অনেক স্বপ্ন আর আশা নিয়ে উচ্চশিক্ষার উদ্দেশ্যে গ্রাম ছেড়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছেন রাকিব হাসনাত। অন্য অনেকের মতোই আসনস্বল্পতার কারণে প্রথম বর্ষে হলে উঠতে পারেননি। থাকেন মুগদার একটি মেসে। এখানে রাকিবের মতোই আরো জনাদশেক বিশ্ববিদ্যালয়পড়ুয়া শিক্ষার্থী একসঙ্গে থাকেন।
কিছুদিন আগে পত্রিকা পড়তে গিয়ে রেডি রুটির খোঁজ পান রাকিব। পত্রিকায় ছাপা বিজ্ঞাপন দেখে দোকান থেকে কিনে আনেন রুটি। এর পর থেকেই খিদে নিয়ে অথবা বুয়া না এলে আর বেগ পেতে হয় না তাঁকে। রাকিব বলেন, ‘এখন তো আগে থেকেই রেডি রুটি কিনে রাখি।
আজিমপুরের একটি মেসে থাকা চাকরিজীবী ব্যাচেলর জালাল আহমেদও জানালেন রেডি রুটি নিয়ে তার স্বস্তির কথা। একটি কম্পানির সেলস ডিপার্টমেন্টে চাকরি করেন বলে সময় পান খুব কম। বুয়ার রান্না খুব একটা পছন্দ নয় বলে নিজেই রেঁধে খান। মাঝে মাঝে রাতে ফিরতে দেরি হলে বা ক্লান্ত লাগলে রান্না করতে ইচ্ছা হয় না। তখন দোকান থেকে রেডি রুটি নিয়ে ফেরেন। এরপর ডিম পোচ, নয়তো মধু দিয়ে সেরে ফেলেন রাতের খাবার। জালাল বলেন, ‘সত্যি বলতে কী, রেডি রুটি আমাদের মতো ব্যাচেলরদের খুবই স্বস্তি এনে দিয়েছে। এখন নিয়মিতই রুটি খাই। এতে রান্নার সময় বাঁচাতে পারছি, সেই সময়টা নিজেকে দিতে পারছি।’
হল ও মেসে থাকা ছাত্র-ছাত্রী ও চাকরিজীবীদের জন্য রেডি রুটি খিদের বড় এক সমাধান বলে জানালেন পুষ্টিবিদ আখতারুন নাহার আলো। তিনি বলেন, ‘যারা হলে কিংবা মেসে থাকেন তাঁদের খাবার নিয়ে বিভিন্ন অসুবিধার কথা আমরা কমবেশি অনেকেই জানি। আমাদের কাছেও অনেক রোগী আসেন, যারা নানা ঝামেলায় নিয়মিত খাবার খেতে পারেন না বলে বিভিন্ন অপুষ্টিতে ভোগেন। রান্না করতে সময় লাগে। বুয়া সকালে না এলে দেখা যায় অনেকেই না খেয়ে থাকেন বা চা-বিস্কুট খেয়ে দুপুরের জন্য অপেক্ষা করেন। এটা ঠিক নয়। সকালে সবচেয়ে ভালো খাবার খাওয়া জরুরি। এ জন্য তারা এখন রেডি রুটি খেতে পারেন বা এ রকম কোনো অসুবিধা হলে আগে থেকেই রেডি রুটি কিনেও রাখতে পারেন, অভুক্ত থাকতে না হয়।
কারণ এক বেলা অভুক্ত থাকলে আমাদের শরীরের বিপাকচক্রে তার বিরূপ প্রভাব পড়ে। এ ছাড়া রেডি রুটিতেও ঘরে তৈরি রুটির মতোই অন্য সব গুণ বিদ্যমান।
এ জন্য তারা কোনো বেলা খাবার রান্না না হলে রেডি রুটি খেতে পারেন। আবার চাইলে নিয়মিতও সকালে বা রাতে রুটি খেতে পারেন।’
বয়স যত বাড়তে থাকবে, ততই চেহারায় বার্ধক্যের ছাপ পড়তে থাকবে। এটাই প্রকৃতির নিয়ম। তবে সময়ের আগে যদি বার্ধক্য এসে যায়, তবে সেটি মোটেই সুখকর নয়।
কয়েক বছর আগেও কম বয়সীদের ত্বকে বার্ধক্যের ছাপ পড়ার সমস্যাটি খুব একটা দেখা যেত না।
তবে প্রতিদিনে কয়েকটি অভ্যাসের মাধ্যমে আপনি চাইলে ত্বকের যৌবন ধরে রাখতে পারেন। কী সেই অভ্যাসগুলো, তা জানুন এই প্রতিবেদনে।
সূত্র : আজকাল
উচ্চ রক্তচাপ অনেক সময় নীরব ঘাতকের মতো কাজ করে। সাম্প্রতিক সময়ে কম বয়সীদের মধ্যেও হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি আশঙ্কাজনক হারে বেড়েছে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এর মূল কারণ হিসেবে দেখা যাচ্ছে হঠাৎ করে বেড়ে যাওয়া রক্তচাপ। তাই সময় থাকতেই রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখা অত্যন্ত জরুরি।
বিশ্বজুড়ে এই সমস্যা নিয়ে গবেষণা চললেও সম্প্রতি কানাডার ইউনিভার্সিটি অফ ওয়াটারলুর একদল গবেষক এমন দুইটি খাবারের কথা বলেছেন, যা নিয়ম করে খেলে উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকি অনেকটাই কমানো যেতে পারে। তাদের দাবি—কলা ও ব্রকলি উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে সহায়ক হতে পারে। এই দুই খাবারে রয়েছে পর্যাপ্ত পরিমাণে পটাশিয়াম ও সোডিয়াম। যা শরীরের খনিজ লবণের ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে।
