দুই বছর পর আবার পুরনো রূপ ফিরে পেয়েছে বিয়েবাড়ি। জাঁকজমক, রং খেলা, বর-কনের অভিজাত সাজ, দল বেঁধে ভোজন—সব কিছুতেই ফিরেছে প্রাণ। এখনকার বিয়ের আয়োজন, বর-কনের সাজ, অতিথিদের আপ্যায়নসহ নানা বিষয় নিয়ে বিস্তারিত জানাচ্ছেন আতিফ আতাউর
এ জন্য বর-কনের সাজ নিয়ে সবার আগ্রহেরও যেন শেষ থাকে না। আবহমান কাল থেকে বিয়েতে বরের পছন্দ শেরোয়ানি, কনের শাড়ি। এই ধারা চলছে এখনো। বেনারসি তো থাকছেই, সঙ্গে কাতান, জামদানি, মসলিনও পরছেন কেউ কেউ।
বিয়ের বেনারসি, জামদানি, মসলিনগুলোতে ডিজাইনাররা বাড়তি মনোযোগ দিয়ে থাকেন। এ জন্য এসব শাড়ির বুনন, নকশা ও কারুকাজ নজর কাড়ে সহজেই। এসব শাড়িতে মুক্তা, পাথর, জরির কাজ ও বাড়তি ওড়না যোগ করছে ভিন্ন মাত্রা। যারা স্বদেশি ভাবনা সামনে রেখে বিয়ের সাজে সাজতে চান তারা বেছে নেন দেশি তাতে বোনা, হাতে কাজ করা শাড়ি।
টাঙ্গাইল শাড়ি কুটিরের স্বত্বাধিকারী মুনিরা এমদাদ বলেন, ‘এখন দেশি শাড়িতেও অনেক নারী বউ সাজতে পছন্দ করেন। আমাদের শোরুমগুলোতে প্রতিনিয়ত বিয়ের শাড়ি কিনতে আসা কনেরা এমন আগ্রহের কথা জানান। তাদের পছন্দকে প্রাধান্য দিয়ে নতুন নতুন নকশার এক্সক্লুসিভ বিয়ের শাড়ি নিয়ে আসছি আমরা।’ শুধু কেনা শাড়ি নয়, এখন মনের মতো ডিজাইন জমা দিয়ে শাড়ি বানিয়েও নিচ্ছেন অনেক কনে। ডিজাইনার স্বত্বাধিকারী সৌমিক দাস ও ফোয়ারা ফেরদৌস দিলেন এমন তথ্য।
তাঁরা বলেন, ‘অনেকেই নিজেদের মতো করে বিয়ের পুরো আয়োজন সাজান। সেখানে বর-কনে কেমন পোশাকে সাজবেন—সে রকম পরিকল্পনাও করা থাকে। আবার ওয়েডিং প্রতিষ্ঠানগুলোও নতুন নতুন আইডিয়া উপস্থাপন করে বর-কনের কাছে। এরপর তারা নিজেরাই হয়তো শাড়ি, শেরোয়ানির ডিজাইন করেন বা সংগ্রহ করেন। এরপর তাঁদের চাহিদামতো সেই ডিজাইনের শাড়ি, শেরোয়ানি আমরা তৈরি করে দিই।’
শুধু শাড়ি আর শেরোয়ানি নয়, এখনকার বিয়েতে কনেদের ট্রেন্ড গাউন বা লেহেঙ্গার মতো পোশাক। ভারী পাথর, জরি ও চুমকির কাজ করা এসব গাউন ও লেহেঙ্গা বেশ কয়েক বছর ধরেই বাঙালি বিয়েতে নতুন পালক তুলেছে। দেশেই এখন তৈরি হচ্ছে এমন বর্ণিল পোশাক। লাল, নীল, হলুদ, আকাশি নানা রঙের লেহেঙ্গাতেও এখন বিয়ের আসর মাতাচ্ছেন কনেরা। বর পরছেন এক রঙা স্যুট, প্যান্ট। সঙ্গে থাকছে রঙিন টাই ও রুমাল। মানাচ্ছেও দারুণ।
সাজ ও গয়না
