ঢাকা, সোমবার ০৭ এপ্রিল ২০২৫
২৪ চৈত্র ১৪৩১, ০৭ শাওয়াল ১৪৪৬

ঢাকা, সোমবার ০৭ এপ্রিল ২০২৫
২৪ চৈত্র ১৪৩১, ০৭ শাওয়াল ১৪৪৬
উৎসব

গারো উৎসব ওয়ানগালা

  • ‘ওয়ানা’ শব্দের অর্থ দেব-দেবীর দানের দ্রব্যসামগ্রী আর ‘গালা’ শব্দের অর্থ উৎসর্গ করা। এদের বিশ্বাস, দেবতা মিসি সালজংয়ের নির্দেশে সূর্য বীজ থেকে চারার অঙ্কুরোদগম ও তার পরিপক্বতা ঘটায়। তাই ফসল গ্রহণের আগে তার কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা হয় এ উৎসবে। একে নবান্ন বা ধন্যবাদের উৎসবও বলা হয়ে থাকে
সালেক খোকন
সালেক খোকন
শেয়ার
গারো উৎসব ওয়ানগালা
ওয়ানগালা উৎসবে গারো নারীদের আনন্দনৃত্য। ছবি : সালগিরা চিসিম

শুরু হয়ে গেছে ওয়ানগালা উৎসব। মান্দি বা গারো গ্রামগুলোতে চলছে নানা প্রস্তুতি। নৃত্য ও গানের মহড়ায় ব্যস্ত সবাই। ওয়ানগালা ওয়ানগালা আচিকরাং ওয়ানগালা...ওয়ানগালা ওয়ানাগালা...মিদ্দিনা রুগালা’—মনোমুগ্ধকর এই গানের সুর ধ্বনিত হচ্ছে গ্রামগুলোতে।

সাধারণত বর্ষার শেষে ও শীতের আগে, নতুন ফসল তোলার সময় এ উৎসবের আয়োজন চলে। পর পর দুই বছর হালুয়াঘাটে খুব কাছ থেকে দেখেছি উৎসবটি।

ওয়ানা শব্দের অর্থ দেব-দেবীর দানের দ্রব্যসামগ্রী আর গালা শব্দের অর্থ উৎসর্গ করা। এদের বিশ্বাস, দেবতা মিসি সালজংয়ের নির্দেশে সূর্য বীজ থেকে চারার অঙ্কুরোদগম ও তার পরিপক্বতা ঘটায়।

তাই ফসল গ্রহণের আগে তার কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা হয় এ উৎসবে। একে নবান্ন বা ধন্যবাদের উৎসবও বলা হয়ে থাকে।

নকমা (গ্রামপ্রধান) সভা ডেকে ওয়ানগালার দিন ঠিক করে জানিয়ে দেন সবাইকে। তখন শুরু হয় পূজার স্থান, বাড়িঘর, গোলাঘর মেরামত ও পরিষ্কার করে নেওয়া।

সংগ্রহ করা হয় মোরগ ও ডুকুয়া পাখির পালক।

উৎসবের প্রথম দিনের নাম রুগালা। এই দিনটিতে শস্যের জননী ও ভাণ্ডারদেবী, গৃহদেবতা, সূর্যদেবতা প্রভৃতির উদ্দেশে মদসহ উৎসর্গ করা হয় নতুন ধানের ভাত, নতুন ফসলের ফলমূল, শাক-সবজি ও পশুপাখি। ওই দিন নকমা নিকটস্থ ঝরনা বা খাল বা নদী থেকে দুটি কাঁকড়া ধরে এনে একটি পাত্রে রাখেন। দুপুরের আগে একটি লাল বা সাদা মোরগ নিয়ে তিনি জুমক্ষেতে যান।

সেখানে আসিরকা স্থানে সূর্যদেবতার উদ্দেশে উৎসর্গ করে পূজা-অর্চনা করেন। পরে বাড়ি ফিরে ওয়ানগালা অনুষ্ঠানের দ্রব্যসামগ্রী সাজিয়ে নেন।

