ঢাকা, মঙ্গলবার ১৮ মার্চ ২০২৫
৪ চৈত্র ১৪৩১, ১৭ রমজান ১৪৪৬

ঢাকা, মঙ্গলবার ১৮ মার্চ ২০২৫
৪ চৈত্র ১৪৩১, ১৭ রমজান ১৪৪৬

আট বছর ধরে শিকলে বাঁধা জীবন করসিনার

পঞ্চগড় প্রতিনিধি
পঞ্চগড় প্রতিনিধি
শেয়ার
আট বছর ধরে শিকলে বাঁধা জীবন করসিনার

পঞ্চগড়ের করসিনার আক্তার (৩৪) নামে এক নারীকে আট বছর ধরে পায়ে শিকল দিয়ে বেঁধে রাখা হয়েছে। মাথায় সমস্যা আছে এই অভিযোগেই তার এই শিকলবন্দি জীবন। বেঁধে রাখা শিকলে পায়ে ঘা হয়ে গেলেও মুক্তি মিলছে না তার। দরিদ্র পরিবারটি ভালো চিকিৎসা করাতে না পারায় দিন দিন আরো অসুস্থ্য হয়ে পড়ছে ওই নারী।

তার পাগলামির কারণে নিরুপায় হয়েই বেঁধে রাখতে বাধ্য হচ্ছেন বলে জানিয়েছে তার পরিবার।

পঞ্চগড় সদর উপজেলার সাতমেরা ইউনিয়নের হরেয়াপাড়া এলাকার কলিম উদ্দিনের বড় মেয়ে করসিনা আক্তার। দশম শ্রেণিতে পড়ার সময় তেঁতুলিয়া উপজেলার দেবনগর ইউনিয়নের মানিকডোবা গ্রামের নাজিম উদ্দিনের ছেলে আবুল হোসেনের সাথে তার বিয়ে হয়। বিয়ের পর ভালোই চলছিল তার সংসার।

বিয়ের দুবছর পর করসিনার প্রথম ছেলে সন্তান জন্ম দেন। তার দুবছর পর এক মেয়ে সন্তান জন্ম দেন। ওই মেয়ে সন্তান প্রসব করার সময় মানুষিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েন করসিনা। তাছাড়া তার স্বামী আবুল হোসেন বিভিন্ন কারণে তাকে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করতো।

করসিনা বেশি অসুস্থ হয়ে পড়লে চিকিৎসা না করিয়ে বাড়িতেই বেঁধে রাখতে শুরু করে তার শ্বশুর বাড়ির লোকজন। এভাবেই স্বামীর সংসারে দুই বছর শেকলবন্দি হয়ে কাটে তার। পরে আবুল কৌশলে করসিনাকে তালক দিয়ে অন্যত্র বিয়ে করেন। তারপর থেকে বাবার বাড়িতে আশ্রয় হয় করসিনার। দরিদ্র বাবা মা তাদের সাধ্য মতো চিকিৎসা করান রংপুরসহ বিভিন্ন স্থানের বড় বড় ডাক্তারের চিকিৎসা করান।

তবে চিকিৎসার টাকা ফুড়িয়ে যায় অল্প কয়েকদিনেই। তারপর পাবনা মানসিক হাসপাতালে দুই মাস ভর্তি রাখেন। কিন্তু সেখানেও কোনো কাজ না হওয়ায় বাড়ি নিয়ে আসেন।

ছেড়ে দিলেই পালিয়ে যান, লোকজনকে মারধর করেন, ভাঙচুর করেন বলে শিকলে বেঁধে রাখতে বাধ্য হয় বলে জানায় তার পরিবার। স্বামী ও বাবার বাড়ি মিলে ৮ বছর ধরে তার শিকলে বাঁধা জীবন। তার ছেলে হৃদয়ের বয়স এখন ১০ বছর আর মেয়ে আশামনির বয়স আট বছর।