বিয়েতে কনের সাজে সোনার গয়নার প্রচলন বহু পুরনো। এখনো সেই ধারার দারুণ সমাদর। বিয়েতে কনে কত ভরি সোনার গয়না পরল সেটা নিয়ে আলোচনারও কমতি নেই। তবে এখনকার তরুণীরাই তাতে পরিবর্তন আনার চেষ্টা করছেন। বিয়ে মানেই শুধু সোনার গয়নায় সাজ—এই ধারা ভেঙে দিচ্ছেন তারা। বিয়েতে এখন রুপা, কাঠ, কড়ি, শামুক, ঝিনুক, মুক্তাসহ বিভিন্ন ধাতুর তৈরি বাহারি গয়নায় সাজছেন কনেরা। আবার কেউ কেউ শুধু ফুলের গয়নাতেই সারছেন বিয়ের কনের সাজ।
বিয়েতে কিছুদিন আগে করোনার মধ্যে হালকা সাজই ছিল এগিয়ে। এবার আবার ভারী ও জমকালো সাজের প্রতি আগ্রহ দেখাচ্ছেন কনেরা। বিয়ের পুরনো চেনা ছন্দ ফিরেছে বলেই এমন সাজের চাহিদা বলে জানালেন রূপ বিশেষজ্ঞরা। কনে সাজে লালের আবেদন চিরন্তন। সঙ্গে লাল চুরি, একটু ভারী মেকআপ ও লাল ওড়নাতেই যেন লাল টুকটুকে রাঙা বউয়ের সাজ পায় পূর্ণতা। লাল শাড়ি ও লাল লিপস্টিকে টুকটুকে লাল ঠোঁট নজর কাড়বেই।
ঘর ও ছাদ ছেড়ে আবার বাইরে
করোনাকালে ঘরের ড্রয়িং কিংবা বাসার ছাদই ছিল বিয়ের আয়োজনের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করার বড় ভরসা। করোনা কমে যাওয়ায় এখন চিলেকোঠা ছেড়ে বেরিয়ে এসেছে বিয়ে। আবার বিয়ে ফিরেছে কনভেনশন সেন্টারে। করোনাকালের পারিবারিক পরিমণ্ডলেও আর সীমাবদ্ধ নেই বিয়ে। এখন বড় আয়োজনে হাজারো অতিথি ও আত্মীয়র আগমনে সরগরম হয়ে উঠছে বিয়ের মঞ্চ।
খাবারদাবারেও ফিরেছে পুরনো স্বাদ আর গন্ধ। বিরিয়ানি, পোলাউ, কোরমা, রেজালা, বোরহানিতে মজছেন অতিথিরা। ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি বসুন্ধরার ডেপুটি ব্র্যান্ড ম্যানেজার মেহেদী হাসান মোল্লা জানান, ‘করোনার মধ্যে দীর্ঘদিন সরকারি নির্দেশনা মেনে বন্ধ ছিল কনভেনশন সেন্টার। করোনা কমে যাওয়ায় এবং নিষেধাজ্ঞা শিথিল হওয়ায় আবার কনভেনশন সেন্টারে ফিরেছে বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা। তবে এখনো পরিপূর্ণ স্বাস্থ্যবিধি মেনেই পরিচালিত হচ্ছে বিয়েসহ সব আয়োজন।’
স্মৃতিপটের আয়োজন
বিয়ের স্মৃতিকে অমলিন রাখতে ক্যামেরার ফ্রেমে বন্দি করার ট্রেন্ড দীর্ঘদিনের। এখন ভিডিওতেও ধারণ করে রাখা হচ্ছে বিয়ের সব আয়োজন। শুধু কী তাই, পুরো আয়োজন ঘিরে চলছে বিয়ের সিনেমা বানানোর যজ্ঞ।
এ জন্য আগে থেকেই ছবি ও ভিডিওর জন্য নেওয়া হচ্ছে নানা প্রস্তুতি। তবে কিছুদিন ধরে তাতে রং লাগিয়েছে প্রি-ওয়েডিং ফটোগ্রাফি বা বিয়ের আগে বিয়ের ছবি। এ জন্য হবু বর-কনে ছুট লাগাচ্ছেন প্রাকৃতিক সৌন্দর্যমণ্ডিত কোনো স্থানে। আর বিয়ের পর বিয়ের ছবি তোলার আয়োজন তো থাকছেই।
মিনিমাল টোনের সাজে উচ্চকিত চোখ আর ঠোঁট কনেকে আলাদা করে। বরের স্বচ্ছন্দ, চটপটে লুক যেন এই সময়কেই তুলে ধরে। গয়নায় ভারী, হালকা কিংবা দুইয়ের মিশেল, পোশাকে ঐতিহ্য ও আধুনিকতার মেলবন্ধন, থিম, মোটিফ—এ সবই ট্রেন্ডি। তবে একেবারে যা এ বছরের, তা হলো, ওড়নায় বাংলা গানের কথা।