কিভাবে? ঘরের মাঝখানে কলাপাতায় নতুন ধানের ভাত, আদা, নানা জাতের কচু, কুমড়া, সলঙ্গা প্রভৃতি শাক-সবজি, ফলমূল দুই ভাগ করে কেটে সাজিয়ে রাখা হয়। পাশেই কৃষি যন্ত্রপাতিদা, কুড়াল, কোদাল, নিড়ানি প্রভৃতি রেখে কলাপাতায় ঢেকে তার ওপর দেওয়া হয় কয়েক মুষ্টি চাল। অন্য পাশে রাখা হয় বাদ্যযন্ত্রগুলো। চালের মটকায় (পাত্রে) সাদা সুতা দিয়ে বেঁধে দেওয়া হয় তিনটি তুলার পিণ্ড। দুপুরের পরই নকমার বাড়িতে প্রথম শুরু হয় ওয়ানগালা অনুষ্ঠান।

নকমা প্রথমেই মটকায় ভাণ্ডারদেবী ও খাদ্যশস্যের জননী রক্ষিমের পূজা-অর্চনা করেন। তারপর একটি মুরগি উৎসর্গ করেন। এ সময় নতুন মদও উৎসর্গ করা হয়। মান্দি বা গারোরা একে বলে রংদিক বা মিতদে

একইভাবে গৃহদেবতার উদ্দেশে মদ ও পানীয় উৎসর্গ করা হয়। এরপর কলাপাতায় ঢেকে রাখা কৃষি যন্ত্রপাতির ওপর মন্ত্র পড়ে মদ উৎসর্গ করে শুরু হয় ওয়ানগালার প্রধান পূজা-অর্চনা।

এ সময় নকমা পেতে রাখা ভাত-তরকারি, ফলমূল, শাক-সবজি প্রভৃতি সামনে রেখে মন্ত্র পড়ে সারা ঘরে ছিটিয়ে দেন নতুন ধানের চাল। অতঃপর ধরে আনা কাঁকড়া দুটির ওপর মদ ঢেলে একটিকে ছেড়ে দিয়ে অন্যটিকে একটি বাঁশের কাঠিতে বিদ্ধ করে ওপরে রেখে ঘরের মেঝেতে পুঁতে দেওয়া হয়।

এরপর সূর্যদেবতাকে উদ্দেশ করে মন্ত্র পড়ে মদ উৎসর্গ করেন নকমা। পাশে রাখা মিল্লাম (তরবারি) ও স্পি (ঢাল) হাতে নিয়ে তিনি নাচতে শুরু করেন। এ সময় বাদ্যযন্ত্রগুলো বাজতে থাকে। রুগালার রাতে গারোরা নাচ-গান, আমোদ-প্রমোদ করে কাটায়। প্রতিটি বাড়িতে তৈরি হয় পিঠা। যুবক-যুবতিরা খুশি মনে নেচে-গেয়ে পরস্পরকে মদ পান করায়।

ওয়ানগালার দ্বিতীয় দিনটিকে বলে সাসাত সআ। মানে ধূপ উৎসর্গ অনুষ্ঠান। ওই দিন নকমা তাঁর সারা ঘরে নতুন চালের ভাত ছিটিয়ে দেন। এই ছিটানো ভাতগুলোই শিলাবৃষ্টির প্রতীক। তিনি সূর্যদেবতার নামে ধূপ উৎসর্গ করে সারা ঘর ধোঁয়ায় ভরিয়ে দেন। কালো ধোঁয়া ঘরের বাইরে চলে গেলে আগামী বছর মেঘ এভাবেই ভেসে এসে বৃষ্টি ঝরাবে বলে বিশ্বাস তাদের।

উৎসবের তৃতীয় দিনটিকে বলে ক্রাম গগাতা। ওই দিন সন্ধ্যার আগে বাদ্যযন্ত্রগুলো নিয়ে সবাই সমবেত হয় নকমার বাড়িতে। তখন সবাইকে শেষবারের মতো তা বাজাতে বলেন তিনি।

