ঢাকা, রবিবার ২৩ মার্চ ২০২৫
৯ চৈত্র ১৪৩১, ২২ রমজান ১৪৪৬

ঢাকা, রবিবার ২৩ মার্চ ২০২৫
৯ চৈত্র ১৪৩১, ২২ রমজান ১৪৪৬

জার্মান নির্বাচন : ৩০-৪০ লাখ প্রবাসীর জন্য জটিল ভোটপ্রক্রিয়া

ডয়চে ভেলে
ডয়চে ভেলে
শেয়ার
জার্মান নির্বাচন : ৩০-৪০ লাখ প্রবাসীর জন্য জটিল ভোটপ্রক্রিয়া
বিদেশে বসবাসকারী জার্মানদের ভোট দেওয়ার জন্য মাত্র কয়েক সপ্তাহ সময় আছে। ফাইল ছবি : এএফপি

জার্মানিতে ২৩ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠেয় নির্বাচনে ৩০ থেকে ৪০ লাখ প্রবাসী ভোটারের ভোটাধিকার রয়েছে। তবে এ ক্ষেত্রে কিছু সংকটও রয়েছে। জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী আনালেনা বেয়ারবকের মুখপাত্র ক্রিশ্চিয়ান ভাগনার বিদেশে বসবাসরত জার্মানদের কিছু পরামর্শ দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ২৩ ফেব্রুয়ারি বুন্ডেসটাগ নির্বাচনে ভোট দেওয়া নিশ্চিত করতে চাইলে এখনই নির্বাচনী নথিপত্র সংগ্রহ করতে হবে।

সময়মতো ব্যালট পেপার সংগ্রহ করা, তা পূরণ করা ও সময়মতো জার্মানিতে ফেরত পাঠানোর ব্যাপারটা এত সহজ নয়।

গত ডিসেম্বরে জার্মানির সোশ্যাল ডেমোক্র্যাট চ্যান্সেলর ওলাফ শোলজ বুন্ডেসটাগে আস্থা ভোটে হেরে যান। এর পরই জার্মান প্রেসিডেন্ট ফ্রাংক-ভাল্টার স্টাইনমায়ার ২৩ ফেব্রুয়ারি নির্বাচনের তারিখ নির্ধারণ করেন।

ভাগনার অবশ্য সতর্ক করে দিয়েছেন, ‘কিছু দেশে স্বাভাবিক জার্মান সংসদীয় নির্বাচনের সময়ও চ্যালেঞ্জে পড়তে হতে পারে।

কোথায় বাস করছেন তার ওপর নির্ভর করে, বিদেশে বসবাসরত কিছু জার্মান সময়মতো তাদের ব্যালট পেপার না-ও পেতে পারেন।’

নিয়মিত নির্বাচনে বিদেশে জার্মান দূতাবাস ও কনস্যুলেটগুলো নির্বাচনের কয়েক মাস আগে থেকেই প্রস্তুতি শুরু করে। কিন্তু এবারের নির্বাচনে তারা সময় পাচ্ছে মাত্র কয়েক সপ্তাহ।

প্রবাসী জার্মানদের মধ্যে যারা ভোট দিতে চান, তাদের জার্মানির ২৯৯টি নির্বাচনী এলাকার যেকোনো একটির ভোটার তালিকায় নাম নিবন্ধন করাতে হবে।

সাধারণত জার্মানিতে সেই ব্যক্তির সর্বশেষ আবাসস্থলকেই নির্বাচনী এলাকা হিসেবে ধরে নেওয়া হয়। কিন্তু কিছু দেশ এটি ভিন্নভাবে পরিচালনা করে। যেমন, ২০২৩ সালের মে মাসে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে দ্বিতীয় দফা ভোটে জার্মানিতে প্রায় ১৫ লাখ তুর্কি নাগরিকের ভোটাধিকার ছিল। তারা জার্মানির কনস্যুলেটসহ ১৭টি ভিন্ন স্থানে ভোট দিতে পেরেছিলেন।