আজ বুধবার দুপুরে কলিম উদ্দিনের বাড়ি গিয়ে দেখা যায়, করসিনার বাম পায়ে লোহার শিকল পরিয়ে ঘরে খুঁটিতে তালা দিয়ে বেঁধে রাখা হয়েছে। এর আগে ডান পায়ে শিকল ছিল। সেখানে ক্ষতের সৃষ্টি হলে বাম পায়ে শিকল দেওয়া হয়। বেশির ভাগ সময় ঘরের ভেতর কাটে তার। মাঝে মধ্যে বারান্দায় বের করা হয়। দেখলে তাকে স্বাভাবিক মানুষ বলেই মনে হবে। সুন্দর হাতের লেখায় নিজের ও পরিবারের লোকজনের নামও লিখতে পারেন। গুছিয়ে কথাও বলতে পারেন। তবে কিছুক্ষণ পরেই আবার অসংলগ্ন কথা বলতে শুরু করে। রাতে চেচামেচি করেন।

স্থানীয়রা জানান, বছরের পর বছর এভাবেই কাটছে তার দিন। ছেড়ে দিলেই লোকজনকে মারধর করেন এবং পালিয়ে যান।

করসিনার সাথে কথা বলতে চাইলে তিনি বসতে বলেন। তারপর বলেন, আমি বলি যে আমাকে ছেড়ে দাও আমি গোসল করবো, বাড়ি যাবো। এখানে কোনো সমস্যা নেই। কিন্তু বাবা-মা আমাকে ছেড়ে দেয় না। তারপর কথাবার্তা অসংলগ্ন হয়ে আসে।

করসিনার মা আলিমা খাতুন বলেন, শিকল দিয়ে বেঁধে রাখা ছাড়া কোনো উপায় নেই। নিজের মেয়েকে এভাবে রাখতে খুব খারাপ লাগেও, কিছু করার নেই। সুযোগ পেলেই ও পালিয়ে যায়। কোথায় চলে যায় কোনো ঠিক নেই। টাকার অভাবে ভালো করে চিকিৎসা করাতে পারছি না। আমার মনে হচ্ছে চিকিৎসা করালে মেয়েটা ভালো হয়ে যাবে। 

বাবা কলিম উদ্দিন বলেন, বিয়ের আগে মেয়েটি আমার ভালোই ছিল। বিয়ের কিছুদিন পর থেকেই তার স্বামী নানা রকম নির্যাতন শুরু করে। স্বামীর নির্যাতনের কারণে মেয়ে মানসিকভাবে ভারসাম্যহীন হয়ে পড়ে। আমরা তার স্বামীকে মেয়ের চিকিৎসার জন্য খরচও দিতে চেয়েছিলাম। কিন্তু সে কোনো কথা শোনেনি। পাগল বলে আমার মেয়েকে সে তালাক দিয়ে দেয়। 

প্রতিবেশি সকিনা বেগম বলেন, স্বামীর অবহেলা এবং সন্তানদের ভালবাসা নেই বলে করসিনার অসুস্থতা দিনদিন বাড়ছে। চিকিৎসার সাথে পারিবারিক সহানুভূতি পেলে সে সুস্থ্য হয়ে উঠতে পারে। তার চিকিৎসার জন্য সহায়তা প্রয়োজন। 

সাতমেরা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আতাউর রহমান বলেন, তার চিকিৎসার জন্য তার নামে ভিজিডি কার্ড দেওয়া হয়। বিষয়টি জেলা প্রশাসককেও অবহিত করেছি। জেলা প্রশাসক চিকিৎসা সহায়তার জন্য একটা ব্যবস্থা নিবেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন।

মন্তব্য

আবর্জনার স্তূপে মিলল মুখ বাঁধা যুবকের মরদেহ

গাইবান্ধা প্রতিনিধি
গাইবান্ধা প্রতিনিধি
শেয়ার
আবর্জনার স্তূপে মিলল মুখ বাঁধা যুবকের মরদেহ
ছবি: কালের কণ্ঠ

গাইবান্ধার পলাশাবাড়ী উপজেলায় একটি আবর্জনার স্তূপ থেকে অজ্ঞাত পরিচয় এক যুবকের (২৮) মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার (১৮ মার্চ) সকাল ৯টার দিকে উপজেলার রংপুর-বগুড়া মহাসড়কের পাশে মহেশপুর নামকস্থান থেকে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়।

স্থানীয়রা জানায়, সকাল ৯টার দিকে আবর্জনার স্তূপে কাপড়ে মুখ বাঁধা অবস্থায় এক অজ্ঞাত পরিচয় যুবকের (২৮) মরদেহ পড়ে থাকতে দেখা যায়। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে মুহূর্তে সেখানে উৎসুক মানুষের ভিড় জমে।

