ঢাকা, বুধবার ০২ এপ্রিল ২০২৫
১৯ চৈত্র ১৪৩১, ০২ শাওয়াল ১৪৪৬

ঢাকা, বুধবার ০২ এপ্রিল ২০২৫
১৯ চৈত্র ১৪৩১, ০২ শাওয়াল ১৪৪৬
হালচাল

লুঙ্গি বিপ্লব কি সামনেই?

জিয়াউদ্দিন সাইমুম
জিয়াউদ্দিন সাইমুম
শেয়ার
লুঙ্গি বিপ্লব কি সামনেই?

বিশ্বজুড়ে লুঙ্গির জ্ঞাতিগোষ্ঠী আর ব্যবহারকারীর সংখ্যাটি জানা থাকলে হয়তো কবি আসাদ চৌধুরী আফসোস করে লিখতেন না, ‘লুঙ্গি পরার পুরুষ কই?’ তাঁর ‘তবক দেওয়া পান’ কাব্যগ্রন্থের ‘ফুল ফুটেছে থোকা থোকা’ কবিতার লাইনগুলো ছিল এ রকম : ‘ফুল ফুটেছে থোকা থোকা তাঁতির পুতে বড়ই বোকা/ জোলার ছাওয়াল জোলারে লুঙ্গি গামছা ঝোলারে/ পান খাওয়ালি বিনা চুনে তবু তাঁতি লুঙ্গি বোনে, তাঁতির পুত গো করি মানা লুঙ্গি থুইয়া শাড়ি বানা/ দেশ ভইরাছে মাইয়া লোকে, শাড়ি বানা থাকবি সুখে/ সোনার দেশের মানুষরে কই, লুঙ্গি পরার পুরুষ কই?’

আরো পড়ুন
দক্ষিণ আমেরিকায় সমুদ্রবন্দর বানাল চীন

দক্ষিণ আমেরিকায় সমুদ্রবন্দর বানাল চীন

 

লুঙ্গির মতো এত রিলাক্সড পোশাক বিশ্বে দ্বিতীয়টি রয়েছে কি না তা বিশেষজ্ঞদেরও জানা নেই। এই সরল পোশাকের রয়েছে নানা গুণ, রয়েছে বহুমুখী ব্যবহার। ভারতীয় এক লোকগীতিতে লুঙ্গির প্রশস্তি গাওয়া হয়েছে এভাবে—‘যখন তুমি সাদা রঙের হও/ তখন তুমি সাধারণ পোশাক/ রংটা উজ্জ্বল হলেই তোমার উপযুক্ত জায়গা উৎসবে/ মাথায় বাঁধলেই তুমি পাগড়ি বনে যাও/ দাপুটে শীতে তুমিই তো আমার কম্বল/ বাতাস থাকলেই তুমি আমার নৌকার পাল/ গোসলের পর টাওয়েল/ গাছ থেকে পড়ন্ত আম ধরতে তুমিই আমার ফাঁদ/ কাছাড় মেরে ক্রিকেট খেলতেও আমার সমস্যা হয় না/ তুমি তো বিছানারই বিকল্প অথবা প্রয়োজনে শাল/ মাঝেমধ্যে হয়ে যাও থলে/ তোমার গুণে কার না মন গলে।’

দুই মিটার দৈর্ঘ্য নিয়েই সিলিন্ডার আকৃতির এ পরিধানটির নিজস্ব ভুবন।

আরো পড়ুন
পটিয়ায় চাচার হাতে ভাতিজা খুন

পটিয়ায় চাচার হাতে ভাতিজা খুন

 

চেক হোক আর একরঙা হোক, একটি জবরদস্ত ফ্যাশন হওয়ার যাবতীয় সম্ভাবনা যে লুঙ্গির মধ্যে লুকিয়ে আছে, তা এখন ফ্যাশন ডিজাইনাররাও মানছেন। ওয়েস্টার্ন একাধিক ফ্যাশন ডিজাইনার বলেছেন, প্রাচ্যের পোশাক লুঙ্গির উপযোগিতা ফুটিয়ে তোলা সম্ভব হলে বিশ্বে এই সরল পোশাকটির আবেদন অনেক গুণ বেড়ে যাবে; এমনকি লুঙ্গি বিপ্লবও হয়ে যেতে পারে। তামিল তারকা বিক্রম তাঁর মুভি ‘মাজা’তে লুঙ্গি পরে অভিনয় করেছেন। প্রসাদ বিধপা তো লুঙ্গিতেই সবচেয়ে বেশি স্বস্তি পান।