বুন্ডেসটাগ নির্বাচনে এটি সম্ভব নয়।

ভাগনার বলেন, ‘জার্মানিতে শুধু দূতাবাসে ভোট দেওয়ার কোনো বিধান নেই। আমাদের নির্বাচনীব্যবস্থায় এটি নেই।’ কিন্তু এখন জার্মানির নির্বাচনী এলাকায় শুধু একটি ই-মেইল পাঠিয়েই নথিপত্র পাঠানোর জন্য অনুরোধ করা সম্ভব।

দেশের বাইরে ৩০-৪০ লাখ ভোটার
এটি অবশ্য একটি আনুমানিক সংখ্যা। ভাগনার বলেছেন, ‘বিদেশে নিবন্ধনের কোনো বাধ্যবাধকতা নেই, তাই আমরা শুধু কতজন জার্মান বিদেশে আছেন এবং তাদের মধ্যে কতজন ভোট দেওয়ার যোগ্য, তা অনুমান করতে পারি। আমরা ধরে নিচ্ছি, এই সংখ্যা মোট ৩০ থেকে ৪০ লাখ।’ আরো অনেক জার্মান বিদেশে থাকেন, কিন্তু তাদের সবাই ভোট দেওয়ার অধিকারী নন।

জার্মানিতে শুধু নাগরিক হলেই ভোট দেওয়া যায় না। ১৪তম জন্মদিনের পর অন্তত তিন মাস টানা জার্মানিতে অবস্থান করতে হবে। তবে এ ক্ষেত্রেও বাড়তি নিয়ম রয়েছে। যেমন জার্মানিতে বসবাসের সময়কাল টানা ২৫ বছরের বেশি হলে চলবে না। অর্থাৎ যেসব জার্মান শুধু মাঝেমধ্যে জার্মানিতে অল্প সময়ের জন্য এসেছেন, তাদের অনেকেই ভোট দেওয়ার যোগ্য নন। যাদের জার্মান পাসপোর্ট আছে, কিন্তু কখনো জার্মানিতে আসেননি, তারাও ভোট দিতে পারবেন না।

২০২১ সালে মাত্র সোয়া এক লাখ
কেউ যদি প্রমাণ করতে পারেন, তিনি বা তারা ‘ব্যক্তিগতভাবে ও সরাসরি জার্মানির রাজনৈতিক পরিস্থিতির সঙ্গে পরিচিত এবং এর দ্বারা প্রভাবিত’, তাহলে তাদের ভোটাধিকার থাকবে। উদাহরণস্বরূপ, যারা জার্মানিতে কাজ করেন বা এমন জার্মান কম্পানিতে শেয়ার রয়েছে, যেটিতে অনেক লোক কাজ করেন।

শুনে নিশ্চয়ই প্রক্রিয়াটি অনেক জটিল মনে হচ্ছে। সম্ভবত এ কারণেই ২০২১ সালের বুন্ডেসটাগ নির্বাচনে প্রবাসী ৩০-৪০ লাখ ভোটারের মধ্যে ভোট দিয়েছেন মাত্র এক লাখ ৩০ হাজার জার্মান। তাদের বেশির ভাগই ইইউভুক্ত বিভিন্ন দেশ ও যুক্তরাজ্য বা তুরস্কের মতো অন্যান্য ইউরোপীয় রাষ্ট্রে বসবাসরত ছিলেন।

যুক্তরাষ্ট্র থেকে ভোট পড়েছে মাত্র সাত হাজার ৭০০, এশিয়া থেকে পাঁচ হাজার ৩০০ এবং কানাডা, আফ্রিকা ও অস্ট্রেলিয়া মহাদেশ মিলিয়ে ভোট দিয়েছেন মাত্র দেড় হাজার জার্মান।