বসন্ত শেষে গ্রীষ্ম এসে গেছে। গরম যেন সব কিছু ঝলসে দেয়। এ সময়ে আমাদের পরিবেশে এমন কিছু ফল জন্মায়, যা স্বাদে ও স্বাস্থ্যে অতুলনীয়। আম, লিচু তো রয়েছেই, এর বাইরেও রয়েছে আরো কয়েকটি ফল।
কী সেসব ফল, আর কী উপকার রয়েছে এসব ফলে তা নিয়েই আজকের প্রতিবেদন। চলুন, জেনে নেওয়া যাক।
তরমুজ
গরমের সময় শরীরকে ঠাণ্ডা ও হাইড্রেটেড রাখার জন্য তরমুজ খুবই উপকারী। এতে প্রচুর পরিমাণে পানি থাকে এবং এটি ইলেক্ট্রোলাইটসের ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে।
তরমুজে লাইকোপিন নামক অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট থাকে, যা হৃদরোগ ও কিছু ধরনের ক্যান্সার প্রতিরোধে সহায়ক। এ ছাড়া এটি ভিটামিন এ এবং সি-এর ভালো উৎস।
আরো পড়ুন
গরমে কোন কোন রোগের ঝুঁকি বেশি, কিভাবে সুস্থ থাকবেন
কামরাঙা
এই ফলটি তারার মতো আকৃতির। গ্রামেগঞ্জে একসময় প্রচুর পরিমাণে এই ফল খাওয়া হতো।
স্বাদে টক-মিষ্টি এই ফল এখন শহুরে মানুষের কাছে কিছুটা ব্রাত্য। অথচ কামরাঙা ভিটামিন সি-এর একটি ভালো উৎস। এতে অ্যান্টি-অক্সিডেন্টও রয়েছে। হজমক্ষমতাকে উন্নত করতে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে এই ফল। কামরাঙা দিয়ে আচার, চাটনি ও জুস তৈরি করা যায়।
আঁশফল
আঁশফলও এমন একটি ফল, যা গরমকালে পাওয়া যায়। মিষ্টি স্বাদের জন্য এককালে এই ফলটিও বেশ জনপ্রিয় ছিল। এর ভেতরের সাদা শাঁসটি খুব নরম এবং দানাদার হয়। আঁশফলে ভিটামিন সি, ভিটামিন বি৬ ও পটাসিয়াম থাকে। এই ফল ত্বক ও চোখের স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী, পাশাপাশি শরীরে শক্তি যোগাতেও সাহায্য করে।
আরো পড়ুন
গরমে বাইরে থেকে এসেই ঠাণ্ডা পানি দিয়ে গোসল, ভালো নাকি খারাপ
বেল
গরম কালে বেলপানা খেতে পছন্দ করেন না এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া কঠিন। শক্ত বেলের খোলসও। কিন্তু সেই কাঠিন্যের ভেতরে মিষ্টি ও হালকা টক স্বাদের শাঁস থাকে। বেল হজমের জন্য খুবই উপকারী এবং এটি পেট ঠাণ্ডা রাখতে সাহায্য করে। এতে ভিটামিন সি, ক্যালসিয়াম ও ফাইবার থাকে। বেলের শরবত গরমকালে শরীরকে সতেজ রাখে এবং কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে।
এই মৌসুমে বাজারে অনেক ধরনের শাক পাওয়া যায়। তবে সেটা শীতকালের তুলনায় কিছুটা কম। বর্ষা ছাড়া প্রায় সময়েই বাজারে এই শাকের দেখা পাওয়া যায়। জনপ্রিয় এই লাল শাক প্রায় সবার বাড়িতেই নানা পদে রান্না করা হয়।
