নয়াদিল্লিতে মকবুল ফিদার ‘আপত্তিকর’ চিত্রকর্ম বাজেয়াপ্তের নির্দেশ

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
নয়াদিল্লিতে মকবুল ফিদার ‘আপত্তিকর’ চিত্রকর্ম বাজেয়াপ্তের নির্দেশ
বিখ্যাত চিত্রশিল্পী মকবুল ফিদা হুসেন। ফাইল ছবি : এএফপি

ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লির এক আদালত প্রয়াত শিল্পী মকবুল ফিদা হুসেনের দুটি ‘আপত্তিকর’ চিত্রশিল্প বাজেয়াপ্ত করার নির্দেশ দিয়েছেন। পাতিয়ালা হাউস কোর্টের ফার্স্টক্লাস জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট এই নির্দেশ দিয়েছেন।

সম্প্রতি দায়ের করা এক অভিযোগে জানানো হয়, এম এফ হুসেনের আঁকা হিন্দু দেবদেবীসংবলিত দুটি চিত্রকর্ম দিল্লির এক চিত্র প্রদর্শনশালায় প্রদর্শন করা হয়েছিল, যা ‘ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাত করেছে’। অমিতা সচদেবা নামের পেশায় এক আইনজীবী ওই অভিযোগ দায়ের করেছিলেন।

এই মামলার পরিপ্রেক্ষিতে চলতি সপ্তাহে পুলিশকে ওই ‘আপত্তিকর’ চিত্রকর্ম বাজেয়াপ্ত করার নির্দেশ দিয়েছেন নয়াদিল্লির আদালত।

তবে এমন ঘটনা নতুন নয়। ২০১১ সালে ৯৫ বছর বয়সে প্রয়াত এই বিখ্যাত চিত্রশিল্পীকে তার চিত্রকর্মে হিন্দু দেবদেবীর নগ্ন ছবি চিত্রায়ণের জন্য প্রায়ই সমালোচনার মুখোমুখি হতে হয়েছে। যে প্রদর্শনীকে ঘিরে বিতর্ক সেটা আয়োজন করেছিল দিল্লি আর্ট গ্যালারি (ডিএজি)।

তবে ডিএজি কর্তৃপক্ষ সব অভিযোগ অস্বীকার করে জানিয়েছে, পুলিশ এই মামলায় ‘বিস্তারিত’ তদন্ত করেছে। পুলিশি তদন্তের সময় প্রদর্শনশালার পক্ষ থেকে কোনো রকম ‘বিচারযোগ্য অপরাধ’ পাওয়া যায়নি।

গত বছর অক্টোবর মাসে আয়োজন করা হয়েছিল ওই প্রদর্শনী। ‘হুসেন : দ্য টাইমলেস মডার্নিস্ট’ শীর্ষক ওই প্রদর্শনীতে ২৬ অক্টোবর থেকে ১৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত তার আঁকা শতাধিক চিত্রকর্ম প্রদর্শন করা হয়েছিল।

অভিযোগকারিণী অমিতা সচদেবা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্সে লেখেন, গত ৪ ডিসেম্বর তিনি ডিএজির প্রদর্শনশালায় প্রদর্শিত ‘আপত্তিকর চিত্রগুলোর’ ছবি তুলেছিলেন। প্রয়াত শিল্পীর বিরুদ্ধে ওঠা আগেকার অভিযোগের বিষয়ে খোঁজ খবর করার পাঁচ দিন পর তিনি পুলিশে অভিযোগ দায়ের করেন।

এরপর ১০ ডিসেম্বর সচদেবা জানান, তদন্তকারী পুলিশ কর্মকর্তাকে সঙ্গে নিয়ে ওই চিত্র প্রদর্শনশালায় গিয়েছিলেন তিনি। সেই সময় তিনি লক্ষ করেন ওই দুটি চিত্র সরিয়ে ফেলা হয়েছে। তার অভিযোগ, প্রদর্শনশালার পক্ষ জোর দিয়ে বলা হয়, ওই দুটি চিত্র কখনো প্রদর্শনীতে রাখাই হয়নি।

