ঢাকা, রবিবার ৩০ মার্চ ২০২৫
১৬ চৈত্র ১৪৩১, ২৯ রমজান ১৪৪৬

ঢাকা, রবিবার ৩০ মার্চ ২০২৫
১৬ চৈত্র ১৪৩১, ২৯ রমজান ১৪৪৬
কৃষিমন্ত্রী বললেন

পাটবীজে স্বয়ংসম্পূর্ণ হতে সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহণ করা হচ্ছে

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
পাটবীজে স্বয়ংসম্পূর্ণ হতে সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহণ করা হচ্ছে

অন্যের ওপর নির্ভরশীল না থেকে পাটবীজ উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণ হতে সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহণ করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন কৃষিমন্ত্রী ড. মো: আব্দুর রাজ্জাক, এমপি।

তিনি বলেন, কৃষি মন্ত্রণালয়, বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয় এবং সংশ্লিষ্ট সকলকে নিয়ে পাটবীজে স্বয়ংসম্পূর্ণ হতে সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে। আমরা পাটবীজের জন্য বিদেশের উপর নির্ভরশীল থাকতে পারি না। আমরা পাটবীজের উৎপাদন বাড়াব।

পাটের উৎপাদন বাড়াব। পাট চাষকে এদেশের চাষিদের নিকট লাভজনক ফসলে উন্নীত করব। পাশাপাশি বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের জন্য পাটের অসাধারণ ও গৌরবোজ্জ্বল ভূমিকা আবার ফিরেয়ে আনব।

কৃষিমন্ত্রী বৃহস্পতিবার কৃষি মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে ‘উচ্চফলনশীল পাটবীজ উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনে রোডম্যাপ বাস্তবায়ন’ বিষয়ে মতবিনিময় সভায় এ কথা বলেন।

সভায় বস্ত্র ও পাট মন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী (বীর প্রতীক), বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের সচিব লোকমান হোসেন মিয়া এবং বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের চেয়ারম্যান ও কৃষি মন্ত্রণালয়ের সাবেক সচিব মো: নাসিরুজ্জামান উপস্থিত ছিলেন। সভাটি সঞ্চালনা করেন কৃষিসচিব মো: মেসবাহুল ইসলাম।

কৃষিমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রীর দূরদর্শী ও সময়োপযোগী উদ্যোগে কৃষি মন্ত্রণালয়ের পাট গবেষণা ইনস্টিটিউট পাটের জিনোম আবিষ্কার করেছে। সেই জিনোম ব্যবহার করে আমাদের বিজ্ঞানীরা উচ্চফলনশীল পাটবীজ রবি-১ জাত উদ্ভাবন করেছে; যার ফলন ভারতের পাটজাতের চেয়ে ১০-১৫ ভাগ বেশি।

কৃষক পর্যায়ে এটির চাষ বাড়াতে পারলে পাটবীজে স্বয়ংসম্পূর্ণ হওয়া সম্ভব। তিনি আরও বলেন, দেশে পাটবীজ উৎপাদনের মূল সমস্যা হলো অন্য ফসলের তুলনায় কম লাভজনক হওয়ায় কৃষকেরা চাষ করতে চায় না। পাটবীজে কৃষকদের আগ্রহী করতে ও কৃষকেরা যাতে চাষ করে লাভবান হয় সেজন্য ভর্তুকির ব্যবস্থা করা হবে।

বাংলাদেশে বছরে কৃষক পর্যায়ে/প্রত্যায়িত বীজের চাহিদা হলো ৫,২১৫ মেট্রিক টন। আর চাহিদার বিপরীতে বিএডিসি সরবরাহ করে ৭৭৫ মেট্রিক টন (তোষা পাট- ৫১৫ টন; দেশি- ২৬০ টন)।