লুঙ্গির প্রশস্তি গেয়ে এই ফ্যাশনগুরু বলেছেন, ‘এটি একটি দুর্দান্ত ফ্যাশন স্টেটমেন্ট। লুঙ্গি হয়ে যেতে পারে দোপাট্টা অথবা পরিধানের একটি সক্রিয় অংশ। ডেনিম জিন্সের ওপর আমি স্বচ্ছন্দে লুঙ্গি পরি। সাবকন্টিনেন্টের আবহাওয়ার দিক থেকে একমাত্র লুঙ্গিই সবচেয়ে উপযোগী পোশাক।

আরো পড়ুন
রোনালদোর জোড়া গোলে শেষ আটে পর্তুগাল

রোনালদোর জোড়া গোলে শেষ আটে পর্তুগাল

 

লুঙ্গি অতি সাধারণ ও সরল পোশাক। এক বা দুই গিট্টু দিয়েই তা পরা যায়। বাংলাদেশ, ভারত, শ্রীলঙ্কা ও মায়ানমারে লুঙ্গি অতিসাধারণ দৃশ্য। মায়ানমারে এটি জাতীয় পোশাক হিসেবেও স্বীকৃত। তবে লুঙ্গিকে তারা বলে লোঙ্গাই।

বিশ্বের নানা দেশে স্থানীয় ঐতিহ্য অনুসারে পুরুষ অথবা নারী-পুরুষ লুঙ্গি পরে। তবে বিশ্বের সব জায়গায় লুঙ্গি পরার আলাদা স্টাইল রয়েছে। লুঙ্গির ধরন ও ব্যাবহারিক দিকটি বিবেচনায় আনলে যেকোনো ফ্যাশনসচেতন ব্যক্তি এটা বলতে বাধ্য হবে, পশ্চিমা বিশ্ব অনেকটা লুঙ্গির আদলে কিল্ট নামের পোশাককে ফ্যাশনদুরস্ত বলে গর্ববোধ করে; সাউথ এশিয়ানরা তার চেয়েও ডাহা আধুনিক পোশাক বহু আগে থেকে পরিধান করছে। কারণ লুঙ্গি কটন বা সিল্কের এমন একটি টিউব, যাতে কোনো জিপার লাগে না। এটা গিট্টু দিয়ে কোমর থেকে নিমেষেই পায়ের গোড়ালি পর্যন্ত ঢেকে দেওয়া যায়। এটা যেমন হাইজেনিক তেমনি দেহের উপযোগী। নিরপেক্ষ দৃষ্টিকোণ থেকে তাকালে লুঙ্গিকে যেকোনো বিবেচনায় একটি স্বাস্থ্যসম্মত অ্যাংকল-লেংথ স্কার্ট বলা যায়। বড় সাদাসিধা পোশাক, যার নেই কোনো ফাংশনাল চ্যালেঞ্জ।

আরো পড়ুন
উপদেষ্টা নির্বাচনে আঞ্চলিকতা নয়, দেশের কথা ভাবা হয়েছে

উপদেষ্টা নির্বাচনে আঞ্চলিকতা নয়, দেশের কথা ভাবা হয়েছে

 

ফ্যাশনের দৃষ্টিতে তাকানো হয়নি বলেই লুঙ্গিকে এত দিন ফ্যাশনসচেতন পোশাক বলা হয়নি। বিশ্বের যেকোনো প্রান্তের মানুষ অনায়াসে এই সর্বজনীন পোশাকে অতি স্বল্প সময়ে অভ্যস্ত হয়ে যেতে পারে।

লুঙ্গি পরলে মানুষ কি মানুষের পর্যায় থেকে নিচে নেমে যায়? সামাজিক বলয়ে জিন্সের টাইট প্যান্ট না পরলে কি ব্যক্তির সেন্স অব পাওয়ার কমে যায়? প্রিন্স চার্লস ও সিন কনারি কিল্ট পরিধান করে অথবা ডেভিড বেকহাম ও ডেভিড বোয়ি সারং পরিধানের পরও যদি ব্যক্তিত্ব না হারান, তাহলে বাংলাদেশিরা লুঙ্গি পরলে কেন আত্মমর্যাদা হারাবে?