এক্সে সচদেবা তার তোলা যে ছবি পোস্ট করেছেন, সেখানে নগ্ন নারীর পাশে হিন্দু দেবতা গণেশ ও হনুমানকে চিত্রিত করা হয়েছে। একই সঙ্গে ওই আইনজীবী আরো অভিযোগ করেছেন, সংশ্লিষ্ট মামলার প্রতিবেদন জমা দিতে ‘ব্যর্থ হয়েছে’ দিল্লি পুলিশ।

গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, এরপর অমিতা সচদেবা আদালতের দ্বারস্থ হয়ে প্রদর্শনশালার সেই সময়কার সিসিটিভি ফুটেজ সংরক্ষণের আবেদন জানান, যে সময় ওই দুটি চিত্র প্রদর্শনীতে রাখা হয়েছিল বলে অভিযোগ করা হয়েছে। চলতি সপ্তাহের সোমবার নয়াদিল্লির পাতিয়ালা হাউস কোর্টের বিচারক জানান, সিসিটিভির ফুটেজ হাতে পাওয়ার পর সেই সংক্রান্ত প্রতিবেদন আদালতে জমা দিয়েছে পুলিশ। তদন্তে জানা গেছে, ব্যক্তিগত পরিসরে ওই প্রদর্শনী আয়োজন করা হয়েছিল এবং এর একমাত্র উদ্দেশ্য ছিল প্রয়াত শিল্পীর নিজস্ব কর্মকে তুলে ধরা।

এদিকে ডিএজি কর্তৃপক্ষ এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, তদন্তের সময় তাদের পক্ষ থেকে পুলিশকে সব ধরনের সাহায্য করা হয়েছে। একই সঙ্গে এ-ও জানানো হয়েছে, আনুমানিক পাঁচ হাজার দর্শককে আকৃষ্ট করেছে ‘হুসেন : দ্য টাইমলেস মডার্নিস্ট’ শীর্ষক প্রদর্শনী এবং ‘গণমাধ্যমের পাশাপাশি জনসাধারণের কাছ থেকেও ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া মিলেছে’।

প্রদর্শনশালার দাবি, ‘অভিযোগকারিণীই একমাত্র দর্শক, যিনি ওই প্রদর্শনীর কোনো শিল্পকর্ম নিয়ে আপত্তি তুলেছেন।’

বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছে, ‘অভিযোগকারিণী ইচ্ছাকৃতভাবে ওই ছবিগুলো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও টেলিভিশনের খবর মারফত প্রচার করেছেন, যাতে আরো বড়সংখ্যক মানুষ তা দেখতে পায় এবং পাশাপাশি এই যুক্তিও দিয়েছেন যে ওই একই চিত্র তার ব্যক্তিগত ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাত করেছে।’

মকবুল ফিদা হুসেন ভারতের অন্যতম নামকরা চিত্রশিল্পীদের মধ্যে একজন ছিলেন। ‘ভারতের পিকাসো’ হিসেবে পরিচিত ছিলেন তিনি। লাখ লাখ ডলারে বিক্রি হয়েছে তার বিভিন্ন শিল্পকর্ম। কিন্তু তার বহু চিত্রশিল্পই ভারতে বিতর্কের সৃষ্টিও করেছে।

কর্মজীবনে একাধিক বিতর্কের মুখে পড়তে হয়েছে হুসেনকে। তার বিরুদ্ধে ‘অশ্লীলতার’ অভিযোগ যেমন তোলা হয়েছিল, তেমনি হিন্দু দেবীর নগ্ন চিত্র আঁকার পর কট্টরপন্থী হিন্দুদের নিন্দার সম্মুখীনও হতে হয়েছে এম এফ হুসেনকে। তার চিত্রকর্মের মধ্যে অন্যতম ‘মাদার ইন্ডিয়া’ নিয়ে বিতর্কের পর প্রকাশ্যে ক্ষমা প্রার্থনা করেছিলেন এই চিত্রশিল্পী। এটা ২০০৬ সালের ঘটনা। ‘মাদার ইন্ডিয়া’ শীর্ষক চিত্রে এক নগ্ন নারীকে মাটিতে হাঁটু গেড়ে বসে ভারতীয় মানচিত্রের আকৃতি তৈরি করতে দেখা যায়, যাকে ঘিরে ব্যাপক বিতর্কের সৃষ্টি হয়। সেই বছরই দেশত্যাগ করেন হুসেন এবং মৃত্যুর আগে পর্যন্ত লন্ডনে স্বেচ্ছা নির্বাসনেই ছিলেন তিনি।

