ঢাকা, রবিবার ১৩ এপ্রিল ২০২৫
৩০ চৈত্র ১৪৩১, ১৩ শাওয়াল ১৪৪৬

ঢাকা, রবিবার ১৩ এপ্রিল ২০২৫
৩০ চৈত্র ১৪৩১, ১৩ শাওয়াল ১৪৪৬

মহানবী (সা.) যাদের বদদোয়া করতে নিষেধ করেছেন

মাইমুনা আক্তার
মাইমুনা আক্তার
শেয়ার
মহানবী (সা.) যাদের বদদোয়া করতে নিষেধ করেছেন

আমরা অনেক সময় না বুঝে চরম হতাশা, দুশ্চিন্তা, অসুস্থতা বা ক্রোধ থেকে বদদোয়া করে থাকি। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলেই আমরা অনুভব করি যে কাজটা একেবারেই ঠিক হয়নি। আবার অনেকে এসব বদদোয়াকে কিছুই মনে করেন না। অথচ এই বদদোয়াগুলো কখনো কখনো অনেক বড় ক্ষতির কারণ হতে পারে।

নিম্নে পবিত্র হাদিসের আলোকে এমন কিছু জিনিস তুলে ধরা হলো, যেগুলোকে বদদোয়া দেওয়ার ব্যাপারে নবীজি (সা.) সতর্ক করেছেন এবং আমরাও বেশির ভাগ সময়ে অধৈর্য হয়ে এসব জিনিসকেই বেশি বদদোয়া করি। 

নিজেকে বা সন্তানকে বদদোয়া করা : আমরা অনেক সময় অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা, ক্ষোভ ও হতাশা থেকে নিজেরা নিজেদের ওপর বদদোয়া করে বসি, তা আমাদের নিজেদের জন্য ভয়ংকর হতে পারে। নবীজি (সা.) তাঁর উম্মতদের এ কাজ করতে নিষেধ করেছেন। জাবের (রা.) বলেন, রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘তোমরা নিজেদের বিরুদ্ধে, নিজেদের সন্তান-সন্ততির বিরুদ্ধে, নিজেদের ধন-সম্পদের বিরুদ্ধে বদদোয়া কোরো না (কেননা, হয়তো এমন হতে পারে যে), তোমরা আল্লাহর পক্ষ থেকে এমন একটি সময় পেয়ে বসো, যখন আল্লাহর কাছে যা প্রার্থনা করবে, তোমাদের জন্য তা কবুল করে নেবেন।

’ (রিয়াদুস সালেহিন, হাদিস : ১৫০৫)

সাধারণত সন্তানরা তাদের মায়ের কাছে বেশির ভাগ সময় থাকে, ফলে মাকেই বেশি বিরক্ত করে। সংসারের চাপ, মানসিক অশান্তি, অসুস্থতা, ক্লান্তির মধ্যে সন্তানরা যখন খুব বেশি জ্বালাতন করে, তখন অনেক মা তাঁদের নিজের সন্তানকে বদদোয়া দিয়ে বসেন, যা থেকে সতর্ক থাকা জরুরি। কেননা মায়ের অনিচ্ছাকৃত দেওয়া এই বদদোয়াও তার বড় ক্ষতি করে ফেলতে পারে। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেছেন, (পূর্ববর্তী যুগে) এক মহিলা তার ছেলেকে ডাকল।

তখন তার ছেলে গির্জায় ছিল। বলল, হে জুরায়জ! ছেলে মনে মনে বলল, হে আল্লাহ! (একদিকে) আমার মা (এর ডাক) আর (অন্যদিকে) আমার নামাজ! ...(এভাবে একাধিকবার ডেকে সাড়া না পেয়ে) মা বললেন, হে আল্লাহ! পতিতাদের সামনে দেখা না যাওয়া পর্যন্ত যেন জুরায়জের মৃত্যু না হয়। এক রাখালিনী যে বকরি চরাত, সে জুরায়জের গির্জায় আসা-যাওয়া করত। সে একটি সন্তান প্রসব করল। তাকে জিজ্ঞেস করা হলো এ সন্তান কার ঔরসজাত? সে জবাব দিল, জুরায়জের ঔরসের।
জুরায়জ তার গির্জা থেকে নেমে এসে জিজ্ঞেস করল, কোথায় সে মেয়েটি, যে বলে তার সন্তানটি আমার? (সন্তানসহ মেয়েটিকে উপস্থিত করা হলে) জুরায়জ বলেন, হে বাবুস! তোমার পিতা কে? সে বলল, বকরির অমুক রাখাল।
(বুখারি, হাদিস : ১২০৬)

