২.১ বিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগ, ঋণ ও অনুদানের প্রতিশ্রুতি চীনের

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
২.১ বিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগ, ঋণ ও অনুদানের প্রতিশ্রুতি চীনের
সংগৃহীত ছবি

চীন সরকার ও দেশটির কম্পানিগুলোর কাছ থেকে ২ দশমিক ১ বিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগ, ঋণ ও অনুদানের প্রতিশ্রুতি পেয়েছে বাংলাদেশ।

প্রধান উপদেষ্টার ডেপুটি প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার শুক্রবার (২৮ মার্চ) এর তথ্য জানান।

ঢাকায় নিযুক্ত চীনা রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন বলেছেন, প্রধান উপদেষ্টা বেসরকারি উদ্যোক্তাদের বাংলাদেশের উৎপাদন খাতে বিনিয়োগের আহ্বান জানানোর পর প্রায় ৩০টি চীনা কম্পানি চীনের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে এক বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।

চীন মংলা বন্দর আধুনিকীকরণ প্রকল্পে প্রায় ৪০০ মিলিয়ন ডলার, চীনা শিল্প অর্থনৈতিক অঞ্চলের উন্নয়নে প্রায় ৩৫০ মিলিয়ন ডলার এবং কারিগরি সহায়তা হিসেবে আরো ১৫০ মিলিয়ন ডলার ঋণ দেওয়ার পরিকল্পনা করেছে।

বাকি অর্থ অনুদান এবং অন্যান্য ধরণের ঋণ হিসেবে আসবে।

প্রধান উপদেষ্টার চারদিনব্যাপী প্রথম দ্বিপাক্ষিক চীন সফর প্রসঙ্গে চীনা রাষ্ট্রদূত ইয়াও জয়েন বলেন, এটি একটি ঐতিহাসিক সফর।

বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা) এবং বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের নির্বাহী চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরী বলেন, এই সফর বাংলাদেশের প্রতি চীনা বিনিয়োগের নতুন দ্বার উন্মোচন করতে পারে।

দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের সময় ড. ইউনূস চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংকে বাংলাদেশে চীনা বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর বিনিয়োগের জন্য সবুজ সংকেত দেওয়ার অনুরোধ করেন।

আশিক চৌধুরী জানান, প্রেসিডেন্ট শি চীনা কম্পানিগুলোকে তাদের উৎপাদন কেন্দ্র বহুমুখীকরণের অংশ হিসেবে বাংলাদেশে স্থানান্তর করতে উৎসাহিত করবেন বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।

তিনি আরো বলেন, এই সফর চীনের অনেক কম্পানিকে বাংলাদেশে বিনিয়োগে রাজি করাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। এটি কেবল সময়ের ব্যাপার। এ পর্যন্ত প্রতিক্রিয়া অত্যন্ত ইতিবাচক।

শুক্রবার ড. ইউনূস এবং আশিক চৌধুরী বেইজিংয়ে তিনটি ইন্টারঅ্যাকটিভ সেশনে বিশ্বের বৃহত্তম কিছু কম্পানিসহ ১০০টিরও বেশি চীনা প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। সেখানে তারা বাংলাদেশে, বিশেষ করে উন্নত বস্ত্রশিল্প, ওষুধশিল্প, হালকা প্রকৌশল এবং নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাতে বিনিয়োগের আহ্বান জানান।

প্রাসঙ্গিক
মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

নিউইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদন

নতুন বাংলাদেশে ইসলামি উগ্রপন্থীদের নিয়ে ‘শঙ্কা’

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
নতুন বাংলাদেশে ইসলামি উগ্রপন্থীদের নিয়ে ‘শঙ্কা’
সংগৃহীত ছবি

উগ্রপন্থীরা নারীর শরীরের ওপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে শুরু করেছিল। বাংলাদেশের স্বৈরাচারী প্রধানমন্ত্রীকে উৎখাতের পর এক ধরনের রাজনৈতিক শূন্যতা তৈরি হয়েছে। এরমধ্যে একটি শহরের ধর্মীয় মৌলবাদীরা হুমকি দিয়েছে, তরুণীরা আর ফুটবল খেলতে পারবে না। অন্য একটি শহরে এই মৌলবাদিরা এমন একজন ব্যক্তিকে ছেড়ে দিতে পুলিশকে বাধ্য করেছে এবং তাকে ফুল দিয়ে বরণ করেছে, যিনি জনসম্মুখে এক নারীকে হিজাব না পরার জন্য হেনস্তা করেছিল।

রাজধানী ঢাকায় এক সমাবেশে বিক্ষোভকারী এই বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছে, সরকার যদি ইসলাম অবমাননাকারীদের মৃত্যুদণ্ড না দেয়, তাহলে তারা নিজেরাই তাদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করবে। এর কয়েক দিন পর একটি নিষিদ্ধ ঘোষিত গোষ্ঠী ইসলামি খেলাফত প্রতিষ্ঠার দাবিতে বিশাল মিছিল করেছে।

বাংলাদেশ যখন গণতন্ত্র পুনর্গঠন ও সাড়ে ১৭ কোটি মানষের জন্য একটি নতুন ভবিষ্যৎ নির্মাণের চেষ্টা করছে, তখন ধর্ম নিরপেক্ষতার মুখোশের আড়ালে লুকিয়ে থাকা ইসলামি উগ্রপন্থীরা ক্রমশ প্রকাশ্যে আসতে শুরু করেছে।

একটি সাক্ষাৎকারে ইসলামপন্থী বেশ কয়েকটি দল ও সংগঠনের প্রতিনিধিরা (যাদের মধ্যে কয়েকটি আগে নিষিদ্ধ ছিল) স্পষ্ট ভাষায় বলেছেন, তাঁরা বাংলাদেশকে আরো মৌলবাদের দিকে ঠেলে দেওয়ার কাজ করছেন।

তাঁরা এমন এক ধরনের পরিবর্তনের লক্ষ্যে কাজ করছেন, যা দেশের বাইরে খুব কমই দেখা গেছে।

ইসলামপন্থী নেতারা জোর দিয়ে বলছেন, বাংলাদেশে এমন একটি ‘ইসলামি সরকার’ প্রতিষ্ঠা করা হোক, যে সরকার ইসলামকে অসম্মানকারীদের শাস্তি দেবে এবং ‘শালীনতা’ প্রতিষ্ঠা করবে। এই অস্পষ্ট ধারণাগুলো অন্যান্য জায়গায় রক্ষণশীল বা ধর্মতান্ত্রিক শাসনের পথ তৈরি করেছে।