ভাতে এই শাক মাখলেই টুকটুকে লাল হয়ে যায় রং। সুস্বাদু এই শাক অত্যন্ত উপকারী। তবে এর কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও আছে বলে জানিয়েছেন পুষ্টিবিদরা।
একাধিক ভিটামিন, আয়রন, ম্যাগনেসিয়াম, ফসফরাস, কপার, ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম, ম্যাঙ্গানিজে ভরপুর লালশাক হজমে সাহায্য করে।
বদহজমসহ একাধিক সমস্যা দূর করে।
আরো পড়ুন
পপকর্ন লাংস কী, যে কারণে সাবধান হবেন ধূমপায়ীরা
ডায়াবেটিক রোগীদের জন্য খুবই উপকারী লালশাক। আয়ুর্বেদ শাস্ত্র অনুযায়ী কফ ও পিত্ত দোষ দূর করে এই শাক। রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে।
ম্যাঙ্গানিজ, ক্যালসিয়াম, জিংক, কপার, ম্যাগনেসিয়ামে ভরপুর লালশাক হাড়ের স্বাস্থ্য অটুট রাখে। হাড়ের একাধিক রোগের আশঙ্কা দূর করে।
হৃদযন্ত্রের সুস্থতা বজায় রাখে লাল শাকের গুণ। নিয়ন্ত্রণ করে হৃদরোগের আশঙ্কা। রক্তাল্পতা অসুখেও উপকারী এই শাক।
তবে এত উপকারী লাল শাকেরও কিছু পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া আছে। এটি ইনসুলিনের মাত্রা কমিয়ে দেয়। তাই যাদের রক্তে শর্করার মাত্রা কমে যাওয়ার প্রবণতা বা হাইপোগ্লাইসেমিয়া আছে তারা এটা খাবেন না।
আরো পড়ুন
গরমে কোন কোন রোগের ঝুঁকি বেশি, কিভাবে সুস্থ থাকবেন
লাল শাকে প্রচুর ভিটামিন কে আছে। তাই যারা অ্যান্টি কোয়াগুল্যান্টস নিচ্ছেন তারা এই শাক খাবেন না। এর ফলে ড্রাগ মেটাবলিজমে সমস্যা হতে পারে।
যারা অন্তঃসত্ত্বা বা সন্তানকে স্তন্যপান করান, তারা লাল শাক খাবেন না। কারণ এর অতিরিক্ত ফাইবার থেকে ডায়রিয়া, পেটে ব্যথা থেকে শুরু করে জ্বরও হতে পারে। অতিরিক্ত লাল শাক খেলে উদ্ভিজ্জ খাবার থেকে আয়রন শোষণে সমস্যা হতে পারে।
লালশাক কেনার সময় দেখে নিতে হবে সেটা খাঁটি লাল শাক কি না। আসল লাল শাক হলে ভাত মাখার সময় তার রং হবে লাল টুকটুকে৷ অনেক সময় লাল শাক কৃত্রিম ভাবে রং করাও হয়। সেটাও দেখে নিন সতর্ক হয়ে।
আরো পড়ুন
গরমে বাইরে থেকে এসেই ঠাণ্ডা পানি দিয়ে গোসল, ভালো নাকি খারাপ
বাদাম স্বাস্থ্যের জন্য খুব ভালো। এটি খেলে অনেক উপকার পাওয়া যায়। তবে আপনি কি জানেন, মস্তিষ্ক ভালো রাখতে, স্মৃতিশক্তি বাড়াতে বাদাম খাওয়া খুব দরকার? তবে বাদামের সঙ্গে এই খাবারগুলোও খেতে হবে। তবেই আপনার মস্তিষ্ক আরো সতেজ হবে।