আরো পড়ুন
বিদ্যমান সভ্যতা আমাদের ব্যর্থ করেছে, নতুন বিশ্ব গড়তে হবে

বিদ্যমান সভ্যতা আমাদের ব্যর্থ করেছে, নতুন বিশ্ব গড়তে হবে

 

সম্প্রতি লন্ডনের মেট্রোপলিটন মিউজিয়াম অব আর্ট এক্সিবিশনে ব্রিটেনের পুরুষ সেলিব্রিটিরা নৈতিক, সামাজিক ও জেন্ডার কোডকে চ্যালেঞ্জ জানানোর পাশাপাশি পৌরুষত্বের ধারণাকে পুনঃ সংজ্ঞায়িত করার লক্ষ্যে অবলীলায় স্কার্ট পরে ক্যাটওয়াক করেছেন। আমাদের সমাজে পুরুষদের অতটা সাহসী না হলেও চলবে। শুধু মানসিকতা পাল্টালেই ঐতিহ্যবাহী লুঙ্গির জাত পুনরুদ্ধার হবে।

হালের পশ্চিমা ফ্যাশন ডিজাইনাররা এখন প্রাচীন কালচার থেকেই অনুপ্রেরণা খুঁজে নিতে চাইছেন। তাঁরা স্কটিশ কিল্টের পাশাপাশি এশিয়া, আফ্রিকার প্রাচীন পোশাক কালচারকে আধুনিকতার পরশ দিয়ে আপন করে নিতে চাইছেন। তাঁরা এটা মনে করছেন, বিশ্বজনীন কালচারগুলো নতুন রূপে আয়ত্ত করে নেওয়ার অর্থ হচ্ছে নিজের বর্তমান সমাজ-সভ্যতা যে গতিশীল ও প্রাণবন্ত, তা নতুন করে প্রমাণ করা। ঠিক এ কারণে এশিয়া, আফ্রিকা আর এশিয়ার সারং, ধুতি, লুঙ্গি, কাফটান, কামিজ, চায়নিজ জোব্বা আর জাপানিজ কিমোনো পশ্চিমি বিশ্বের ফ্যাশন ক্যাপিটালগুলোর জাঁকালো ক্যাটওয়াকে ক্রমবর্ধমান হারে জায়গা করে নিচ্ছে।

আরো পড়ুন
ঝিকরগাছায় পিয়াল হত্যা মামলার আসামি আমিরুল আটক

ঝিকরগাছায় পিয়াল হত্যা মামলার আসামি আমিরুল আটক

 

৭৮ বছর বয়সী সিরাজগঞ্জের সামান আলী সরকারের কথা মনে আছে? ২০২২ সালের ৩ আগস্ট সামান আলী মিরপুর স্টার সিনেপ্লেক্সে যান ‘পরাণ’ ছবি দেখতে। টিকিট পাননি, পরনে লুঙ্গি ছিল বলে। ঘটনাটি সোশ্যাল মিডিয়ায় ‘লুঙ্গি বিপ্লবে’র জন্ম দেয়। সমালোচিত হয় স্টার সিনেপ্লেক্স কর্তৃপক্ষ। অবশেষে ২৪ ঘণ্টার মাথায় ৪ আগস্ট সিনেপ্লেক্স কর্তৃপক্ষ ও ‘পরাণ’ টিম খুঁজে নেয় সামান আলীকে। ব্যবস্থা নেয় তাঁকে লুঙ্গি পরে ছবি দেখানোর। ইতিহাস বলছে, বঙ্গবন্ধু বাড়িতে লুঙ্গি পরতেন, ভাসানী পরতেন সর্বত্র। এই পোশাকটির প্রেমে পড়েছিলেন সাবেক মার্কিন রাষ্ট্রদূত ড্যান মজিনাও। তিনি লুঙ্গি পরতেন, ফিরে যাওয়ার সময় বাংলাদেশ থেকে লুঙ্গি নিয়ে গিয়েছিলেন। লুঙ্গি পরে রিকশায় চালকের আসনে বসে তিনি ফটোসেশনও করেছিলেন।

মন্তব্য

কেমব্রিজের এপ্রিল ফুলে বোকা বনল বিশ্ব

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
কেমব্রিজের এপ্রিল ফুলে বোকা বনল বিশ্ব
সংগৃহীত ছবি