এরপর ২০০৮ সালে ভারতের সুপ্রিম কোর্ট মকবুল ফিদা হুসেনের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা শুরু করতে অস্বীকার করেন। শীর্ষ আদালতের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছিল, তার চিত্রকর্ম কোনোভাবেই ‘অশ্লীল’ ছিল না এবং ভারতীয় আইকনোগ্রাফি ও ইতিহাসে নগ্নতা কিন্তু ‘একটা সাধারণ বিষয়’।

ভোপাল, ইন্দোর ও রাজকোটে এম এফ হুসেনের বিরুদ্ধে দায়ের করা ফৌজদারি মামলা বাতিল করার নির্দেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। সেই রায়ের বিরুদ্ধে করা আপিল করা হয়েছিল সুপ্রিম কোর্টে। সেই আবেদনও খারিজ করে দেন ভারতের শীর্ষ আদালত। সেই সময় একই সঙ্গে ভারতে বাড়তে থাকা ‘নতুন বিশুদ্ধতাবাদের’ সমালোচনা করেছিলেন সুপ্রিম কোর্ট।

হুসেনের যেসব চিত্রশিল্পের বিরুদ্ধে ‘ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাত হানা’ এবং ‘জাতীয় অখণ্ডতাকে বিঘ্নিত করার’ অভিযোগ উঠেছিল সেই শিল্পকর্মের বিষয়ে ব্যাখ্যা করার জন্য তলব করার আবেদনও জানানো হয়েছিল। সেই সময় নির্বাসনে ছিলেন তিনি। সুপ্রিম কোর্টের পক্ষ থেকে শিল্পকর্মের বিষয়ে ব্যাখ্যা করার জন্য তাকে ডেকে পাঠানোর সেই আবেদনও খারিজ করে দেওয়া হয়।

সুপ্রিম কোর্টের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, ‘এই জাতীয় বহু বিষয়, আলোকচিত্র ও প্রকাশনা রয়েছে। সেই সব কিছুর বিরুদ্ধে মামলা করবেন কি? মন্দিরের কাঠামোতে থাকা শিল্পের বিষয়ে কী বলবেন? হুসেনের কাজ শিল্প। যদি আপনি তা না দেখতে চান, তাহলে দেখবেন না। এই জাতীয় অনেক শিল্পের নিদর্শন তো মন্দিরের কাঠামোতে রয়েছে।’

প্রসঙ্গত, অনেকের মতে ভারতে শৈল্পিক ভাবপ্রকাশের স্বাধীনতার ওপর হস্তক্ষেপ ক্রমেই বেড়ে চলেছে। গত অক্টোবরে শুল্ক বিভাগকে তিরস্কার করেছিলেন বম্বে হাইকোর্ট। বিখ্যাত শিল্পী এফ এন সুজা ও আকবর পদমসির শিল্পকর্মকে ‘অশ্লীল’ আখ্যা দিয়ে বাজেয়াপ্ত করেছিল শুল্ক বিভাগ। মামলা সম্পর্কিত নিদেশ দেওয়ার সময় বম্বে হাইকোর্ট জানিয়েছিলেন, প্রতিটা নগ্ন শিল্পকলা বা যৌনতা সম্পর্কিত শিল্পই যে অশ্লীল, তা নয়। এ কথা জানিয়ে শুল্ক বিভাগের বাজেয়াপ্ত করা সাতটা শিল্পকর্ম ছেড়ে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন আদালত।

সূত্র : বিবিসি

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

যুদ্ধমুক্ত হচ্ছে কৃষ্ণ সাগর

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
যুদ্ধমুক্ত হচ্ছে কৃষ্ণ সাগর
ছবি : এএফপি

ইউক্রেনে সার্বিক যুদ্ধবিরতির চুক্তির আগে কৃষ্ণ সাগরে একটি সামুদ্রিক অস্ত্রবিরতির ব্যাপারে একমত হয়েছে রাশিয়া ও ইউক্রেন। আজ মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে এ কথা জানিয়েছে হোয়াইট হাউস।

