ছেলে চিত্রনায়ক শান্ত খানকে নিয়ে পালাতে গিয়ে বিক্ষুব্ধ জনতার পিটুনিতে ছেলেসহ প্রাণ হারান চাঁদপুর সদর উপজেলার লক্ষ্মীপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান সেলিম খান।
স্থানীয় সূত্র জানায়, গত সোমবার সন্ধ্যার পর একটি মোটরসাইকেলে করে গ্রামের বাড়ি থেকে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন সেলিম খান (৫৮) ও তাঁর ছেলে শান্ত খান (২৫)। পথে বাগড়াবাজার এলাকায় বিক্ষুব্ধ জনতার চোখে ধরা পড়েন তাঁরা। এ সময় নিজের পিস্তল থেকে কয়েক রাউন্ড গুলিও করেন।
কিন্তু ততক্ষণে জনতার রোষানলে পড়ে গণপিটুনির শিকার হন তাঁরা। এতে দুজনই নিহত হন। এ ঘটনার পর থেকে ১২ ঘণ্টা পর্যন্ত তাঁদের মরদেহ ঘটনাস্থলেই পড়ে ছিল। শেষ পর্যন্ত দুজন আত্মীয় রিকশা ভ্যানে করে লাশ দুটি গ্রামের বাড়ি সদর উপজেলার লক্ষ্মীপুরে নিয়ে যান। গতকাল মঙ্গলবার সকালে স্থানীয় কয়েকজনের উপস্থিতিতে জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে নিহতদের দাফন করা হয়।
সূত্র জানায়, সম্প্রতি মেঘনা নদী থেকে বালু উত্তোলনের দায়ে সেলিম খানকে ২৭ লাখ টাকা জরিমানা করেন জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট। ওই সময় তাঁর ব্যবহৃত দুটি স্পিডবোটও জব্দ করা হয়। কেউ কেউ বলছে, সেলিম খানের হাতের নাগালে ওই স্পিডবোট দুটি থাকলে হয়তো নদীপথেই গাঢাকা দিতে পারতেন তিনি।
কিন্তু নদীপারে থেকেও উপায় না পেয়ে মোটরসাইকেল নিয়ে সড়কপথকে বেছে নিয়ে বেঘোরে প্রাণ হারান বাবা ও ছেলে।
এদিকে গত সোমবার বিকেলে ইউপি চেয়ারম্যান সেলিম খানের বাড়িতে হামলা ও ব্যাপক লুটপাট চালায় বিক্ষুব্ধ লোকজন। এ সময় অক্ষত অবস্থায় ছেলেসহ বাড়ি ছেড়ে পাশের একটি বাগানে আশ্রয় নেন সেলিম। পরে সন্ধ্যা হলে সেখান থেকে মোটরসাইকেল নিয়ে দূরে কোথাও পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন তাঁরা। তবে শেষ পর্যন্ত ধরা পড়ে প্রাণ হারান তাঁরা।
অভিযোগ রয়েছে, চাঁদপুরের পদ্মা ও মেঘনা থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে কয়েক শ কোটি টাকার মালিক হন সেলিম খান। এক পর্যায়ে প্রতিষ্ঠা করেন শাপলা মিডিয়া ও ভয়েস টেলিভিশন। ছেলে শান্ত খান ‘টুঙ্গিপাড়ার মিয়াভাই’ সিনেমায় অভিনয় করে আলোচনায় আসেন। এরপর ভারত ও বাংলাদেশের নায়ক-নায়িকাদের নিয়ে সেলিম খান আরো কয়েকটি সিনেমা নির্মাণ করেন শাপলা মিডিয়ার ব্যানারে। এরপর চাঁদপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের জন্য জমি অধিগ্রহণ কেলেঙ্কারিতে জড়িয়ে পড়েন তিনি।