কেমব্রিজ ডিকশনারি কর্তৃপক্ষের এপ্রিল ফুলে বোকা বনে গেল বিশ্ব।

মঙ্গলবার (১ এপ্রিল) ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এক বিশেষ ঘোষণায় কেমব্রিজ ডিকশনারি কর্তৃপক্ষ জানায়, ইংরেজি বর্ণমালা থেকে কিউ (Q) বর্ণটি বাদ দেওয়া হচ্ছে।

ওই ঘোষণায় কেমব্রিজ ডিকশনারি কর্তৃপক্ষ বলছে, “আমাদের কমিউনিটির সদস্যরা সব সময় ইংরেজি বানান নিয়ে সমস্যায় পড়েন, বিশেষ করে ‘কিউ’ বর্ণ দিয়ে বানান করা শব্দগুলোর ক্ষেত্রে। তাই আমরা কেমব্রিজ ডিকশনারি থেকে ‘কিউ’ বর্ণটি সরিয়ে ফেলব।

তবে ‘কিউ’ বর্ণের পরিবর্তে অন্য কোন বর্ণ ব্যবহার করা হবে, সে বিষয়ে কেমব্রিজ ডিকশনারি কর্তৃপক্ষ বলছে, বর্তমানে ‘কিউইউ’ দিয়ে বানান করা সব শব্দের পরিবর্তে ‘কে’ অথবা ‘কেডব্লিউ’ দিয়ে বানান করা হবে। উদাহরণস্বরূপ, kwiet, ekwipment এবং antike।

তবে কেমব্রিজ ডিকশনারি কর্তৃপক্ষ ফেসবুক পোস্টের কমেন্টে ‘এপ্রিল ফুল ডে’ লেখা লিংক শেয়ার করেছেন। দেখতে এখানে ক্লিক করুন।

মন্তব্য

ওসমানীয় সাম্রাজ্যে ঈদ উৎসব কেমন ছিল?

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
ওসমানীয় সাম্রাজ্যে ঈদ উৎসব কেমন ছিল?
সংগৃহীত ছবি

রমজান বায়রাম কিংবা সেকার বায়রাম, ওসমানীয় সাম্রাজ্যে এই নামেই ডাকা হতো ঈদকে। তুর্কি ‘বায়রাম’ শব্দের অর্থ উৎসব আর ‘সেকার’ শব্দের অর্থ মিষ্টি।

৬০০ বছর ধরে রাজত্ব করা সুবিশাল ওসমানীয় বা অটোমান সাম্রাজ্যের শাসকরা ছিলেন ইসলাম ধর্মের অনুসারী। ইসলামের অন্যতম বৃহৎ ধর্মীয় উৎসব ঈদুল ফিতর তাই রাজকীয় সমারোহে উদযাপিত হতো এই সাম্রাজ্যে।

ওসমানীয় সাম্রাজ্যে আনুষ্ঠানিকভাবে বায়রাম উদযাপনের শুরুটা হয়ে যেত চাঁদ দেখার সঙ্গে সঙ্গে। ঈদের চাঁদ দেখা গেলে দুটি ভিন্ন স্থান থেকে তিনবার করে তোপধ্বনির মাধ্যমে জানান দেওয়া হতো। তোপ দাগানোর রেয়াজ ছিল ঈদের সকালেও। নামাজের পর ইস্তাম্বুলের বিভিন্ন স্থান বিশেষ করে প্রাসাদসমূহের ফটক এবং অন্যান্য শহরে তোপধ্বনি করা হতো।

চাঁদরাতে মশাল দিয়ে আলোকিত করা হতো তোপকাপি প্রাসাদ।

আরো পড়ুন
ঈদের দিন বাবাকে খোঁজে নৌফা, দেখেনি রাইয়ান

ঈদের দিন বাবাকে খোঁজে নৌফা, দেখেনি রাইয়ান

 

‘ঈদের দিনে হুররাম সুলতানের মাথায় শোভা পেতো পান্না ও রুবি খচিত সোনার মুকুট। নিজের সবচেয়ে সুন্দর পোশাকটি পরতেন তিনি।’ ইতিহাসবিদ জন ফারলি অটোমান সম্রাট সুলতান সুলেমানের স্ত্রী হুররামের ঈদের সাজের বর্ণনা দিয়েছেন এভাবেই।

ইতিহাসবিদ লেসলি প্যারিসের মতে, অটোমান সুলতানদের স্ত্রীরা দরিদ্রদের মধ্যে খাবার ও পোশাক বিতরণ করতেন।

ঈদের দিন সুলতান কী করতেন?