নতুন সংবিধান তৈরিতে সংশ্লিষ্টরা বলেছেন, এই খসড়ায় বাংলাদেশের ধর্মনিরপেক্ষ পরিচয়টি বাদ দেওয়া হবে।

সেখানে বহুত্ববাদ প্রতিস্থাপন করা হবে এবং দেশকে আরো ধর্মীয় ভিত্তিতে পুনর্গঠন করা হবে।

নিপীড়ক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ক্ষমতাচ্যুত করতে যেসব নারী শিক্ষার্থী পথে নেমেছিল, তাদের জন্য মৌলবাদীদের এই বিশেষ উত্থান বিশেষভাবে বেদনাদায়ক।

তারা তার একদলীয় শাসনের পরিবর্তে বৈচিত্রপূর্ণ, গণতান্ত্রিক ও উন্মুক্ত পরিবেশ প্রতিষ্ঠা হবে বলে আশা করেছিলেন। কিন্তু তাদেরকে এখন ধর্মীয় জনপ্রিয়তার বিরুদ্ধে লড়তে হচ্ছে। তাদেরকে লড়াই করতে হচ্ছে এমন এক গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে, যারা নারী ও ধর্মীয় সংখ্যালঘু, বিশেষ করে হিন্দু ও ইসলামের ছোট ছোট সম্প্রদায়ের অনুসারীদের ঝুঁকিতে ফেলে দিয়েছে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান থেকে স্নাতক সম্পন্ন করা ২৯ বছর বয়সী শেখ তাসনিম আফরোজ এমি বলেন, ‘আমরা বিক্ষোভের সামনের সারিতে ছিলাম। আমরা রাস্তায় আমাদের ভাইদের রক্ষা করেছি। এখন পাঁচ-ছয় মাস পর দেখছি, পুরো ব্যাপারটা উল্টে গেল।’

সমালোচকরা বলছেন, ৮৪ বছর বয়সী নোবেল বিজয়ী অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার চরমপন্থীদের বিরুদ্ধে যথেষ্ট কঠোর পদক্ষেপ নিতে পারেননি। অধ্যাপক ইউনূস অপেক্ষাকৃত নমনীয়, গণতান্ত্রিক সংস্কারের ছায়ায় হারিয়ে যাওয়া ও সংঘাত‑বিমুখ হওয়ার কারণে স্পষ্ট দৃষ্টিভঙ্গি প্রকাশ করতে পারেননি। ফলে চরমপন্থীরা আরো বেশি জনসাধারণের স্থান দখল করে নিয়েছে।

তাঁর সহকারীরা একটি সূক্ষ্ম ভারসাম্যমূলক পদক্ষেপের কথা বলছেন। তাঁরা বলছেন, বছরের পর বছর ধরে একটি কর্তৃত্ববাদী শাসন জারি ছিল। এখন অবশ্যই বাকস্বাধীনতা ও প্রতিবাদের অধিকার রক্ষা করতে হবে। কিন্তু এটি করলে মূলত চরমপন্থী দাবির জন্য একটি দরজা উন্মুক্ত হয়ে যায়।

শেখ হাসিনার পতনের পর পুলিশের মনোবল ভেঙে পড়েছে। তারা আজ নিজেদের অবস্থান ধরে রাখতে পারছে না। সামরিক বাহিনী কিছু ‘পুলিশিং দায়িত্ব’ গ্রহণ করেছে বটে, তবে তারাও অন্তর্বর্তী সরকার ও ছাত্র আন্দোলনের নেতাদের সঙ্গে ক্রমশ বিরোধে লিপ্ত হচ্ছে। কারণ ছাত্ররা অতীতের নৃশংসতার জন্য অফিসারদের জবাবদিহি করতে চায়। বাংলাদেশে এখন যা ঘটছে, তা মৌলবাদের এক ঢেউকে প্রতিফলিত করে, যা এই অঞ্চলকে গ্রাস করে ফেলেছে।

আফগানিস্তান একটি চরম জাতিগত ধর্মীয় রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে। সেখানে নারীদের মৌলিক স্বাধীনতা থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে। পাকিস্তানে উগ্র ইসলামপন্থীরা বছরের পর বছর ধরে সহিংসতার মাধ্যমে তাদের চাওয়া‑পাওয়া বাস্তবায়ন করে আসছে। ভারতে একটি প্রতিষ্ঠিত হিন্দু ডানপন্থী দল দেশটির ধর্মনিরপেক্ষ গণতন্ত্রের ঐতিহ্যকে ক্ষুণ্ন করেছে। মিয়ানমার বৌদ্ধ চরমপন্থীদের দখলে রয়েছে, যারা জাতিগত নির্মূল অভিযান চালাচ্ছে।

বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের মন্ত্রী থাকার সময় ছাত্রনেতা নাহিদ ইসলাম বলেছিলেন, দেশ চরমপন্থার দিকে ঝুঁকে পড়ার ‘ভয় আছে’। তিনি সরকারের পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে এখন একটি নতুন রাজনৈতিক দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন।

তবে নাহিদ ইসলাম আশাবাদী যে সংবিধানে পরিবর্তন আনা হলেও গণতন্ত্র, সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্য এবং ধর্মীয় উগ্রবাদের প্রতি ঘৃণা করার মতো মূল্যবোধগুলো টিকে থাকবে। তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি না বাংলাদেশে এমন কোনো রাষ্ট্র গড়ে তোলা সম্ভব, যা এই মৌলিক মূল্যবোধগুলোর বিরুদ্ধে যায়।’

কেউ কেউ শিল্প ও বৌদ্ধিক বিতর্কের গভীর ঐতিহ্যের সঙ্গে বাঙালি সংস্কৃতির সংযোগের দিকে ইঙ্গিত করেন। আবার কেউ কেউ দেশের অর্থনীতির আকার নিয়ে আশার আলো দেখতে পান।

বাংলাদেশের অর্থনীতিতে নারীরা গভীরভাবে জড়িত। নারীদের ৩৭ শতাংশ আনুষ্ঠানিক শ্রমশক্তিতে আছেন, যা দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে সর্বোচ্চ হারের একটি। এই নারীদের জোর করে ঘরে ঢোকানোর চেষ্টা করলে তার বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে।

১৫ বছর ধরে শেখ হাসিনা এই চরমপন্থী শক্তিগুলোকে একই সঙ্গে দমন ও তোষণ করার চেষ্টা করেছেন। আর এই দীর্ঘ সময়ে চরমপন্থী শক্তিগুলো তাদের ভেতরে প্রবেশ করার চেষ্টা করেছে।