তোষা পাটবীজের প্রায় পুরোটাই ভারত থেকে আনতে হয়। এই বিদেশ নির্ভরতা কমিয়ে পাটবীজে স্বয়ংসম্পূর্ণ হওয়ার জন্য কৃষি মন্ত্রণালয় ৫ বছর মেয়াদী কর্মপরিকল্পনা বা রোডম্যাপ প্রণয়ন করেছে। আগামী ২০২১-২২ অর্থবছর থেকে ২০২৫-২৬ এই ৫ বছরের মধ্যে দেশে ৪৫০০ মেট্রিক টন পাটবীজ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এই তোষা পাটবীজ উৎপাদনের জন্য ৮,৭৮০ হেক্টর জমিতে চাষের প্রয়োজন হবে।

বস্ত্র ও পাট মন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী (বীর প্রতীক) বলেন, ভর্তুকি দিয়ে হলেও পাটবীজের উৎপাদন বাড়াতে হবে। অন্যের উপর নির্ভরশীল থাকলে সবসময় অনিশ্চয়তায় থাকতে হয়। তার সাথে পাটবীজ রপ্তানির উপর সংশ্লিষ্ট দেশের নিষেধাজ্ঞা আরোপের ভয়ও থাকে।

উল্লেখ্য, পাটআঁশ এবং পাটবীজ ফসল দুইটি আলাদা ফসল। পাটবীজ রবি মৌসুমের (আগষ্ট-ডিসেম্বর) ফসল। তোষা পাটবীজ সাধারণত আগষ্ট-ডিসেম্বর মাসের ফসল। এ সময়ে উচ্চমুল্যের রবি ফসলের পরিবর্তে কৃষক পাটবীজ উৎপাদনে তেমন আগ্রহী নন। তাই পাটবীজ উৎপাদনের পরিবর্তে পাট চাষের সময় কৃষক বাজার থেকে বীজ ক্রয় করে পাট চাষ করা লাভজনক বলে মনে করে। দেশে মূলত দেশি ও তোষা এ দুই জাতের পাটের চাষ হয়। বর্তমানে দেশি পাট ১৫ ভাগ ও তোষা পাট ৮৫ ভাগ উৎপন্ন হয়। তোষা পাটবীজের চাহিদার প্রায় ৮৫-৯০ ভাগ ভারত থেকে আমদানিকৃত জেআরও-৫২৪ জাতের মাধ্যমে মেটানো হয়।

অথচ, জিনোম গবেষণার মাধ্যমে বাংলাদেশ পাট গবেষণা ইনস্টিটিটউট (বিজেআরআই) উদ্ভাবিত পাটের জাত রবি-১ (তোষা পাট-৮) এর ফলন জেআরও-৫২৪ জাতের চেয়ে ১০-১৫ ভাগ বেশি। এটি ফরিদপুর ও যশোর অঞ্চলের কৃষকের মাঝে ব্যাপক আগ্রহের সৃষ্টি করেছে।

যথাযথভাবে রবি-১ পাট জাতকে সম্প্রসারণের মাধ্যমে পাট বীজে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করা সম্ভব হবে।

সভায় কৃষি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (সার ব্যবস্থাপনা ও উপকরণ) মো: মাহবুবুল ইসলাম, অতিরিক্ত সচিব (গবেষণা) কমলারঞ্জন দাশ, অতিরিক্ত সচিব ও মহাপরিচালক (বীজ) বলাই কৃষ্ণ হাজরা, বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো: আবুল কালাম,এনডিসি, সংস্থাপ্রধান ও অন্যান্য কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

আজ মায়ানমার যাচ্ছে বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর উদ্ধারকারী দল

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
আজ মায়ানমার যাচ্ছে বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর উদ্ধারকারী দল

ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষকে মানবিক ও চিকিৎসা সহায়তা দিতে আজ মায়ানমার যাচ্ছে বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর একটি উদ্ধারকারী দল।