বাদ্যযন্ত্রের সুরে নকমা সূর্যদেবতা ও রক্ষিমের উদ্দেশে শেষ রুগালা ও সাসাত সআ করে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান। এরপর তাঁরা যেন সামনের বছর এভাবেই এসে আশীর্বাদ করেন পরম ভক্তির সঙ্গে সেই আবেদন জানিয়ে তাঁদের বিদায় দেন। দামা, ক্রাম, রাং প্রভৃতি বাদ্যযন্ত্র তখন নকমার ঘরেই জমা রাখা হয়। এভাবেই সমাপ্তি ঘটে মান্দি বা গারোদের ওয়ানগালা উৎসবের।

ধর্মান্তরের ফলে এখনকার মান্দি বা গারোরা আজ হারিয়ে ফেলছে ওয়ানগালা উৎসবের আদি রূপটি। তবু এ উৎসবেই ফুটে ওঠে তাদের ঐতিহ্য ও আদি সংস্কৃতি।

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

রংপুরে বিএনপির দুই পক্ষের সংঘর্ষে নিহত ১, আহত ১৫

    ৩ নেতাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ
রংপুর অফিস
রংপুর অফিস
শেয়ার
রংপুরে বিএনপির দুই পক্ষের সংঘর্ষে নিহত ১, আহত ১৫

রংপুরের বদরগঞ্জ উপজেলায় বিএনপির দুই পক্ষে সংঘর্ষে লাভলু মিয়া (৫০) নামের এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। গতকাল শনিবার সকাল ১১টার দিকে উপজেলার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। লাভলু মিয়া রাজারামপুর গ্রামের মৃত মহসিন আলীর ছেলে।

জেলা বিএনপির সদস্য ও সাবেক এমপি মোহাম্মদ আলী সরকার এবং উপজেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম সম্পাদক ও কালুপাড়া ইউপির চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম মানিকের অনুসারীদের মধ্যে এই সংঘর্ষ হয় বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে।

লাভলু মিয়া মোহাম্মদ আলী সরকারের অনুসারী।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বদরগঞ্জ উপজেলা শহরের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার সংলগ্ন ঢেউটিন ব্যবসায়ী জাহিদুল হক জোয়ারদার একই এলাকার ইশতিয়াক বাবুর দোকানঘর ভাড়া নিয়ে ব্যবসা করে আসছিলেন। ইশতিয়াক বাবু চুক্তির মেয়াদ শেষ হয়েছে জানিয়ে জাহিদুল হক জোয়ারদারকে দোকানঘর ছেড়ে দিতে বলেন। কিন্তু চুক্তির মেয়াদ ২০২৮ সাল পর্যন্ত রয়েছে দাবি করে জাহিদুল ঘর ছেড়ে দেবেন না বলে জানান।

বিষয়টি নিয়ে দ্বন্দ্ব শুরু হলে জাহিদুল হক জোয়ারদারের পক্ষ নেন কালুপাড়া ইউপির চেয়ারম্যান শহিদুল হক মানিক এবং ইশতিয়াক বাবুর পক্ষ নেন সাবেক এমপি মোহাম্মদ আলী সরকার।