শেখ হাসিনা একটি পুলিশি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। তাঁর সরকার ইসলামপন্থীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিয়েছিল, যার মধ্যে মূলধারার কাছাকাছি থাকা ব্যক্তিরাও ছিলেন, যারা রাজনৈতিক চ্যালেঞ্জ তৈরি করতে পারে। একই সঙ্গে তিনি হাজার হাজার অনিয়ন্ত্রিত ইসলামী ধর্মীয় মাদরাসা অনুমোদন দিয়েছিলেন এবং শত শত মসজিদ নির্মাণে ১০০ কোটি ডলার বিনিয়োগ করেছিলেন। এর মাধ্যমে তিনি ইসলামী দলগুলোর ধর্মীয় রক্ষণশীল ভিত্তিকে জয় করার চেষ্টা করেছিলেন।

শেখ হাসিনার বিদায়ের পর ছোট ছোট চরমপন্থী দলগুলো যারা এই ব্যবস্থাকে সম্পূর্ণরূপে উল্টে দিতে চায় এবং গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার মধ্যে কাজ করতে চাওয়া মূলধারার ইসলামপন্থী দলগুলো–উভয়ে আরো মৌলবাদী বাংলাদেশের একটি যৌথ লক্ষ্যে একত্রিত হচ্ছে বলে মনে হচ্ছে।

বৃহত্তম ইসলামপন্থী দল জামায়াতে ইসলামী এখন একটি বড় সুযোগ দেখতে পাচ্ছে। বিশ্লেষক ও কূটনীতিকরা বলছেন, উল্লেখযোগ্য ব্যবসায়িক বিনিয়োগের অধিকারী এই দলটি দীর্ঘমেয়াদী খেলা খেলছে। যদিও বছরের শেষের দিকে যে নির্বাচন প্রত্যাশা করা হচ্ছে, সেই নির্বাচনে তাদের জয়লাভের সম্ভাবনা কম। তারপরও দলটি মূলধারার ধর্মনিরপেক্ষ দলগুলোর প্রতি মানুষের মনে সৃষ্ট অসম্মানকে পুঁজি হিসেবে দেখার আশা করছে।

জামায়াতে ইসলামীর সাধারণ সম্পাদক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, দলটি একটি ইসলামী কল্যাণ রাষ্ট্র চায়। তাদের কাছে ধর্ম ও রাজনীতির মিশ্রণে তুরস্ক হলো সবচেয়ে কাছের মডেল।

মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, ‘ইসলামে নারী ও পুরুষ উভয়ের জন্য আচরণ ও নীতিশাস্ত্রের দিক থেকে নৈতিক দিকনির্দেশনা রয়েছে। এই নির্দেশনাগুলোর মধ্যে নারীরা যেকোনো পেশায় অংশগ্রহণ করতে পারেন। যেমন খেলাধুলা, গান, থিয়েটার, বিচার বিভাগ, সামরিক বাহিনী, আমলাতন্ত্র ইত্যাদিতে নারীদের অংশগ্রহণে বাধা নেই।’

তবে বর্তমানে রাজনৈতিক শূন্যতার মধ্যে স্থানীয় পর্যায়ে পুরুষরা ইসলামী শাসনব্যবস্থার নিজস্ব ব্যাখ্যা নিয়ে আসছেন।

কৃষিনির্ভর শহর তারাগঞ্জে গত মাসে একদল আয়োজক দুটি নারী দলের মধ্যে একটি ফুটবল ম্যাচ আয়োজনের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। লক্ষ্য ছিল স্থানীয় মেয়েদের অনুপ্রাণিত করা। মেয়েরা যখন খেলার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিল, তখন শহরের এক মসজিদের নেতা আশরাফ আলী ঘোষণা দেন, নারী ও মেয়েদের ফুটবল খেলতে দেওয়া উচিত নয়।

ক্রীড়া সংগঠকরা সাধারণত শহরের বিভিন্ন স্থানে রিকশায় লাউডস্পিকার বেঁধে খেলার বিস্তারিত ঘোষণা দেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে আশরাফ আলীও তাঁর নিজস্ব লোকদের পাঠিয়ে লাউডস্পিকার লাগিয়ে খেলা দেখতে না যাওয়ার জন্য সাধারণ মানুষদের সতর্ক করতে থাকেন।

গত ৬ ফেব্রুয়ারি যখন নারী খেলোয়াড়রা ড্রেসিংরুমে জার্সি পরছিলেন, তখন স্থানীয় কর্মকর্তারা খেলাটি নিয়ে একটি সভা করছিলেন। আয়োজকদের একজন সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘ফুটবল ম্যাচটি হতে না দেওয়ার জন্য প্রয়োজনে আশরাফ আলী শহীদ হবেন বলে ঘোষণা দিয়েছেন।’

পরে স্থানীয় প্রশাসন নতি স্বীকার করে, খেলা বাতিল ঘোষণা করে এবং এলাকায় কারফিউ জারি করে।

ওই ম্যাচে ফুটবল খেলার জন্য বাসে চার ঘণ্টা ভ্রমণ করে এসেছিলেন ২২ বছর বয়সী তসলিমা আক্তার। তিনি বলেন, তিনি অনেক গাড়ি, সেনাবাহিনী এবং পুলিশ দেখেছেন। তারা খেলোয়াড়দের বলেছিলেন যে, ম্যাচটি বন্ধ।

তসলিমা আক্তার আরো বলেন, তাঁর এক দশকের ফুটবল খেলোয়াড়ের জীবনে এই প্রথম তিনি এত বিরোধিতার মুখোমুখি হলেন।

তসলিমা বলেন, ‘কী হতে পারে, তা নিয়ে আমি এখন একটু ভীত।’

এর কয়েক সপ্তাহ পর নিরাপত্তা বাহিনীর কয়েক ডজন সদস্যের উপস্থিতিতে আয়োজকরা নারীদের একটি ম্যাচ পরিচালনা করেন। কিন্তু সতর্কতা হিসেবে তাঁরা তরুণীদের তাদের হাফপ্যান্টের নিচে স্টকিংস পরতে বলেছিলেন।

উগ্রপন্থীদের অবিরাম হুমকির মুখে আয়োজকরা বলেছেন, তাঁরা নিশ্চিত নন যে, তাঁরা আবার ঝুঁকি নেবেন কিনা।

একটি সাক্ষাৎকারে মসজিদের ইমাম আশরাফ আলী গর্বিত কণ্ঠে বলেন, তিনি জাগতিক কিছুকে বিতর্কিত কিছুতে পরিণত করেছিলেন। তাঁর মতে, তারাগঞ্জের মতো গ্রামীণ এলাকায় নারীদের ফুটবল ‘অশ্লীলতা’ বাড়াবে।

