<p>পোল্ট্রি শিল্পের অস্থিরতা নিরসনে এবং বাজারে মাংস ও ডিমের দাম কমাতে এ শিল্প সিন্ডিকেটমুক্ত করার দাবি জানিয়েছেন প্রান্তিক খামারিরা। সেই সঙ্গে পোল্ট্রি ফিডের দাম কমানোসহ চার দফা দাবি জানান তারা। এসব দাবি মানা না হলে আগামী জানুয়ারি থেকে সব খামার বন্ধ করার ঘোষণা দেন খামারিরা।</p> <p>বৃহস্পতিবার (১৯ ডিসেম্বর) গাজীপুর প্রেস ক্লাবে আয়োজিত আলোচনা সভায় বাংলাদেশ প্রান্তিক পোল্ট্রি শিল্প রক্ষা অ্যাসোসিয়েশনের নেতৃবৃন্দ এ ঘোষণা দেন। সভায় সংগঠনের গাজীপুর জেলা শাখার কমিটি গঠন করা হয়।</p> <p>প্রান্তিক খামারি মো. সিরাজ উদ্দিনের সভাপতিত্বে আলোচনাসভায় প্রধান আলোচক ছিলেন বাংলাদেশ প্রান্তিক পোল্ট্রি শিল্প রক্ষা অ্যাসোসিয়েশনের কেন্দ্রীয় কমিটির প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান মো. মফিজুল ইসলাম মল্লিক। সংগঠনের সহ-সভাপতি মো. শাহিনুর ইসলামসহ কয়েকজন প্রান্তিক খামারি বক্তব্য দেন।</p> <p>খামারিরা জানান, একটি মুরগির বাচ্চা উৎপাদন করতে হ্যাচারি মালিকদের সর্বোচ্চ ১৫-২০ টাকার মত খরচ হয়। অথচ ওই বাচ্চা খামারিদের কিনতে হয় ৭০-৮০ টাকা দিয়ে। কোনো কোনো সময় ১০০-১২০ টাকা দিয়েও বাচ্চা পাওয়া যায় না। হ্যাচারি মালিকরা অতিরিক্ত লাভ না করে সহনীয় মাত্রায় বাচ্চা বিক্রি করলে খামারিরা আরো বেশি লাভবান হতে পারতো। </p> <p>তারা আরো বলেন, বাচ্চা ও খাদ্য উৎপাদনকারী কর্পোরেট কম্পানিগুলো এ ব্যবসার পাশাপাশি মুরগি ও ডিম উৎপাদন করে যা আইন পরিপন্থী। ফলে তারা খুব সহজেই বাজার নিয়ন্ত্রণ করতে নিজেদের মধ্যে সিন্ডিকেট তৈরি করে থাকে। তাই হ্যাচারি এবং ফিড উৎপাদনকারী কর্পোরেট কম্পানিগুলোকে মুরগি এবং ডিম উৎপাদন থেকে বিরত রাখতে হবে। পোল্ট্রি ফিডের প্রধান উপাদান ভুট্টার দাম কমলেও খাবারের দাম কখনো কমানো হয় না। এ ছাড়া ঢাকার কাপ্তানবাজার ও কাওরান বাজারসহ বিভিন্ন আড়তের ডিম ব্যবসায়ীরা আগের দিন রাতে ডিমের দাম নির্ধারণ করে থাকেন। </p> <p>খামারিরা বলেন, ডিম উৎপাদন করে খামারের মালিকরা অথচ তার দাম নির্ধারণ করে ডিম ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের সদস্যরা। এটা অত্যন্ত দুঃখজনক এবং খামারিদের জন্য বেদনাদায়ক। এ থেকে পরিত্রাণ পাওয়া দরকার। </p> <p>অনুষ্ঠানে প্রান্তিক খামারিরা চার দফা দাবি পেশ করেন। এ দাবিগুলো হচ্ছে, ব্রয়লার মুরগির খাদ্যের ৫০ কেজির বস্তার দাম ২০০০-২১০০ টাকার মধ্যে এবং লেয়ার সোনালি মুরগির খাদ্যের দাম ১৭০০-১৮০০ টাকার মধ্যে আনতে হবে। খাবারের মান উন্নত করতে হবে। সব ধরনের মুরগির বাচ্চার দাম ২০-২৫ টাকার মধ্যে আনতে হবে। মুরগির খাদ্য ও বাচ্চা উৎপাদনকারী কর্পোরেট কম্পানি রেডি মুরগি ও ডিম উৎপাদন বন্ধ করতে হবে। প্রতি উপজেলায় ৩০০ জন ব্রয়লার, লেয়ার ও সোনালীসহ সব ধরনের মুরগির খামারিকে কমপক্ষে তিন লাখ টাকার সহজ শর্তে স্বল্প সুদে ব্যাংক ঋণ দিতে হবে। এ সব দাবি পূরণ না হলে সারা দেশের সব খামারের উৎপাদন বন্ধ করে দেওয়া হবে বলে জানান তারা।</p>