অধীনদের বদদোয়া করা : উল্লিখিত একই হাদিসের অপর বর্ণনায় নবীজি (সা.) বলেছেন, ‘তোমরা তোমাদের খাদিমদের বদদোয়া কোরো না এবং তোমাদের ধন-সম্পদের ওপরও বদদোয়া কোরো না। কেননা ওই সময়টি আল্লাহর পক্ষ থেকে কবুলের মুহূর্তও হতে পারে, ফলে তা কবুল হয়ে যাবে।’ (আবু দাউদ, হাদিস : ১৫৩২)

ব্যবহৃত জিনিসপত্রকে বদদোয়া করা : অনেক সময় আমরা অধৈর্য হয়ে ব্যবহৃত জিনিসপত্রকে বদদোয়া করি। একবার নবীজি (সা.)-এর এক সফরে এক সাহাবি তাঁর উটের ওপর বিরক্ত হয়ে তাঁর উটকে অভিসম্পাত করে বসেন। তখন রাসুল (সা.) বললেন, ‘তুমি এর থেকে নেমে যাও। আর অভিশপ্ত উটটি আমাদের সঙ্গে থাকতে পারবে না। তোমরা তোমাদের সন্তানদের ওপর এবং নিজের ধন-সম্পদের ওপরও বদদোয়া কোরো না। এমন যেন না হয় যে তোমরা এমন মুহূর্তে বদদোয়া করবে যখন আল্লাহর কাছে কিছু চাওয়া হয় এবং তা কবুল হয়।’ (মুসলিম, হাদিস : ৭৪০৫)

মুমিনকে বদদোয়া করা : হাদিস শরিফে ইরশাদ হয়েছে, ঈমানদারকে অভিশাপ দেওয়া তাকে হত্যা করার সমতুল্য। (বুখারি, হাদিস : ৬১০৫)।

কোনো মুমিনের জন্য এ ধরনের কাজ করা শোভা পায় না। রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘তোমরা পরস্পর পরস্পরকে আল্লাহ তাআলার অভিসম্পাত, তার গজব ও জাহান্নামের বদদোয়া কোরো না।’ (তিরমিজি, হাদিস : ১৯৭৬)

পরিবেশকে বদদোয়া দেওয়া : প্রাকৃতিক দুর্যোগ কিংবা বৈরী আবহাওয়ার কারণে আমরা অনেক সময় পরিবেশকে বদদোয়া করে বসি। অথচ নবীজি (সা.) এ ধরনের কাজ করতে নিষেধ করেছেন। মহানবী (সা.)-এর যুগে এক ব্যক্তির চাদর বাতাসে ওলটপালট হয়ে গেলে সে বাতাসকে অভিশাপ দিল। নবী (সা.) বললেন, ‘তুমি বাতাসকে লানত কোরো না, কেননা সে নির্দেশপ্রাপ্ত। যা অভিশাপযোগ্য নয়, কেউ তাকে অভিশাপ দিলে তা অভিশাপকারীর ওপরই পতিত হয়।’ (আবু দাউদ, হাদিস : ৪৯০৮)

 

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

অন্তরে প্রশান্তি আসে যেসব আমলে

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
অন্তরে প্রশান্তি আসে যেসব আমলে