পরে পুলিশকে জানালে তারা মরদেহটি উদ্ধার করে সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, সকাল ৮টার দিকে তারা মরদেহটি দেখেন। যুবকের মুখ বাঁধার পাশাপাশি মাথায় আঘাতের চিহ্ন ছিল।  

পলাশবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জুলফিকার আলী ভুট্টো বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে এক যুবকের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।

এখন পর্যন্ত তার নাম-পরিচয় পাওয়া যায়নি। ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহটি সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পেলে বিস্তারিত বলা যাবে।  

মন্তব্য

এনজিওকর্মীকে নগ্ন করে নির্যাতন; ভিডিও দেখিয়ে অর্থ আদায়

চান্দিনা (কুমিল্লা) প্রতিনিধি
চান্দিনা (কুমিল্লা) প্রতিনিধি
শেয়ার
এনজিওকর্মীকে নগ্ন করে নির্যাতন; ভিডিও দেখিয়ে অর্থ আদায়
প্রতীকী ছবি

কুমিল্লার চান্দিনায় এনজিওর এক পুরুষ ও এক নারী কর্মীকে আটকে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। নির্জন বাগানে নিয়ে পুরুষ কর্মীকে গাছের সঙ্গে বেঁধে ও নারী কর্মীকে নগ্ন করে নির্যাতন করা হয়। মোবাইল ফোনে ধারণ করা ওই ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে অর্থ আদায় করে অভিযুক্তরা। এ ঘটনায় থানায় মামলা করা হয়েছে।

চান্দিনা থানার ওসি নাজমুল হুদা এসব তথ্য জানিয়েছেন। 

সোমবার (১৭ মার্চ) সন্ধ্যার পর থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত চান্দিনা পৌরসভার তুলাতলী দক্ষিণপাড়া দিঘীরপারের একটি বাগানে এ ঘটনা ঘটে। তারা আইডিএফ নামে একটি এনজিওর চান্দিনা শাখায় কর্মরত। পরদিন মঙ্গলবার (১৮ মার্চ) চারজনের নাম উল্লেখ করে থানায় মামলা করেন এনজিওর পুরুষ কর্মী তারেক রহমান।

আরো পড়ুন
বাংলাদেশিদের ওমরাহ ভিসা বন্ধ হয়নি : ধর্ম উপদেষ্টা

বাংলাদেশিদের ওমরাহ ভিসা বন্ধ হয়নি : ধর্ম উপদেষ্টা

 

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, আইডিএফ নামে একটি এনজিওর এক পুরুষ ও এক নারী কর্মী তুলাতলী গ্রামে ঋণের কিস্তি আদায় করতে সন্ধ্যা গড়িয়ে যায়। এ সময় কয়েকজন যুবক তাদের আটক করে তুলাতলী গ্রামের শেষে এতবারপুর মালিবাড়িসংলগ্ন একটি মৎস্য প্রজেক্টের পারে নিয়ে তাদের আদায় করা কিস্তির টাকা ছিনিয়ে নেয়। এ সময় স্থানীয় রুহুল আমিন নামে এক লোক দেখে ফেলায় সেখান থেকে হাত ও চোখ বেঁধে তাদের তুলাতলী দক্ষিণপাড়া দিঘীরপারেনিয়ে আটক করে। এ সময় পুরুষ কর্মীকে গাছের সঙ্গে বেঁধে মারধর করে এবং বৈদ্যুতিক শক দেয়।

নারী কর্মীকে নগ্ন করে লাঞ্ছিত করে এবং মোবাইল ফোনে ভিডিও ধারণ করে। ওই ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে আবার চাঁদা দাবি করে। এ সময় ওই নারী তার বোনকে ফোন করেন এবং তার বোন নির্যাতনকারীদের বিকাশ নম্বরে ২০ হাজার টাকা পাঠান। ওই টাকা পাওয়ার পরও নারীকে শারীরিক নির্যাতন করা শুরু করে। এক পর্যায়ে গ্রামের লোকজন টের পেয়ে ডাকাত বলে ধাওয়া করলে নির্যাতনকারীরা পালিয়ে যায়।