এর আগে, সৌদি আরবের রিয়াদে যুক্তরাষ্ট্র ও রুশ কর্মকর্তাদের মধ্যে বৈঠক হয়। তার আগে ইউক্রেনের সঙ্গেও আলোচনা হয় মার্কিনিদের।

সেখান থেকেই কৃষ্ণ সাগর গিয়ে যাওয়া জাহাজগুলোর বিরুদ্ধে সামরিক পদক্ষেপ না করার বিষয়ে পৃথকভাবে সম্মত হয়েছে দুই দেশ।

যদিও বৈঠক চলাকালেও একে-অপরের ওপর ড্রোন হামলা অব্যাহত রেখেছিল মস্কো ও কিয়েভ।

মঙ্গলবার হোয়াইট হাউস বলেছে, ‘কৃষ্ণ সাগরে নিরাপদ নৌ চলাচল নিশ্চিত করতে, বলপ্রয়োগ বন্ধ করতে এবং সামরিক উদ্দেশ্যে বাণিজ্যিক জাহাজের ব্যবহার রোধ করতে সম্মত হয়েছে উভয় পক্ষই।’

২০২২ সালে যুদ্ধ শুরুর পর থেকে কৃষ্ণ সাগরে রুশ নৌবহরের ওপর ব্যাপক আক্রমণ চালিয়েছে ইউক্রেন।

এসব হামলার কারণে এক পর্যায়ে ক্রিমিয়ার নৌঘাঁটি থেকে বেশ কিছু জাহাজ সরিয়ে নিতে বাধ্য হয় মস্কো।

ইউক্রেনীয় বন্দরগুলোতে রাশিয়া আক্রমণ চালালেও এখনো ওডেসা অঞ্চলের প্রধান তিনটি সমুদ্রবন্দর থেকে কৃষ্ণ সাগর হয়ে শস্য, লোহা ও অন্যান্য পণ্য রপ্তানি করে যাচ্ছে কিয়েভ।

তবে যুদ্ধের আগে ইউক্রেনের অন্যতম প্রধান রপ্তানি কেন্দ্র মাইকোলাইভ বন্দর এখনো বন্ধ আছে।

এ কারণেই চলতি মাসের শুরুতে ইউরোপীয় নেতাদের কাছে নৌ ও আকাশপথে অস্ত্রবিরতির আহ্বান জানিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি।

মন্তব্য

৫০ বছর মৃত্যুদণ্ডের অপেক্ষার পর অবশেষে মুক্তির পালা

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
৫০ বছর মৃত্যুদণ্ডের অপেক্ষার পর অবশেষে মুক্তির পালা
সংগৃহীত ছবি

প্রায় ৫০ বছর মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হওয়ার অপেক্ষায় ছিলেন জাপানি এক ব্যক্তি। শেষ পর্যন্ত তাঁর বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ মিথ্যা প্রমাণিত হয়েছে। অবশেষে তাঁকে ক্ষতিপূরণসহ মুক্তি দেওয়া হচ্ছে।

৮৯ বছর বয়সী ইওয়া হাকামাতাকে মুক্তি দেওয়ার পাশাপাশি ২১ কোটি ৭০ লাখ ইয়েন ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে।

বাংলাদেশি মুদ্রায় এই ক্ষতিপূরণ প্রায় ১৭ কোটি ৫৪ লাখ টাকারও বেশি।

হাকামাতার আইনজীবীদের বরাতে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে, জাপানের ইতিহাসে কোনো ফৌজদারি মামলার জন্য এটাই সর্বোচ্চ ক্ষতিপূরণ।

১৯৬৮ সালে হাকামাতা তাঁর বস, বসের স্ত্রী ও তাঁদের দুই সন্তানের হত্যার দায়ে দোষী সাব্যস্ত হয়েছিলেন। তবে গত বছর নতুন করে মামলাটি পর্যালোচনা করা হলে তিনি নির্দোষ প্রমাণিত হন।

হাকামাতার আইনজীবীরা সর্বোচ্চ ক্ষতিপূরণের দাবি করেছিলেন। তাঁরা যুক্তি দিয়েছিলেন, ৪৭ বছর কারাগারে থাকার ফলে তাঁর মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর মারাত্মক প্রভাব পড়েছে।