নারীদের খেলাধুলা ছিল তার সর্বশেষ লক্ষ্য। বছরের পর বছর ধরে তিনি নির্যাতিত সংখ্যালঘু মুসলিম সম্প্রদায় আহমদিয়ার ৫০০ সদস্যকে ওই এলাকা থেকে তাড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছেন।

শেখ হাসিনার সরকারের পতনের রাতেই আহমদিয়াদের উপাসনালয়ে একদল জনতা আক্রমণ করে। এই আক্রমণটি মূলত সংখ্যালঘু ধর্মীয় স্থান, বিশেষ করে হিন্দুদের ধর্মীয় স্থানগুলোকে লক্ষ্য করে জাতীয় অরাজকতার ঢেউয়েরই অংশ। আহমদিয়া সম্প্রদায় এখনও ভয়ের মধ্যে বাস করছে। তাদের প্রার্থনা কক্ষে উপস্থিতি প্রায় অর্ধেক কমে গেছে।

আহমদিয়াদের উপাসনালয়ের ধ্বংস হয়ে যাওয়া সাইনবোর্ডটি পুনর্নির্মাণ করতে বা লাউডস্পিকার থেকে তাদের আজান সম্প্রচার করতে দেওয়া হচ্ছে না। আশরাফ আলী এসব সহিংসতার জন্য দায় এড়িয়ে গেছেন। কিন্তু তাঁর মতো প্রচারকদের ধর্মোপদেশ, যারা ‘আহমদিয়া ধর্মদ্রোহীদের’ বহিষ্কার করা প্রয়োজন বলে ঘোষণা করে, ক্রমাগত প্রচারণা চালিয়ে গেছে।

স্থানীয় আহমদিয়া শাখার সভাপতি এ কে এম শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘সাধারণ মানুষ শ্রদ্ধাশীল। কিন্তু এই ধর্মীয় নেতারা আমাদের বিরুদ্ধে।’

প্রাসঙ্গিক
মন্তব্য

আওয়ামী লীগকে কোনো দিন রাজনৈতিকভাবে দাঁড়াতে দেব না : উপদেষ্টা মাহফুজ

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
আওয়ামী লীগকে কোনো দিন রাজনৈতিকভাবে দাঁড়াতে দেব না : উপদেষ্টা মাহফুজ
সংগৃহীত ছবি

শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগের লক্ষাধিক নেতাকর্মী ভারতে বসে দেশের বিরুদ্ধে চক্রান্ত করছে উল্লেখ করে তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মাহফুজ আলম বলেছেন, ‘আওয়ামী লীগ দল ছিল না, তারা ছিল মাফিয়া। তাদের কোনো দিন রাজনৈতিকভাবে দাঁড়াতে দেব না।’

মঙ্গলবার (১ এপ্রিল) দুপুরে রাজধানীর তেজগাঁওয়ে গুম ও খুনের শিকার হওয়া পরিবারের সঙ্গে ঈদ শুভেচ্ছা বিনিময়কালে এসব কথা বলেন তিনি।

তথ্য উপদেষ্টা বলেন, ‘বিগত সরকারের সময় গুম-খুন রাজনৈতিক সিদ্ধান্তে হয়েছিল।

এগুলো করার জন্য বিশেষ টিম ছিল। পুলিশ-র‍্যাবসহ সবাইকে গুমের আদেশ দেওয়া ছিল।’

তিনি বলেন, ‘গোটা দেশেই আয়নাঘরের অস্তিত্ব ছিল। অসংখ্য মানুষ গুমের শিকার হয়েছে।

বিরোধী মতের অনেক মানুষকে গুম করে ভারতের জেলে পাচার করা হতো।’

মাহফুজ আলম বলেন, ‘গুমের সঠিক কোনো হিসাব নেই। তবে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সহায়তায় তালিকা করা হচ্ছে। বিএনপি-জামায়াতসহ ভিন্ন মতাদর্শের সবাই শেখ হাসিনার ভিকটিম ছিল।

মন্তব্য

ইন্ডিয়া টুডেকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে যা বললেন মাহফুজ আনাম

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
ইন্ডিয়া টুডেকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে যা বললেন মাহফুজ আনাম
উপস্থাপক ছিলেন রাজ চেঙ্গাপ্পা এবং দৈনিক দ্য ডেইলি স্টারের বিশিষ্ট সম্পাদক মাহফুজ আনাম। ছবি : ভিডিও থেকে নেওয়া

ইন্ডিয়া টুডের ‘নাথিং বাট ট্রু’ অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল বাংলাদেশের ইংরেজি দৈনিক দ্য ডেইলি স্টারের সম্পাদক মাহফুজ আনামকে। সেখানে মাহফুজ আনাম বাংলাদেশ নিয়ে কিছু প্রশ্নের উত্তর দেন। অনুষ্ঠানটির উপস্থাপক ছিলেন রাজ চেঙ্গাপ্পা।

অনুষ্ঠানের শুরুতে রাজ বলেন, গত বছর আগস্টে বিশাল ছাত্র আন্দোলনের মাধ্যমে শেখ হাসিনা বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে অপসারিত হন।

এর পর থেকেই বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক উত্তেজনাপূর্ণ হয়ে উঠেছে। ভারত মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের বিরুদ্ধে হিন্দু সংখ্যালঘুদের ধর্মীয় নিপীড়ন প্রতিরোধে ব্যর্থ হওয়ার অভিযোগ এনেছে এবং তাদের জীবন ও সম্পত্তির সুরক্ষা চেয়েছে। এ ছাড়া ভারত বাংলাদেশে ইসলামায়নের বৃদ্ধি এবং পররাষ্ট্রনীতিতে দেশটির চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী চীন ও পাকিস্তানের প্রতি ঝুঁকে পড়া নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।

এদিকে শান্তিতে নোবেল বিজয়ী ইউনূসের নেতৃত্বাধীন নতুন সরকারের কার্যক্রম মিশ্রপ্রতিক্রিয়া পেয়েছে।

তিনি আরো বলেন, ‘ইউনূস সরকার দাবি করছে, তারা অর্থনৈতিক পতন রোধ করতে সক্ষম হয়েছে এবং রাজনৈতিক, বিচার বিভাগীয় ও শাসন সংস্কার চালু করছে। তবে আইন-শৃঙ্খলার অবনতি, বিদেশি বিনিয়োগের অভাব, মূল্যস্ফীতির ঊর্ধ্বগতি এবং দীর্ঘস্থায়ী বেকারত্ব সমস্যাগুলো নিয়ে উদ্বেগ রয়ে গেছে।’