আরো পড়ুন
আছিয়ার শোকে ভারসাম্যহীন বাবার পাশে দাঁড়ালেন তারেক রহমান

আছিয়ার শোকে ভারসাম্যহীন বাবার পাশে দাঁড়ালেন তারেক রহমান

 

আইডিএফ এনজিওর ঋণ আদায়কারী তারেক রহমান বলেন, ‘আমরা কিস্তির টাকা আদায় শেষে ফেরার পথে এ ঘটনা ঘটে। আমাদের বাগানে নিয়ে আমাকে গাছের সঙ্গে বেঁধে মারধর করে এবং বৈদ্যুতিক শক দেয়। তারা নারীকে নগ্ন করে মোবাইলে ভিডিও ধারণ করে ২ লাখ টাকা দাবি করে। বিকাশে ২০ হাজার টাকা এনে দিই কিন্তু তারা বাকি টাকা পেলে ভিডিও ডিলেট করবে বলে জানায়। এদিকে ২০ হাজার টাকা নেওয়ার পরও তারা নারীর ওপর অত্যাচার শুরু করে। গ্রামবাসী টের পেয়ে ধাওয়া করে এবং আমাদের উদ্ধার করে পুলিশে খবর দেয়। পুলিশ আমাদের উদ্ধার করে চান্দিনা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করায়।’

চান্দিনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাজমুল হুদা বলেন, ‘হাসপাতালে চিকিৎসা শেষে আমরা তাদের থানায় এনে বিস্তারিত শুনে মামলা নিই। আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।’

প্রাসঙ্গিক
মন্তব্য

ফুটবলার হামজা চৌধুরীকে স্বাগত জানাতে যাওয়ার পথে তরুণের পা দ্বিখণ্ডিত

হবিগঞ্জ প্রতিনিধি
হবিগঞ্জ প্রতিনিধি
শেয়ার
ফুটবলার হামজা চৌধুরীকে স্বাগত জানাতে যাওয়ার পথে তরুণের পা দ্বিখণ্ডিত
জেলার মানচিত্র

হবিগঞ্জের বাহুবল উপজেলায় দ্রুতগতির ট্রাকচাপায় মুজিবুর রহমান (২৩) নামে এক তরুণের পা দ্বিখণ্ডিত হয়ে গেছে।

সোমবার (১৭ মার্চ) বিকেল ৩টার দিকে উপজেলার দিগাম্বর বাজারের কাছে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে এ দুর্ঘটনা ঘটে। ওই তরুণ তারকা ফুটবলার হামজা চৌধুরীকে স্বাগত জানানোর শোডাউনে গিয়ে দুর্ঘটনা কবলিত হন বলে পুলিশ নিশ্চিত করেছে।

আহত মুজিবুর বাহুবলের ইজ্জতপুর গ্রামে ইদ্রিস আলীর ছেলে।

তার সাথে যাওয়া স্নানঘাটের আজমান আলীর ছেলে তারেক মিয়াও (২২) একই দুর্ঘটনায় আহত হন।

স্থানীয়রা জানায়, সোমবার ফুটবলার দেওয়ান হামজা চৌধুরী সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে সড়কপথে বাহুবলে আসেন। মোটরসাইকেল আরোহী ওই দুই তরুণ তাকে স্বাগত জানানোর শোডাউনে গিয়েছিলেন। দিগাম্বর বাজারের পাশে কালিবাড়ি নামক স্থানে যাওয়ার পর দ্রুতগতির একটি ট্রাকের সাথে তাদের মোটরসাইকেলের ধাক্কা লাগলে উভয়ে আহত হন।

এর মধ্যে মুজিবুরের ডান পা দ্বিখণ্ডিত হয়ে গেছে। পরে স্থানীয়রা আহত দুজনকে উদ্ধার করে বাহুবল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মুজিবুরকে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়। তারেককে বাহুবলেই চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

ফুটবলার হামজা চৌধুরীকে স্বাগত জানানোর শোডাউনে গিয়ে দুজন আহত হওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করে বাহুবল মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ জাহিদুর রহমান জানান, দুর্ঘটনার পর ট্রাক নিয়ে চালক পালিয়ে গেছেন।

