কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে রাতের আঁধারে দুর্বৃত্তরা শহীদ মিনার ভাঙচুর করেছে। গতকাল বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ২টার পর উপজেলার গুণবতী ডিগ্রি কলেজের সামনে এ ঘটনা ঘটে। সকালে শহীদ মিনারে ফুল দিতে এসে দুটি স্তম্ভ ভাঙা দেখে নিন্দা জানিয়েছে সর্বস্তরের মানুষ।
জানা গেছে, প্রতিবছরের মতো এবারও শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালনের লক্ষ্যে বৃহস্পতিবার গুণবতী কলেজের শহীদ মিনার সাজানো হয়।
রাত ১২টার পর কলেজ কর্তৃপক্ষ ও বিএনপিসহ কয়েকটি সংগঠন ভাষাশহীদদের শ্রদ্ধা জানায়। রাত ২টার পর দুর্বৃত্তরা এলাকায় বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির উদ্দেশ্যে শহীদ মিনারের দুটি স্তম্ভ ভেঙে ফেলে।
খবর পেয়ে শুক্রবার সকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. জামাল হোসেন, মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার এ কে এম মীর হোসেন ও থানা পুলিশ। এ ছাড়া উপজেলা জামায়াতের আমির মাহফুজুর রহমান ও গুণবতী ইউনিয়ন বিএনপির আহ্বায়ক রফিকুল ইসলাম চৌধুরীসহ রাজনৈতিক নেতারা শহীদ মিনার পরিদর্শন করেন।
গুণবতী ডিগ্রি কলেজের নৈশপ্রহরী সামছুল আলম বলেন, রাত ২টার পর শহীদ মিনারের দুটি স্তম্ভ ভাঙার আওয়াজ শুনেছি। কিছুক্ষণ পর সেখানে গিয়ে কাউকে দেখিনি।
গুণবতী ইউনিয়ন বিএনপির আহ্বায়ক রফিকুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, রাজনৈতিক বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির জন্য একটি পক্ষ শহীদ মিনার ভেঙেছে। তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানাচ্ছি।
গুণবতী ইউনিয়ন জামায়াতের আমির ইউসুফ মেম্বার বলেন, দুর্বৃত্তরা গুণবতীর শান্ত পরিস্থিতিকে অশান্ত করতেই শহীদ মিনার ভাঙচুর করেছে। এর তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি।
উপজেলা জামায়াতের আমির মাহফুজুর রহমান বলেন, শহীদ মিনার আমাদের জাতীয় চেতনার প্রতীক। রাতের আঁধারে শহীদ মিনারের দুটি স্তম্ভ ভেঙে ফেলায় তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি।
গুণবতী ডিগ্রি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আবদুল লতিফ বলেন, রাতে কে বা কারা শহীদ মিনারের দুটি স্তম্ভ ভাঙচুর করেছে।
এ ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
চৌদ্দগ্রাম থানার ওসি হিলাল উদ্দিন বলেন, ‘খবর পেয়ে পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে তদন্ত শুরু করেছে। তবে ক্যাম্পাসে সিসিটিভি ক্যামেরা না থাকায় দোষীদের শনাক্ত করা কঠিন হয়ে যাচ্ছে। স্থানীয় কেউ এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকতে পারে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে।’
চৌদ্দগ্রাম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. জামাল হোসেন বলেন, ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। প্রয়োজনীয় তদন্ত শেষে দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।