<p>গরম বা ঠান্ডা পানি পান করলে শরীর সুস্থ ও পানির পরিমাণ ঠিক থাকে। কেউ কেউ দাবি করে গরম পানি শরীরের কিছু কিছু কাজ ঠান্ডা পানির তুলনায় বেশি ভাল করে। গরম পানির বেশিরভাগ স্বাস্থ্যগত সুবিধাগুলো ধারণার ওপর ভিত্তি করে করা। কারণ এই ক্ষেত্রে সামান্য বৈজ্ঞানিক গবেষণা করা হয়েছে। গবেষণায় জানা গেছে, গরম পানীয় পান করার ক্ষেত্রে ১৩০ ও ১৬০ ডিগ্রি ফারেনহাইট তাপমাত্রার মধ্যে থাকা সর্বোত্তম । এর বেশি তাপমাত্রায় পুড়ে যাওয়ার ভয় থাকে।</p> <p><strong>১. বন্ধ নাক খুলে যাবে</strong></p> <p>যদি আপনার সাইনাসের সমস্যা থাকে তাহলে, গরম পানি আপনার জন্য খুবই উপকারী। ধোয়া ওঠা এক কাপ গরম পানি নাকের কাছে ধরে চায়ের মতো খেয়ে ফেলুন। এতে যেটা হবে, আপনি যখন গ্লাসে চুমুক দিবেন গরম পানির ভাপ নাকে প্রবেশ করবে। এতে বন্ধ নাক খুলতে সাহায্য করবে।  তাছাড়া গরম পানি সাইনাসের কারণে সৃষ্ট মাথা ব্যথা কমাবে। গলা এবং নাকে আরাম পাবেন। </p> <p>সাইনাসের কারণে গলা এবং নাকে কফ জমে থাকতে পারে। গরম পানি খেলে সেটা নরম হয়ে আসে। জায়গাটা গরম করে ব্যথা কমিয়ে আনবে। </p> <p>২০০৮ সালের  একটি গবেষণায় দেখা গিয়েছিল, ঠান্ডা লাগলে গরম পানি বা তরল খাবার যেমন চা খুব দ্রুত ঠান্ডায় আরাম দেয়। যেমন গলা ব্যথা, নাক দিয়ে পানি পড়া ইত্যাদি। </p> <p><strong>২. হজম</strong></p> <p>গরম পানি হজমে সাহায্য করে। গরম পানি পান করলে সেটা পাকস্থলী এবং অন্ত্রের মধ্যে দিয়ে যায়। এতে শরীর ভালভাবে বর্জ্য অপসারণ করতে সক্ষম হয়। এ ছাড়াও বলা হয়, যে খাবারগুলো হজম করতে সময় লাগে বা একটু কষ্ট হয় গরম পানি পান করলে হজম সহজ হয়ে যায়। </p> <p>তবে এই বিষয়ে আরো গবেষণা দরকার। ২০১৬ সালের একটি গবেষণা অনুসারে গরম পানি অন্ত্রের নড়াচড়া এবং অস্ত্রোপচারের পরে গ্যাস নিষ্কাশনের ওপর অনুকূল প্রভাব ফেলতে পারে।</p> <p>তবে আপনি যদি মনে করেন গরম পানি হজমে সাহায্য করছে তাহলে খেতে পারেন। তবে সমস্যা হলে খাবেন না। </p> <p><strong>৩. কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রের কার্যকারিতার উন্নতি </strong></p> <p>পরিমাণ মতো পানি পান না করলে, শরীরের কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রের কার্যকারিতার ওপর প্রভাব ফেলতে পারে। এর প্রভাব গিয়ে পড়তে পারে মেজাজ এবং মস্তিষ্কের কার্যকারিতার ওপর।</p> <p>২০১৬ সালের একটি গবেষণায় দেখা গেছে মেজাজ ঠিক রাখতে এবং মস্তিষ্কের কার্যকারিতায় গরম পানি বেশ কার্যকর।</p> <p><strong>৪. কোষ্ঠকাঠিন্য উপশম করতে সাহায্য করে</strong></p> <p>ডিহাইড্রেশন বা পানিশূন্যতা কোষ্ঠকাঠিন্যের একটি সাধারণ কারণ। অনেক ক্ষেত্রে, পানি পান কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করার এবং প্রতিরোধ করার একটি কার্যকর উপায়। নিয়মিত গরম পানি পান করলে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সাহায্য করে।</p> <p><strong>৫. শরীরে পানির মাত্রা ঠিক রাখা</strong></p> <p>যদিও ঠান্ডা পানি পানিশূন্যতা দূর করার জন্য সর্বোত্তম। তবে যে কোনো তাপমাত্রার পানি পান আপনার শরীরে পানির মাত্রা ঠিক রাখতে সাহায্য করবে।</p> <p>যুক্তরাষ্ট্রের ইনস্টিটিউট অফ মেডিসিন বলেছে, নারীরা প্রতিদিন ৭৮ আউন্স (২.৩ লিটার) পানি এবং পুরুষরা ১১২ আউন্স (৩.৩ লিটার) পানি গ্রহণ করে। পানি পানের পাশাপাশি ফল, সবজি এবং কিছু খাবারের পানি যেটা সহজে গলে যায় সেখান থেকে আসে।</p> <p>আপনি যদি গর্ভবতী হন বা বুকের দুধ খাওয়ান, ভারী কাজ করেন বা গরম পরিবেশে কাজ করেন তবে বেশি পানির প্রয়োজন হয়। এই ক্ষেত্রে সকালে এক গ্লাস গরম পানি দিয়ে শুরু করুন। এবং দিন শেষে আর এক কাপ গরম পানি। এতে শরীর সুস্থ থাকবে। </p> <p><strong>৬. মানসিক চাপ কমাতে</strong></p> <p>গরম পানি শরীরের কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রের কার্যকারিতা যেহেতু ঠিক রাখে, তাই মানসিক চাপও কমাতে সাহায্য করে। ২০১৪ সালের একটি গবেষণা অনুসারে, কম পানি পান করার ফলে প্রশান্তি, তৃপ্তি এবং ইতিবাচক আবেগের অনুভূতি কমে যায়।</p> <p><strong>৭. রক্ত সঞ্চালন</strong></p> <p>শরীরে সুস্থ রক্ত প্রবাহ রক্তচাপ থেকে শুরু করে কার্ডিওভাসকুলার রোগের ঝুঁকি পর্যন্ত সবকিছুকে প্রভাবিত করে। হালকা গরম পানিতে গোসল করলে রক্ত সঞ্চালন সারা শরীরে আরো ভালোভাবে হয়। গরম পানি পানেও এমন প্রভাব পড়ে বলে শোনা যায়। তবে খুব কম গবেষণায় আছে যে, এটি কার্যকর।</p> <p><br /> <strong>** সর্তকতা:</strong></p> <p>অত্যধিক গরম পানি পান করা আপনার খাদ্যনালীর টিস্যুর জন্য ক্ষতিকর হতে পারে।   জিহ্বা পুড়ে গেলে খাবারের স্বাদ নিতে অসুবিধা হতে পারে।  যদিও গরম পানি পান করার কোনো ক্ষতিকারক প্রভাব নেই তবুও সর্তক থাকুন।</p> <p>সূত্র : হেল্থ লাইন।</p>