প্রয়োজন জরুরি ডাক পরিষেবা
বিদেশে থেকে ভোট দেওয়ার আবেদন করতে ইচ্ছুক জার্মানদের জন্য সময় ফুরিয়ে আসছে। ভাগনার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, বিশ্বের ১৫৪টি জার্মান দূতাবাস ও ৫০টি সাধারণ কনস্যুলেট এ ব্যাপারে সাহায্য করবে। তিনি বলেন, ‘আমরা অবশ্যই দেখছি, আমরা সহায়তা প্রদানের জন্য কী করতে পারি। নির্বাচনী নথিপত্র সরবরাহের ক্ষেত্রে, আমরা অফিশিয়াল কুরিয়ার পরিষেবা ব্যবহার করেছি।’

এর অর্থ হচ্ছে ভোটার চাইলে ভোটদানের নথিপত্র ‘সিল’ করা খামে দূতাবাসে আনলে জার্মান পররাষ্ট্র দপ্তর বার্লিন বা বন অফিসে সেটা পাঠানোর ব্যবস্থা করবে। সেখান থেকে এটি ডাকযোগে চলে যাবে নির্বাচনী এলাকায়। ২৩ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যা ৬টার মধ্যে ভোটারের ব্যালট নির্বাচনী এলাকাতে পৌঁছতে হবে।

অবশ্য এটিও বেশ জটিল। ভাগনার বলছেন, ‘কখনো কখনো বাণিজ্যিক এক্সপ্রেস ডাক পরিষেবা দ্রুততর হয়।’ বাস্তবে বিদেশে বসবাসকারী জার্মানদের ভোটাধিকার প্রয়োগের সবচেয়ে ভালো উপায় হলো, জার্মানির একটি নির্বাচনী এলাকা থেকে পাঠানো নথিপত্রগুলো নিয়ে সেগুলো যত দ্রুত সম্ভব পূরণ করে নিজেই এক্সপ্রেস মেইলে ফেরত পাঠানো।

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

চীনে বিয়ে করা আরো সহজ হলো

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
চীনে বিয়ে করা আরো সহজ হলো
প্রতীকী ছবি : এএফপি

চীন বিয়ে নিবন্ধনের প্রক্রিয়া সহজতর করতে ও দম্পতিদের আর্থিক চাপ কমাতে শনিবার কিছু পদক্ষেপ ঘোষণা করেছে, যা জন্মহার বৃদ্ধির জন্য বেইজিংয়ের সর্বশেষ উদ্যোগ। 

সামাজিক কলঙ্ক ও কম সুরক্ষার কারণে চীনে বিয়ের বাইরে সন্তান জন্মদান অত্যন্ত বিরল। দম্পতিরা বিয়ের বন্ধনে আবদ্ধ হওয়া ও সন্তান ধারণে আগ্রহ হারানোর বিরুদ্ধে ইতিমধ্যে কিছু পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, যেমন নগদ প্রণোদনা ও শিশুর যত্নের পরিকাঠামো নির্মাণের প্রতিশ্রুতি।

নতুন পদক্ষেপটি দম্পতিদের তাদের বাসস্থানেই বিয়ের নিবন্ধন করার সুযোগ দেবে।

সরকারি সম্প্রচারমাধ্যম সিসিটিভি শনিবার একটি সরকারি নথির উদ্ধৃতি দিয়ে এ খবর জানায়। এ ছাড়া রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা সিনহুয়া জানিয়েছে, ‘এই সংস্কারটি তাদের প্রয়োজন মেটানোর জন্য, যারা তাদের নিবন্ধিত জন্মস্থানের বাইরে বসবাস বা কাজ করেন, বিশেষ করে তরুণ প্রজন্ম।’

এখন পর্যন্ত দম্পতিদের যে জায়গায় বর বা কনের নাম নাগরিক নিবন্ধনে ছিল, সেখানে গিয়ে নিবন্ধন করতে হতো, যা ভ্রমণ ও আর্থিক বোঝা সৃষ্টি করত। যেমন বেইজিংয়ের উত্তরাঞ্চলে বসবাসরত একটি দম্পতি যদি দেশের অন্য কোনো জায়গা থেকে আসতেন, তবে তারা রাজধানীতে তাদের বিয়ে নিবন্ধন করতে পারতেন না।