পরে পুলিশ ওই দুই যুবকের ব্যবহৃত মোটরসাইকেলটি উদ্ধার করে।

প্রাসঙ্গিক
মন্তব্য
কুড়িগ্রাম

ঈদকে সামনে রেখে সুই-সুতা নিয়ে ব্যস্ত ‘টুপি’ তৈরির কারিগররা

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি
কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি
শেয়ার
ঈদকে সামনে রেখে সুই-সুতা নিয়ে ব্যস্ত ‘টুপি’ তৈরির কারিগররা
ছবি: কালের কণ্ঠ

কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার প্রত্যন্ত গ্রামগুলোতে ঈদকে সামনে রেখে ব্যস্ত সময় পার করছেন টুপি শিল্পের সঙ্গে যুক্ত নারীরা। সুই-সুতোর নিপুণ ছোঁয়ায় তৈরি নকশাদার টুপি দেশের গণ্ডি পেরিয়ে এখন জায়গা করে নিচ্ছে আন্তর্জাতিক বাজারে। বিশেষ করে ইউরোপের দেশ রোমানিয়ায় যাচ্ছে নারীদের তৈরি এসব টুপি।

এ শিল্পের মাধ্যমে ফুলবাড়ীর অনেক নারী স্বাবলম্বী হচ্ছেন।

ঘরে বসেই টুপি তৈরি করে তারা অর্থ উপার্জন করছেন। যা তাদের পরিবারে এনে দিয়েছে সচ্ছলতা। ফলে শুধু অর্থনৈতিক উন্নতিই নয়, নারীদের আত্মবিশ্বাসও বৃদ্ধি পাচ্ছে।

ফুলবাড়ী উপজেলার বালাটারী গ্রামের মায়া বেগমের বাড়িতে গেলে দেখা যায়, কয়েকজন নারী সুই-সুতা হাতে নিয়ে মনোযোগ দিয়ে টুপি তৈরিতে ব্যস্ত।

এখানকার নারীরা প্রশিক্ষণ নিয়ে এ কাজে দক্ষতা অর্জন করেছেন এবং নিয়মিত কাজ করছেন। প্রায় ৪০ জন নারী বিভিন্ন নকশার টুপি তৈরি করছেন, যা দেশীয় বাজার ছাড়িয়ে বিদেশেও রপ্তানি হচ্ছে।

টুপি তৈরির মূল্য নির্ভর করে এর সূচিকর্ম ও নকশার ওপর। দীর্ঘদিন ধরে এই শিল্পের সঙ্গে যুক্ত মায়া বেগম জানান, প্রতিটি টুপি তৈরি করলে ৮০০ থেকে ১ হাজার ৫০০ টাকা পর্যন্ত মজুরি পাওয়া যায়।

দুই বছর ধরে এই কাজে যুক্ত খাদিজা বেগম বলেন, ‘আগে সংসারের খরচ চালানো খুব কষ্টকর ছিল। কিন্তু টুপি তৈরির কাজ শেখার পর এখন নিজেই আয় করতে পারছি। মাসে দুই থেকে তিনটি টুপি তৈরি করে ২ হাজার থেকে ৩ হাজার টাকা আয় হয়। যা সংসার চালাতে অনেক সহায়তা করছে।’

আরেক নারী উদ্যোক্তা আদরী বেগম জানান, ‘অভাবের কারণে অনেক দুশ্চিন্তায় থাকতে হতো।

কিন্তু এখন ঘরে বসেই কাজ করতে পারছি, সংসারে সচ্ছলতা এসেছে।’

নারীদের এই কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরিতে তালুক শিমুলবাড়ী ফকিরপাড়া গ্রামের বাবলু খন্দকার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছেন। তার সহায়তায় অনেক নারী এখন নিজেদের পায়ে দাঁড়ানোর সুযোগ পাচ্ছেন।

বাবলু খন্দকার বলেন, ‘আমি রোমানিয়া টুপি তৈরির উপকরণ সরবরাহ করি এবং তৈরি শেষে নির্ধারিত মজুরি দিয়ে টুপি সংগ্রহ করি। বর্তমানে আমার উদ্যোগের আওতায় ৮০০ নারী কর্মসংস্থানের সুযোগ পাচ্ছেন।’

প্রাসঙ্গিক
মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