এদিকে গত মঙ্গলবার ইশতিয়াক বাবু দোকানঘরে তালা ঝুলিয়ে দেন। এরই মধ্যে শহিদুল ইসলাম মানিকের ছেলে জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সদস্য তানভির আহমেদ তমাল মোহাম্মদ আলী সরকারকে নিয়ে ফেসবুকে আপত্তিকর পোস্ট দেন। এইসব নিয়ে দুই পক্ষের সমর্থকদের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছিল।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, গতকাল সকালে জাহিদুল হক জোয়ারদার দোকান খুলে দেওয়ার দাবিতে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে মানববন্ধনের আয়োজন করেন। এ সময় মোহাম্মদ আলীর অনুসারীরা দেশীয় অস্ত্র নিয়ে মহড়া দিয়ে শহীদ মিনারে জাহিদুলের টানানো শামিয়ানা ভেঙে দিয়ে চলে যায়। কিছু লোক পাশের একটি দোকানের গলিতে অবস্থান নেয়। খবর পেয়ে কিছুক্ষণ পর শহিদুল ইসলাম মানিকের অনুসারীরা আসে। এ সময় আগে থেকে দোকানের গলিতে থাকা মোহাম্মদ আলী সরকারের লোকজনের সঙ্গে বিতর্কের এক পর্যায়ে দুই পক্ষের লোকজনের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়।

সংঘর্ষে উভয় পক্ষের অন্তত ১৫ জন আহত হন। লাভলু মিয়াসহ কয়েকজনকে বদরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নেওয়া হয়। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠান চিকিৎসক।

এদিকে সংঘর্ষে জড়ানো মোহাম্মদ আলী সরকার, শহিদুল ইসলাম এবং উপজেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক হুমায়ুন কবীর মানিকের বিরুদ্ধে দখলদারির অভিযোগ এনে গতকাল দুপুরেই কারণ দর্শানোর চিঠি দিয়ে ৭২ ঘণ্টার মধ্যে লিখিত জবাব চেয়েছে জেলা বিএনপি।

জানতে চাইলে জেলা বিএনপির আহবায়ক সাইফুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি আমরা জানার পর সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছি এবং সশরীরে হাজির হতে বলা হয়েছে। চিঠির জবাব পেলে পরে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বদরগঞ্জ থানার ওসি এ কে এম আতিকুর রহমান বলেন, মৃত্যুর বিষয়টি আমাকে জানানো হয়েছে। এখনো কেউ অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

মন্তব্য

চৌদ্দগ্রামে সাবেক রেলমন্ত্রীর বাড়িতে আগুন ভাঙচুর

চৌদ্দগ্রাম (কুমিল্লা) প্রতিনিধি
চৌদ্দগ্রাম (কুমিল্লা) প্রতিনিধি
শেয়ার
চৌদ্দগ্রামে সাবেক রেলমন্ত্রীর বাড়িতে আগুন ভাঙচুর

কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে সাবেক রেলমন্ত্রী মুজিবুল হক মুজিবের বাড়িতে আগুন ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। গতকাল শনিবার বিকেলে উপজেলার বসুয়ারা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। রাত সাড়ে ৮টায় বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন চৌদ্দগ্রাম থানার ওসি মো. হিলাল উদ্দিন আহমেদ।

সাবেক রেলমন্ত্রীর ভাতিজা আব্দুল আউয়াল সুমন বলেন, সকালে উপজেলার পদুয়া রাস্তার মাথায় কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা ছাত্রশিবিরের সভাপতি মহিউদ্দিন রনির সঙ্গে আমার চাচাতো ভাই আহসান উল্লাহর রাজনৈতিক বিষয়ে কথা-কাটাকাটি হয়, তা আবার স্থানীয়রা মিলমিশ করে দেয়।

বিকেলে রনির নেতৃত্বে জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মীরা পদুয়া বাজারে মিছিল করে। মিছিল শেষে রনির নেতৃত্বে জামায়াত-শিবিরের শতাধিক লোক কাকা মুজিবুল হকের ঘরের দরজা ভেঙে ভেতরে ঢুকে ভাঙচুর করে আগুন দেয়। কিছু লোক আমাদের ঘরের গেট ভেঙে আমার মোটরসাইকেলে আগুন দিয়ে বাড়িঘর ভাঙচুর করে। আমাদের বাড়ির প্রায় সাত-আটটি ঘর ভাঙচুর করে।
সন্ধ্যায় সেনাবাহিনী, পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের লোক এসেছে।