এ ছাড়া অনেকের ধারণা যে ইউনূস মৌলবাদী ইসলামপন্থী ছাত্রগোষ্ঠীর হাতের পুতুল, যারা সরকারের মৌলিক নীতিগুলো পরিবর্তন করছে। এটি অন্যতম প্রধান সমালোচনার বিষয়।

বাংলাদেশ সেনাবাহিনীও এ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে, সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান সতর্ক করে দিয়েছেন, দেশ ‘নৈরাজ্যের অবস্থায়’ রয়েছে এবং যদি রাজনৈতিক বিভাজন ও অস্থিরতা চলতে থাকে, তাহলে দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব হুমকির মুখে পড়বে।

তিনি আরো বলেন, এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহে থাইল্যান্ডে অনুষ্ঠিতব্য বিআইএসএসটিইসি (বিমসটেক) সম্মেলনে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং বাংলাদেশের নেতা মুহাম্মদ ইউনূসের সম্ভাব্য এক বৈঠকের আলোচনা চলছে। বিআইএসএসটিইসি বঙ্গোপসাগরীয় বহু খাতভিত্তিক প্রযুক্তিগত ও অর্থনৈতিক সহযোগিতা উদ্যোগের সংক্ষিপ্ত রূপ, দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সাতটি সদস্য রাষ্ট্র নিয়ে গঠিত, যার মধ্যে ভারত ও বাংলাদেশও রয়েছে।

এরপর রাজ প্রশ্ন করেন, মুহাম্মদ ইউনূস অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের নেতৃত্ব নেওয়ার সাত মাসেরও বেশি সময় পেরিয়ে গেছে। তাকে মনোনীত করা হয়েছিল এই প্রতিশ্রুতি দিয়ে যে তিনি রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, শাসনব্যবস্থা, নিরাপত্তাসহ সব ক্ষেত্রে বড় ধরনের সংস্কার আনবেন।

আপনি এই বিষয়গুলোর ওপর ইউনূসের কর্মদক্ষতাকে কিভাবে মূল্যায়ন করবেন?

মাহফুজ আনাম উত্তর দেন, শুরুতেই আমি তাকে মিশ্র গ্রেড দেব। কিছু ক্ষেত্রে তিনি খুব ভালো করেছেন, আবার অনেক ক্ষেত্রে প্রত্যাশার তুলনায় অনেক কম করেছেন। আর এটা বুঝতে হবে যে হাসিনা সরকার ১৫ বছর ক্ষমতায় ছিল। তিনি ছিলেন খুব শক্তিশালী নেত্রী এবং তিনি চলে যাওয়ায় ক্ষমতায় একটি শূন্যতা তৈরি হয়। আপনার নিশ্চয়ই মনে আছে, ইউনূস প্যারিসে ছিলেন, তিনি ৮ তারিখে দেশে ফিরেছিলেন এবং হাসিনা ৫ আগস্ট চলে যান দেশ ছেড়ে। মাঝের এই তিন দিন আমাদের দেশে কোনো সরকার ছিল না। এই তিন দিনই সংখ্যালঘুদের ওপর সহিংসতা এবং আক্রমণের পরিমাণ ছিল সবচেয়ে বেশি। 

কিছু কারাগার থেকে বন্দিরা পালিয়েছিল, কিছু মৌলবাদী কারাগার থেকে বের হয়ে গিয়েছিল। তাই এই প্রথম কয়েক দিনে অনেক বিশৃঙ্খলা এবং অস্থিরতা সৃষ্টি হয়েছিল। তারপর ইউনূস শপথ নেন, তার প্রাথমিক দলের সদস্যরা বেশ এলোমেলোভাবে নির্বাচিত হয়েছিল। আমি জানি, তিনি ব্যক্তিগতভাবে অনেকেই জানতেন না। তাই প্রশ্ন উঠতে পারে, কিভাবে তিনি তাদের মন্ত্রিসভায় নিয়েছিলেন, যাদের তিনি ভালোভাবে জানেন না। তাই অনেক অস্বস্তি ছিল, বলতে পারেন মিশ্র প্রকারের একটি দল। যারা একে অপরের সঙ্গে কাজ করেননি এবং তাদের অনেকেরই সরকার চালানোর অভিজ্ঞতা ছিল না। 

সুতরাং এসব কারণে শুরুতে বলা যায়, দুর্বল ব্যবস্থাপনা, ভুল দিকনির্দেশনা এবং কিছু নীতির অভাব ছিল। এখন সাত মাস পর অনেক বেশি স্থিতিশীল হয়েছে পরিস্থিতি। এ ছাড়া শুরুতে মূল্যস্ফীতি সবচেয়ে বিপজ্জনক ছিল, যা এখন স্থিতিশীল। আমরা গত দুই মাসে মূল্যস্ফীতির হার কমতে দেখেছি এবং আমাদের রপ্তানি এখন আগের স্তরে ফিরে এসেছে। উদাহরণস্বরূপ, গত বছর আমাদের রপ্তানি ছিল ১৯ বিলিয়ন, ১৯.৯ বিলিয়ন আর এখন এই বছরে একই স্তরে আছে। তাই টাকা ডলারের বিপরীতে স্থিতিশীল হয়েছে। আমাদের রেমিট্যান্স বেড়েছে। সুতরাং অর্থনৈতিক পতনের অনুভূতি এখন দূর হয়েছে। বলতে পারেন, আমরা স্থিতিশীল অবস্থায় আছি।

এরপর রাজ আবার প্রশ্ন করেন, এবার আমরা রাজনৈতিক ক্ষেত্রে আসি। গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে নতুন একটি রাজনৈতিক দলের জন্ম, যা যুব আন্দোলনের মধ্যে রূপ লাভ করেছে। গত মাসে ২৮ ফেব্রুয়ারি ছাত্র আন্দোলনের নেতারা, যারা হাসিনাকে ক্ষমতাচ্যুত করেছিলেন, আনুষ্ঠানিকভাবে একটি নতুন রাজনৈতিক দল ঘোষণা করেছেন। এটি ন্যাশনাল সিটিজেন পার্টি বা এনসিপি নামে পরিচিত। আপনি জানেন যে বাংলাদেশে দীর্ঘদিন ধরে দুটি পারিবারিক নেতৃত্বাধীন দল হাসিনার আওয়ামী লীগ এবং খালেদার বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বা বিএনপি রাজনীতিতে আধিপত্য বিস্তার করেছে। 