 

সিসিটিভি বলেছে, ‘জনগণের প্রত্যাশার প্রতি আরো ভালোভাবে সাড়া দেওয়ার জন্য এবং পাইলট প্রকল্পগুলোর সফলতার ভিত্তিতে, দেশের পুরোপুরি বিয়ে নিবন্ধন প্রক্রিয়া বাস্তবায়িত হবে।’

অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তার মুখে চীনে গত বছর বিয়ের সংখ্যা এক-পঞ্চমাংশ ও টানা তৃতীয় বছর জনসংখ্যা হ্রাস হয়েছে। সিসিটিভি জানিয়েছে, এই বিষয়টি সমাধান করতে আরো একটি পদক্ষেপ হিসেবে নাগরিক বিষয়ক মন্ত্রণালয় যৌতুক ও বিয়ের অনুষ্ঠানে অপচয়ের বিরুদ্ধে প্রচারণা চালাবে।

যৌতুক প্রায়ই শ্বশুরবাড়ির প্রতি শ্রদ্ধার নিদর্শন হিসেবে এবং একটি তরুণ দম্পতির জীবনযাত্রার জন্য অবদান হিসেবে দেখা হয়।

তবে এই খরচ কখনো কখনো অত্যন্ত বেশি হতে পারে এবং বরের পরিবারে আর্থিক চাপ সৃষ্টি করতে পারে, পাশাপাশি সামাজিক অসমতা বাড়াতে পারে।

বিভিন্ন কারণে তরুণ চীনারা বিয়ে ও সন্তান ধারণে হতাশাগ্রস্ত, এর মধ্যে একটি বড় কারণ হলো অ্যাপার্টমেন্ট কেনার জন্য সঞ্চয়ের অভাব, যা সাধারণত বিয়ের আগে করতে হয়। শিক্ষার খরচও একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, যেমন ডে কেয়ারের খরচ বা প্রাইভেট টিউশন, যা একটি শিশুর একাডেমিক সাফল্যের জন্য প্রায় অপরিহার্য হিসেবে দেখা হয়।

সূত্র : এএফপি

মন্তব্য

নাইজারে মসজিদে হামলায় নিহত ৪৪, ৩ দিনের শোক ঘোষণা

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
নাইজারে মসজিদে হামলায় নিহত ৪৪, ৩ দিনের শোক ঘোষণা
নাইজারে পুলিশের টহল। ফাইল ছবি : এএফপি

নাইজারের সরকার দেশটির দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে একটি মসজিদে হামলার ঘটনায় তিন দিনের রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করেছে। রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে শুক্রবার প্রচারিত এক বিবৃতিতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, দেশটির সীমান্তবর্তী কোকোরু শহরের ফামবিতা এলাকায় এই ‘নৃশংস’ সশস্ত্র হামলায় অন্তত ৪৪ জন নিহত ও আরো ১৩ জন আহত হয়েছে।  

পশ্চিম আফ্রিকার সাহেল অঞ্চলে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে সহিংসতা বৃদ্ধি পেয়েছে, বিশেষ করে ২০১২ সালের তুয়ারেগ বিদ্রোহের পর মালির উত্তরাঞ্চলে আল-কায়েদা ও আইএসআইএল (আইএসআইএস) সংশ্লিষ্ট গোষ্ঠীগুলোর উত্থানের ফলে। এরপর সহিংসতা প্রতিবেশী দেশ নাইজার ও বুরকিনা ফাসোতে ছড়িয়ে পড়ে এবং সাম্প্রতিক সময়ে টোগো ও ঘানার মতো পশ্চিম আফ্রিকার উপকূলীয় দেশগুলোতেও বিস্তৃত হয়েছে।

 