গতকাল শনিবার আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, 'ভূমিকম্পে ক্ষয়ক্ষতির প্রেক্ষিতে জরুরি ভিত্তিতে ঔষধ, ত্রাণসামগ্রী, উদ্ধার এবং মেডিকেল সহায়তা প্রদানে বিশেষ বিমানে রবিবার মায়ানমারে যাচ্ছে বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর উদ্ধারকারী দল।'

আরো পড়ুন
ঈদের ফিরতি ট্রেনযাত্রার শেষদিনের টিকিট বিক্রি আজ

ঈদের ফিরতি ট্রেনযাত্রার শেষদিনের টিকিট বিক্রি আজ

 

প্রসঙ্গত, মায়ানমারে কয়েক বছরের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ প্রাকৃতিক দুর্যোগ ভূমিকম্পে মৃতের সংখ্যা ১৬০০ ছাড়িয়ে গেছে।

দরিদ্র, যুদ্ধকবলিত দেশটির সামরিক শাসকরা শনিবার কয়েকশ বিদেশি উদ্ধারকর্মীকে দেশটিতে প্রবেশের অনুমতি দিয়েছেন।

মন্তব্য

ঈদের ফিরতি ট্রেনযাত্রার শেষদিনের টিকিট বিক্রি আজ

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
ঈদের ফিরতি ট্রেনযাত্রার শেষদিনের টিকিট বিক্রি আজ

আসন্ন পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে বাংলাদেশ রেলওয়ের আন্তঃনগর ট্রেনের অগ্রিম টিকিট বিক্রির শেষ দিন আজ। বিশেষ ব্যবস্থায় আগামী ৯ এপ্রিলের আন্তঃনগর ট্রেনের টিকিট বিক্রি হবে আজ ৩০ মার্চ। অগ্রিম টিকিটের শতভাগই বিক্রি হচ্ছে অনলাইনে। 

যাত্রীসাধারণের সুবিধার্থে পশ্চিমাঞ্চলের ট্রেনের টিকিট সকাল ৮টায় এবং পূর্বাঞ্চলের ট্রেনের টিকিট দুপুর ২টা থেকে ইস্যু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ রেলওয়ে।

যাত্রী সাধারণের ঈদযাত্রা নির্বিঘ্ন করতে বাংলাদেশ রেলওয়ের নেওয়া কর্মপরিকল্পনা থেকে এ তথ্য জানা যায়।

বরাবরের মতো এবারো আন্তঃনগর ট্রেনের ৭ দিনের অগ্রিম টিকিট বিশেষ ব্যবস্থায় বিক্রি করা হলো।  বিশেষ ব্যবস্থায় বিক্রি হওয়ায় কোনো টিকিট রিফান্ড করার সুযোগ থাকছে না।

বাংলাদেশ রেলওয়ের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ঈদের পরের আন্তঃনগর ট্রেনের ৩ এপ্রিলের টিকিট বিক্রি করা হয়েছে ২৪ মার্চ; ৪ এপ্রিলের টিকিট বিক্রি করা হয়েছে ২৫ মার্চ; ৫ এপ্রিলের টিকিট বিক্রি করা হয়েছে ২৬ মার্চ; ৬ এপ্রিলের টিকিট বিক্রি করা হয়েছে ২৭ মার্চ; ৭ এপ্রিলের টিকিট বিক্রি করা হয়েছে ২৮ মার্চ এবং ৮ এপ্রিলের টিকিট বিক্রি করা হয়েছে ২৯ মার্চ।

এ ছাড়া চাঁদ দেখার ওপরে ৩১ মার্চ এবং ১ ও ২ এপ্রিলের টিকিট বিক্রি করা হবে। ঈদ যাত্রার সব টিকিট অনলাইনে ক্রয় করতে হবে। 

আরো পড়ুন
একীভূত হলো ইলন মাস্কের এক্স ও এক্সএআই

একীভূত হলো ইলন মাস্কের এক্স ও এক্সএআই

 