সুলতান সকাল সকাল তার লোকবহর নিয়ে মিছিল বা শোভাযাত্রা করে মসজিদের উদ্দেশে বেরিয়ে পড়তেন। হায়া সোফিয়া কিংবা নীল মসজিদে যেতেন নামাজ পড়তে। প্রাসাদের ফটক থেকে শুরু হওয়া সেই মিছিল দেখতে পথের দু’ধারে সমবেত হতো ইস্তাম্বুলবাসী। প্রহরীদের সতর্ক উপস্থিতি থাকতো শোভাযাত্রা ঘিরে।

নামাজ শেষ করে বহর নিয়ে প্রাসাদে ফিরে আসতেন সম্রাট।

প্রাসাদে পৌঁছে সিংহাসনে বসতেন সুলতান। শুভেচ্ছা বিনিময় করতেন রাজপুত্র, রাজকর্মচারী ও হারেমের বাসিন্দাদের সাথে। আগতদের মিষ্টিমুখ করানো হতো। সোনা ও রুপার পাত্রে ঈদের বিশেষ মিষ্টান্ন পরিবেশন করা হতো তাদের। আহার শেষে, সুলতান সমুদ্রতীরের প্রাসাদে যেতেন। সেখানে নানান বিনোদনের ব্যবস্থা থাকত। কুস্তি, বন্দুক ও বর্শা দিয়ে লক্ষ্যভেদ ও তির-ধনুকের খেলা দেখাতেন দক্ষ ব্যক্তিরা।

ঈদ উপলক্ষে কখনো কখনো বড় বড় ভোজের আয়োজন করতেন অটোমান শাসকরা। শহরের বিশেষ বিশেষ স্থানে প্যাভিলিয়ন (তাবু) করা হতো। সুলতান এবং বড় বড় কর্মকর্তাদের বসার ব্যবস্থা থাকত সেখানে। সুসজ্জিত করা হতো পথঘাট। ছোট-বড় সবার জন্য দোলনার ব্যবস্থা থাকত।

খাবার, শোভাযাত্রা, নানান শারীরিক কসরত প্রদর্শন থেকে শুরু করে বই বাঁধাইয়ের মতো আয়োজনের পসরা দেখা যেত। জায়গাটা জাল দিয়ে ঘেরা থাকত বলে প্রাসাদ থেকে নারীরাও সেখানকার আয়োজন দেখতে পেতেন। শোভাযাত্রা শেষে সুলতানের তরফ থেকে ঈদ উপহার দেওয়া হতো সবাইকে।

সুলতান সুলেমানের রাজত্বকালে ঈদ উদযাপনের বর্ণনা দিয়ে অটোমান ইতিহাসবিদ মুস্তাফা আলী বলেন, ‘সুলতান তার কর্মকর্তা ও প্রজাদের কাছ থেকে অভিনন্দন গ্রহণ করতেন এবং দরিদ্রদের মধ্যে উপহার বিতরণ করতেন।’

জোহরের নামাজের পর কবরস্থানে গিয়ে পরিবারের সদস্যদের জন্য প্রার্থনার রীতি তখনো ছিল। শহরে ২৪ ঘণ্টাই বিনোদন ও ক্রীড়ার অনুমতি দিতেন সুলতান। আনন্দমুখর সময় কাটাতে দুই বা তিন আকচে (মুদ্রা) ছিল যথেষ্ট। নগরজুড়ে উৎসবের আয়োজন দেখতে বিদেশিরাও আসতেন ইস্তাম্বুলে।

শেষ অটোমান খলিফা দ্বিতীয় আব্দুল হামিদের রাজত্বকালে, নাট্য পরিবেশনাও ঈদ উৎসবের অংশ হয়ে ওঠে। ইস্তাম্বুলে নিযুক্ত বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিরাও আমন্ত্রণ পেতেন নাটক দেখার। এমন নানা আয়োজনে জাঁকজমকপূর্ণভাবে অটোমানদের প্রজন্মের পর প্রজন্ম রমজান বায়রাম তথা ঈদুল ফিতর উদযাপন করে এসেছে।

