মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পপন্থী সাংবাদিক টাকার কার্লসনকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের প্রশংসা করেছেন ট্রাম্পের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ। তিনি বলেন, ‘আমি পুতিনকে খারাপ মানুষ মনে করি না। তিনি অত্যন্ত বুদ্ধিমান। পুতিন দয়ালু এবং সোজাসাপ্টা মানুষ।
ইউক্রেনের সমর্থনে আন্তর্জাতিক বাহিনী গঠনের যে প্রস্তাব ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার দিয়েছেন সে ব্যাপারে কথা বলতে গিয়ে উইটকফ এ কথা বলেন। উইটকফ স্টারমারের এই প্রস্তাবকে ‘লোক-দেখানো’ আখ্যা দিয়ে খারিজ করে দিয়েছেন উইটকফ। খবর বিবিসির।
তিনি বলেন, ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী এবং অন্য ইউরোপীয় নেতারা উইনস্টন চার্চিলের মতো হওয়ার ভান করছেন।
তারা বলতে চাইছেন যে, রাশিয়া এখন ইউরোপের দিকে এগিয়ে আসবে। এটি অতি সরলীকৃত একটি ধারণা।
ট্রাম্পের বিশেষ দূত বলেন, এই সংঘাতের সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো তথাকথিত চারটি অঞ্চল—ডনবাস, ক্রিমিয়া; নামগুলো আপনি জানেন।
মূলত ইউক্রেনের পাঁচটি অঞ্চল—লুহানস্ক, দোনেত্স্ক, জাপোরিঝিয়া, খেরসন ও ক্রিমিয়া দখলে নিয়েছে রাশিয়া।
ডনবাস একটি শিল্পাঞ্চল, যাতে লুহানস্ক ও দোনেৎস্কের বেশির ভাগ অন্তর্ভুক্ত।
রাশিয়ার ইউক্রেন আক্রমণের কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে উইটকফ বলেন, ‘রুশদের দৃষ্টিকোণ থেকে দখলকৃত এই অঞ্চলগুলো এখন রাশিয়ার অংশ। ইউক্রেনের সংবিধান অনুযায়ী তাদের কতটুকু অঞ্চল ছেড়ে দেওয়া সম্ভব, সেটিই মূল প্রশ্ন। রুশ সেনারা এরই মধ্যে এই অঞ্চলগুলো নিয়ন্ত্রণ করছে, এখন প্রশ্ন হলো বিশ্ব কি একে রাশিয়ার অংশ হিসেবে স্বীকার করবে?’
তিনি আরো বলেন, ‘রাশিয়ার একটি মত রয়েছে যে, ইউক্রেন একটি কৃত্রিম দেশ, যা বিভিন্ন অঞ্চল জোড়া দিয়ে বানানো হয়েছে এবং এটিই যুদ্ধের মূল কারণ। রাশিয়া দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর থেকেই এই অঞ্চলগুলো নিজেদের মনে করে, কিন্তু কেউ এ বিষয়ে কথা বলতে চায় না।
’
পুতিনের দাবি, ন্যাটোর সম্প্রসারণের ঝুঁকি এবং স্বাধীন ইউক্রেনের অস্তিত্বই রুশ আগ্রাসনের মূল কারণ।
উইটকফ বলেন, ‘রাশিয়া কেন ইউক্রেন দখল করতে চাইবে? তারা এরই মধ্যে পাঁচটি অঞ্চল দখল করেছে, ক্রিমিয়া নিয়ন্ত্রণে রয়েছে, তারা যা চেয়েছিল তা পেয়ে গেছে। আর কিছু দরকার নেই।’
কিয়ার স্টারমারের ‘কোয়ালিশন অব দ্য উইলিং’ গঠনের পরিকল্পনার বিষয়ে উইটকফ বলেন, ‘এটি রাজনৈতিক স্ট্যান্ট এবং অতি সরলীকৃত চিন্তা। কিছু লোক মনে করে, আমরা সবাই যেন উইনস্টন চার্চিল হয়ে যাই। রাশিয়া ইউরোপ আক্রমণ করতে যাচ্ছে, এই চিন্তা হাস্যকর। কারণ আমাদের ন্যাটো রয়েছে, যা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে ছিল না।’