দুশ্চিন্তা এক ধরনের মানসিক প্রতিক্রিয়া, যা মূলত কোনো অজানা বিপদ, ভবিষ্যৎ অনিশ্চয়তা, ব্যর্থতা কিংবা ক্ষতির সম্ভাবনা থেকে উদ্ভূত হয়। এটি মানুষের মস্তিষ্কের একটি প্রাকৃতিক সুরক্ষা ব্যবস্থা, যা মানুষকে সম্ভাব্য বিপদের জন্য প্রস্তুত থাকতে সাহায্য করে। তবে যখন এই প্রতিক্রিয়া অতিরিক্ত হয়ে যায়, তখন তা আমাদের স্বাভাবিক জীবনযাপনে ব্যাঘাত সৃষ্টি করে। দুশ্চিন্তা থেকে মুক্ত থাকতে মহান আল্লাহর সাহায্য প্রয়োজন।

কারণ একমাত্র মহান আল্লাহ ছাড়া আর কেউ মানুষের দুঃখ-দুর্দাশা দূর করতে পারে না। আল্লাহ যদি কাউকে মানসিক প্রশান্তি না দেন, তাহলে দুনিয়ার সবকিছু দিয়েও প্রশান্তি পাওয়া সম্ভব নয়। তাই মানসিক প্রশান্তি পেতে মহান আল্লাহর সাহায্যের বিকল্প নেই।

এখানে কোরআন-হাদিসের আলোকে এমন কিছু আমল তুলে ধরা হলো, যার মাধ্যমে মহান আল্লাহ মানুষের অন্তরকে প্রশান্তি দান করেন।

১. তাকওয়া অবলম্বন : যেকোনো পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে মহান আল্লাহর সাহায্যের বিকল্প নেই। আর তা পেতে প্রয়োজন তাকওয়া অবলম্বন করা। পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ ইরশাদ করেন, ‘আর যে কেউ আল্লাহর তাকওয়া অবলম্বন করে, আল্লাহ তার জন্য (উত্তরণের) পথ করে দেবেন এবং তিনি তাকে তাঁর ধারণাতীত উৎস থেকে দান করবেন রিজিক। আর যে ব্যক্তি আল্লাহর ওপর তাওয়াক্কুল করে তার জন্য আল্লাহই যথেষ্ট।

আল্লাহ তার ইচ্ছা পূরণ করবেনই; অবশ্যই আল্লাহ সবকিছুর জন্য স্থির করেছেন সুনির্দিষ্ট মাত্রা।’ (সুরা : তালাক, আয়াত : ২-৩)

আল্লাহর ওপর আস্থা : পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘যে ব্যক্তি আল্লাহর ওপর পূর্ণ আস্থা রাখে, তিনিই তার জন্য যথেষ্ট।(সুরা : তালাক, আয়াত : ৩)

আল্লাহ কারো জন্য যথেষ্ট হলে পৃথিবীর কোনো কিছু তার কোনো ক্ষতি করতে পারবে না। তার অন্তরেও কোনো ক্ষতির আশঙ্কায় দুশ্চিন্তা কাজ করবে না।

২. তাওবা-ইস্তিগফার : পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ বলেন, ‘অতঃপর বলেছি, তোমাদের রবের নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করো, নিশ্চয় তিনি মহাক্ষমাশীল, তিনি তোমাদের জন্য প্রচুর বৃষ্টিপাত করবেন এবং তিনি তোমাদেরকে সমৃদ্ধ করবেন ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্ততিতে এবং তোমাদের জন্য স্থাপন করবেন উদ্যান এবং প্রবাহিত করবেন নদীনালা।

(সুরা : নুহ, আয়াত : ১০-১২)।

অর্থাৎ তাওবা-ইস্তিগফারের মাধ্যমে মহান আল্লাহ বান্দাকে ক্ষমা করে দেন, তার রিজিক ও সন্তান-সন্ততিতে বরকত দান করেন, যেগুলো দুনিয়ায় দুশ্চিন্তার প্রধান কারণ হয়।