এখন এনসিপি কিছু দৃষ্টিকোণ থেকে বাংলাদেশের দ্বিদলীয় রাজনীতির জন্য একটি গুরুতর চ্যালেঞ্জ নিয়ে এসেছে, যা কয়েক দশক পর প্রথমবারের মতো বড় ধরনের একটি পরিবর্তনের সম্মুখীন হয়েছে। ঢাকায় একটি সমাবেশে এনসিপি নেতারা দ্বিতীয় একটি প্রজাতন্ত্র গড়ে তোলার অঙ্গীকার করেছিলেন এবং পুরনো ন্যারেটিভগুলো যেমন ধর্মনিরপেক্ষতা বনাম ইসলামপন্থী এবং ভারত বনাম পাকিস্তান সম্পর্কের থেকে মুক্তি চেয়েছিলেন। আবার, যা ঘটেছে তার একটি ধারণা দেওয়ার জন্য জুলাই আন্দোলনের ২৬ বছর বয়সী প্রতীক নাহিদ ইসলাম ইউনূস সরকারের মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগ করে এনসিপির আংশিক প্রধান বা কনভেনর হিসেবে মনোনীত হয়েছেন। এই নতুন রাজনৈতিক দলের আগমন কিভাবে গুরুত্বপূর্ণ এবং নির্বাচনের সম্ভাব্য তারিখ কী?

মাহফুজ আনাম উত্তর দেন, নতুন রাজনৈতিক দলের আগমন নিঃসন্দেহে এমন কিছু, যা আমি ব্যক্তিগতভাবে খুব প্রত্যাশা করছি। কারণ যেমন আপনি বলেছেন, আমরা দীর্ঘদিন ধরে রাজনৈতিকভাবে দ্বিদলীয় পরিস্থিতিতে ছিলা—বিএনপি অথবা আওয়ামী লীগ। এটা সত্যিই ৫ বছরের নির্বাচনী সময়কালে দুলতে থাকত, যতক্ষণ না হাসিনা শেষ ১৫ বছর শাসন করলেন। তবে তার আগের ইতিহাসে, ১৯৯১ সাল থেকে, যেটি আমরা ‘গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠান’ বলে জানি, যেটি জেনারেল আতাউর রহমানের পতনের বছর, তখন থেকে এই ৫ বছর ধরে দুই দল—আওয়ামী লীগ এবং বিএনপি একে অপরের মধ্যে দুলতে ছিল। তা ছাড়া আমাদের মনে রাখতে হবে, এরশাদের জাতীয় পার্টি আছে আর একটি দল আছে জামায়াতে ইসলামী, যা বাংলাদেশের পুরনো দলগুলোর মধ্যে অন্যতম। এখন বর্তমান অবস্থায়, ছাত্রদলের আগমন একটি নতুন উপাদান। একবার তারা একটি রাজনৈতিক দল গঠন হলে রাজনৈতিক সংস্কৃতির মধ্যে প্রবাহিত হতে হবে। নতুন দল হাসিনাকে অপসারণ করেছিল, তাই তাদের মধ্যে এক ধরনের সফলতার অনুভূতি রয়েছে, এমন কিছু যা বিএনপি করতে পারেনি, এমন কিছু যা অন্য কোনো রাজনৈতিক দল করতে পারেনি, তারা কয়েক মাসের আন্দোলনে এটি করেছে। সুতরাং সেই আত্মবিশ্বাস এখনো তাদের মধ্যে আছে। তাদের মনে হয় তারা বাংলাদেশকে সেভাবে রূপান্তরিত করতে পারে, যেভাবে তারা জিতেছিল। তারা রাজনৈতিক বাস্তবতার মুখোমুখি হবে, বিশেষ করে নির্বাচনের ক্ষেত্রে। নির্বাচনের ব্যাপারটি একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, আমরা সবাই এটি নিয়ে অধীর আগ্রহে আছি।

প্রথমত, এটা এখন মোটামুটি নির্ধারিত যে ২০২৫ সালের ডিসেম্বর অথবা সর্বাধিক জানুয়ারি মাসে হবে নির্বাচন। তবে ছাত্র দলগুলো প্রকাশ্যে বলছে, তারা নির্বাচন অপেক্ষা বেশি সংস্কার চায়। কিন্তু তারা নতুন এবং নির্বাচনে যেতে কিছুটা ভীত। হয়তো তারা দেখবে জনগণের সমর্থন তেমন নেই।

অন্যদিকে বিএনপি ক্ষমতায় আসার জন্য অপেক্ষা করছে, কারণ আওয়ামী লীগ এখন একপ্রকার বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। সুতরাং বিএনপি নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত, ছাত্ররা তেমন আগ্রহী নয় এবং জামায়াতে ইসলামী, যারা এখন বাংলাদেশের রাজনীতিতে একটি বড় ফ্যাক্টর, তারা দ্বিধাগ্রস্ত—তারা অপেক্ষা করতে রাজি, ১০-১৫ বছরও অপেক্ষা করতে রাজি। তারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে যদি হয়, কিন্তু  স্থগিত হলেও তাদের তেমন সমস্যা নেই। এটাই এখন পরিস্থিতি। 

তবে মূল কথা হলো, দেশবাসী নির্বাচন চায়। হাসিনার সবচেয়ে বড় সমালোচনা ছিল, গত তিনটি নির্বাচনে—২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সবগুলোতে অনেক ভোটার ভোট দিতে পারেননি। সুতরাং বর্তমানে বাংলাদেশে একটি প্রবল আগ্রহ রয়েছে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হোক এবং ভোটাররা তাদের ভোট দেওয়ার অধিকার ফিরে পেতে চান। এই পরিস্থিতি অনুযায়ী, আমরা ডিসেম্বর মাসে নির্বাচন দেখতে যাচ্ছি, যদি তা কোনো নাটকীয় কারণে স্থগিত না হয়।

এরপর রাজ বলেন, আপনি দেখেছেন ভারতীয় বিশেষজ্ঞরা কিভাবে আসন্ন নির্বাচন নিয়ে আলোচনা করছেন। তারা উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন, নতুন এনসিপি দলটি ইসলামী উপাদানে আধিপত্য বিস্তার করছে এবং  জামায়াতে ইসলামী দলটি ক্রমবর্ধমান ভূমিকা নিচ্ছে। উদ্বেগের বিষয় হলো, বাংলাদেশ তার ধর্মনিরপেক্ষ মূলনীতিগুলো হারাচ্ছে। উদাহরণ হিসেবে বলা হচ্ছে, ইউনূস সরকার যে সাংবিধানিক সংস্কার কমিশন গঠন করেছিল, তা জাতীয়তাবাদ, সমাজতন্ত্র এবং ধর্মনিরপেক্ষতার মতো শব্দগুলোকে মৌলিক মূলনীতি হিসেবে বাদ দিয়ে তাদের স্থলে প্রস্তাব করেছে সমতা, মানব মর্যাদা, সামাজিক ন্যায় এবং সম্ভবত বৈচিত্র্যের মতো বিষয়গুলো। সুতরাং বাংলাদেশের ধর্মনিরপেক্ষ ভিত্তিগুলো কি বিপন্ন এবং এটি কি ইসলামী পথে চলে যাচ্ছে? অনেক ভারতীয় বিশেষজ্ঞ মন্তব্য করছেন, যেমনটা আমরা পাকিস্তানে দেখেছি।

