<p>দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর প্রথমবারের মতো নিউজিল্যান্ডের নৌবাহিনী তাদের একটি জাহাজ হারাল। জাহাজটি সামোয়ার উপকূলে আটকে গিয়ে ডুবে যায়।</p> <p>বিশেষ ডাইভিং ও মহাসাগর জরিপ জাহাজ এইচএমএনজেডএস মানাওয়ানুই স্থানীয় সময় শনিবার রাতে উপোলু দ্বীপের কাছাকাছি একটি প্রবাল প্রাচীরের জরিপ করার সময় সমস্যায় পড়ে। ঘটনাটি দ্বীপ থেকে প্রায় এক নটিক্যাল মাইল দূরে ঘটে। পরে জাহাজটিতে আগুন ধরে যায় এবং সেটি ডুবে যায়। স্থানীয় সময় রবিবার ভোর ৬টা ৪০ মিনিটে একপাশে ঝুঁকে থাকা জাহাজটি থেকে ধোঁয়া বের হতে দেখা যায়। সকাল ৯টার মধ্যে জাহাজটি পানির নিচে ডুবে যায়।</p> <p>সংবাদ সংস্থা দ্য রয়টার্সের সাক্ষাৎকারে প্রত্যক্ষদর্শী ডেভ পুল বলেন, ‘আমরা উপসাগরের দিকে আসার সময় জাহাজটিকে দেখতে পেলাম। এতে কোনো ধোঁয়া ছিল না। মাত্র ১৫ মিনিটের মধ্যে আগুন ও ধোঁয়া দেখা দিল। এর পরপরই এটি ডুবে গেল।’</p> <p>নিউজিল্যান্ডের প্রতিরক্ষা বাহিনীর বিবৃতি অনুসারে, দুর্ঘটনার সময় জাহাজে ৭৫ জন আরোহী ছিলেন। তাদের সবাইকে উদ্ধারের পর রবিবার ভোরে লাইফবোটে করে নিরাপদে সামোয়ার উপকূলে নিয়ে যাওয়া হয়। জাহাজের ক্রু ও যাত্রীরা সামোয়াতে আশ্রয় নিয়েছেন। তাদের শিগগিরই নিউজিল্যান্ডে ফিরিয়ে আনা হবে। তাদের মধ্যে সাতজন বিজ্ঞানী এবং চারজন বিদেশি সামরিক কর্মী।</p> <p>কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, কী কারণে জাহাজটি আটকে গিয়েছিল তা এখনো স্পষ্ট নয় এবং বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করা হবে। তবে দুর্ঘটনার সময় ঝোড়ো হাওয়া বছিইল। এতে উদ্ধার অভিযান চ্যালেঞ্জিং হয়ে ওঠে। সামরিক কর্মকর্তারা বলেছেন, স্রোত ও বাতাস উদ্ধারকারীদের নৌকাগুলোকে প্রবাল প্রাচীরের দিকে ঠেলে দিচ্ছিল। ওই এলাকার শেষ জরিপ ১৯৮৭ সালে হয়েছিল।</p> <p>প্রতিরক্ষামন্ত্রী জুডিথ কলিন্স এক সংবাদ সম্মেলনে এই ঘটনাকে দেশটির ‘নৌবাহিনীর জন্য একটি অত্যন্ত দুঃখজনক দিন’ বলে বর্ণনা করেছেন। পাশাপাশি তিনি বলেন, ‘সবাই নিরাপদে উদ্ধার হয়েছে, যা ক্রুদের পেশাদারিত্ব, প্রশিক্ষণ ও সাহসিকতার প্রমাণ।’</p> <p>এইচএমএনজেডএস মানাওয়ানুই নিউজিল্যান্ডের নৌবাহিনীর প্রথম নৌযান, যা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় দেশটির নৌযুদ্ধে অংশ নেওয়ার পর থেকে দুর্ঘটনাবশত ডুবে গেলো। এর মধ্যে বেশ কয়েকটি জাহাজ উদ্দেশ্যমূলকভাবে ডুবিয়ে দেওয়া হয়েছে, যার উদ্দেশ্য ছিল সেগুলোকে ডাইভিং রেক বা কৃত্রিম প্রবাল প্রাচীর হিসেবে কাজে লাগানো।</p> <p>সামরিক কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এখন তারা জাহাজটিকে উদ্ধার করার এবং ডুবির ফলে পরিবেশের ওপর প্রভাব কমানোর দিকে মনোযোগ দিচ্ছেন।</p> <p>সূত্র : বিবিসি</p>