মডেল মেঘনা আলমকে বিশেষ ক্ষমতা আইনে গ্রেপ্তার এবং বোরকা না পরায় দিনাজপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে (ইউএনও) কার্যালয় থেকে বের করে দেওয়ার ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে মহিলাবিষয়ক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন নারীপক্ষ। গতকাল শনিবার নারীপক্ষের আন্দোলন সম্পাদক সাফিয়া আজীম স্বাক্ষরিত এক প্রতিবাদ বিবৃতিতে এই নিন্দা-প্রতিবাদ জানানো হয়।
একই দিন মেঘনা আলমকে ‘সুনির্দিষ্ট অভিযোগ’ ছাড়া তাঁর বাসার দরজা ভেঙে গ্রেপ্তার এবং ১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইনে আটকাদেশের ঘটনায় মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশন (এমএসএফ) ও বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক তীব্র ক্ষোভ ও নিন্দা জানিয়েছেন।
নারীপক্ষের বিবৃতিতে বলা হয়, একজন সরকারি কর্মকর্তার ওপর বেআইনি, শিষ্টাচারবহির্ভূত ও বর্বর আচরণের দুঃসাহস দেখিয়ে তারা কিভাবে পার পেয়ে যায়! একজন সরকারি কর্মকর্তার যারা এই অবস্থা করতে পারে, তাদের কাছে দেশের সাধারণ নারীরা কতটা অসহায় ও অনিরাপদ, তা সহজেই অনুমেয়।
উল্লেখ্য, বোরকা পরে না আসায় দিনাজপুর সদর ইউএনওকে তাঁর কার্যালয় থেকে বের করে দেওয়া হয়।
মেঘনা আলমকে গ্রেপ্তারের ঘটনায় নারীপক্ষ বলেছে, দেশের বিভিন্ন আইনসহ অনেক কিছু পরিবর্তন বা সংস্কার হয়েছে। কিন্তু পুরনো একটি কালো আইন পরিবর্তন না করে, বরং সেই আইনের আওতায় এখনো গ্রেপ্তার-নির্যাতন চালানো হচ্ছে কেন? তা ছাড়া মেঘনা আলমের ব্যক্তিগত বিষয়কে যিনি বা যারা রাষ্ট্রীয় ইস্যু করলেন তার বা তাদের বিরুদ্ধে কোনো আইনি পদক্ষেপ নেওয়া কি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উচিত নয়? এসব ঘটনায় দোষীদের আইনের আওতায় এনে বিচারের দাবিও জানিয়েছে নারীপক্ষ।
এমএসএফের উদ্বেগ : সন্ধ্যায় এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এমএসএফ নিন্দা, ক্ষোভ ও গভীর উদ্বেগ জানিয়ে বলেছে, সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ও মামলা না করে কাউকে আটক রাখা আইনের পরিপন্থী ও মানবাধিকারের লঙ্ঘন।
‘অন্তর্বর্তী সরকারের জন্য লজ্জার’ : বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে বলেন, মেঘনাকে বাসা থেকে জবরদস্তিমূলকভাবে তুলে নিয়ে নিবর্তনমূলক কালো আইনে সাজা দিয়ে জেলে পাঠানোর ঘটনা মানবাধিকারের চূড়ান্ত লঙ্ঘন ও অন্তর্বর্তী সরকারের জন্য লজ্জার। তিনি বলেন, মেঘনা কোনো অন্যায় করে থাকলে তাঁর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার সুযোগ রয়েছে। কিন্তু তাঁকে আত্মপক্ষ সমর্থনের ন্যূনতম সুযোগ না দিয়ে যেভাবে সাজা দেওয়া হয়েছে, তা অন্তর্বর্তী সরকারের জন্য লজ্জার কারণ হয়ে উঠেছে। এতে সরকারের ভাবমূর্তিও ক্ষুণ্ন হয়েছে।
গণতন্ত্র মঞ্চের অন্যতম সংগঠক সাইফুল হক বলেন, একজন বিদেশি নাগরিকের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ত্বরিত গতিতে বিতর্কমূলক পদক্ষেপ নিয়েছে। অথচ দেশের নাগরিক মেঘনা আলমের অধিকার রক্ষায় সরকার কোনো পদক্ষেপই নেয়নি।