১৩ শতকে ওসমান গাজীর হাত ধরে এই সাম্রাজ্যে যাত্রা শুরু হয়েছিল। ছয় শতাব্দী পার করে সাম্রাজ্যের পতন হয় ১০০ বছর আগে ১৯২৪ সালে। নির্বাসনে পাঠানো হয় দ্বিতীয় আব্দুল হামিদকে।

মন্তব্য

এপ্রিল ফুল, কেন এদিন মানুষকে বোকা বানানো হয়

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
এপ্রিল ফুল, কেন এদিন মানুষকে বোকা বানানো হয়
সংগৃহীত ছবি

পয়লা এপ্রিল। মানুষকে বোকা বানানোর দিন।  বছরের পর বছর ধরে এদিন বন্ধু-বান্ধব, ভাইবোন, কাছের মানুষ এবং সহকর্মীদের বোকা বানানো হয়। সহজ কথায় বলা যায়, নিরলস হাস্যরস উদযাপনের জন্য বরাদ্দ একটা দিন।

জীবনে অন্তত একবার বোধ হয় আমরা সবাই ‘এপ্রিল ফুল’ হয়েছি। মজার বিষয় হলো, এদিন বোকা হওয়ার পরেও কেউ রাগ করেন না, বরং নিজেই সেই খেলায় জড়িয়ে পড়েন। 

আনন্দ, মজা, হাসিঠাট্টার মধ্য দিয়ে পালিত হতো এপ্রিল ফুল বলে। এদিন যেকোনো বয়সের মানুষ উৎসাহের সঙ্গে একে অপরকে বোকা বানানোর খেলায় অংশ নেয়।

নিতান্তই নির্মল আনন্দ উপভোগ করতে দিনটি নিয়ে মশকরার মধ্য দিয়ে কেটে যেত। সারা বিশ্বে এটি পালিত হলেও বাংলাদেশে এখন খুব একটা দেখা যায় না। কারণ এই বোকা বানানোর দিবসটির জন্মই বিদেশে।

আরো পড়ুন
ঈদ সালামির প্রচলন কবে থেকে

ঈদ সালামির প্রচলন কবে থেকে

 

এপ্রিল ফুলের ইতিহাস

‘এপ্রিল ফুলস ডে’র সূচনা ও ইতিহাস নিয়ে অনেক কাহিনি ও নানা মতভেদ প্রচলিত আছে।

উনিশ শতক থেকে জনপ্রিয় এপ্রিল ফুলস ডে-র উৎস নিয়ে জিওফ্রে চসারের ‘ক্যানটারবেরি টেলস’-এ ব্যাখ্যা পাওয়া যায়।  

কিভাবে শুরু হলো এপ্রিল ফুলস ডে

ক্যালেন্ডারের ৩২ মার্চ  

কথিত আছে যে ১৩৮১ সাল থেকে এই দিনটি উদযাপন শুরু হয়। আসলে ইংল্যান্ডের রাজা দ্বিতীয় রিচার্ড ও বোহেমিয়ার রানি অ্যান বাগদানের ঘোষণা করেন। বাগদানের তারিখ রাখা হয়েছিল ৩২ মার্চ। মানুষ উদযাপন শুরু করেন।

পরে তারা বুঝতে পারেন যে ক্যালেন্ডারে ৩২ মার্চ কোনো তারিখ নেই। তখন তাদের বুঝতে অসুবিধা হয়নি যে তারা বোকা হয়েছেন। এর পর থেকে এপ্রিল ফুলস ডে উদযাপন শুরু হয়।

ঠাট্টা-বিদ্রূপ শুরু 

এই দিনটি ঘিরে আরো একটি বিশ্বাসও রয়েছে, আগে ফ্রান্সে এপ্রিলেই নববর্ষ উদযাপিত হতো। ১৫৮২ সালে চার্লস পোপ গ্রেগরি দ্বাদশ ফ্রান্সে পুরনো ক্যালেন্ডার পরিবর্তন করে গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডার চালু করেন। তা সত্ত্বেও অনেকে পুরনো ক্যালেন্ডার অনুসরণ করতে থাকেন। এর পর থেকে ১ জানুয়ারিতে নতুন বছরের সূচনার দিন হিসেবে পালন হওয়া শুরু হয়।

আরো পড়ুন
মাথা ব্যথা মানেই কি মাইগ্রেনের সমস্যা?

মাথা ব্যথা মানেই কি মাইগ্রেনের সমস্যা?