নাইজারের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, সর্বশেষ হামলাটি মুসলমানদের পবিত্র রমজান মাসে জুমার নামাজের সময় মসজিদে সংঘটিত হয়। ভারি অস্ত্রে সজ্জিত সন্ত্রাসীরা মসজিদ ঘিরে ফেলে এবং অস্বাভাবিক নিষ্ঠুরতার সঙ্গে গণহত্যা চালায়। তারা স্থানীয় একটি বাজার ও বেশ কয়েকটি বাড়িতেও অগ্নিসংযোগ করে।  

প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, এই হামলার জন্য ইসলামিক স্টেট ইন দ্য গ্রেট সাহারা (ইআইজিএস) নামের আইএসআইএল সংযুক্ত একটি গোষ্ঠীকে দায়ী করা হচ্ছে।

তবে এই অভিযোগের বিষয়ে এখনো ইআইজিএসের পক্ষ থেকে কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। নাইজারে আগের বেশ কয়েকটি হামলার দায় আল-কায়েদার সহযোগী গোষ্ঠীগুলো স্বীকার করেছিল।

এদিকে সরকার হামলাকারীদের খুঁজে বের করে বিচারের মুখোমুখি করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। সামরিক শাসিত নাইজারে প্রায়ই সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর সঙ্গে সংঘর্ষ হয়, যেখানে সাধারণ মানুষ সহিংসতার শিকার হয়ে থাকে।

সংঘাতবিষয়ক তথ্য সংরক্ষণকারী বেসরকারি সংস্থা এসিএলইডির তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালের জুলাই থেকে এখন পর্যন্ত নাইজারে কমপক্ষে দুই হাজার ৪০০ জন নিহত হয়েছে।

এ ছাড়া সাহেল অঞ্চলে সামগ্রিকভাবে কয়েক লাখ মানুষ নিহত ও লক্ষাধিক মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে। সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলো শহর, গ্রাম ও সরকারি নিরাপত্তা স্থাপনায় হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। সরকারগুলোর নিরাপত্তা পুনরুদ্ধারে ব্যর্থতা ২০২০ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে মালিতে দুটি, বুরকিনা ফাসোতে দুটি ও নাইজারে একটি সামরিক অভ্যুত্থানের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তিন দেশেই এখনো সামরিক শাসন চলছে, যদিও আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক চাপ রয়েছে নির্বাচনের আয়োজন করার জন্য।

এই অভ্যুত্থানগুলোর পর থেকে দেশগুলোর নেতৃত্ব পশ্চিমা মিত্রদের থেকে দূরে সরে গিয়ে রাশিয়ার সামরিক সহায়তা গ্রহণের দিকে ঝুঁকছে।

সূত্র : আলজাজিরা

মন্তব্য

সৌদি আরবে শান্তি আলোচনা নিয়ে অগ্রগতির আশা মস্কোর

এএফপি
এএফপি
শেয়ার
সৌদি আরবে শান্তি আলোচনা নিয়ে অগ্রগতির আশা মস্কোর
সৌদি আরবে সোমবার অনুষ্ঠিতব্য বৈঠকে যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা ইউক্রেন ও রাশিয়ার প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনা করবেন। ছবি : সংগৃহীত

রাশিয়া সোমবার সৌদি আরবে অনুষ্ঠিতব্য আলোচনায় ‘কিছুটা অগ্রগতি’ অর্জনের আশা করছে। দেশটির এক আলোচক রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমকে এ তথ্য জানিয়েছেন। এই বৈঠকে যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা ইউক্রেন ও রাশিয়ার প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনা করবেন, যার লক্ষ্য হচ্ছে তিন বছর ধরে চলা যুদ্ধ থামানোর পথ খোঁজা।

যুক্তরাষ্ট্র ও ইউক্রেনের প্রস্তাবিত ৩০ দিনের পূর্ণ ও নিঃশর্ত যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব মস্কো প্রত্যাখ্যান করেছে।

