ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেছেন, ‘রাষ্ট্র সংস্কারের উদ্যোগ অন্তর্বর্তী সরকার পক্ষ থেকে নেওয়া হলেও এ দাবি প্রকৃতপক্ষে জনগণের। কমিশন ও সরকার দাবি বাস্তবায়নের উদ্যোগ নিয়েছে। কী প্রক্রিয়ায় সংস্কার কার্যকর করা যায়, তা নিয়ে আলোচনার মধ্য দিয়ে ঐকমত্যে পৌঁছাতে চায় কমিশন।’
আজ শনিবার জাতীয় সংসদ ভবনের এলডি হলে বাংলাদেশ জাসদের নেতৃবৃন্দের সঙ্গে সংলাপে তিনি এসব কথা বলেন।
আলী রীয়াজ বলেন, ‘রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে প্রাথমিক পর্যায়ের আলোচনা মে মাসের মাঝামাঝি শেষ করতে চায় কমিশন। এরপর দ্বিতীয় পর্যায়ের আলোচনা শুরু হবে। এই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ঐকমত্য কমিশন রাষ্ট্র সংস্কারের একটি সুনির্দিষ্ট পথ খুঁজে বের করতে পারবে বলে আশা করি।’
আরো পড়ুন
পাগলা মসজিদে দানের টাকায় হবে ‘মেগাপ্রকল্প’
সংলাপে বাংলাদেশ জাসদের নেতারা জানান, সংবিধানে মুক্তিযুদ্ধ ও ২০২৪ সালের গণ-অভ্যুত্থানকে সমান গুরুত্ব দেওয়ার চেষ্টার মধ্য দিয়ে মহান মুক্তিযুদ্ধকে খাটো করা হয়েছে।
এই প্রস্তাব কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। সংবিধানের শুরুতে রাষ্ট্রধর্ম ও বিসমিল্লাহ রাহমানির রাহিম রাখা, নির্বাচনের প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার বয়সসীমা কমানোর বিষয়ে দ্বিমত জানিয়েছেন তারা।
সংলাপে উপস্থিত ছিলেন ঐকমত্য কমিশনের সদস্য সফর রাজ হোসেন, বিচারপতি এমদাদুল হক, ইফতেখারুজ্জামান, বদিউল আলম মজুমদার এবং প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার।
সংলাপে জাসদের সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হক প্রধানের নেতৃত্বে ১০ সদস্যের প্রতিনিধিদল অংশ নেয়।
শুরুতে নিজেদের প্রস্তাবনার সারসংক্ষেপ পাঠ করেন বাংলাদেশ জাসদের স্থায়ী কমিটির সদস্য মুশতাক হোসেন।
এদিকে সংস্কার প্রশ্নে ঐকমত্য সৃষ্টির লক্ষ্যে বিকেলে ঐকমত্য কমিশনের সাথে জাকের পার্টির সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়েছে। জাকের পার্টির মহাসচিব শামীম হায়দারের নেতৃত্বে ১০ সদস্যের প্রতিনিধিদলে ছিলেন দলটির ভাইস চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম ভুইয়া, রাজনৈতিক উপদেষ্টা এজাজুর রসুল, অতিরিক্ত মহাসচিব মুরাদ হোসেন জামাল, কেন্দ্রীয় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কামরুন্নেছা জামান রেণু প্রমুখ।
উল্লেখ্য, গত ১২ ফেব্রুয়ারি সংস্কার বিষয়ে জাতীয় ঐকমত্য গঠনের লক্ষ্যে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন গঠিত হয়। সংবিধান, নির্বাচন, বিচার বিভাগ, দুদক, জনপ্রশাসন সংস্কারে গঠিত পাঁচটি কমিশনের ১৬৬ সুপারিশে ৩৮টি রাজনৈতিক দলের কাছে মতামত চায় কমিশন।
এ পর্যন্ত ৩২টি দল তাদের মতামত দিয়েছে।
লিখিত মতামতের ভিত্তিতে এলডিপি, খেলাফত মজলিস, লেবার পার্টি, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন, এবি পার্টি ও নাগরিক ঐক্যের সঙ্গে সংলাপ করেছে কমিশন। রাজনৈতিক দলগুলো আলোচনার মাধ্যমে যেসব বিষয়ে একমত হবে, সেগুলো বাস্তবায়নের প্রতিশ্রুতিতে সই হবে জুলাই সনদ।