আবহমান গ্রাম-বাংলায় হারাতে বসেছে ঐতিহ্যের ঘুড়ি উৎসব। ধরে রাখতে ‘এসো উড়াই ঘুড়ি, বাংলার ঐতিহ্য লালন করি’- এ স্লোগানে প্রতি বছরের মতো এবারও ঈদ উপলক্ষে ঘুড়ি উৎসব হয়েছে।
মঙ্গলবার (১ এপ্রিল) বিকালে টাঙ্গাইলের গোপালপুর উপজেলার নলিন বাজারের পাশে যমুনা নদীর ধূ-ধূ বালুচরে উৎসবটি হয়।
মুক্তিযোদ্ধা নয়াপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের উদ্যোগে স্থানীয় সেচ্ছাসেবী আমরা গোপালপুরবাসী ফেসবুক গ্রুপ ও শুভশক্তি বাংলাদেশ এর আয়োজন করে।
আরো পড়ুন
আশাশুনিতে বাঁধ ভেঙে এলাকা প্লাবিত, দুর্যোগ মোকাবেলায় সেনাবাহিনী
ঘুড়ি উৎসবে স্কুল পড়ুয়া শিশু শিক্ষার্থী নানা রঙয়ের ঘুড়ি নিয়ে বালু চরে বিকাল বেলা সমবেত হয়। পরে একে একে ঘুড়ি উড়ানো ও ঘুড়ির সুতা কাটাকাটি খেলা চলতে থাকে। সন্ধ্যায় বাদ্যযন্ত্রের তালে তালে বাউল গানের আড্ডায় মেতে ওঠেন বিনোদনপ্রেমিরা।
ঘুড়ি উড়াতে আসা একাধিক স্কুল শিক্ষার্থী বলে, ছোট বেলা থেকে শহরে থাকি।
এর আগে কখনো ঘুড়ি দেখেনি। এবারই প্রথম ঘুড়ি উৎসবে এসেছি। সত্যিই ভাল লাগছে।
মুক্তিযোদ্ধা নয়াপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বলে, কয়েক বছর ধর চরাঞ্চলে ঘুড়ি উৎসব হচ্ছে ।
আমরা নানা রঙয়ের বিভিন্ন ঘুড়ি তৈরি করি। নদীর পাড়ে আমাদের সহপাঠি ও তাদের মা-বাবা নিয়ে আনন্দ উপভোগ করি।
আরো পড়ুন
টানা ৪১ দিন জামাতে নামাজ পড়ে বাইসাইকেল পুরস্কার পেল ১০ শিশু-কিশোর
ঘুড়ি উৎসবে অংশকারী স্কুল শিক্ষিকা শামীমা ইয়াসমিন বলে, ঘুড়ি উৎসব উদযাপনে পরিবার নিয়ে অংশগ্রহণ করেছি। চরাঞ্চলের এমন উৎসবে আসতে পেরে খুব ভাল লাগছে।
মুক্তিযোদ্ধা নয়াপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও ঘুড়ি উৎসব আয়োজক আঞ্জু আনোয়ারা ময়না বলেন, গ্রাম-বাংলা ঐতিহ্য নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে ২০১৯ সাল থেকে স্কুলের শিশু শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের নিয়ে বিভিন্ন উৎসবকে কেন্দ্র করে ঘুড়ি উৎসব পালন করে আসছি।
বিগত বছরের তুলনায় এ বছর লোকজনের উপস্থিত বেড়েছে। প্রতিবছরই এমন ঘুড়ি উৎসব উদযাপন করা হবে।
গোপালপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি অধ্যাপক জয়নাল আবেদীন বলেন, ঘুড়ি উড়ানোর একটি বিশুদ্ধ প্রতিযোগিতা। আমাদের সংস্কৃতির অংশ।
উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) নাজমুল হাসান বলেন, ঘুড়ি উৎসব আমাদের প্রাণের একটি উৎসব। নদীতীরবর্তী এমন পরিবেশে রঙিন ঘুড়ি উৎসব কখনো দেখার সুযোগ হয় নি। উৎসবে পরিবার নিয়ে অংশ নিতে পেরে আমি আনন্দিত।