 

তবে অনেকে এটি মানতে অস্বীকার করেন এবং এপ্রিল মাসেই বর্ষারম্ভের দিন পালন করতে থাকেন। যারা নতুন ক্যালেন্ডারকে সমর্থন করেছেন তারা এপ্রিলে নতুন বছর সমর্থনকারীদের ঠাট্টা-বিদ্রূপ করা শুরু করেছিলেন। এই ব্যক্তিদের ‘এপ্রিল ফুল’ বলা শুরু হয় এবং এ জন্য এপ্রিলের প্রথম দিনেই ‘এপ্রিল ফুলস ডে’ হিসেবে প্রচলিত হয়।

রোমান উৎসব হিলারিয়া

কিছু মানুষ আবার এই দিনটিকে প্রাচীন রোমান উৎসব ‘হিলারিয়া’র সঙ্গে সংযুক্ত করেন। যেটি একটি হাসি ও মজার উৎসব। এমনকি এই উৎসবে সবাই অন্যকে বোকা বানানোর জন্য এবং বসন্ত উপভোগ করতে ছদ্মবেশে থাকতেন। 

উপমহাদেশ উদযাপন শুরু

কিছু প্রতিবেদন অনুসারে, ব্রিটিশরা ভারতে ১৯ শতকে এই দিনটি উদযাপন শুরু করে। যদিও গত কয়েক বছরে এটি উদযাপনের উন্মাদনা বেড়েছে। এমনকি সোশ্যাল মিডিয়ায় এই সম্পর্কিত মিম মারাত্মকভাবে ভাইরাল হয়। তবে মজা করার সময় মাথায় রাখা জরুরি, আপনার কোনো কথা যেন অপর মানুষটিকে আঘাত না করে।

আরো পড়ুন
অতিথি আপ্যায়নে রাখুন ভিন্ন স্বাদের কিছু মিষ্টান্ন

অতিথি আপ্যায়নে রাখুন ভিন্ন স্বাদের কিছু মিষ্টান্ন

 

সূত্র : আজতক বাংলা

মন্তব্য

দুধ দিয়ে গোসল করলে কি কলঙ্ক মোছে?

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
দুধ দিয়ে গোসল করলে কি কলঙ্ক মোছে?

দুধ দিয়ে গোসল করে রাজনীতি ছাড়ার হিড়িক পড়েছে দেশে। এই নেতা দুধ দিয়ে গোসল করে আওয়ামী লীগ ছাড়ছেন, তো আরেক নেতা নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ ছাড়ছেন। সকালে যুবলীগ ছাড়ছেন আরেকজন। কিন্তু দুধ দিয়ে গোসল কেন? বিশেষ দুধ দিয়ে গোসল করে আলোচনায় নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের অনেক নেতাকর্মী।

দুধ দিয়ে গোসল করলে কী হয়?
বিগত কয়েক বছরে এমন অনেক নেতা দুধ দিয়ে গোসল করে হয় রাজনীতি ছেড়েছেন, নয়তো দল পরিবর্তন করেছেন। কিন্তু এই খবরগুলোর আকর্ষণের জায়গা ছিলো দুধ দিয়ে গোসল। নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন জানান, রাজনীতির কলঙ্ক মুছতেই তারা গোসলে দুধের ব্যবহার করে পাক-পবিত্র হওয়ার চেষ্টা করেছেন।
 
আসলেই কি দুধ কলঙ্ক মোছে?
ভারতীয় উপমহাদেশে দুধ দিয়ে গোসলের মাধ্যমে পবিত্র হওয়ার ধারণা প্রাচীনকাল থেকে চলে এলেও আধুনিক বিজ্ঞানে যা ভিত্তিহীন।

দুধ দিয়ে গোসলের মাধ্যমে কলঙ্কমুক্ত হওয়ার কোনো তথ্য ধর্মীয়ভাবেও শোনা যায় না। তবে দুধ মিশ্রিত পানি দিয়ে গোসল করলে পাওয়া যায় কিছু স্বাস্থ্যগত উপকারিতা।

চিকিৎসাবিজ্ঞানে দুধ দিয়ে গোসলে কয়েকটি উপকারিতা পাওয়া যায়। তন্মধ্যে শুষ্ক ত্বকে আর্দ্রতা আনা, একজিমা দূর করা, চুলকানি দূর হওয়াসহ নানা উপকারের উল্লেখ রয়েছে।

প্রাসঙ্গিক
মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