৩. নামাজের প্রতি যত্নবান হওয়া : দুশ্চিন্তা ও বিপদ-আপদ থেকে মুক্ত থাকার জন্য সর্বদা আল্লাহর সাহায্য প্রয়োজন। আর আল্লাহর কাছে সাহায্য চাইতে হয় নামাজের মাধ্যমে। এ কারণে যারা দুশ্চিন্তামুক্ত থাকতে চায়, তাদের উচিত নামাজের প্রতি যত্নবান হওয়া। রাসুল (সা.) নিজেও কোনো সমস্যার সম্মুখীন হলে নামাজে দাঁড়িয়ে যেতেন।  হুজাইফা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) কোনো কঠিন সমস্যার সম্মুখীন হলে নামাজ আদায় করতেন। (আবু দাউদ, হাদিস : ১৩১৯)

৪. দোয়া : মানুষ যখন কোনো বিপদে পড়ে, তার উচিত মহান আল্লাহর কাছে বেশি বেশি দোয়ায় লিপ্ত হওয়া। মহান আল্লাহ বলেন, ‘আর আমার বান্দারা যখন আমার সম্পর্কে তোমাকে জিজ্ঞাসা করে, তখন তুমি বলো, আমি তো কাছেই আছি। যখন কোনো প্রার্থনাকারী আমাকে ডাকে, তখন আমি তার ডাকে সাড়া দিই। অতএব, তারাও আমার ডাকে সাড়া দিক এবং আমাতে বিশ্বাস স্থাপন করুক, যাতে তারা ঠিক পথে চলতে পারে।’ (সুরা : বাকারাহ, আয়াত : ১৮৬)

৫. সুদিনে আল্লাহর ইবাদত : যারা সুদিনে আল্লাহর ইবাদত করে, আল্লাহভোলা হয় না, তাদের দুর্দিনেও মহান আল্লাহ তাদের রক্ষা করেন। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, যে লোক বিপদ-আপদ ও সংকটের সময় আল্লাহ তাআলার অনুগ্রহ লাভ করতে চায়, সে যেন সুখ-স্বাচ্ছন্দ্যের সময় বেশি পরিমাণে দোয়া করে। (তিরমিজি, হাদিস : ৩৩৮২)

আর সাধারণত মানুষ আল্লাহর ইবাদতের পরই তাঁর কাছে দোয়া করে।

৬. অধিক দরুদ পাঠ : অধিক দরুদ পাঠের মাধ্যমে মহান আল্লাহ মানুষের দুশ্চিন্তা দূর করে দেন। আনাস ইবনে মালেক (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুল (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি আমার ওপর একবার দরুদ পাঠ করবে, আল্লাহ তাআলা তার ওপর দশবার রহমত নাজিল করবেন, তার দশটি গুনাহ মিটিয়ে দেওয়া হবে এবং তার জন্য দশটি মর্যাদা উন্নীত করা হবে। (নাসায়ি, হাদিস : ১২৯৭)

মন্তব্য
প্রতিদিনের আমল

ঘুম থেকে উঠে মহানবী (সা.) যে দোয়া পড়তেন

ইসলামী জীবন ডেস্ক
ইসলামী জীবন ডেস্ক
শেয়ার
ঘুম থেকে উঠে মহানবী (সা.) যে দোয়া পড়তেন

মুমিনের সব কাজ ইবাদতের অংশ। তাই ঘুম ও সজাগ সর্বাবস্থায় মহান আল্লাহর স্মরণ জরুরি। ঘুমানোর সময় ও ঘুম থেকে উঠার পর কী দোয়া পড়তে হবে রাসুল (সা.) তা শিখিয়েছেন।

হুজাইফা বিন আল ইয়ামান (রা.) বলেছেন, নবী করিম (সা.) যখন বিছানায় ঘুমাতে যেতেন তখন তিনি বলতেন, 

«باسْمِكَ اللَّهُمَّ أمُوتُ وأَحْيَا» 

উচ্চারণ : বিসমিকা আল্লাহুম্মা আমুতু ওয়া আহইয়া।

অর্থ : ‘হে আল্লাহ, তোমার নামেই আমি মারা যাব এবং জীবিত হব। ’

