নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলায় লিচুর বাগানে মৌমাছি চাষ করে লাভবান হচ্ছেন মৌ খামারি ও লিচুচাষিরা। উপজেলাজুড়ে লিচুর মুকুলে মৌমাছির আনাগোনা বাড়ায় পরাগায়ন ভালো হচ্ছে, ফলে লিচুর ফলনও বাড়ছে।
গুরুদাসপুর উপজেলার নাজিরপুর, বিয়াঘাট, চাপিলা, ধারাবারিষা ইউনিয়নসহ বিভিন্ন এলাকায় বাণিজ্যিকভাবে মোজাফ্ফর, বেদেনা, বোম্বাই, মাদ্রাজি ও চায়না-থ্রি জাতের লিচুর চাষ হচ্ছে। গাছে গাছে মুকুলের মিষ্টি সুগন্ধে মৌমাছিরা ছুটে আসছে।
লিচুচাষিরা তাদের বাগানে মৌমাছির বাক্স স্থাপন করেছেন, যা থেকে মৌমাছিরা মুকুল থেকে মধু সংগ্রহ করছে।
মৌ চাষি সাইদুল ইসলাম, আব্দুল করিম, শাহিন আলম ও সোহেল সরকার বলেন, প্রতিটি বাক্সে একটি রানি মৌমাছি, একটি পুরুষ মৌমাছি ও অসংখ্য কর্মী মৌমাছি রয়েছে। কর্মী মৌমাছিরা মুকুল থেকে মধু সংগ্রহ করে বাক্সে জমা করে। লিচুর মধু আমাদের বাড়তি আয়ের উৎস।
স্থানীয় চাষিদের পাশাপাশি সাতক্ষীরা, সিরাজগঞ্জ, ময়মনসিংহ ও পাবনা থেকে মৌ চাষিরা এসে মধু সংগ্রহ করছেন। ছোটবড় নানা আকৃতির মৌ বাক্স বসিয়ে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে মধু সংগ্রহ করা হচ্ছে।
নাজিরপুর ইউনিয়নের পুরস্কারপ্রাপ্ত লিচুচাষি মো. সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ২০০০ সালের দিকে নাজিরপুরে স্বল্প পরিসরে লিচুর আবাদ শুরু হয়েছিল। এখন উপজেলাজুড়ে বাণিজ্যিকভাবে লিচু চাষ হচ্ছে।
কৃষি বিভাগের পরামর্শে আমরা সফলতা পাচ্ছি।
গুরুদাসপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. হারুনর রশিদ বলেন, লিচুর মুকুলে মৌমাছি বসলে পরাগায়ন ভালো হয়, ফলে ফলন বাড়ে। উপজেলায় ৪১০ হেক্টর জমিতে ৩০০ বাগানে ১০০ জন মৌ চাষি ৭ হাজার মৌ বাক্স স্থাপন করেছেন। এ বছর ৩০ মেট্রিক টন লিচু উৎপাদনের সম্ভাবনা রয়েছে, যার বাজারমূল্য প্রায় ১ কোটি টাকা।
মৌ চাষ ও লিচুর আবাদে গুরুদাসপুরের কৃষকরা এখন উভয় দিক থেকেই লাভবান হচ্ছেন।
এ পদ্ধতি কৃষি অর্থনীতিতে নতুন সম্ভাবনার দরজা খুলে দিয়েছে।