বাদামে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ই, অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট থাকে। তা ছাড়া এটি খেলে আপনার বড় রোগের ঝুঁকি কমার পাশাপাশি ত্বকও উজ্জ্বল হয়। মস্তিষ্ক ভালো রাখতে, স্মৃতিশক্তি বাড়াতে বাদামের সঙ্গে কী কী খাবার খাবেন, তা জানুন এই প্রতিবেদনে।
ডার্ক চকোলেট
বাদামের সঙ্গে ডার্ক চকোলেট খেতে পারেন।
এটি আপনার মস্তিষ্কের জন্য খুব ভালো। ডার্ক চকোলেটে প্রচুর পরিমাণে ফ্ল্যাভোনয়েড, অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট, ক্যাফেইন থাকে। যা স্মৃতিশক্তি বাড়াতে সাহায্য করে। বাদামের সঙ্গে এটি মিশিয়ে খেলে শরীরের ভিটামিন ই-এর ঘাটতিও পূরণ হবে।
আরো পড়ুন
সময়মতো লাঞ্চ-ডিনার না করলে স্বাস্থ্যের যে ক্ষতি
ব্লুবেরি ও বাদাম
আপনি যদি ব্লুবেরি ও বাদাম (আমন্ড) একসঙ্গে খেতে পারেন। এতে আপনার মস্তিষ্ক আরো সতেজ হবে, স্মৃতিশক্তিও বাড়বে। কারণ ব্লুবেরিতে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্থোসায়ানিন থাকে, তা ছাড়া বাদামে ভিটামিন ই থাকে। যা আপনার মানসিক চাপ কমাতে সাহায্য করবে।
দই ও বাদাম
দই ও বাদাম একসঙ্গে নিত্যদিন খাওয়ার স্বাস্থ্যের জন্য খুব ভালো।
এটি খেলে আপনার ত্বক উজ্জ্বল হবে। সেই সঙ্গে এতে প্রচুর পরিমাণে প্রো-বায়োটিক থাকে। যা অন্ত্র জন্য খুব ভালো। আর মস্তিষ্কের কর্মক্ষমতা বাড়াতে খুব ভালো কাজ করে। দই আর বাদাম খাওয়া খুব ভালো। কারণ এতে ভিটামিন ই থাকে।
ওটস ও বাদাম
ওটস ও বাদাম একসঙ্গে খান। এতে প্রচুর পরিমাণে গ্লুকোজ থাকে। তা ছাড়া থাকে ফাইবারও। আর বাদামে ভিটামিন ই, ওমেগা-৩ থাকে। যা মস্তিষ্ক আরো সতেজ করতে সাহায্য করে।
আরো পড়ুন
পুরনো ও গুরুত্বপূর্ণ মেইল সহজে খুঁজে বের করবে জিমেইল
আখরোট ও বাদাম
আখরোট ও বাদামে (আমন্ড) নিত্যদিন একসঙ্গে খাওয়া খেলে আপনার স্মৃতিশক্তি হু হু করে বাড়তে থাকবে। এতে প্রচুর পরিমাণে ডিএইচএ থাকে। যা এক ধরনের ওমেগা-৩। যা মস্তিষ্কের জন্য খুব ভালো।
পালংশাক ও বাদাম
পালংশাক ও বাদাম একসঙ্গে খান। এতে আপনার ত্বক অন্ত্র সবই ভালো থাকবে। সেই সঙ্গে স্মৃতিশক্তি বাড়বে। কারণ পালংশাকে প্রচুর পরিমাণে আয়রন থাকে। মানসিক চাপ কমাতে খুব সাহায্য করে। তা ছাড়া বাদামে ভিটামিন ই থাকায় মানসিকভাবে সুস্থ রাখতে সাহায্য করবে।
হলুদ ও বাদাম
হলুদ ও বাদাম খাওয়া খুব ভালো। হলুদের প্রচুর পরিমাণে কারকিউমিন থাকে। আর বাদামে ভিটামিন ই, অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট থাকে। যা আপনার স্মৃতিশক্তি বাড়াতে সাহায্য করবে।
আরো পড়ুন
পপকর্ন লাংস কী, যে কারণে সাবধান হবেন ধূমপায়ীরা
