভয় কক্ষে ডেপুটি স্পিকার বিরোধী দল থেকে নিয়ে আসার প্রস্তাব করেছি। আমরা রাষ্ট্রপতি এবং প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতার ভারসাম্য আনার প্রস্তাব করেছি, নতুন করে কিছু ক্ষমতা রাষ্ট্রপতির হাতে দেওয়ার প্রস্তাব করেছি, সংসদে সংরক্ষিত ৫০ মহিলা আসন থেকে ১০০-তে উন্নীত করার প্রস্তাব করেছিএ ধরনের অনেক প্রস্তাব করেছি।

 

মন্তব্য

দুদকে ‘অতিগোপনীয়’ অভিযোগ নিয়ে হাসনাত-সারজিস

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
দুদকে ‘অতিগোপনীয়’ অভিযোগ নিয়ে হাসনাত-সারজিস

দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ আবদুল মোমেনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ এবং উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম। সেখানে তাঁরা লিখিতভাবে কিছু অভিযোগ জানিয়েছেন।

গতকাল বুধবার দুপুরে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় দুদকের প্রধান কার্যালয়ে কমিশনের চেয়ারম্যানের সঙ্গে এই দুই নেতা সাক্ষাৎ করেন। সেখান থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সময় সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন তাঁরা।

সাংবাদিকদের হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, আমরা কিছু অভিযোগ নিয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনে এসেছি। অভিযোগগুলো আমরা লিখিতভাবে জানিয়েছি।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ভেরি কনফিডেনশিয়াল (অতিগোপনীয়)। কাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, এমন প্রশ্নের সরাসরি জবাব না দিয়ে হাসনাত বলেন, কনফিডেনশিয়াল বিষয় বলে দিলে তো আর কনফিডেনশিয়াল থাকল না।

এ ছাড়া অপরাধীরা এতে সতর্ক হয়ে যাবে।

এ বিষয়ে সারজিস আলম সাংবাদিকদের বলেন, অতীতে দুদককে ব্যবহার করে অনেকে সাম্রাজ্য গড়ে তুলেছে। অনেক সাধারণ মানুষকে আবার বিনা অপরাধে হয়রানি করা হয়েছে। এ সময়ে এসেও এখন আমরা সেটি প্রত্যাশা করি না।

আমাদের কিছু অভিযোগ ছিল, সেটি জানাতেই এখানে এসেছি। এর বেশি কিছু বলছি না এখন।

 

 

 

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