বিচারক কুনি কোশি সোমবার ওই ক্ষতিপূরণের আদেশ দেন এবং স্বীকার করেন যে, হাকামাতা অত্যন্ত গুরুতর মানসিক ও শারীরিক কষ্ট ভোগ করেছেন।

হাকামাতাকে ক্ষতিপূরণের এই অর্থ প্রদান করবে জাপান সরকার।

স্থানীয় গণমাধ্যমগুলো এটিকে দেশটির ইতিহাসে সবচেয়ে বড় ক্ষতিপূরণ হিসেবে চিহ্নিত করেছে।

হাকামাতার মামলা জাপানের দীর্ঘতম ও অন্যতম আলোচিত বিচারিক ঘটনা। ২০১৪ সালে তাঁর মামলাটি পুনরায় বিচারের অনুমতি দেওয়া হয় এবং তখনই তিনি কারাগার থেকে মুক্তি পান। প্রায় অর্ধশত বছর আগে এই মামলাটি যারা তদন্ত করেছিলেন, তাঁরাই হাকামাতাকে মিথ্যা প্রমাণ দিয়ে ফাঁসিয়েছিলেন বলে সন্দেহ করা হয়।

এ অবস্থায় গত বছরের সেপ্টেম্বরে জাপানের দক্ষিণ উপকূলীয় শহর শিজুওকার একটি আদালতে বিচারক হাকামাতাকে খালাস দিলে, সেখানে উপস্থিত শত শত মানুষ ‘বানজাই’ (হুররে) বলে উল্লাস প্রকাশ করেন।

তবে মানসিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় সেদিনের সেই শুনানিতে উপস্থিত থাকতে পারেননি হাকামাতা।

এই মামলা জাপানের বিচার ব্যবস্থার স্বচ্ছতা ও কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। বিশেষ করে পুনঃবিচারের দীর্ঘসূত্রতা এবং জোরপূর্বক স্বীকারোক্তির অভিযোগের বিষয়ে।

মন্তব্য

সপ্তাহ না যেতেই গাজায় ৮০০ মৃত্যু

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
সপ্তাহ না যেতেই গাজায় ৮০০ মৃত্যু
ছবি : এএফপি

যুদ্ধবিরতির পর ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি বোমা হামলায় প্রায় ৮০০ জনের মৃত্যু হয়েছে। মঙ্গলবার (২৫ মার্চ) গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এ তথ্য জানিয়েছে।

মন্ত্রণালয় বলেছে, ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে ইসরায়েলের বোমা হামলা শুরুর পর থেকে গত এক সপ্তাহে ৭৯২ জন নিহত হয়েছেন। এরমধ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় নিহত হয়েছেন ৬২ জন।

মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, হামলা পুনরায় শুরু হওয়ার পর থেকে ৭৯২ জন নিহত এবং ১,৬৬৩ জন আহত হয়েছেন।

যার ফলে ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে গাজায় মোট মৃতের সংখ্যা ৫০,১৪৪ জনে দাঁড়িয়েছে।

আরো পড়ুন
সুন্দরবনের বিভিন্ন স্থানে থেমে থেমে জ্বলছে আগুন

সুন্দরবনের বিভিন্ন স্থানে থেমে থেমে জ্বলছে আগুন

 

প্রায় দুই মাস যুদ্ধবিরতি চলার পর গত মঙ্গলবার থেকে গাজায় আবার হামলা শুরু করেছে ইসরায়েল। এর মধ্যে ইসরায়েলের আক্রমণ আরো বিস্তৃত হয়েছে বলে গাজার বাসিন্দারা জানিয়েছেন।

গাজার স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, রবিবার খান ইউনিস ও রাফায় ইসরায়েলি হামলায় অন্তত ৪৫ জন নিহত হয়েছেন।

মন্তব্য

দাবানল নিয়ন্ত্রণে লড়াই করছে দক্ষিণ কোরিয়া

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
দাবানল নিয়ন্ত্রণে লড়াই করছে দক্ষিণ কোরিয়া
সম্ভাব্য ক্ষতি থেকে রক্ষায় বুদ্ধ মূর্তিগুলোকে ঢেকে দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে এবং পাশের ছবিতে হেলিকপ্টার থেকে পানি ছিটানো হচ্ছে। ছবি : এএফপি