বাদামও ডিম
বাদামও ডিম নিত্যদিন একসঙ্গে খেতে পারেন। এতে স্মৃতিশক্তি বাড়ার পাশাপাশি আপনার মানসিক চাপও কমবে। ডিমে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ডি এবং ই থাকে।
গ্রিন টি ও বাদাম
গ্রিন টি ও বাদাম একসঙ্গে খেতে পারেন। এটি খেলে আপনার মানসিক চাপ কমবে। যদি আপনি রাতে নিত্যদিন গ্রিন টি আর বাদাম একসঙ্গে খান, তাহলে আপনি রাতে ভালো ঘুমাতেও পারবেন।
কলা ও বাদাম
কলা ও বাদাম একসঙ্গে খাওয়া খুব ভালো। কলাতে প্রচুর পরিমাণে কার্বোহাইড্রেট, পটাশিয়াম থাকে। যা মস্তিষ্ক ভালো রাখতে সাহায্য করে। যা মানসিক চাপ কমায়। আর ভিটামিন ই থাকায় এটি আপনার ত্বকের জন্য খুব ভালো।
আরো পড়ুন
গরমে কোন কোন রোগের ঝুঁকি বেশি, কিভাবে সুস্থ থাকবেন
শরীরে ম্যাগনেসিয়াম বাড়াতে সাহায্য করবে যে ৮ পানীয়
জীবনযাপন ডেস্ক
জীবনযাপন ডেস্ক
শেয়ার
সংগৃহীত ছবি
মানব দেহের একটি অত্যাবশ্যকীয় খনিজ হচ্ছে ম্যাগনেসিয়াম। ৩০০টিরও বেশি রাসায়নিক প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করে এটি আমাদের সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। এ ছাড়া এটি রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ, রক্তে শর্করা নিয়ন্ত্রণ, পেশি সঞ্চালন, মলত্যাগের নিয়মিততা এবং হাড়ের স্বাস্থ্য রক্ষায় সহায়তা করে।
এ ছাড়া যথাযথ পরিমাণে ম্যাগনেসিয়াম গ্রহণ ঘুম ও শারীরিক বিশ্রামকে উন্নত করে, মেজাজ ভারসাম্য রাখে এবং প্রদাহ হ্রাস করতে সাহায্য করে।
যদিও মানব দেহের জন্য ম্যাগনেসিয়াম খুবই গুরুত্বপূর্ণ, কিন্তু অনেকেই প্রতিদিনের এই প্রয়োজনীয়তা পূরণ করতে পারেন না। নারীদের জন্য আদর্শ হলো দৈনিক ৩১০-৩২০ মিলিগ্রাম ম্যাগনেশিয়াম গ্রহণ করা এবং পুরুষদের জন্য আদর্শ হলো ৪০০–৪২০ মিলিগ্রাম ম্যাগনেসিয়াম গ্রহণ করা।
আরো পড়ুন
গরমে কোন কোন রোগের ঝুঁকি বেশি, কিভাবে সুস্থ থাকবেন
সাধারণত বাদাম, বীজ, পাতাযুক্ত সবজি, ডাল ও আলুতে ম্যাগনেশিয়াম পাওয়া যায়। তবে ম্যাগনেসিয়ামযুক্ত পানীয়ও একটি সহজ ও সুবিধাজনক উৎস হতে পারে।
কী সেসব পানীয়, তা জানুন এই প্রতিবেদনে।
মিনারেল ওয়াটার
মিনারেল ওয়াটার প্রাকৃতিক ভূগর্ভস্থ জলাধার ও ঝর্ণা থেকে সংগ্রহ করা হয়। এতে প্রায়ই ম্যাগনেসিয়ামের মতো পুষ্টি উপাদান বেশি থাকে। কিছু বোতলজাত মিনারেল ওয়াটারে প্রতি লিটারে ১২০ মিলিগ্রাম পর্যন্ত ম্যাগনেসিয়াম থাকে।
পানির মাধ্যমে শরীরকে হাইড্রেট রাখা সবসময়ই ভালো। এ ক্ষেত্রে মিনারেল ওয়াটার আপনার হাইড্রেশন ও ম্যাগনেসিয়ামের চাহিদা পূরণে সাহায্য করতে পারে।