এর বদলে তারা কেবল জ্বালানি অবকাঠামোর ওপর বিমান হামলা বন্ধ রাখার প্রস্তাব দিয়েছে। তবে এ প্রস্তাব সত্ত্বেও আলোচনা শুরুর আগ পর্যন্ত উভয় পক্ষই বিমান হামলা চালিয়ে গেছে। শুক্রবার রাতে রাশিয়ার একটি হামলায় ইউক্রেনের দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর জাপোরিঝিয়ায় তিনজনের একটি পরিবার নিহত হয়, যা ইউক্রেনীয় কর্মকর্তাদের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভ সৃষ্টি করেছে।  

সৌদি আরবে সোমবার যুক্তরাষ্ট্রের আলোচকরা আলাদাভাবে ইউক্রেন ও রাশিয়ার প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করবেন।

মার্কিন দূত কিথ কেলোগ এটিকে হোটেল কক্ষের মধ্যে ‘শাটল ডিপ্লোমেসি’ বলে উল্লেখ করেছেন। অবশ্য যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কূটনৈতিক তৎপরতা সত্ত্বেও এখন পর্যন্ত উল্লেখযোগ্য কোনো অগ্রগতি হয়নি।

রাশিয়ার প্রতিনিধি দলনেতা সিনেটর গ্রিগরি কারাসিন রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন চ্যানেল জভেজদাকে বলেন, ‘আমরা অন্তত কিছু অগ্রগতি অর্জন করতে চাই।’ তবে তিনি নির্দিষ্ট করে কিছু উল্লেখ করেননি।

তিনি আরো জানান, তার সহআলোচক ও এফএসবি উপদেষ্টা সের্গেই বেসেদা আলোচনা প্রক্রিয়ায় ‘লড়াইপূর্ণ ও গঠনমূলক’ মনোভাব নিয়ে অংশ নেবেন।  

এদিকে এক দিন আগেই একজন জ্যেষ্ঠ ইউক্রেনীয় কর্মকর্তা জানিয়েছেন, কিয়েভ অন্তত জ্বালানি, অবকাঠামো ও সমুদ্রবন্দর লক্ষ্যবস্তুতে হামলা বন্ধ করার বিষয়ে সমঝোতা করতে চায়।

রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মালিকানাধীন চ্যানেল জভেজদাকে কারাসিন বলেন, ‘আমরা অন্তত একটি সমস্যার সমাধানের জন্য লড়তে যাচ্ছি।’ রাশিয়ার প্রতিনিধিদল রবিবার সৌদি আরবের উদ্দেশে রওনা দেবে এবং মঙ্গলবার ফিরে আসবে বলে জানিয়েছেন তিনি।  

পরিবার নিহত
শান্তি আলোচনা নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছে রাশিয়ার আলোচক নির্বাচন নিয়ে।

কারণ আলোচকদের কেউই ক্রেমলিন, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বা প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত নন। কারাসিন একজন কূটনীতিক, যিনি বর্তমানে রাশিয়ার সংসদের উচ্চকক্ষে দায়িত্ব পালন করছেন। অন্যদিকে বেসেদা দীর্ঘদিন ধরে রাশিয়ার গোয়েন্দা সংস্থা এফএসবির সঙ্গে যুক্ত এবং বর্তমানে সংস্থাটির পরিচালককে পরামর্শ দিচ্ছেন। ২০১৪ সালে ইউক্রেনের ইইউপন্থী বিপ্লবের সময় কিয়েভে রক্তক্ষয়ী দমন-পীড়নের ঘটনায় বেসেদার ভূমিকা ছিল বলে স্বীকার করে এফএসবি।  

ইউক্রেন রাশিয়ার সদিচ্ছা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছে এবং চলমান হামলার জন্য দেশটির সমালোচনা করেছে, যদিও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন গত মঙ্গলবার সেনাবাহিনীকে ইউক্রেনের জ্বালানি স্থাপনাগুলোকে লক্ষ্যবস্তু বানানো থেকে বিরত থাকতে বলেছেন।