দক্ষিণ কোরিয়ায় ভয়াবহ দাবানলের আবস্থা আরো খারাপ হয়েছে। শুষ্ক আবহাওয়া ও বাতাস সবচেয়ে ভয়াবহ দাবানলগুলোর মধ্যে একটিকে নিয়ন্ত্রণে আনার প্রচেষ্টাকে ব্যাহত করছে। মঙ্গলবার কর্মকর্তারা জানিয়েছেন এই তথ্য। চলতি সপ্তাহে এক ডজনেরও বেশি বিভিন্ন ধরনের অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে।

নিরাপত্তামন্ত্রী জানিয়েছেন, হাজার হাজার হেক্টর জমি পুড়ে গেছে, হাজার হাজার লোককে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে এবং চারজন নিহত হয়েছে। ভারপ্রাপ্ত স্বরাষ্ট্র ও নিরাপত্তামন্ত্রী কো কি-ডং বলেছেন, ‘এখন পর্যন্ত দাবানলে প্রায় ১৪ হাজার ৬৯৪ হেক্টর (৩৬ হাজার ৩১০ একর) ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং ক্ষয়ক্ষতি ক্রমে বাড়ছে।’ ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণে দক্ষিণ কোরিয়ার ইতিহাসে তৃতীয় বৃহত্তম দাবানল হবে এটি। এর আগে সবচেয়ে বড় দাবানল ছিল ২০০০ সালের এপ্রিলে, যা পূর্ব উপকূলজুড়ে ২৩ হাজার ৯১৩ হেক্টর (৫৯ হাজার ০৯০ একর) পুড়ে গিয়েছিল।

ভারপ্রাপ্ত স্বরাষ্ট্র ও নিরাপত্তা মন্ত্রী কো কি-ডং একটি দুর্যোগ ও নিরাপত্তা সভায় বলেন, ৩ হাজারেরও বেশি মানুষকে আশ্রয়কেন্দ্রে নেওয়া হয়েছে। কমপক্ষে ১১ জন মানুষ গুরুতর আহত হয়েছে। তীব্র বাতাস, শুষ্ক আবহাওয়া এবং কুয়াশা অগ্নিনির্বাপণ প্রচেষ্টাকে ব্যাহত করছে বলে তিনি জানান। 

আরো পড়ুন
মোটরসাইকেলসহ গিয়ে পড়লেন সিংকহোলে, অতঃপর...

মোটরসাইকেলসহ গিয়ে পড়লেন সিংকহোলে, অতঃপর...

 

তিনি বলেন, আজ ১১০টি হেলিকপ্টার এবং ৬ হাজার ৭০০ জনেরও বেশি কর্মী মোতায়েন করা হবে।

 এএফপির সাংবাদিকরা উইসংয়ের আকাশ ধোঁয়া এবং কুয়াশায় ভরে গেছে বলে জানান। স্থানীয় একটি মন্দিরের কর্মীরা সম্ভাব্য ক্ষতি থেকে রক্ষায় ঐতিহাসিক নিদর্শনগুলো সরানোর এবং বুদ্ধ মূর্তিগুলোকে ঢেকে দেওয়ার চেষ্টা করছেন। 

কোরিয়া বন পরিষেবা জানিয়েছে, মঙ্গলবার সকাল নাগাদ উইসংয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণের হার ৬০ থেকে ৫৫ শতাংশে নেমে এসেছে। স্বরাষ্ট্র ও নিরাপত্তা মন্ত্রণালয়ের মতে, দাবানল মোকাবেলায় ৬ হাজার ৭০০ জনেরও বেশি দমকলকর্মী মোতায়েন করা হয়েছে, যার প্রায় দুই-পঞ্চমাংশ কর্মী উইসংয়ে পাঠানো হয়েছে। সরকার ‘সারা দেশে একযোগে দাবানলের ফলে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির’ কথা উল্লেখ করে চারটি অঞ্চলে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছে।

সূত্র : এএফপি

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