সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়েও এমফিল ও পিএইচডি গবেষণার সুযোগ দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন সোনারগাঁও ইউনিভার্সিটির প্রতিষ্ঠাতা ও বিশ্ববিদ্যালয়ের বোর্ড অব ট্রাস্টিজের ভাইস চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার আব্দুল আজীজ।
তিনি আজ বুধবার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে সোনারগাঁও ইউনিভার্সিটির প্রথম সমাবর্তনে উপস্থিত শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনির কাছে এ বিষয়টি তুলে ধরেন।
ইঞ্জিনিয়ার আব্দুল আজীজ বলেন, সোনারগাঁও ইউনিভার্সিটি একেবারেই নামমাত্র টিউশন ফিতে এবং বাংলাদেশের অন্যান্য বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের থেকে তুলনামূলকভাবে সবচেয়ে কম টিউশন ফিতে অথবা বিনা বেতনে উচ্চ শিক্ষার সুযোগ তৈরি করে দিয়েছে। প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে আমাদের উদ্দেশ্য ছিল অর্থের অভাবে যেন মেধাবী শিক্ষার্থীগণ উচ্চ শিক্ষা গ্রহণ থেকে বঞ্চিত না হয়ে যায়।
আমরা বোর্ড অব ট্রাস্টিজ থেকে সেই সুযোগ তৈরি করে দিয়েছি। ফলে মেধাবী, আর্থিকভাবে অসচ্ছল এবং মুক্তিযুদ্ধার সন্তানদের সম্পূর্ণ বিনা বেতনে সোনারগাঁও ইউনিভার্সিটিতে লেখাপড়ার সুযোগ পাচ্ছে।
সোনারগাঁও ইউনিভার্সিটির এই উদ্যোক্তা আরো বলেন, আগামী বছরে নিজস্ব ক্যাম্পাসে আমাদের শিক্ষা কার্যক্রম শুরু করার পর মোট শিক্ষার্থীর ৫০ শতাংশ শিক্ষার্থী বিনা বেতনে লেখাপড়া করার সুযোগ পাবে। সোনারগাঁও বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শিক্ষার্থীরা যে আদর্শের শিক্ষা পেয়েছে, শিক্ষার্থীদের জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে তা প্রতিফলিত করতে পারবে বলেই আমাদের প্রত্যাশা।
সভাপতির বক্তব্যে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেন, সোনারগাঁও ইউনিভার্সিটির প্রথম সমাবর্তনে উপস্থিত হতে পেরে আমি আনন্দিত। আজ শিক্ষার্থী ও অভিভাবদের জন্য একটি স্মরণীয় দিন। তিনি নবীন গ্র্যাজুয়েটদের অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, সোনারগাঁও ইউনিভার্সিটি অত্যন্ত সুনাম ও দক্ষতার সাথে তার কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে।
দীপু মনি বলেন, উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে বিনামূল্যে পড়বার সংস্কৃতি থেকে সরে আসা দরকার।
ঠিক তেমনি যাদের দেবার ক্ষমতা আছে, শিক্ষার ব্যয়ভার বহন করার ক্ষমতা আছে, তারা সেই ব্যয়ভার বহন করেই শিক্ষা গ্রহণ করবেন। বঙ্গবন্ধু যে কথাটি বারবার বলে গেছেন, দারিদ্র্য যেন কখনো কোনো মেধাবী শিক্ষার্থীর উচ্চশিক্ষার পথে বাঁধা হয়ে না দাঁড়ায়। এ বিষয়ে বঙ্গবন্ধু কন্যার সরকার বদ্ধ পরিকর। কাজেই শিক্ষা ব্যবস্থায় ব্যয়ের বিষয়টি আমাদের ভাবতে হবে। বিষয়টিকে একটি যৌক্তিক পর্যায়ে নিয়ে আসতে হবে।
শিক্ষামন্ত্রী আরো বলেন, বঙ্গবন্ধু গড় জাতীয় আয়ের শতকরা চারভাগ বিনিয়োগ করার কথা বলেছেন। এখন বলা হয়, অন্তত ৬ ভাগ বিনিয়োগ করতে। কিন্তু আমরা শতকরা তিন ভাগের বেশি এখনও করতে পারছি না। তবে, আগামী দিনে নিশ্চয়ই পারব। বঙ্গবন্ধু কন্যার নেতৃত্বে শিক্ষাই হবে আগামী দিনের মেগা প্রজেক্ট।
সমাবর্তনে ইউনিভার্সিটির শুরু থেকে ফল-২০২০ পর্যন্ত স্নাতক ও স্নাতকোত্তর প্রোগ্রাম সম্পন্নকারী রেজিষ্ট্রেশনকৃত সাড়ে তিন হাজার শিক্ষার্থীকে ডিগ্রি প্রদান করা হয়। সমাবর্তনে ৩ জনকে চ্যান্সেলর’স গোল্ড মেডেল ও ৬৩ জন শিক্ষার্থীকে ভাইস-চ্যান্সেলর’স গোল্ড মেডেলসহ মোট ৬৬ জন কৃতি শিক্ষার্থীকে গোল্ড মেডেল প্রদান করা হয়।
সমাবর্তন বক্তার বক্তব্য রাখেন শিক্ষাবিদ অধ্যাপক ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল। আরো বক্তব্য রাখেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বোর্ড অব ট্রাস্টিজের চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম বাবু এমপি, রাশেদ খান মেনন এমপি, বাংলাদেশ অ্যাক্রেডিটেশন কাউন্সিলের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. মেসবাহউদ্দিন আহমেদ, বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের চেয়ারম্যান (অতিরিক্ত দায়িত্ব) অধ্যাপক ড. দিল আফরোজা বেগম, বোর্ড অব ট্রাস্টিজের সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী মো. আব্দুল আলীম, উপাচার্য অধ্যাপক মো. আবুল বাশার, উপ-উপাচার্য অধ্যাপক শামীম আরা হাসান, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক মো. আল-আমিন মোল্লা প্রমুখ।