মাহফুজ উত্তর দেন, এটি ভারতীয় এবং বাংলাদেশি বিশেষজ্ঞ, ভারতীয় সাংবাদিক ও বাংলাদেশি সাংবাদিকদের জন্যও অন্যতম সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। ছাত্ররা কিছু দাবি করেছে, সাংবিধানিক কমিশন এই সুপারিশগুলো করেছে। তবে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় দল বিএনপি এর বিরোধিতা করেছে এবং তারা খুব জোরালোভাবে বলেছে, তারা পুরনো অগ্রাধিকার ফিরিয়ে আনতে চায়, যেমন ধর্মনিরপেক্ষতা, জাতীয়তাবাদ, গণতন্ত্র। সুতরাং এখানে আপনি একটি পরিষ্কার পরিস্থিতি দেখছেন। যেখানে সবচেয়ে বড় দল এই পরিবর্তনগুলোর বিরোধিতা করছে এবং ছাত্ররা এর সমর্থনে দাঁড়িয়েছে, আর নির্বাচনই এটি নির্ধারণ করবে।

তিনি আরো বলেন, জামায়াতে ইসলামী দলটি অনেক নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছে, তবে তারা কখনোই ৫ থেকে ৬ শতাংশের বেশি ভোট পায়নি। বিএনপির সঙ্গে জোটবদ্ধ হয়ে তারা একসময় ৮ শতাংশ ভোট পেয়েছিল, সুতরাং এটি তাদের ঐতিহাসিক ভোটের সমর্থন। তারা হয়তো একটু বেশি, ১০ শতাংশ পর্যন্ত পেতে পারে, তবে আমি মনে করি এর বেশি হবে না। 

তবে বাংলাদেশের ইসলামীকরণ বা পাকিস্তানের মতো যাওয়ার ব্যাপারের বড় প্রশ্নে আমি বলব, আমি ব্যক্তিগতভাবে এবং অন্য সাংবাদিকদের অনুরোধ করব, তারা বাংলাদেশকে আরো গভীরভাবে বিবেচনা করুক। আপনি জানেন, পাকিস্তান একটি মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ এবং তেমনি বাংলাদেশও একটি মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ। আমি আপনাকে বলতে চাই, আমরা মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ হলেও, আমরা পাকিস্তান ভেঙেছি।

আমরা সেই জাতি, যারা বাংলাদেশে নিয়ে গর্বিত এবং আমরা মুসলিম হিসেবে গর্বিত। তবে মুসলিম হওয়া মানে এই নয় যে আমরা ধর্মীয় মৌলবাদী। আমি আমার ভারতীয় বন্ধুদের অনুরোধ করব, আমাদের এই ফাঁদে ফেলবেন না, আমাদের পাকিস্তানের অভিজ্ঞতার নিয়ে বিচার করবেন না, আমাদের আলাদাভাবে ভাবুন।

এরপর রাজ বলেন, আমি আপনাকে নতুন সরকারের প্রথম কিছু মাসে হিন্দু সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার প্রসঙ্গে বলতে চাই। যে বিষয়টি নিয়ে ভারতীয় বিশেষজ্ঞরা এবং ভারত সরকারও উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। সম্প্রতি আরএসএস (ভারতের শাসক বিজেপি দলের আদর্শিক সংগঠন) বেঙ্গালুরুতে তাদের জাতীয় বৈঠকে এই বিষয়ে আলোচনা করেছে। তারা এ বিষয়টিকে একটি বৃহত্তর ভূ-রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র হিসেবে দেখেছে, যার মধ্যে পাকিস্তান এবং ডিপ স্টেটের ভূমিকা রয়েছে। তারা বলছে, বর্তমান বাংলাদেশ প্রশাসন সমর্থিত মৌলবাদী ইসলামিক গ্রুপগুলো হিন্দু সংখ্যালঘুদের ওপর এমন আক্রমণগুলো সংগঠিত করছে। এখন আপনি এ বিষয়টি কিভাবে দেখেন?  

মাহফুজ আনাম উত্তর দেন, প্রথমে আমার অনুরোধ থাকবে, আমি এই বিষয়টি আরএসএসের দৃষ্টিভঙ্গি হিসেবে দেখতে চাই, ভারতীয়দের নয়। কারণ যদি এটি ভারতীয় দৃষ্টিভঙ্গি হয়ে ওঠে, তবে আমরা সত্যিই বড় সমস্যায় পড়ব। আরএসএস একটি অত্যন্ত গতিশীল আদর্শিক দল। যদি আপনি আমাদের জামায়াতে ইসলামী সম্পর্কে জিজ্ঞেস করেন, তারাও একটি আদর্শিক দল। তাদের ভারতের প্রতি একটি দৃষ্টিভঙ্গি রয়েছে, যা বাংলাদেশিদের দৃষ্টিভঙ্গির সঙ্গে মিলবে না।

তাই আমি এটিকে আমি আরএসএসের দৃষ্টিভঙ্গি হিসেবে দেখতে চাই। আর আমি আশা করি, ইন্ডিয়া টুডে ম্যাগাজিন এবং ভারতীয় অন্য স্কলাররা আমাদের আরো স্বাধীনভাবে দেখবে। এখানে কোনো ইসলামিক ষড়যন্ত্র নেই। ভারতের মধ্যে এমন কিছু গ্রুপও থাকতে পারে, যারা ভারতকে কিছুটা অন্যভাবে দেখতে চায়। তারা আদর্শিকভাবে ভারতকে আরো গভীরভাবে একটি হিন্দু দেশ হিসেবে দেখতে চাইবে। আমাদের ১৮০ মিলিয়ন মানুষ। আপনি ডিসেম্বর মাসে আমাদের নির্বাচন দেখুন, তারপর দেখবেন সাম্প্রদায়িক দলগুলো কিভাবে অধিকাংশ ভোট পায়।

এরপর রাজ বলে ওঠেন আমি শুধু বলতে চাচ্ছি, ভারতীয় সরকার হিন্দুদের নির্যাতনের ব্যাপারে যে মন্তব্য করেছে, সেটা সম্পর্কে আপনার মতামত কী?