আরো পড়ুন
শরীরে আয়রনের ঘাটতি আছে কি না, বুঝবেন যেভাবে
নারকেল পানি
নারকেলের পানি বলতে এখানে সবুজ কচি নারকেলের ভেতরের স্বচ্ছ তরল পানির কথা বোঝানো হয়েছে। এটি ইলেকট্রোলাইট সমৃদ্ধ। এ ছাড়া এটি খেলোয়াড়দের কাছে খুব জনপ্রিয়।
যদিও এতে পটাশিয়ামের পরিমাণ সবচেয়ে বেশি, তবুও প্রতি কাপ নারকেল পানিতে প্রায় ৬০ মিলিগ্রাম ম্যাগনেসিয়াম থাকে। সামান্য মিষ্টি ও হাইড্রেটিং পানীয় হিসেবে এটি একটি ভালো পছন্দ।
উদ্ভিদভিত্তিক দুধ
উদ্ভিদভিত্তিক দুধ ম্যাগনেসিয়ামের একটি চমৎকার উৎস হতে পারে। বিশেষ করে যখন এটিকে আরো পুষ্টিতে আরো শক্তিশালী করা হয়। ফর্টিফাইড এসব খাবারকে শক্তিশালী করার জন্য অতিরিক্ত ভিটামিন ও খনিজ যোগ করা হয়।
আরো পড়ুন
সময়মতো লাঞ্চ-ডিনার না করলে স্বাস্থ্যের যে ক্ষতি
১ কাপ ফর্টিফাইড সয়া দুধে ৫৪ মিলিগ্রাম ম্যাগনেসিয়াম থাকে। অপরদিকে, ১ কাপ আনফর্টিফাইড বাদাম দুধে থাকে মাত্র ১৯ মিলিগ্রাম। দুগ্ধজাত খাবার এড়াতে চাইলে এটি একটি পুষ্টিকর বিকল্প হতে পারে।
উদ্ভিদভিত্তিক দুধ। ছবি : সংগৃহীত
কোকোভিত্তিক পানীয়
এই পানীয়গুলো তৈরি হয় কাঁচা কোকো পাউডার দিয়ে। এটি দক্ষিণ আমেরিকার একটি গ্রীষ্মমণ্ডলীয় চিরহরিৎ গাছ থেকে আসে। এর থেকেই চকলেট, কোকো ও কোকো মাখন উৎপন্ন হয়। কাঁচা কোকো ম্যাগনেসিয়ামের অন্যতম উৎসগুলোর মধ্যে একটি। এক টেবিল চামচ কাঁচা কোকোতে ৩৫ মিলিগ্রাম ম্যাগনেসিয়াম থাকে।
অনেকে এটি দিয়ে হট চকোলেট বা স্মুদি তৈরি করতে ভালোবাসেন। কারণ এর স্বাদ কোকোর চেয়ে কিছুটা তেতো। এতে সাধারণত কোনো চিনি যোগ করা থাকে না এবং বেশি পুষ্টি উপাদান থাকে।
আরো পড়ুন
পপকর্ন লাংস কী, যে কারণে সাবধান হবেন ধূমপায়ীরা
ব্ল্যাকস্ট্র্যাপ গুড়
ব্ল্যাকস্ট্র্যাপ গুড় ম্যাগনেসিয়ামের অন্যতম সেরা উৎস। প্রতি টেবিল চামচে ১০০ মিলিগ্রাম ম্যাগনেসিয়াম থাকে। এটি উল্লেখযোগ্য পরিমাণে ক্যালসিয়াম, পটাসিয়াম ও আয়রন সরবরাহ করে।
১ টেবিল চামচ ব্ল্যাকস্ট্র্যাপ গুড় গরম পানিতে গুলে ম্যাগনেসিয়াম পানীয় তৈরি করুন। স্বাদের ভারসাম্য বজায় রাখতে লেবুর রস দিতে পারেন। গুড়ের সবচেয়ে জনপ্রিয় ব্যবহারগুলোর মধ্যে একটি হলো কুকিজ বেক করা, এটি ম্যাগনেসিয়াম সমৃদ্ধ পানীয়তেও তৈরি করা যেতে পারে।
স্মুদির তেতো-মিষ্টি স্বাদ ঢাকতে স্মুদিতে ব্ল্যাকস্ট্র্যাপ গুড় যোগ করতে পারেন।
আরো পড়ুন
এসি রুমে বসেই ধূমপান, হতে পারে যে বিপদ
সবুজ স্মুদি
সাধারণত পালং শাক, কেল, সুইস চার্ডের মতো পাতাযুক্ত সবজি দিয়ে সবুজ স্মুদি তৈরি করা হয়। এর সাথে কলা, বেরি, অ্যাভোকাডো বা উদ্ভিদভিত্তিক দুধ মেশানো যায়।