এবং যখন তিনি ঘুম থেকে জাগ্রত হতেন তখন তিনি পড়তেন, 

 «الْحَمْدُ لِلَّهِ الَّذِيْ أَحْيَانَا بَعْدَ مَا أَمَاتَنَا، وَإِلَيْهِ النُّشُوْرُ»

উচ্চারণ : ‘আলহামদু লিল্লাহিল্লাজি আহইয়ানা বাদা মা আমাতানা ওয়া ইলাইহিন নুশুর। ’ 
‘সব প্রশংসা আল্লাহর জন্য যিনি (ঘুমের মতো) মৃত্যুর পর আমাদেরকে জীবিত করলেন, আর তাঁরই কাছে আমাদের সবার পুনরুত্থান। ’ (বুখারি, হাদিস নম্বর : ৬৩২৪)
 

মন্তব্য

কিয়ামতের দিন যে আমলের ওজন সবচেয়ে বেশি হবে

উম্মে আহমাদ ফারজানা
উম্মে আহমাদ ফারজানা
শেয়ার
কিয়ামতের দিন যে আমলের ওজন সবচেয়ে বেশি হবে

ইসলামে উত্তম চরিত্রের বিশেষ গুরুত্ব ও ফজিলত রয়েছে। মুমিনদের জন্য বিভিন্ন গুণে চরিত্রকে সৌন্দর্যমণ্ডিত করা ঈমানের দাবি। কেননা উত্তম চরিত্র ছাড়া একজন মুমিনের ঈমান পরিপূর্ণ হতে পারে না। ঈমানের পরিপূর্ণতার জন্য উত্তম চরিত্র অর্জন করা অপরিহার্য।

এ সম্পর্কে আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেছেন, ওই মুমিন ঈমানে পরিপূর্ণ, যার চরিত্র সর্বোত্তম। (সুনানে আবু দাউদ, হাদিস : ৪৬৮২)

আমাদের সমাজে মানুষের সর্বোত্তম হওয়ার বিভিন্ন মাপকাঠি আছে। বিভিন্নজনের কাছে ভিন্ন মাপকাঠিতে ভিন্ন ধরনের মানুষ সর্বোত্তম। কিন্তু ইসলামের দৃষ্টিতে সর্বোত্তম হওয়ার একটি গুরুত্বপূর্ণ মাপকাঠি হচ্ছে উত্তম চরিত্র।

এ ব্যাপারে আবদুল্লাহ ইবনে আমর (রা.) বলেন, নবী (সা.) অশ্লীলভাষী ও অসদাচরণের অধিকারী ছিলেন না। তিনি বলতেন, তোমাদের মধ্যে সেই ব্যক্তিই সর্বোত্তম, যার চরিত্র সর্বোত্তম। (বুখারি, হাদিস : ৩৫৫৯)

রাসুল (সা.) ছিলেন সর্বোত্তম চরিত্রের অধিকারী। তিনি কখনো কারো সঙ্গে খারাপ আচরণ করেননি।

চরিত্রবান মানুষকে তিনি ভালোবাসতেন। তাই রাসুল (সা.)-এর প্রিয় মানুষদের কাতারে শামিল হতে চাইলে উত্তম চরিত্রের অধিকারী হওয়া আবশ্যক। উত্তম চরিত্রের সর্বোত্তম নমুনা ছিলেন রাসুল (সা.)। আবদুল্লাহ ইবনে আমর (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) জন্মগতভাবে বা ইচ্ছাপূর্বক অশ্লীলভাষী ছিলেন না। তিনি বলেছেন, তোমাদের মধ্যে ওই ব্যক্তি আমার কাছে সবচেয়ে প্রিয়, যে সর্বোত্তম চরিত্রের অধিকারী।
(বুখারি, হাদিস : ৩৭৫৯)

