<p>পাকিস্তানের সামরিক আদালত বৃহস্পতিবার আরো ৬০ জন বেসামরিক নাগরিককে দোষী সাব্যস্ত করে সাজা দিয়েছেন। তারা সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের পক্ষে গত বছরের বিক্ষোভে অংশ নিয়েছিলেন। এর আগে শনিবার সামরিক আদালতে ২৫ জনের দণ্ডাদেশ আন্তর্জাতিক সমালোচনার জন্ম দিয়েছিল।</p> <p>২০২২ সালে ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর ইমরান খান দেশটির শক্তিশালী সেনা সমর্থিত নেতাদের বিরুদ্ধে নজিরবিহীন আন্দোলন শুরু করেন। গত বছর মে মাসে দুর্নীতির অভিযোগে গ্রেপ্তারের পর দেশজুড়ে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে, যার কিছু অংশে সামরিক স্থাপনাগুলোকে লক্ষ্যবস্তু বানানো হয়। পাকিস্তানে দীর্ঘ সময় ধরে প্রত্যক্ষভাবে শাসন করা এবং এখনো বিশাল প্রভাব রাখা সামরিক বাহিনী ঘোষণা করেছিল, এই বিক্ষোভকারীদের সামরিক আদালতে বিচার করা হবে।</p> <p>সামরিক বাহিনী বৃহস্পতিবার জানায়, সামরিক আদালতগুলোতে বিচারপ্রক্রিয়া শেষ হয়েছে এবং ৮৫ জনকে দুই থেকে ১০ বছরের কঠোর কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। তবে তাদের দোষের বিবরণ প্রকাশ করা হয়নি, শুধু ঘটনাস্থল উল্লেখ করা হয়েছে।</p> <p>ইমরান খানের দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) বৃহস্পতিবার জানিয়েছে, ইমরান খানের ভাতিজাও দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন এবং তাকে ১০ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।</p> <p><strong>আন্তর্জাতিক সমালোচনা</strong><br /> এদিকে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার বলেছেন, ‘এই সামরিক আদালতগুলোতে বিচারিক স্বাধীনতা, স্বচ্ছতা ও ন্যায্য বিচার প্রক্রিয়ার অভাব রয়েছে।’</p> <p>যুক্তরাজ্য সরকার সোমবার বলেছে, ‘সামরিক আদালতে বেসামরিকদের বিচার স্বচ্ছতার অভাব, স্বাধীন পর্যালোচনার ঘাটতি ও ন্যায্য বিচারের অধিকারের পরিপন্থী।’ এ ছাড়া ইউরোপীয় ইউনিয়ন বলেছে, পাকিস্তান তাদের আন্তর্জাতিক অধিকারসংক্রান্ত প্রতিশ্রুতি থেকে সরে আসছে।</p> <p>তবে পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র এই সমালোচনার জবাবে বলেন, ‘পাকিস্তানের সংবিধান ও আইন যেকোনো অভ্যন্তরীণ সমস্যা সমাধানে সক্ষম।’</p> <p>২০১৮ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করা ইমরান খান ২০২৩ সালের মে মাসে গ্রেপ্তার হন। কয়েক দিন পর মুক্তি পেলেও তিন মাস পর আবার গ্রেপ্তার হন এবং এখন পর্যন্ত কারাগারে আছেন। ৭২ বছর বয়সী সাবেক ক্রিকেট তারকাকে ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচনে অংশ নেওয়া থেকে নিষিদ্ধ করা হয়। পিটিআই সমর্থকদের বিরুদ্ধে ব্যাপক ধরপাকড় চালানো হয়, যার মধ্যে হাজার হাজার সমর্থক ও শীর্ষ নেতারা গ্রেপ্তার হন। এর মধ্যেই সামরিক ঘনিষ্ঠ বলে বিবেচিত একটি জোট সরকার গঠন করে ক্ষমতায় আসে।</p> <p>সূত্র : এএফপি</p>