<p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">রকমারি খাদ্যশস্য উৎপাদনের বিপরীতে তামাক আবাদের ভয়াবহ আগ্রাসন শুরু হয়ে গেছে কক্সবাজারের চকরিয়ায়। ব্যক্তিমালিকানার একরের পর একর জমিজুড়ে তামাকের এই বিস্তৃতি থেমে থাকেনি। তামাকের বিস্তার লাভ করেছে খোদ সরকারি খাসজমি, মাতামুহুরী নদী ও বিভিন্ন ছড়ার দুই তীরেও। এমনকি সংরক্ষিত বনভূমির টিলা ও পাদদেশে পরিবেশ বিধ্বংসী তামাকের আগ্রাসনের বিস্তৃতির দেখা মিলেছে। একই অবস্থায় চকরিয়ার পাশের বান্দরবানের লামা, আলীকদম, নাইক্ষ্যংছড়িসহ বিভিন্ন উপজেলায়ও। এতে রকমারি খাদ্যশস্য উৎপাদনের জমি তামাকের আগ্রাসন গিলে খাচ্ছে।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">পরিবেশ সচেতন লোকজন বলছেন, একদিকে বোরো ধান, রবিশস্য, শাক-সবজিসহ রকমারি খাদ্যশস্য উৎপাদনে মারাত্মক প্রভাব পড়ার পাশাপাশি উৎপন্ন তামাক শোধন করতে গিয়ে প্রতিবছরের মতোই এবারও উজাড় হবে সংরক্ষিত বনাঞ্চল। এরই মধ্যে তামাক চুল্লিতে জ্বালানি হিসেবে পোড়ানোর জন্য সংগ্রহ করা শুরু হয়ে গেছে লাখ লাখ মণ লাকড়ি। সেই লাকড়ির জোগান দিতে গিয়ে বনাঞ্চলের ছোট ছোট গাছপালা, গাছের গোড়া (মূল) পর্যন্ত রক্ষা পাচ্ছে না।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, মূলত তামাক চাষের পরিধি দিন দিন বাড়তে থাকায় প্রতিবছর এ অবস্থা অব্যাহতভাবে দেখা দিচ্ছে। এতে বর্ষা মৌসুমে ভারি বর্ষণের সময় উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের পানির সঙ্গে পলি ও বালু এসে ভরাট হয়ে যাচ্ছে মাতামুহুরী নদী। আর সেই পাহাড়ি ঢলের পানি নদীর দুই তীর উপচে লোকালয়ে ঢুকে পড়ে। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">চকরিয়া উপজেলার তামাক চাষপ্রবণ কয়েকটি ইউনিয়ন ঘুরে দেখা গেছে, যেদিকে চোখ যায় সেদিকেই তামাকের আবাদ। এসব ইউনিয়নের বেশির ভাগ ফসলি জমি গিলে খেয়েছে তামাক চাষ। বিশেষ করে মাতামুহুরী নদীবিধৌত উপজেলার বমু বিলছড়ি, সুরাজপুর-মানিকপুর, কাকারা, ফাঁসিয়াখালী, লক্ষ্যারচর, কৈয়ারবিল, বরইতলীসহ বেশ কয়েকটি ইউনিয়নে তামাকের আবাদ হয়েছে এবারও। এর মধ্যে ভয়াবহ আগ্রাসন চলছে বমু বিলছড়ি, সুরাজপুর-মানিকপুর ও কাকারা ইউনিয়নে। এই তিন ইউনিয়নের ওপর দিয়ে বহমান মাতামুহুরী নদীর দুই তীর ছাড়াও পাহাড়ি টিলা ও সমতল ভূমির অন্তত ৮০ শতাংশ জমি তামাক চাষের আওতায় রয়েছে।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">তবে উপজেলা কৃষি বিভাগের দেওয়া তথ্য মতে, চকরিয়ার মাত্র পাঁচটি ইউনিয়ন তথা বমু বিলছড়ি, সুরাজপুর-মানিকপুর, কাকারা, ফাঁসিয়াখালী ও লক্ষ্যারচরে তামাক চাষ হচ্ছে। তামাক চাষ নিয়ে কৃষি বিভাগের এই জরিপে স্থান পায়নি কৈয়ারবিল, বরইতলী, খুটাখালী, চিরিঙ্গাসহ কয়েকটি ইউনিয়ন।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">কৃষি বিভাগ জানায়, উপজেলার ১৮টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভায় প্রায় ২২ হাজার হেক্টর আবাদি জমি রয়েছে। তার মধ্যে পাঁচটি ইউনিয়নে তামাক আবাদ হচ্ছে ৬২০ হেক্টর ফসলি জমিতে। বাকি জমিতে বোরো ধান, রবিশস্য, রকমারি শাক-সবজির উৎপাদন হচ্ছে। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">তবে কৃষি বিভাগের এই তথ্য বাস্তবের সঙ্গে অনেক গরমিল বলে জানিয়েছে পরিবেশবাদী বিভিন্ন সংগঠন। তামাকের বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলার কাজে তৎপর থাকা উন্নয়ন বিকল্পের নীতিনির্ধারণী গবেষণার (উবিনীগ) জরিপ মতে, চকরিয়া উপজেলার আটটি ইউনিয়নের ব্যক্তিমালিকানাধীন জমি, মাতামুহুরী নদীর দুই তীর, পাহাড়ি টিলা ও সমতল ভূমি মিলিয়ে অন্তত দুই হাজার হেক্টর জমিতে আবাদ হয়েছে পরিবেশ ও মানুষের জীবন ধ্বংসকারী তামাকের।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">কক্সবাজার উত্তর বন বিভাগের ফাঁসিয়াখালী রেঞ্জ কর্মকর্তা মেহরাজ উদ্দিন বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">আমার জানা মতে বনভূমির টিলা বা পাদদেশে তামাক আবাদের তথ্য নেই। এর পরও কোথাও হয়ে থাকলে খোঁজ নেওয়া হবে।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">খাসজমি, মাতামুহুরী নদীসহ বিভিন্ন ছড়ার দুই তীরে তামাকের আবাদ করা নিয়ে চকরিয়া উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. এরফান উদ্দিন বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">কোথাও খাসজমিতে তামাকের আবাদ করা হলে, তা অভিযানের মাধ্যমে গুঁড়িয়ে দেওয়া হবে।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span></span></span></span></p>