এ ছাড়া দেশের বিভিন্ন গন্তব্যে চলাচল করা সব আন্ত নগর ট্রেনের ডে-অফ (সাপ্তাহিক ছুটি) বাতিল করা হয়েছে। ২৭ মার্চ থেকে ঈদের আগের দিন পর্যন্ত এসব ট্রেনের কোনো ডে-অফ থাকবে না।

ঈদের পরে যথারীতি সাপ্তাহিক ডে-অফ কার্যকর থাকবে। এ ছাড়া ঈদের দিন কোনো আন্তঃনগর ট্রেন চলাচল করবে না।

মন্তব্য

চীন সফরে ড. ইউনূসের ৫ অর্জন

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
চীন সফরে ড. ইউনূসের ৫ অর্জন
সংগৃহীত ছবি

চীনে চার দিনের সরকারি সফর শেষে দেশে পৌঁছেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। শনিবার (২৯ মার্চ) রাত ৮টা ১০ মিনিটের দিকে ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে তাকে বহনকারী বিমানটি অবতরণ করে।

এর আগে শনিবার বাংলাদেশ সময় দুপুর আড়াইটার দিকে তিনি বেইজিং থেকে ঢাকার উদ্দেশে রওনা হন। বিমানবন্দরে তাকে বিদায় জানিয়েছেন চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সহকারী মন্ত্রী ও প্রেসিডেন্ট শি চিনপিংয়ের চিফ প্রটোকল অফিসার হং লেই।

প্রধান উপদেষ্টার চীন সফরে বাংলাদেশের অর্জন বহুমুখী। বিশেষজ্ঞদের মতে, সফল একটি সফর শেষ করলেন অর্তবর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। এ সফরে বেশ বড় ধরনের চমক দেখিয়েছেন তিনি। চীনের কাছ থেকে বিশাল অংকের বিনিয়োগ, ঋণ ও অনুদানের প্রতিশ্রুতি নিয়ে এসেছেন।

একই সঙ্গে তিস্তা প্রকল্প বাস্তবায়নেও মিলেছে প্রতিশ্রুতি। 

আরো পড়ুন
দেশে পৌঁছেছেন প্রধান উপদেষ্টা

দেশে পৌঁছেছেন প্রধান উপদেষ্টা

 

এই সফরের মধ্যে দিয়ে দেশে চীনা বিনিয়োগ আরো বাড়বে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে। এ ছাড়া প্রধান উপদেষ্টার সফরের মধ্যে দিয়ে ২০২৮ সাল পর্যন্ত চীনে কোটা ও শুল্ক সুবিধা পাবে বাংলাদেশ।

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ইউনূস সফরকালে দেশটির প্রেসিডেন্ট শি চিনপিংয়ের সঙ্গে বৈঠক করেন।

বৈঠকে দুই দেশের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা বাড়াতে ঐকমত্য পোষণ করেছেন উভয় দেশের শীর্ষ দুই নেতা। একই সঙ্গে ‘এক চীন নীতি’তে বাংলাদেশ তার অবস্থান আবারও স্পষ্ট করেছে চীনের কাছে। ফলে চীনের পক্ষ থেকে সন্তোষ প্রকাশ করা হয়েছে।

চীন সফরে যা পেল বাংলাদেশ 

এক. ২১০ কোটি ডলারের প্রতিশ্রুতি : প্রধান উপদেষ্টার চীন সফরে সেদেশের সরকার ও চীনা কম্পানিগুলোর কাছ থেকে ২১০ কোটি মার্কিন ডলারের বিনিয়োগ, ঋণ ও অনুদানের প্রতিশ্রুতি পেয়েছে বাংলাদেশ। এর মধ্যে দেশটির প্রায় ৩০টি কম্পানি বাংলাদেশের বিশেষ চীনা শিল্প অর্থনৈতিক অঞ্চলে এক বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের অঙ্গীকার করেছে।

