রবিবার কিয়েভসহ অনেক শহরে রাশিয়া ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে। রাশিয়ার অভিযোগ, ইউক্রেনও ড্রোন হামলা চালিয়েছে। কিয়েভের মেয়র ভিটালি ক্লিসচিকো জানিয়েছেন, ‘রাশিয়া মিসাইল হামলা চালিয়েছে। এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম চালু আছে।
রবিবার কিয়েভসহ অনেক শহরে রাশিয়া ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে। রাশিয়ার অভিযোগ, ইউক্রেনও ড্রোন হামলা চালিয়েছে। কিয়েভের মেয়র ভিটালি ক্লিসচিকো জানিয়েছেন, ‘রাশিয়া মিসাইল হামলা চালিয়েছে। এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম চালু আছে।
ইউক্রেনের বিমানবাহিনী জানিয়েছে, শনিবার সন্ধ্যা থেকে মস্কো ইউক্রেনের বিভিন্ন জায়গায় ক্ষেপণাস্ত্র হামলা শুরু করে।
শনিবার ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির শহর ক্রিভি রিয়া আক্রান্ত হয়।
ইউক্রেনের ড্রোন ধ্বংসের দাবি
রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, তারা রবিবার রাতে ইউক্রেনের ১১টি ড্রোন ধ্বংস করেছে। এই ড্রোনগুলো কুরস্ক, বেলগোরোদ, রস্তভ অঞ্চলে পাঠানো হয়েছিল বলে দাবি করা হয়েছে। রাশিয়ার দাবি, ড্রোন আক্রমণে কোনো ক্ষতি হয়নি।
রাশিয়া দাবি করেছে, তারা পূর্ব ও দক্ষিণ ইউক্রেনে দুটি গ্রাম দখল করে নিয়েছে।
জেলেনস্কির প্রতিক্রিয়া
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, রাশিয়া সম্পূর্ণ নিঃশর্ত যুদ্ধবিরতিতে রাজি নয়। সেটা নিয়ে আমেরিকার প্রতিক্রিয়ায় তিনি হতাশ।
জেলেনস্কি জানিয়েছেন, ‘ইউক্রেন যুদ্ধবিরতি নিয়ে মার্কিন প্রস্তাবে রাজি। কিন্তু রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুটিন এখনো রাজি হননি। আমরা এখনো আমেরিকার প্রতিক্রিয়ার অপেক্ষায় আছি। এখনো কোনো প্রতিক্রিয়া আসেনি।’
জেলেনস্কি জানিয়েছেন, তারা ইউরোপের প্রতিক্রিয়ায় অপেক্ষায় আছেন। এ ছাড়া বিশ্বের যে দেশগুলো শান্তি চায়, তারাও তাদের প্রতিক্রিয়া জানাক বলে তিনি দাবি করেছেন। তিনি বলেছেন, রাশিয়ার ওপর সব ধরনের চাপ দিয়ে যেতে হবে।
ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ম্যাখোঁ বলেছেন, ‘রাশিয়া যদি যুদ্ধবিরতিতে রাজি না হয় বা কালক্ষেপণ করতে থাকে, তাহলে তাদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
তিনি বলেছেন, ইউক্রেনে অবিলম্বে যুদ্ধবিরতি প্রয়োজন। রাশিয়া সমানে বেসামরিক মানুষ ও শিশুদের ওপর হামলা করে যাবে- এটা হতে পারে না। ম্যাখোঁ বলেছেন, রাশিয়া আবারও তাদের আক্রমণ তীব্র করেছে। বেসামরিকদের নিয়ে তাদের কোনো চিন্তা নেই। ক্রিভি রিয়াতে রাশিয়ার হামলায় ৯ জন শিশু মারা গেছে । তার মধ্যে তিন বছর বয়সী একটি শিশুও রয়েছে।
সম্পর্কিত খবর
ফিলিস্তিনিদের নিজ ভূমি থেকে উচ্ছেদে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের প্রস্তাবকে প্রত্যাখ্যান করেছে সৌদি আরব। শুক্রবার (১১ এপ্রিল) তুরস্কের আন্তালিয়াতে ‘গাজা যুদ্ধ বন্ধে’ বিভিন্ন দেশের মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকে এ বিষয়ে নিজের অবস্থান স্পষ্ট করেন সৌদি আরবের পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রিন্স ফয়সাল বিন ফারহান।