চৌদ্দগ্রাম উপজেলা ছাত্রশিবিরের সভাপতি নুরুল ইসলাম বলেন, কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা ছাত্রশিবিরের সভাপতি মহিউদ্দিন রনি ভাইয়ের বাড়ি শ্রীপুর ইউনিয়নে। সকালে রনি ভাইয়ের সঙ্গে ঝামেলা করার কারণে বিকেলে আমরা বিক্ষোভ মিছিল করেছি। কিছু উত্তেজিত জনতা ভাঙচুর করতে পারে।

চৌদ্দগ্রাম থানার ওসি মো. হিলাল উদ্দিন আহমেদ বলেন, বিকেলে কিছু দুর্বৃত্ত হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও আগুন দিয়েছে তার সত্যতা পেয়েছি। তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেব।

মন্তব্য

ঋণের দুই কিস্তির শর্ত পর্যালোচনায় আইএমএফ

    প্রতিনিধিদল ঢাকায়
নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
ঋণের দুই কিস্তির শর্ত পর্যালোচনায় আইএমএফ

আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) একটি প্রতিনিধিদল গতকাল শনিবার ঢাকায় এসেছে। আইএমএফের সঙ্গে চলমান ৪৭০ কোটি মার্কিন ডলারের ঋণচুক্তির চতুর্থ ও পঞ্চম কিস্তি ছাড়ের আগে বাংলাদেশ কতটা শর্ত পূরণ করেছে, তা পর্যালোচনার জন্য দলটি ঢাকায় আসে।

প্রসঙ্গত, ২০২৩ সালের ৩০ জানুয়ারি ঋণ কর্মসূচি চালু হওয়ার পর আইএমএফ থেকে তিন কিস্তিতে ২৩১ কোটি ডলার পেয়েছে বাংলাদেশ। বাকি আছে ঋণের ২৩৯ কোটি ডলার।

বিপত্তি দেখা দেয় চতুর্থ কিস্তির অর্থ ছাড়ের আগে। যদিও সরকার আশা করছে, চতুর্থ ও পঞ্চম কিস্তির অর্থ একসঙ্গে পাওয়া যাবে আগামী জুনে।

জানা গেছে, সফরের দ্বিতীয় দিন আজ রবিবার সকালে প্রতিনিধিদলটির অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদের সঙ্গে বৈঠক করার কথা রয়েছে। অর্থ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, আজ শুরু হতে যাওয়া এই আলোচনা চলবে দুই সপ্তাহ।

এ সময় প্রতিনিধিদলের সদস্যরা বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের সঙ্গে ধারাবাহিক বৈঠক করবেন। আইএমএফের দলটির সঙ্গে অর্থ বিভাগ, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর), বিদ্যুৎ বিভাগ, বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি), বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি), জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে।

সফরের শেষ দিন ১৭ এপ্রিল অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদের সঙ্গে প্রতিনিধিদলের আরো একটি বৈঠক হবে। বৈঠক শেষে সেদিন সফররত আইএমএফ প্রতিনিধিদলের সংবাদ সম্মেলন করার কথা রয়েছে।

ঈদের ছুটির আগে অর্থনীতিবিষয়ক সাংবাদিকদের সংগঠন ইআরএফের সঙ্গে প্রাক-বাজেট আলোচনায় অর্থ উপদেষ্টা বলেছিলেন, বাজেট সহায়তার জন্যই আইএমএফের ঋণ লাগবে। এ কারণে বাংলাদেশ সরকার ও আইএমএফ যৌথভাবে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জন্য নির্ধারিত দুটি কিস্তি একসঙ্গে ছাড়ের বিষয়ে সম্মত হয়।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আইএমএফের ঋণ কর্মসূচি থেকে দুই কিস্তির অর্থ একসঙ্গে পেতে বাংলাদেশের সামনে মোটাদাগে তিনটি বাধা রয়েছে। এসব বাধা অতিক্রম করতে না পারলে আইএমএফের কিস্তি পাওয়া কঠিন হবে। এগুলো হলোমুদ্রা বিনিময় হার বাজারভিত্তিক করা, মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) দশমিক ৫ শতাংশ হারে বাড়তি রাজস্ব আদায় ও এনবিআরের রাজস্ব নীতি থেকে রাজস্ব প্রশাসনকে আলাদা করা।

