<p>ঋণের চাপে কেড়ির বড়ি খেয়ে আত্মহত্যা করেছেন মা-মেয়ে। মঙ্গলবার (৩০ জুলাই) ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগরে এ ঘটনা ঘটে। নিহতরা হলেন উপজেলার ইব্রাহিমপুর গ্রামের দক্ষিণ পাড়ার মজিবুর রহমানের স্ত্রী নূরতারা বেগম (৫৫), ও কাঁঠালিয়া গ্রামের সিঙ্গাপুরপ্রবাসী সবুজ মিয়ার স্ত্রী সোনিয়া আক্তার (২৬)। তারা দুজনেই সম্পর্কে মা ও মেয়ে।</p> <p>পরিবারের সদস্য ও ডাক্তার জানান, মঙ্গলবার দুপুরে নূরতারা নাতিনের হাত দিয়ে মেয়ের কাছে কেড়ির বড়ি পাঠান। প্রথমে নূরতারা কেড়ির বড়ি খেয়ে মেয়েকে ফোনে জানালে মেয়েও খান। তাদের নবীনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে মা-মেয়ের স্টোমাক ওয়াশ করে কুমিল্লায় রেফার করেন ডাক্তার। কুমিল্লা নেওয়ার পথেই দুজন মারা যান। সোনিয়া অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন এবং তার দুটি শিশুসন্তান রয়েছে।</p> <p>সোনিয়ার মেয়ে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী জান্নাত বলে, ‘সকালে আম্মা আমাকে বলেছে, তোর নানি রাস্তায় আসবে, তোকে এক হাজার টাকা ও একটা ব্যাগ দেবে, কেউ যেন জানতে না পারে। আমি নানির কাছ থেকে টাকা ও ব্যাগ নিয়ে আসি। বাসায় যেতেই আম্মা আমার হাত থেকে ব্যাগ নিয়ে নেন। আমার ছোট বোনকে সঙ্গে দিয়ে আম্মা আমাকে দোকানে পাঠিয়ে দেন। মজা (চিপস) কিনে বাসায় ফিরে দেখি আম্মা দরজা বন্ধ করে আছেন। আমি অনেকবার ডাকাডাকি করলেও দরজা খুলছেন না। পরে আমি চিৎকার শুরু করলে সবাই এসে দরজা ভাঙে। তখন আম্মা বমি করতে ছিলন, বাড়ির লোকজন হাসপাতালে নিয়ে যায়।’ </p> <p>অন্যদিকে নূরতারা বেগমের ছেলের বউ লিজা বেগম জানান, তার শাশুড়ি দুপুরে বাহির থেকে ঘরে এসে শুয়ে পড়ে এবং বিদেশে দুই ছেলের সঙ্গে ফোনে কথা বলার কিছুক্ষণ পরে বমি করতে থাকেন। পরে বাড়ির লোকজন হাসপাতালে নিয়ে যায়।<br />  <br /> মজিবুর রহমান বলেন, ‘সকালে আমি কৃষিকাজে যাই। কাজ থেকে বিকেলে বাড়িতে আসার পথে জানতে পারি, আমার স্ত্রী ও মেয়ে কেড়ির বড়ি খাইছে। এই খবর শুনে আমি অজ্ঞান হায়ে পড়ি।’ </p> <p>তিনি আরো বলেন, ‘বিভিন্ন সমিতি ও মানুষের কাছ থেকে প্রায় ১২ লাখ টাকার মতো ঋণ ছিল আমাদের পরিবারের। আমার দুই ছেলে বিদেশ রয়েছে তারা তো আমাদের টাকা পাঠাচ্ছে। তার পরও কেন আমার মেয়ে ও স্ত্রীকে মরতে হবে? আমি এটার কিছুই বুঝতে পারছি না।’</p> <p>নবীনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহবুব আলম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, গতকাল রাত ১০টায় পুলিশ লাশ উদ্ধার করেছে এবং ময়নাতদন্তের জন্য জেলা মর্গে পাঠানো হয়েছে।</p>