এদিকে ইউক্রেনীয় বিমানবাহিনী শনিবার জানিয়েছে, রাশিয়া রাতভর ১৭৯টি ড্রোন হামলা চালিয়েছে। জাপোরিঝিয়ার দক্ষিণাঞ্চলে শুক্রবার রাতে এক পরিবারের ওপর ড্রোন হামলা চালানো হয়, এতে ১৪ বছর বয়সী এক কিশোরীসহ পুরো পরিবার নিহত হয়। গভর্নর ইভান ফেদোরভ টেলিগ্রামে জানান, ‘মেয়েটি ও তার বাবার মরদেহ ধ্বংসস্তূপ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। চিকিৎসকরা দীর্ঘ ১০ ঘণ্টা মায়ের জীবন বাঁচানোর চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছেন।’  

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভোলোদিমির জেলেনস্কির দপ্তরের প্রধান আন্দ্রি ইয়ারমাক বলেন, ‘রাশিয়া আবারও যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করেছে এবং একটি শাহেদ ড্রোন ব্যবহার করে জাপোরিঝিয়ায় ১৪ বছরের এক শিশুকে হত্যা করেছে।’ রাশিয়া ইরানি ধাঁচের এই বিস্ফোরক ড্রোনগুলো দীর্ঘদিন ধরে ব্যবহার করে আসছে।  

ইউক্রেনও রাশিয়ায় ড্রোন হামলা চালিয়েছে, এতে দক্ষিণাঞ্চলীয় রোস্তভ-অন-ডন শহরে দুজন আহত হয়েছেন। অন্যদিকে প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি জানিয়েছেন, তিনি পূর্বাঞ্চলীয় শহর পোক্রোভস্কে অবস্থানরত সেনাদের পরিদর্শন করেছেন। এই শহরটি কয়েক মাস ধরে রুশ বাহিনীর অবরোধের শিকার।

মন্তব্য

কড়াইয়ে গুলি ছেঁকছিলেন এসআই, সেখান থেকেই বিস্ফোরণ

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
কড়াইয়ে গুলি ছেঁকছিলেন এসআই, সেখান থেকেই বিস্ফোরণ
প্রতীকী ছবি : এএফপি

ভারতের কেরালা রাজ্যে গত ১০ মার্চ আচমকাই বিস্ফোরণ হয় কোচি পুলিশের ত্রিপুনিথুরা পুলিশ শিবিরে। বিস্ফোরণের কারণ জানতে তদন্ত শুরু করেছিল পুলিশের একটি দল। এবার জানা গেল কিভাবে ঘটেছিল সেই বিস্ফোরণ। ভারতীয় গণমাধ্যম শনিবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।

পুলিশ সূত্রের বরাত দিয়ে গণমাধ্যমটি বলছে, কোচি সিটি পুলিশের আর্মড রিজার্ভ ক্যাম্পে বাহিনীর গোলাবারুদ শাখার দায়িত্বে যে কর্মকর্তা ছিলেন, তার গাফিলতিতেই এমন ভয়ংকর ঘটনা ঘটেছে।

পুলিশ কমিশনার পুত্তা বিমলাদিত্যের বরাত দিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, উপপরিদর্শক মর্যাদার এক কর্মকর্তা সেদিন গুলি পরীক্ষা করে দেখছিলেন। শিবিরের অস্ত্রাগারে মরচে ধরা বেশ কিছু গুলি চোখে পড়ে তার। সেই গুলিগুলো ঠিক আছে কি না, দেখার জন্য তিনি কড়াইয়ে রেখে ছেঁকা শুরু করেন।

আর তার জেরেই বিস্ফোরণ হয় পুলিশ শিবিরে।

আনন্দবাজার অনুসারে, সেই ঘটনায় পুলিশ শিবিরের একাংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তবে কেউ হতাহত হননি। এমন ঘটনা যে ঘটতে পারে, তা কারো ধারণাতেই ছিল না বলে পুলিশের সূত্রের দাবি।

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