মাহফুজ আনাম বলেন, আমি মনে করি এটি আমাদের দুর্বলতা ছিল। এমন কিছু ঘটতে দেওয়া উচিত ছিল না। তবে এই সরকার তার দেখভাল করেছে এবং থামিয়েছে। প্রথম দুই-তিন মাসের ঘটনা বাদ দিলে, আপনি বাংলাদেশের সঠিক চিত্র দেখতে পাবেন। কিন্তু হ্যাঁ, সংখ্যালঘুদের নিয়ে সমস্যা ভারতেও ফিরে আসছে। আপনাদের সব প্রচেষ্টার পরেও হিন্দু-মুসলিম সমস্যা ফিরে এসেছে। এখন আমি এটাও বলতে পারি না যে আমরা এই অভিশাপ থেকে সম্পূর্ণ মুক্তি পেয়েছি, আমরা সংগ্রাম করছি। দক্ষিণ এশীয় মহাদেশ সংগ্রাম করছে। ভারত সংগ্রাম করছে, আমরা সংগ্রাম করছি। আধুনিকীকরণের দৃষ্টিকোণে আমি মনে করি, আমাদের একে অপরকে সাহায্য করা উচিত এবং এগিয়ে যাওয়া উচিত। এটি আমার দৃষ্টিভঙ্গি। আমি বলব না যে আমরা এটি পুরোপুরি কাটিয়ে উঠেছি, কিন্তু আমরা এতটা নিষ্ঠুর সাম্প্রদায়িক দেশও নই।

রাজ বলেন, ভারত-বাংলাদেশের সম্পর্ক আগের অবস্থায় ফিরে। ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক আগের আবস্থায় আনতে প্রতিবন্ধকতা কী?

মাহফুজ বলেন, আমি মনে করি, ইউনূস সরকারের পক্ষ থেকে বারবার পুনর্ব্যক্ত করা হয়েছে যে ভারতের সঙ্গে খুব ভালো সম্পর্ক, বোঝাপড়া এবং গভীর সহযোগিতার প্রয়োজন। এটাই বাংলাদেশের সরকারের অবস্থান, বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টার অবস্থান। তিনি এই বিষয়টি বহুবার উল্লেখ করেছেন এবং আমরা প্রধানমন্ত্রী মোদির সঙ্গে একটি বৈঠকের প্রস্তাবও দিয়েছি। তবে এটি সত্যি আপনি বাংলাদেশের রাস্তায় হাঁটলে সেখানে ভারতের প্রতি একটি শক্তিশালী বিরূপ মনোভাব দেখবেন। এই বিরূপ মনোভাব আমি বলব ভারতের বিরুদ্ধে নয়, বরং ভারতের দীর্ঘদিনের হাসিনার সমর্থন এর বিরুদ্ধে।

আবারও বলব, যদি ভারত এবং হাসিনার সহযোগিতা থাকে, আমরা তা স্বাগত জানাই। তবে হাসিনা দিনে দিনে আরো স্বৈরাচারী হয়ে উঠছিলেন। হাসিনা আসলে গণতান্ত্রিক সমাজ এবং নির্বাচন সম্পর্কে মৌলিক ধারণাগুলো ভুলে গিয়েছিলেন। এবং বাংলাদেশের জনগণের মধ্যে ধারণা তৈরি হয়েছে যে এই সব ক্ষেত্রে ভারত তার সঙ্গী ছিল। কারণ হাসিনা ভারতের পন্থা অনুসরণ করতেন। তবে আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি, এটি একটি পরিবর্তন পর্যায়, এই মনোভাবটি কমবে এবং নির্বাচন আসার সঙ্গে সঙ্গে জনগণের মধ্যে ভারতের প্রতি আরো বাস্তববাদী দৃষ্টিভঙ্গি ফিরে আসবে। সরকার অবশ্যই ভারতের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক রাখতে আগ্রহী এবং আমরা আশা করি, শ্রী জয়শঙ্কর আন্তর্জাতিকভাবে প্রশংসিত এবং সম্মানিত একজন পররাষ্ট্রমন্ত্রী, তিনি অবশ্যই আরো ভালো দৃষ্টিভঙ্গি পাবেন। সরকারের পক্ষ থেকে কখনোই ভারতকে সব কিছুর জন্য দোষারোপ করা হয়নি, হয়তো কিছু মতামত বা সোশ্যাল মিডিয়া ব্যক্তিত্ব এসব বলছেন, তবে সরকার এই ধরনের বক্তব্য দেয়নি।

সূত্র : ইন্ডিয়া টুডে।

মন্তব্য

ভূমিকম্প : বাংলাদেশের ত্রাণ সহায়তার দ্বিতীয় চালান মায়ানমারে

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
ভূমিকম্প : বাংলাদেশের ত্রাণ সহায়তার দ্বিতীয় চালান মায়ানমারে
সংগৃহীত ছবি

মায়ানমারের ভয়াবহ ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য বাংলাদেশ থেকে পাঠানো দ্বিতীয় দফার জরুরি ওষুধ ও ত্রাণ নেপিডোতে পৌঁছেছে।

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নির্দেশ মেনে মঙ্গলবার সকালে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী (বিএ) ও বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর (বিএএফ) তিনটি পরিবহন বিমানের মাধ্যমে এসব ওষুধ ও ত্রাণ পাঠানো হয়।

দুপুর ২টায় বিমান তিনটি নেপিডো বিমানবন্দরে পৌঁছায়। ত্রাণের মধ্যে রয়েছে ৪.২ মেট্রিক টন ওষুধ ও চিকিৎসা পণ্য, তাঁবু এবং শুকনা খাবার।

সেই সঙ্গে বাংলাদেশ থেকে ৫৫ সদস্যের একটি শক্তিশালী উদ্ধার ও চিকিৎসা দলও ছিল। এই মিশনটি তিনটি পরিষেবা—ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স (এফএসসিডি) ডাক্তার, বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর (বিএ) ডাক্তার এবং বেসামরিক ডাক্তারদের নিয়ে গঠিত রেসকিউ ও মেডিক্যাল টিম নিয়ে গঠিত।

মায়ানমারে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ড. এম মনোয়ার হোসেন মিয়ানমারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অ্যাম্বাসাডর এট লারজ চ তুনের কাছে ত্রাণসামগ্রী হস্তান্তর করেন।

দূতাবাসের প্রতিরক্ষা উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. আফতাব হোসেন হস্তান্তর অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে গত রবিবার বাংলাদেশ দুটি ফ্লাইটে ১৬.৫ মেট্রিক টন ত্রাণের প্রথম চালান পাঠিয়েছিল।

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