তিনি জানান, ফিলিস্তিনের গাজার মানুষকে বেঁচে থাকার ন্যূনতম প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র থেকেও বঞ্চিত করা হচ্ছে। যুদ্ধবিরতি চুক্তির সঙ্গে গাজায় নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য প্রবেশকে কোনোভাবেই মেলানো যাবে না।
দখলদার ইসরায়েলের সঙ্গে হামাসের যুদ্ধবিরতি করতে মধ্যস্থতা করছে কাতার, মিসর ও যুক্তরাষ্ট্র। প্রিন্স ফয়সাল বিন ফারহান জানিয়েছেন, এ নিয়ে এ দেশগুলোর ওপর তাদের আস্থা আছে এবং তারা এতে সমর্থন জানান।
সম্মেলনে অংশ নেওয়া দেশগুলোর মন্ত্রীরা একটি যৌথ বিবৃতি দেন।
এছাড়া ইসরায়েল দখলদার বাহিনী হিসেবে ফিলিস্তিনের দখলকৃত অঞ্চলে যেসব বসতি স্থাপন ও সম্প্রসারণ করছে সেগুলোরও নিন্দা জানিয়েছেন তারা।
প্রসঙ্গত, দখলদার ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু ও যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প একাধিকবার বলেছেন, গাজাবাসীকে তাদের নিজ ভূমি থেকে সরিয়ে অন্য দেশে নিয়ে যাবেন এবং গাজাকে একটি আধুনিক শহরে পরিণত করবেন।
সূত্র : সৌদি গেজেট
চীনসহ বিশ্বের শতাধিক দেশের ওপর নানা হারে ‘রিসিপ্রক্যাল ট্যারিফ’ আরোপ করেছিল মার্কিন প্রশাসন। যদিও চীন বাদে অন্য দেশগুলোর ওপর সেই শুল্ক তিন মাসের জন্য স্থগিত করেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। তবে চীনের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৪৫ শতাংশে। শুল্কযুদ্ধে থেমে নেই চীনও।
ফলে বৈশ্বিক আলোচনার কেন্দ্রে থাকা শুল্কযুদ্ধ নতুন মোড় নিল। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শুল্কযুদ্ধে পিছু হটছে না বেইজিং।
তারা বলছেন, পাল্টাপাল্টি শুল্কারোপের ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে বাণিজ্য যুদ্ধ বেড়েছে। চীন আগেই ট্রাম্পের শুল্ক তীরের কাছে মাথা নত না করে শেষ পর্যন্ত লড়ে যাওয়ার অঙ্গীকার করেছিল। এরপর থেকে চীনের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্যযুদ্ধ কেবলই তীব্র হয়েছে।
অর্থনীতিবিদরা আগেই বলেছিলেন, যুক্তরাষ্ট্রের ঘোষণার পাল্টায় অন্য দেশগুলোও নতুন করে ব্যবস্থা নেবে। এতে নতুন করে একটি বাণিজ্য যুদ্ধের ঝুঁকি তৈরি করবে। বিশ্ব অর্থনীতির নাজুক দশার মধ্যে নতুন চাপ তৈরি করবে ট্রাম্পের শুল্ক।
প্রশ্ন হলো কেন বেইজিং ডোনাল্ড ট্রাম্পের শুল্ক আরোপের বিরুদ্ধে পিছু হটছে না? এই প্রশ্নের উত্তরে বলা যায়, কারণ চীনের তেমন দরকারই নেই।
চীনের নেতাদের ভাষ্য, তারা কোনো জুলুমবাজের কাছে মাথা নত করতে আগ্রহী নন।
বিবিসির বিশ্লেষণে বলা হয়েছে, শুল্কযুদ্ধ শুরুর আগে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি অনেক বেশি ছিল, তবে বাস্তবে এটি চীনের মোট জিডিপির মাত্র ২%।
তবে এটাও সত্য যে, কমিউনিস্ট পার্টি এখনই যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে একটি বাণিজ্যযুদ্ধে জড়াতে চাইবে না। বিশেষ করে এমন সময়ে যখন চীন নিজেই একটি গুরুতর অর্থনৈতিক সংকট মোকাবেলা করছে। বহু বছরের রিয়েল এস্টেট সংকট, অতিরঞ্জিত আঞ্চলিক ঋণ এবং তরুণদের বেকারত্বের মতো সমস্যাও রয়েছে।
তবু, সরকার জনগণকে বলেছে যে, তারা যুক্তরাষ্ট্রের আক্রমণের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলার শক্তিশালী অবস্থানে রয়েছে।
চীন এটাও জানে যে, তাদের আরোপিত শুল্কগুলো মার্কিন রপ্তানিকারকদের ওপরও আঘাত হানবে।