সবুজ স্মুদি। ছবি : সংগৃহীত
পাতাযুক্ত সবজিই ম্যাগনেশিয়ামের মূল উৎস। ১ কাপ কাঁচা পালং শাকে ২৪ মিলিগ্রাম, ২ কাপ কাঁচা কেল-এ ৩৩ মিলিগ্রাম ম্যাগনেসিয়াম থাকে। এ ছাড়া এতে কুমড়ার বীজ যোগ করলে (১ আউন্সে ১৬৮ মিলিগ্রাম) পুষ্টিগুণ আরো বাড়ে।
কফি
এনার্জি বৃদ্ধির জন্য পরিচিত হলেও কফিতে সামান্য পরিমাণ ম্যাগনেসিয়াম থাকে। প্রতি কাপ ব্ল্যাক কফিতে প্রায় ১০ মিলিগ্রাম ম্যাগনেসিয়াম থাকে। যদি প্রতিদিন সকালে কয়েক কাপ কফি পান করেন তবে ৩০ মিলিগ্রাম পর্যন্ত ম্যাগনেসিয়াম পেতে পারেন।
আরো পড়ুন
গরমে বাইরে থেকে এসেই ঠাণ্ডা পানি দিয়ে গোসল, ভালো নাকি খারাপ
কফিতে কাঁচা কোকো পাউডার বা ফর্টিফাইড দুধ যোগ করলে পুষ্টি আরো বাড়বে।
ভেষজ চা
নেটল, ড্যান্ডেলিয়ন ও রুইবসের মতো ভেষজ চায়ে সামান্য পরিমাণ ম্যাগনেসিয়াম থাকে। তবে এটি নির্ভর করে কোন গাছ থেকে চা তৈরি হয়েছে এবং কিভাবে প্রস্তুত করা হয়েছে তার ওপর।
নেটল টিতে প্রায় ১০ মিলিগ্রাম বা তার কম ম্যাগনেসিয়াম থাকে। তবে এটি প্রতিদিনের চাহিদা পূরণে সহায়তা করে।
ভেষজ চা। ছবি : সংগৃহীত
ক্যাফেইনযুক্ত চা বা কফির বিপরীতে ভেষজ চা মানসিক শান্তি ও রিল্যাক্সেশন দিতে সাহায্য করে এবং আপনার ডায়েটে অতিরিক্ত ম্যাগনেসিয়াম যোগ করে।
আরো পড়ুন
কাজুবাদামেরও রুটি হয় নাকি
ম্যাগনেসিয়াম যুক্ত অন্যান্য খাবার
যদিও পানীয় ম্যাগনেসিয়ামের একটি উৎস, তবে খাদ্যই সবচেয়ে ভালো উপায়। নিচে কিছু চমৎকার উৎসের নাম তুলে ধরা হলো—
চিয়া বীজ : প্রতি আউন্সে ১১১ মিলিগ্রাম।
বাদাম : প্রতি আউন্সে ৮০ মিলিগ্রাম (প্রায় ২৩টি বাদাম)।
সিদ্ধ পালং শাক : আধা কাপ (৪ আউন্সে) ৭৮ মিলিগ্রাম।
সিদ্ধ কালো মটর : আধা কাপ ৬০ মিলিগ্রাম।
অ্যাভোকাডো : ৫৮ মিলিগ্রাম/মাঝারি ফল
ডার্ক চকোলেট (৭০-৮৫% কোকো) : ৫০ মিলিগ্রাম/আউন্স।
সিদ্ধ বাদামি চাল : ৪২ মিলিগ্রাম/আধা কাপ।
টোফু : ৩৫ মিলিগ্রাম/৩ আউন্স
কলা : ৩২ মিলিগ্রাম/মাঝারি আকার
আরো পড়ুন
ঘন ঘন ওয়েট টিস্যু ব্যবহারে কী ক্ষতি
মানব দেহ নিজ থেকে ম্যাগনেসিয়াম উৎপাদন করতে পারে না। খাদ্য বা সাপ্লিমেন্ট থেকে এটি গ্রহণ করতে হয়। যদিও বিভিন্ন উদ্ভিদভিত্তিক সম্পূর্ণ খাবার খাওয়া সবচেয়ে ভালো, তবে আপনি চাইলে প্রাকৃতিকভাবে ম্যাগনেসিয়ামযুক্ত বা ফর্টিফাইড পানীয় থেকেও কিছু পরিমাণ পেতে পারেন। আপনার কাছে যে বিকল্পটি ভালো লাগে সেটিই বেছে নিন—অল্প হলেও প্রতিদিনের ম্যাগনেসিয়ামের চাহিদা পূরণে সহায়তা করবে।