চিকিৎসক আসেন না প্রায় তিন বছর ধরে। দু’জন ফার্মাসিস্ট আসেন তাও সপ্তাহে একদিন। এলার্জি, জ্বর, সর্দি, কাশি বাদে অন্য কিছুর ওষুধ মিলে না। সপ্তাহের একদিন বাদে বাকি দিনগুলো যেন একরকম ভুতুড়ে পরিবেশ বিরাজ করে।
চিকিৎসক আসেন না প্রায় তিন বছর ধরে। দু’জন ফার্মাসিস্ট আসেন তাও সপ্তাহে একদিন। এলার্জি, জ্বর, সর্দি, কাশি বাদে অন্য কিছুর ওষুধ মিলে না। সপ্তাহের একদিন বাদে বাকি দিনগুলো যেন একরকম ভুতুড়ে পরিবেশ বিরাজ করে।
গত বুধবার সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, এখানে কেউ নেই। স্থানীয়রা জানান, প্রতি সোমবার একজন ফার্মাসিস্ট এসে ওষুধ দিয়ে যান। সোমবার বেলা পৌনে ১১টার দিকে দেখা মিলে একজন ফার্মাসিস্টের। প্রায় কাছাকাছি সময়েই আসেন ওয়ার্ড অ্যাটেনডেন্ট।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, এ চিকিৎসা কেন্দ্রে ২০২২ সাল থেকে কোনো চিকিৎসক আসেন না। অথচ এখানে সহকারী সার্জনের পদ রয়েছে। হাসপাতালের ফার্মাসিস্ট সাদিকা ইয়াসমিন ও টুম্পা সরকার আসেন সপ্তাহে একদিন, সোমবার। ওইদিনই আসেন ওয়ার্ড অ্যাটেনডেন্ট মো. শাহ আলম। সোমবার অবশ্য টুম্পা সরকার ছুটিতে আছেন বলে জানানো হয়।
ওষুধ নিতে আসা রেলওয়ে কলোনীর বাসিন্দা কোহিনূর বেগম জানান, তিনি এখানে এসে এলার্জির ওষুধ নিয়েছেন। হিস্টাসিন দেওয়া হয়েছে তাকে।
এখানে নিয়মিত ডাক্তার আসতেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘রেলওয়ে কর্মরতরা এখানে চিকিৎসা নিতো। এখান ডাক্তার তো আসেই না ফার্মাসিস্টরাও আসেন সপ্তাহে একদিন।’
অবসরপ্রাপ্ত রেলওয়ে কর্মকর্তা মো. আতিকুল ইসলাম খাদেম বলেন, ‘এক সময়ে এ হাসপাতালের চিকিৎসার উপর নির্ভর ছিলো রেলওয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারিরা। এখন এখানে চিকিৎসই নেই। আমরা দ্রুত এখানে চিকিৎসক দেওয়ার দাবি জানাচ্ছি।’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক রেলওয়ের কর্মচারি বলেন, ‘আমরা এ নিয়ে বহুবার মন্ত্রী পর্যন্ত গিয়েছি। কোনো লাভ হয়নি। এখন একজন ডাক্তার দেওয়া থাকলেও উনি গত তিন বছরেও আসেননি। শুনেছি ওনি ঢাকায়ও কর্মরত। ফার্মাসিস্টরাও এখানে নিয়মিত আসেন না বলে আমরা ওষুধের সেবা থেকে বঞ্চিত হই।’
ফার্মাসিস্ট সাদিকা ইয়াছমিন এ বিষয়ে কোনো বক্তব্য দিতে রাজি হননি। বক্তব্য দিতে গেলে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি লাগবে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমি আমার সাধ্যমতো সেবা দেই। সপ্তাহের তিনদিন আখাউড়া ও দু’দিন শায়েস্তাগঞ্জ সেবা দেওয়ার কথা। একজন নারী হিসেবে যতটুকু পারি থাকার চেষ্টা করি।’ কথায় সুর মেলান ওয়ার্ড অ্যাটেনডেন্ট মো. শাহ আলম।
কথা হয় সহকারী সার্জন আঞ্জুমানআরার সঙ্গে। মোবাইল ফোনে তিনি বলেন, ‘ঢাকায় ইনডোর ও আউটডোর আমাকে দেখতে হয়। আর আখাউড়াতে আমি প্রশাসনিক দায়িত্বে আছি বলে রোগী দেখতে আসতে হয় না। শুধু প্রশাসনিক প্রয়োজনে আসি। এখানকার সব বিষয়ে বিভাগীয় মেডিক্যাল অফিসার ভালো বলতে পারবেন।’
বিভাগীয় মেডিক্যাল অফিসার সাজিদা রহমান এ বিষয়ে মোবাইল ফোনে বক্তব্য দিতে রাজি হননি। সোমবার সকালে চিকিৎসা কেন্দ্রে বসেই ফোন করা হলে তিনি বারবার বলেন, ‘কিছু জানতে হলে আপনি সামনা সামনি আসেন। আপনি ঢাকায় আসেন।’
সম্পর্কিত খবর
শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জে নিজ বাড়িতে এক গৃহবধূকে গলাকেটে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। গতকাল মঙ্গলবার (২৫ মার্চ) রাত সাড়ে ৯টার দিকে উপজেলার ছয়গাঁও ইউনিয়নের বারৈজঙ্গল গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। নিহত মুক্তা বেগম ওই এলাকার মান্নান গাজীর স্ত্রী। ভেদরগঞ্জ থানার ওসি পারভেজ আহমেদ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখতে পায় নিহতের রক্তাক্ত দেহ খাটের ওপর পড়ে আছে। আর তার মাথা খাটের নিচে ঝুলছে। ধারাল অস্ত্রের আঘাতে তার গলার রগ কেটে গেছে, যা মৃত্যুর কারণ বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, নিহতের স্বামী মান্নান গাজী দীর্ঘদিন প্রবাসে ছিলেন।
কান্নাজড়িত কণ্ঠে মান্নান গাজী কালের কণ্ঠকে বলেন, আমি নামাজে গেছিলাম। নামাজ পইড়া আইয়া দেহি মুক্তা নাই। এমন কইরা মাইনষে মাইনষেরে মারে না। আমার এই ক্ষতি কেডা করল? কিয়ের লাইগা করল।
এ বিষয়ে ভেদরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) পারভেজ আহমেদ কালের কণ্ঠকে বলেন, নিহতের গলার সামনে ও পেছনে ধারাল অস্ত্রের আঘাত রয়েছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, গলার রগ কেটে যাওয়ায় তিনি মারা গেছেন। এটি ডাকাতির ঘটনা কিনা, তা এখনও নিশ্চিত নয়। এ ঘটনার জন্য ফরিদপুর থেকে সিআইডির ক্রাইম সিন ইউনিট এসেছে। নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে থানায় আনা হয়েছে। ময়নাতদন্তের পর বিস্তারিত জানা যাবে।
বরিশাল নগরের কাউনিয়া বিসিক শিল্পনগরীর রপ্তানিমুখী জুতা প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান ‘ফরচুন সুজ’-এর একটি গুদামে অগ্নিকাণ্ড হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার রাত ১০টার দিকে আগুনের সূত্রপাত হয়। এতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা করা হচ্ছে। তবে প্রাথমিকভাবে কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
বরিশালের ফায়ার সার্ভিসের ছয়টি ইউনিট আগুন নেভাতে চেষ্টা করে রাত সাড়ে ১১টার দিকে পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আনে।
ফরচুনের কর্মকর্তা, কারখানার শ্রমিক ও প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেন, মঙ্গলবার রাত ১০টার দিকে কাউনিয়া এলাকার বিসিক শিল্পনগরীর ফরচুন সুজ লিমিটেডের গুদামে আগুন লাগে। অগ্নিকাণ্ডে কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। তবে আগুন নেভাতে গিয়ে ফায়ার সার্ভিসের একাধিক কর্মী অসুস্থ হয়ে পড়েন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা আরো জানান, হঠাৎ করেই তারা গোডাউনে আগুন দেখে ফায়ার সার্ভিসকে খবর দেন। ফায়ার সার্ভিস দ্রুত ঘটনাস্থলে এসে স্থানীয়দের সহায়তায় আগুন নিয়ন্ত্রণের কাজ শুরু করে। ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা এসে প্রায় পৌনে এক ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন, আর পুরো নিভিয়ে ফেলতে এক ঘণ্টার অধিক সময় লাগে।
বাবুল নামের এক ব্যক্তি জানান, গোডাউনে প্যাকেজিং ম্যাটারিয়ালসহ বিভিন্ন ধরনের মালামাল রয়েছে। কীভাবে আগুন লেগেছে তা তিনি জানেন না, তবে শর্ট সার্কিটের মাধ্যমে আগুন লাগতে পারে অথবা কেউ লাগিয়ে দিতে পারে বলেও শঙ্কা করছেন তিনি।
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স বরিশালের সহকারী পরিচালক হেলাল উদ্দিন খান জানান, ‘মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে নগরের কাউনিয়া এলাকার একটি ওয়েস্ট ম্যাটারিয়ালসের গোডাউনে অগ্নিকাণ্ডের খবর পাওয়া যায়। পরে ছয়টি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নেভানোর চেষ্টা করে।