এ ছাড়া মোংলা বন্দর আধুনিকীকরণ প্রকল্পে প্রায় ৪০০ মিলিয়ন ডলার ঋণ দেবে চীন। চীনা শিল্প অর্থনৈতিক অঞ্চলের উন্নয়নে ৩৫০ মিলিয়ন ডলার এবং প্রযুক্তিগত সহায়তা হিসেবে আরো ১৫০ মিলিয়ন ডলার বরাদ্দ দেওয়ার পরিকল্পনা করেছে। অনুদান ও অন্যান্য ঋণ সহায়তা হিসেবে আসবে বাকি অর্থ।

দুই. ২০২৮ সাল পর্যন্ত চীনে কোটা ও শুল্ক সুবিধা : বাংলাদেশের বিদ্যমান শুল্ক ও কোটামুক্ত রপ্তানি সুবিধা আরো দুই বছর বহাল রাখার ঘোষণা দিয়েছে চীন। এর আগে চীনা বাজারে ২০২৬ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশের জন্য এই সুবিধা ছিল। প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে চীনা উপ প্রধানমন্ত্রী ডিং জুয়েশিয়াংয়ের এক বৈঠক হয়। বৈঠক শেষে চীনা উপ প্রধানমন্ত্রী এ ঘোষণা দেন।

তিন. চীনে আম রপ্তানি : চীন বাংলাদেশ থেকে আম নিতে আগ্রহী। বাংলাদেশও চীনে আম পাঠাতে চায়। বাংলাদেশ চীনে আম রপ্তানির জন্য ৬ বছর আগে দেশটির কাছে আবেদন করেছিল। তবে নানা জটিলতায় সেটা আর কার্যকর হয়নি। তবে প্রধান উপদেষ্টার চীন সফরের মধ্যে দিয়ে সেদেশে আম রপ্তানির দুয়ার খুলেছে। আগামী মে-জুন মাস থেকে চীনে আম রপ্তানি শুরু হবে। এর মধ্যে দিয়ে বিদেশে বাংলাদেশি আমের চাহিদা বাড়বে।

চার. তিস্তা প্রকল্পে সহায়তা : তিস্তা নদী প্রকল্প বাস্তবায়নে অনেক আগেই থেকে চীনের সহায়তা চেয়ে আসছে বাংলাদেশ। এবার প্রধান উপদেষ্টার চীন সফরে এই প্রকল্পে সহায়তার আশ্বাস মিলেছে। তবে শুধু তিস্তা প্রকল্প নিয়েই সীমাবদ্ধ থাকেননি অধ্যাপক ইউনূস। তিনি নদী ও পানি ব্যবস্থাপনা পরিচালনার জন্য চীন থেকে ৫০ বছরের মাস্টারপ্ল্যান চেয়েছেন।

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক চীন সফরে সেদেশের পানিসম্পদমন্ত্রী লি গোইয়িংয়ের সঙ্গে বৈঠক করেন। সেসময় নদী ও পানি ব্যবস্থাপনা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন। বৈঠকে তিস্তা নদী ব্যবস্থাপনা ও ঢাকার চারপাশের দূষিত পানি পরিষ্কারের বিষয়ে সহায়তার প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করেন ড. ইউনূস।

পাঁচ. ৯ চুক্তি ও সমঝোতা সই : প্রধান উপদেষ্টার চীন সফরে একটি চুক্তি ও ৮টি সমঝোতা স্মারক সই হয়েছে। বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যে অর্থনৈতিক এবং কারিগরি সহযোগিতা–সংক্রান্ত একটি চুক্তি সই হয়েছে। এ ছাড়া দুই দেশের চিরায়ত সাহিত্যের অনুবাদ ও প্রকাশনা, সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য বিনিময় ও সহযোগিতা, সংবাদ বিনিময়, গণমাধ্যম, ক্রীড়া ও স্বাস্থ্য খাতে সই হয়েছে ৮টি সমঝোতা স্মারক।