ট্রাম্প তার সমর্থকদের বলছেন, চীনকে সহজেই শুল্ক দিয়ে নত করা যাবে, কিন্তু বাস্তবে তা ভুল প্রমাণিত হয়েছে। বেইজিং আত্মসমর্পণ করতে যাচ্ছে না।
চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং শুক্রবার স্পেনের প্রধানমন্ত্রী পেদ্রো সানচেজকে বলেছেন, ‘চীন ও ইউরোপীয় ইউনিয়নকে ট্রাম্প প্রশাসনের একতরফা জুলুমবাজ আচরণের বিরুদ্ধে একযোগে প্রতিরোধ গড়ে তোলা উচিত।’
জবাবে সানচেজ বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য উত্তেজনা ইউরোপের সঙ্গে চীনের সহযোগিতায় কোনো বাধা হওয়া উচিত নয়।’
তাদের বৈঠকটি হয় বেইজিংয়ে, ঠিক সেই সময় যখন চীন আবারও যুক্তরাষ্ট্রের পণ্যের ওপর শুল্ক বাড়ানোর ঘোষণা দেয়—যদিও তারা জানিয়েছে, ভবিষ্যতে মার্কিন শুল্ক বৃদ্ধির জবাবে তারা আর প্রতিক্রিয়া দেখাবে না।
আগামী সপ্তাহে শি জিনপিং মালয়েশিয়া, ভিয়েতনাম ও কম্বোডিয়া সফর করবেন—যেসব দেশ ট্রাম্পের শুল্কনীতির কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
তাঁর মন্ত্রীরা ইতিমধ্যে দক্ষিণ আফ্রিকা, সৌদি আরব ও ভারতের নেতাদের সঙ্গে বাণিজ্য সহযোগিতা বাড়ানোর বিষয়ে বৈঠক করেছেন।
এ ছাড়া চীন ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের মধ্যে আলোচনার খবর পাওয়া গেছে—যেখানে ইউরোপে চীনা গাড়ির ওপর শুল্ক তুলে দিয়ে তার পরিবর্তে ন্যূনতম মূল্য নির্ধারণের চিন্তা করা হচ্ছে, যাতে নতুন করে পণ্যের দাম কমিয়ে ‘ডাম্পিং’ বন্ধ করা যায়।
সংক্ষেপে, চারদিকে তাকালেই বোঝা যায়—চীনের হাতে অনেক বিকল্প রয়েছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, এই পারস্পরিক শুল্ক আরোপ এখন প্রায় অর্থহীন হয়ে পড়েছে, কারণ দুই দেশের মধ্যকার অনেক বাণিজ্য ইতিমধ্যেই বন্ধ হয়ে গেছে। তাই দুই পক্ষের এই পাল্টাপাল্টি শুল্ক আরোপ এখন মূলত প্রতীকী হয়ে দাঁড়িয়েছে।
চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মাও নিং গত দুই দিন ধরে সামাজিক মাধ্যমে চেয়ারম্যান মাওয়ের ছবি ও ভিডিও পোস্ট করেছেন। এর মধ্যে রয়েছে কোরিয়ান যুদ্ধ চলাকালীন একটি ভিডিও, যেখানে মাও যুক্তরাষ্ট্রকে বলছেন, ‘এই যুদ্ধ যতদিনই চলুক না কেন, আমরা কখনোই আত্মসমর্পণ করব না।’
এই ভিডিওর ওপর তিনি নিজেই মন্তব্য করেছেন, ‘আমরা চীনা। আমরা উসকানিতে ভয় পাই না। আমরা পিছু হটব না।’
যখন চীনের সরকার চেয়ারম্যান মাওয়ের ভাবমূর্তি সামনে আনে, তখন বোঝা যায়—তারা সত্যিই বিষয়টিকে গুরুত্ব সহকারে নিচ্ছে।
ছুরি হামলায় জড়িত থাকার অভিযোগে আটক হওয়া ফিলিস্তিনি কিশোর আহমাদ মানাসরা দীর্ঘ নয় বছর জেল খাটার পর মুক্তি পেয়েছেন। কারাগারে থাকাকালীন তিনি মারাত্মক মানসিক সমস্যায় ভুগলেও আগাম মুক্তির আবেদন বারবার প্রত্যাখ্যান করা হয়েছিল।
১৩ বছর বয়সে আটক হয়েছিলেন আহমাদ। এখন তার বয়স ২৩।
অধিকৃত পূর্ব জেরুজালেমের বাসিন্দা আহমাদ ২০১৫ সালে পিসগাত জি’ভ নামক অবৈধ বসতির কাছে তার চাচাতো ভাই হাসান মানাসরার সঙ্গে ছিলেন, যিনি তখন দুই ইসরায়েলিকে ছুরিকাঘাত করেন।
ঘটনার সময় ১৫ বছর বয়সী হাসানকে এক ইসরায়েলি গুলি করে হত্যা করে, আর আহমাদকে একদল ইসরায়েলি প্রচণ্ড মারধর করে এবং তাকে গাড়িচাপা দেওয়া হয়, যার ফলে তার মাথার খুলি ভেঙে যায় এবং অভ্যন্তরীণ রক্তক্ষরণ হয়। আহমাদের রাস্তায় রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকা এবং ইসরায়েলিদের উপহাসের একটি ভিডিও ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে।