বাংলাদেশের পক্ষ থেকে যদিও আইএমএফকে জানানো হয়েছে, এসব শর্ত বাস্তবায়ন করা হবে। তবে বাংলাদেশ ব্যাংক ও অর্থ মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, রাজস্ব নীতি থেকে রাজস্ব প্রশাসনকে আলাদা করার পদক্ষেপ ছাড়া বাকি দুটির বিষয়ে তেমন অগ্রগতি নেই। শর্ত পূরণে বাংলাদেশ ও আইএমএফ যদি নিজ নিজ অবস্থানে অনমনীয় থাকে, তাহলে আর কোনো কিস্তি না-ও মিলতে পারে। তখন বাংলাদেশের জন্য দেখা দিতে পারে নতুন জটিলতা; অর্থাৎ অন্য উন্নয়ন সহযোগী সংস্থাগুলোও তখন বাংলাদেশকে ঋণ দেওয়ার ব্যাপারে রক্ষণশীল হয়ে যেতে পারে।

মন্তব্য
লাঙ্গলবন্দে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

বাংলাদেশের মতো সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি কোথাও নেই

নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি
নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি
শেয়ার
বাংলাদেশের মতো সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি কোথাও নেই
মো. জাহাঙ্গীর আলম

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, আমাদের এখানে হিন্দু-মুসলিম কোনো ভেদাভেদ নেই। আমরা এখানে সবাই বাংলাদেশি এবং বাংলাদেশি হিসেবে আমরা সবাই এখানে আসছি। বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি সব সময় আছে। বাংলাদেশের মতো এত সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি কোথাও নেই।

আশপাশে দেখবেন কিভাবে কী ঘটছে। আমাদের দেশে সবাই একসঙ্গে কাজ করছে।

গতকাল শনিবার দুপুরে নারায়ণগঞ্জের লাঙ্গলবন্দে ব্রহ্মপুত্র নদের তীরে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের মহাঅষ্টমী পুণ্য স্নানোৎসব পরিদর্শন শেষে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা এসব কথা বলেন। গত শুক্রবার রাত ২টা ৮ মিনিট থেকে স্নান উৎসবের লগ্ন শুরু হয়, যা গতকাল শনিবার রাত ১২টা ৪৫ পর্যন্ত চলে।

জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী আরো বলেন, সবচেয়ে ভালো খবর হচ্ছে অন্যান্যবারের চেয়ে এবার নদীর পানি ভালো ছিল। এবার পুণ্যার্থীদের সংখ্যাও অনেক বেশি। আপনারা সবাই ধৈর্য ধরে পুণ্যস্নান শেষ করবেন।

লাঙ্গলবন্দ এলাকাকে পর্যটনকেন্দ্র করা হচ্ছে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, পর্যটনের চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে এটা একটা পুণ্যভূমি।

এটা ধর্মীয় জায়গা। এই জায়গায় পর্যটন কেন্দ্র করতে গিয়ে যেন ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্য নষ্ট না হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। ধর্মের বিষয়টা হচ্ছে সবচেয়ে বড়।

তিনি আরো বলেন, বিদেশি মিডিয়া অনেক সময় মিথ্যা সংবাদ প্রচার করে। আপনারা সত্য সংবাদ দিন।

তাদের মুখে চুনকালি পড়বে।

এ সময় জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম মিঞা, জেলা পুলিশ সুপার প্রত্যুষ কুমার মজুমদার, মহানগর বিএনপির আহবায়ক সাখাওয়াত হোসেন খান, স্নান উৎসব উপদেষ্টা কমিটির সদস্য শংকর সাহা ও জয় কে রায় চৌধুরী বাপ্পিসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