<p>প্রয়োজনীয় সুযোগ-সুবিধা এবং উপযুক্ত পরিবেশের অভাবে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় (কুবি) প্রতিষ্ঠার ১৮ বছরে ভর্তি হয়েছেন মাত্র চারজন বিদেশি ছাত্র। এদিকে সর্বশেষ ২০১২-১৩ বর্ষের পর অর্থাৎ দীর্ঘ ১১ বছর ধরে কোনো বিদেশি শিক্ষার্থী ভর্তি হননি বিশ্ববিদ্যালয়টিতে। এমনকি বিদেশি শিক্ষার্থী ভর্তিতে সহায়ক কোনো ধরনের উদ্যোগও নেয়নি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।</p> <p>রেজিস্ট্রার অফিস থেকে জানা যায়, ২০০৬ সালে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পর সর্বপ্রথম ২০১১-১২ শিক্ষাবর্ষে ভর্তি হন তিনজন বিদেশি শিক্ষার্থী। সর্বশেষ ২০১২-১৩ শিক্ষাবর্ষে একজন বিদেশি শিক্ষার্থী ভর্তি হন।</p> <p>তারা হলেন আইসিটি বিভাগে ২০১১-১২ শিক্ষাবর্ষে ভর্তি হওয়া মো. জাহাঙ্গীর, মাধব কাহার গৌদ এবং সিএসই বিভাগে ভর্তি হওয়া মিথালেশ কুমার মুখিয়া। এ ছাড়া ২০১২-১৩ শিক্ষাবর্ষে সিএসই বিভাগে ভর্তি হওয়া সাজিদ ইকবাল।</p> <p>বিদেশি শিক্ষার্থী ভর্তি না হওয়ার পেছনে বিশ্ববিদ্যালয় সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের থেকে জানা যায়, বিদেশি শিক্ষার্থীদের ভর্তিপ্রক্রিয়া নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা না থাকা, শ্রেণিকক্ষে বাংলায় পাঠদান, স্কলারশিপ ব্যবস্থা না থাকা,  প্রতিকূল পরিবেশ, পর্যাপ্ত নিরাপত্তার অভাব, আন্তর্জাতিক মানদণ্ডে পিছিয়ে থাকা ইত্যাদি। এ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক সংকট, বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে বিভিন্ন বিষয়ের নাম আছে, কিন্তু এর অধীনে কোন কোর্সগুলো পড়ানো হবে, কোর্সের মেয়াদ কত বছর, কোর্স কো-অর্ডিনেটর সম্পর্কে কোনো তথ্য থাকে না।</p> <p>এ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৌশল অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. সাইফুর রহমান বলেন, ‘যে চারজন বিদেশি শিক্ষার্থী এসেছিল, তারা সবাই ইঞ্জিনিয়ারিং ফ্যাকাল্টিতেই ভর্তি হয়েছে। কিন্তু বর্তমানে আগের চেয়ে দু-তিন গুণ সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি পেলেও এখনো তাদের উপযোগী পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধা নেই। সেগুলো ঠিকভাবে দিতে পারলে হয়তো তারা এখানে আসতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করত।’</p> <p>রেজিস্ট্রার মো. মজিবুর রহমান মজুমদার বলেন, ‘তাদের জন্য আলাদা করে কোনো সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করা এই মুহূর্তে সম্ভব না। ভবিষ্যতে যদি কোনো বিদেশি শিক্ষার্থী ভর্তি হয়, সে ক্ষেত্রে প্রয়োজন অনুযায়ী তাদের সুযোগ-সুবিধা দেওয়ার ব্যাপারে ভাবা যেতে পারে।’</p> <p>গত চার শিক্ষাবর্ষজুড়ে গুচ্ছে অন্তর্ভুক্ত থাকার কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ে বিদেশি শিক্ষার্থীদের ভর্তি হওয়ার অনাগ্রহ তৈরি হয়েছে কি না, সেই প্রশ্নে রেজিস্ট্রার বলেন, ‘গুচ্ছে থাকার কারণে বিদেশি শিক্ষার্থীদের নিয়ে আলাদা করে ভাবার কোনো সুযোগ ছিল না। তাদের একটি পদ্ধতি অনুসরণ করতে হয়েছে। এই বছরও আমাদের পক্ষে সম্ভব হচ্ছে না। পরবর্তী শিক্ষাবর্ষ থেকে বিদেশি শিক্ষার্থীদের সুযোগ-সুবিধার বিষয়টি আমরা বিবেচনায় রাখছি।’</p> <p>বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. হায়দার আলী বলেন, ‘আমি একাডেমিক কাউন্সিলে তাদের এই বিষয়টা নিয়ে আলোচনা করব। এই বছরে সম্ভব হচ্ছে না। তবে পরবর্তী বছর থেকে বিদেশি শিক্ষার্থীদের আনার জন্য আমরা একটা নীতিমালা তৈরি করব এবং বিজ্ঞাপনও দেব।’</p> <p> </p>