<p>সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদের আম্বারিয়ায় দুই বাংলাদেশি শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। বুধবার (১৮ ডিসেম্বর) বিষয়টি জানতে পারেন নিহতের স্বজনেরা। সোমবার রাতে শয়নকক্ষে রুম হিটার বিস্ফোরণ ঘটলে ঘুমন্ত অবস্থায় ওই দুই শ্রমিকের মৃত্যু হয়।</p> <p>ঘটনার পর নিহত এক শ্রমিকের স্বজনের মাধ্যমে ঘটনা জেনে সৌদি পুলিশ বিকল্প উপায়ে দরজা খুলে মরদেহ দুইটি উদ্ধার করে।নিহতরা হলেন মাসুম আহমেদ (৪০) ও মাকসুদুল হোসেন (২৪)। নিহত মাসুম আহমেদ গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার গোসিংগা ইউনিয়নের পটকা গ্রামের শাহজাহান মিয়ার ছেলে। তিনি প্রায় সাত মাস আগে সৌদি আরব গিয়েছিলেন। অপরদিকে নিহত মাকসুদুল একই ইউনিয়নের ফকিরপাড়া গ্রামের মোখলেসুর রহমানের ছেলে। তিনি প্রায় তিন বছর ধরে সৌদি আরবে চাকরি করছিলেন।</p> <p>নিহত মাসুমের মা পিয়ারা খাতুন জানান, তার এক ভাতিজা রিয়াদ শহরে থাকেন। দুইদিন ধরে তার ছেলের মোবাইল ফোন বন্ধ ছিল। ফলে মাসুমের খোঁজ নিতে তার ওই ভাতিজাকে আম্বারিয়ায় পাঠান। সেখানে গিয়ে তার ছেলের বাসার দরজা-জানালা বন্ধ পান। কোনো সাড়া না পেয়ে সন্দেহ হলে সৌদি পুলিশকে ফোন করেন তার ভাতিজা। পরে পুলিশ বিকল্প উপায়ে দরজা খুলে ঘরের মেঝতে পড়ে থাকা মাসুম ও মাকসুদুলের মরদেহ উদ্ধার করে।</p> <p>মাকসুদুল হোসেনের বড় বোন মিনারা বেগম জানান, কাজ শেষে বাসায় ফিরে ক্লান্ত শরীরে তার ছোট ভাইসহ মাসুম রুম হিটার চালিয়ে ঘুমিয়ে পড়েন। রাতে কোনো এক সময় রুম হিটার বিস্ফোরণ ঘটে। এতে ঘুমন্ত অবস্থায় তারা দুইজনই মারা যান।</p> <p>নিহত মাকসুদুল হোসেনের ছোট ভাই রিফাত হাসান বলেন, ‘বড় ভাই প্রায় তিন বছর ধরে সৌদি আরবে। বিয়ের মাত্র ২০ দিন পরই সেখানে পাড়ি জমিয়েছিলেন। দুই সপ্তাহ পর ছুটিতে দেশে আসার কথা ছিল। এরই মধ্যে বুধবার সকালে ভাইয়ের মৃত্যুর খবর পাই।’ কান্নায় ভেঙে পড়ে তিনি আরো বলেন, ‘আম্বারিয়া এলাকায় একটি রিসোর্টে শ্রমিকের কাজ করতেন আমার ভাই।</p> <p>নিহত মাসুমের স্ত্রী রত্না আক্তার জানান, একটি এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে তার স্বামীকে সৌদি আরবে পাঠানো হয়েছিল। অনেক স্বপ্ন ছিল, কিন্তু সব শেষ হয়ে গেছে। তিনি জানান, তাদের এক ছেলে ও এক মেয়ে। ছেলেটির বয়স মাত্র তিন আর মেয়েটির বয়স ১৩ বছর। কান্নায় ভেঙে পড়ে রত্না আরো বলেন, ‘আমার সন্তানদের কী অইবো, কে দেখবো তাগরে!’</p> <p>শ্রীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সজীব আহমেদ বলেন, ‘স্বজনদের মাধ্যমে সৌদি আরবে বাংলাদেশি দুই শ্রমিকের মৃত্যুর খবর জেনেছি। মরদেহ দুইটি দেশে আনার জন্য সব ধরনের সহযোগিতা করা হবে।’</p>