তবে গোডাউনটি চারদিক থেকে আটকানো ও মালামালে পরিপূর্ণ থাকায় আগুন নেভাতে শুরুতে কিছুটা বেগ পেতে হয়।
ফরিদপুর জেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতি ও সরকারি রাজেন্দ্র কলেজ ছাত্র-ছাত্রী সংসদের (রুকসু) সাবেক ভিপি কাওসার আকন্দকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ সময় তার সহযোগী জেলা যুবলীগের সদস্য তসলিম বিশ্বাসকেও গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তারকৃত ছাত্রলীগ নেতা কাওসার আকন্দ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের হামলার ঘটনায় করা মামলার অন্যতম আসামি। ফরিদপুর-৪ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও কেন্দ্রীয় যুবলীগের প্রেসিডিয়াম মেম্বার মুজিবুর রহমান নিক্সন চৌধুরীর বিশ্বস্ত সহচর হিসেবে পরিচিত সে।
আজ বুধবার (২৬ মার্চ) সকালে তাকে গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ফরিদপুর কোতোয়ালি থানার উপপরিদর্শক ফাহিম ফয়সাল।
এর আগে, গতকাল মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে শহরের অনাথের মোড় এলাকা থেকে একটি প্রাইভেটকার তল্লাশী করে কাউসার আাকন্দ ও তার সহযোগী তসলিমকে গ্রেপ্তার করা হয়।
পুলিশ জানায়, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে গত ৪ আগস্ট ফরিদপুর শহরের পূর্ব খাবাসপুর মোড় এলাকার বড়ইতলায় ছাত্রলীগ-যুবলীগের নেতাকর্মীরা নিরস্ত্র আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের উপর সশস্ত্র হামলা চালায়।
পুলিশ আরো জানায়, এ মামলায় কাওসার আকন্দ অন্যতম আসামি। ঘটনার পর থেকে সে পলাতক ছিল।
কোতোয়ালি থানার উপপরিদর্শক ফাহিম ফয়সাল বলেন, 'গোপন তথ্যের ভিত্তিতে মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে শহরের অনাথের মোড় থেকে একটি প্রাইভেটকার তল্লাশী করে কাউসার আাকন্দ ও তার সহযোগী তসলিমকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের বিরুদ্ধে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের হামলার মামলা রয়েছে। আসামিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।'
কুষ্টিয়ার খোকসা উপজেলার ওসমানপুর ইউনিয়নে এক বিএনপি নেতার বাড়িতে অভিযান চালিয়ে বিদেশি রিভলবার, গুলি ও দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করেছে সেনাবাহিনী। এ ঘটনায় ওই নেতা, তার ভাই ও ভাতিজাসহ তিনজনকে আটক করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (২৫ মার্চ) দুপুরে কুষ্টিয়া সেনাবাহিনীর এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, খোকসার ওসমানপুর ইউনিয়নের ওসমানপুর গ্রামে শহিদুল ইসলামের বাড়িতে অভিযান চালানো হয়।
অভিযানে একটি বিদেশি পিস্তল, ৫টি পিস্তলের গুলি এবং বেশ কিছু দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করা হয়।
আটক শহিদুল ইসলাম ওসমানপুর ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি এবং খোকসা ইউনিয়নের সাবেক মেম্বার।
প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে আরো জানানো হয়, দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়ন এবং আইনের শাসন পুনঃপ্রতিষ্ঠায় সেনাবাহিনী কাজ করে চলেছে। তারই ধারাবাহিকতায় খোকসার ওসমানপুরে সফল অভিযান চালানো হয়।
খোকসা থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শেখ মঈনুল ইসলাম জানান, সেনাবাহিনীর পৃথক অভিযানে আটক ও দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার সংক্রান্ত দুটি মামলা হয়েছে। আসামিদের আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।