এই গবেষণাটি প্রকাশিত হয়েছে আমেরিকান জার্নাল অফ ফিজিওলজিতে। গবেষকদের মতে, যারা উচ্চ রক্তচাপের সমস্যায় ভুগছেন, তাদের ক্ষেত্রে সোডিয়াম কমিয়ে পটাশিয়ামযুক্ত খাবার খাওয়া অত্যন্ত উপকারী। কারণ পটাশিয়াম রক্তনালিকে শিথিল করে এবং শরীর থেকে অতিরিক্ত সোডিয়াম বের করে দিয়ে রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে।
গবেষণায় দেখা গেছে, উচ্চ রক্তচাপের রোগীদের নিয়মিত ব্রকলির স্যুপ ও কলা খাওয়ানোর পর ৭২ শতাংশ রোগীর রক্তচাপ স্বাভাবিক মাত্রায় নেমে এসেছে।
বিজ্ঞানীরা আরো জানিয়েছেন, পটাশিয়াম ও সোডিয়ামের অনুপাত রক্তচাপের উপর কীভাবে প্রভাব ফেলে, তা নিয়েও একটি গাণিতিক মডেল তৈরি করা হয়েছে। তবে গবেষণা এখনো চলমান, তাই আরো বড় পরিসরে পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষ হলে তবেই এই পদ্ধতিকে পুরোপুরি কার্যকর বলা যাবে।
তবে আপাতত বলা যায়, প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় কলা ও ব্রকলির মতো স্বাস্থ্যকর খাবার রাখলে উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখা অনেকটাই সহজ হতে পারে।
সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা
হৃদরোগ প্রতিরোধে সচেতন জীবনযাপনের গুরুত্ব নিয়ে অনেকেই কথা বলেন। ধূমপান ও অ্যালকোহল থেকে দূরে থাকা, ফাস্টফুড এড়িয়ে চলা ও নিয়মিত শরীরচর্চা করার পরামর্শ দেন চিকিৎসকরা। তবে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় অনেকেই এড়িয়ে যান—আর সেটা হলো ঘুম।
চিকিৎসকদের মতে, ঘুমের অভাব শুধু ক্লান্তি এনে দেয় না বরং সরাসরি হৃদযন্ত্রের ওপর চাপ ফেলে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, দিনে যদি মানসিক চাপ বেশি থাকে, তাহলে রাতে ঘুমও কম হয়। এর প্রভাব শুধু হার্টে নয়, মস্তিষ্ক ও হজমতন্ত্রেও পড়ে। মানসিক চাপ থেকে শরীরে কর্টিসল নামক স্ট্রেস হরমোন বাড়ে, যা ঘুমের ব্যাঘাত ঘটায়, হজমে সমস্যা তৈরি উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকি বাড়ায়।
ঘুমের সময় নিয়ে একেকজনের চাহিদা ভিন্ন হতে পারে। কারো ৯ ঘণ্টা ঘুম প্রয়োজন হয়, আবার কেউ ৫ ঘণ্টার ঘুমেই সুস্থ থাকেন।
অনেকে মনে করেন, সারা সপ্তাহ কম ঘুমিয়ে ছুটির দিনে অনেকক্ষণ ঘুমিয়ে ঘাটতি পুষিয়ে নেওয়া যায়। কিন্তু এই ধারণা একেবারেই ভুল। একদিনের ঘুমের ঘাটতি অন্যদিন পুষিয়ে নেওয়া যায় না।
সূত্র : এই সময়
ডায়াবেটিক রোগীদের জন্য খালি পেটে থাকা একেবারেই ঠিক নয়। সকালে নাশতা না করলে রক্তে শর্করার মাত্রা হঠাৎ বেড়ে যেতে পারে। আবার খালি পেটে ভুল খাবার খেলে দেখা দিতে পারে নানা ধরনের শারীরিক সমস্যা। তাই সকালে এমন কিছু খাবার বেছে নেওয়া জরুরি, যা রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়াবে না, বরং নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করবে।
চিয়া সিড ভেজানো পানি
চিয়া সিডে রয়েছে ফাইবার, ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড ও প্রোটিন। এটি খেলে রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকে এবং দীর্ঘক্ষণ পেট ভরা থাকে। সকালে নাশতার আগে এক গ্লাস পানিতে ভেজানো চিয়া সিড পান করতে পারেন।
টক দই
বাড়িতে তৈরি টক দই ডায়াবেটিক রোগীদের জন্য খুবই উপকারী। এতে রয়েছে ক্যালসিয়াম, প্রোটিন ও প্রোবায়োটিকস, যা অন্ত্রের স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটায়। দইয়ের প্রোটিন গ্লুকোজ শোষণের গতি কমিয়ে দেয়, ফলে রক্তে শর্করার মাত্রা হঠাৎ বাড়ে না।
মেথি ভেজানো পানি
মেথি দানায় রয়েছে প্রচুর ফাইবার, যা রক্তে শর্করার পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে রাখে। এক গ্লাস পানিতে এক চামচ মেথি ভিজিয়ে রাখুন সারা রাত। সকালে খালি পেটে সেই পানি পান করলে উপকার পাবেন।
ভেজানো কাঠবাদাম
ডায়াবেটিক রোগীদের একেবারেই খালি পেটে থাকা উচিত নয়। স্ন্যাকস হিসেবে কিংবা নাশতায় রাখতে পারেন কাঠবাদাম। এতে থাকা প্রোটিন ক্ষুধা নিয়ন্ত্রণ করে এবং রক্তে শর্করার মাত্রা স্থির রাখতে সাহায্য করে। খোসা ছাড়িয়ে খেলে এটি সহজে হজম হয়।
সূত্র : এই সময়