উল্লেখ্য, প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস গত বুধবার (২৬ মার্চ) চারদিনের  চীন সফরে যান। প্রধান উপদেষ্টার এটাই প্রথম কোনো দেশে দ্বিপক্ষীয় সফর। শনিবার রাতে তিনি ঢাকায় ফিরেছেন।

প্রাসঙ্গিক
মন্তব্য

দেশে পৌঁছেছেন প্রধান উপদেষ্টা

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
দেশে পৌঁছেছেন প্রধান উপদেষ্টা
সংগৃহীত ছবি

চীনে চার দিনের সরকারি সফর শেষে দেশে পৌঁছেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।

শনিবার (২৯ মার্চ) রাত ৮টা ১০ মিনিটের দিকে ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে তাকে বহনকারী বিমানটি অবতরণ করে।

এর আগে শনিবার বাংলাদেশ সময় দুপুর আড়াইটার দিকে তিনি বেইজিং থেকে ঢাকার উদ্দেশে রওনা হন। বিমানবন্দরে তাকে বিদায় জানিয়েছেন চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সহকারী মন্ত্রী ও প্রেসিডেন্ট শি চিনপিংয়ের চিফ প্রটোকল অফিসার হং লেই।

এদিন সকালে বেইজিংয়ে পিকিং বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মুহাম্মদ ইউনূসকে সম্মানসূচক ডক্টরেট ডিগ্রি দেওয়া হয়, তার পর তিনি সেখানে শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বক্তব্য রাখেন।

মুহাম্মদ ইউনূস গত বুধবার চার দিনের সরকারি সফরে চীনে পৌঁছান। শুক্রবার প্রধান উপদেষ্টা চীনের প্রেসিডেন্ট শি চিনপিংয়ের সঙ্গে বৈঠক করেন। শির সঙ্গে বৈঠকের পর মুহাম্মদ ইউনূস প্রেসিডেনশিয়াল বেইজিংয়ে চীনা ব্যবসায়ী নেতাদের সঙ্গে একটি ‘ইনভেস্টমেন্ট ডায়ালগে’ অংশ নেন।

ইউনূসের এই সফরে বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যে একটি চুক্তি ও আটটি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) সই হয়েছে।

এ ছাড়া বাংলাদেশ চীন সরকার ও ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে ২১০ কোটি মার্কিন ডলারের ঋণ, অনুদান ও বিনিয়োগের প্রতিশ্রুতি পেয়েছে।
জলবিদ্যুৎ, বন্যা মোকাবেলা ও দুর্যোগ হ্রাস, নদী খনন এবং পানিসম্পদ উন্নয়নের মতো বিষয়ে পারস্পরিক সহযোগিতা জোরদারেও ‘একমত হয়েছে' বাংলাদেশ ও চীন।

চীনের সরকারি বার্তা সংস্থা সিনহুয়াকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান বলেছেন, দুই দেশ ব্যাপক সহযোগিতার সম্পর্ক স্থাপন করেছে, যা অনেক ইতিবাচক ফলাফল এনেছে।

চীন থেকে বাংলাদেশের আমদানি বাড়ছে।

আমাদের শিল্প ব্যবহারের বেশির ভাগ পণ্য আসে চীন থেকে। ভবিষ্যতের দিকে তাকিয়ে ইউনূস দুই দেশের মধ্যে অর্থনৈতিক পরিপূরকতা এবং তাদের বিশাল সহযোগিতার সম্ভাবনার ওপর জোর দেন। তিনি আশা করেন, আরো চীনা বিনিয়োগকারী বাংলাদেশে আসবেন এবং স্থানীয় অংশীদারদের সঙ্গে একত্রে একটি ‘বৃহত্তর বাজার উন্মুক্ত’ করবেন।

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