উত্তম চরিত্রের সওয়াব এত বেশি, যা আমরা কল্পনাও করতে পারি না। কিয়ামতের দিন মানুষের সওয়াব ও গুনাহ পরিমাপের জন্য দাঁড়িপাল্লায় ওজন করা হবে। সেদিন যে আমলের ওজন সবচেয়ে বেশি ভারী হবে তা হলো উত্তম চরিত্র। এ সম্পর্কে আবু দারদা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) ইরশাদ করেন, কিয়ামতের দিন মুমিনের দাঁড়িপাল্লায় উত্তম চরিত্রের চেয়ে বেশি ওজনের আর কোনো জিনিস হবে না। কেননা আল্লাহ অশ্লীল ও কটুভাষীকে ঘৃণা করেন। (সুনানে তিরমিজি, হাদিস : ২০০২)

উত্তম চরিত্রের সওয়াব ওজনে সবচেয়ে বেশি ভারী হওয়ার রহস্য আরেকটি হাদিস থেকে জানা যায়। এক ব্যক্তি সারা দিন সাওম পালন করে এবং সারা রাত নফল সালাত পড়ে যেরূপ সওয়াব পায়, মহান আল্লাহ উত্তম চরিত্রের বদৌলতে সেরূপ সওয়াব দান করেন। আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসুল (সা.)-কে বলতে শুনেছি, নিশ্চয়ই মুমিন ব্যক্তি তার ভালো চরিত্রের মাধ্যমে (দিনে) সাওম পালনকারী ও (রাতে) নামাজ আদায়কারীর মর্যাদা লাভ করতে পারে। (আবু দাউদ, হাদিস : ৪৭৯৮)

জান্নাতে মানুষের আমল অনুযায়ী সম্মানজনক জায়গায় অধিষ্ঠিত করা হবে। যার আমল যত ভালো হবে, সে তত বেশি সম্মানিত হবে। রাসুল (সা.) নিজে উত্তম চরিত্রবানদের জন্য জান্নাতের সর্বোচ্চ স্থানে ঘর বরাদ্দের জিম্মাদারি নিয়েছেন। এ বিষয়ে আবু উমামা (রা.) বলেন, রাসুল (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি ন্যায়সংগত হওয়া সত্ত্বেও ঝগড়া পরিহার করবে, আমি তার জন্য জান্নাতের বেষ্টনীর মধ্যে একটি ঘরের জিম্মাদার। আর যে ব্যক্তি তামাশার ছলেও মিথ্যা বলে না, আমি তার জন্য জান্নাতের মাঝখানে একটি ঘরের জিম্মাদার এবং যে ব্যক্তি তার চরিত্রকে সৌন্দর্যমণ্ডিত করেছে, আমি তার জন্য জান্নাতের সর্বোচ্চ স্থানে অবস্থিত একটি ঘরের জিম্মাদার।’ (আবু দাউদ, হাদিস : ৪৮০০)

মন্তব্য

আজকের নামাজের সময়সূচি, ১৩ এপ্রিল ২০২৫

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
আজকের নামাজের সময়সূচি, ১৩ এপ্রিল ২০২৫

আজ রবিবার ১৩ এপ্রিল ২০২৫, ৩০ চৈত্র ১৪৩১, ১৩ শাওয়াল ১৪৪৬

ঢাকা ও এর পার্শ্ববর্তী এলাকার নামাজের সময়সূচি নিম্নরূপ—

জোহর সময় শুরু- ১২টা ৩ মিনিট। 

আসরের সময় শুরু - ৪টা ৩০ মিনিট।

মাগরিব- ৬টা ২৩ মিনিট।

এশার সময় শুরু - ৭টা ৩৯ মিনিট।

আগামীকাল ফজর শুরু - ৪টা ২৩ মিনিট।

আজ ঢাকায় সূর্যাস্ত - ৬টা ১৯ মিনিটে এবং আগামীকাল সূর্যোদয়- ৫টা ৪০ মিনিটে।

সূত্র : ইসলামিক রিসার্চ সেন্টার, বসুন্ধরা, ঢাকা।

প্রাসঙ্গিক
মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