যদিও আহমাদ কাউকে ছুরি মারেননি এবং আদালতও তা স্বীকার করেছে, তবুও তাকে হত্যাচেষ্টার অভিযোগে অভিযুক্ত করা হয়।
২০২১ সালের নভেম্বর মাসে এক বন্দির সঙ্গে ঝগড়ার পর আহমাদকে প্রথম একাকী কক্ষে রাখা হয়। পরে তার পরিবার ও আইনজীবীরা জানান, তাকে দিনে ২৩ ঘণ্টা ছোট একটি কক্ষে বন্দি রাখা হতো এবং তিনি ভ্রম ও সন্দেহজনিত মানসিক সমস্যায় ভুগতেন, ঘুমোতে পারতেন না। আইনজীবী বলেন, ‘আহমাদ আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিলেন।
তার পরিবার জানায়, তাকে কয়েক মাস পরপর মানসিক চিকিৎসা কেন্দ্রের একটি ওয়ার্ডে স্থানান্তর করা হতো এবং সেখানে তাকে মানসিক স্থিতি বজায় রাখতে ইনজেকশন দেওয়া হতো।
২০২১ সালের ডিসেম্বরে প্রথমবারের মতো আহমাদকে একজন বাইরের চিকিৎসক দেখতে পান। ‘ডক্টরস উইদাউট বর্ডারস’-এর (এমএসএফ) ওই চিকিৎসক জানান, আহমাদ স্কিজোফ্রেনিয়ায় ভুগছেন।
তিনি সতর্ক করে বলেন, ‘কারাবন্দিত্ব অব্যাহত থাকলে আহমাদের মানসিক স্বাস্থ্যে স্থায়ী ক্ষতি হতে পারে।’
‘বিরাট স্বস্তি’
আহমাদের মুক্তি বহুদিন ধরে স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক সংস্থা—যেমন ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও জাতিসংঘ—চেয়ে আসছিল।
তবে ইসরায়েলের সুপ্রিম কোর্ট তার আগাম মুক্তির আবেদন একাধিকবার নাকচ করে দেয়। আদালত জানায়, আহমাদ ‘সন্ত্রাসবাদের’ অভিযোগে দণ্ডিত হওয়ায় তার বয়স বা মানসিক অবস্থা বিবেচনায় না নিয়েই তাকে অযোগ্য ঘোষণা করা হয়।
আহমাদের দণ্ড ঘোষণার সময় ইসরায়েলি আইন পরিবর্তন করে ১২ বছর বয়সী শিশুদেরও ‘সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে’ অভিযুক্ত করার সুযোগ রাখা হয়।
জাবারকা জানান, ইসরায়েলি কারা কর্তৃপক্ষ ইচ্ছাকৃতভাবে তাকে নাফা কারাগারের বাইরে ছেড়ে দেয়, যাতে তার পরিবার তাকে রিসিভ করতে না পারে এবং তাকে এক নির্জন জায়গায় ফেলে আসে।
পরে বীরশেবা এলাকার নেগেভ অঞ্চলে এক পথচারী তাকে খুঁজে পেয়ে তার পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করে। এরপর পরিবার তার সঙ্গে পুনরায় মিলিত হয়।
জাবারকা বলেন, ‘আমরা জানি যে সে জেলে প্রচণ্ড অসুস্থ ছিল। এখন আমরা তার স্বাস্থ্যের বিষয়ে বিস্তারিত জানার অপেক্ষায় আছি।’
অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের আঞ্চলিক পরিচালক হেবা মোরায়েফ বলেন, ‘তার মুক্তি তার এবং তার পরিবারের জন্য বিরাট স্বস্তির বিষয়।’
তিনি বলেন, ‘কারাগারে কাটানো বছরের অন্যায়, নির্যাতন, মানসিক আঘাত এবং দুর্ব্যবহার কিছুই ফিরিয়ে আনা যাবে না।’
সূত্র : আলজাজিরা
এ সপ্তাহান্তে ভয়াবহ ঝড়ো হাওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে চীনের উত্তরাঞ্চল। সেখানকার কর্মীদের দ্রুত বাসায় ফিরে যেতে বলা হয়েছে। ক্লাস স্থগিত করা হয়েছে এবং বাইরের সব ইভেন্ট বাতিল করা হয়েছে।
কোটি কোটি মানুষকে ঘরে থাকার জন্য সতর্ক করা হয়েছে।
মঙ্গোলিয়া থেকে দক্ষিণ-পূর্ব দিকে আসা একটি ঠাণ্ডা ঘূর্ণিবাতের প্রভাবে শুক্রবার থেকে রবিবার পর্যন্ত বেইজিং, তিয়ানজিন এবং হেবেই অঞ্চলের অন্যান্য অংশে ঘণ্টায় ১৫০ কিলোমিটার বেগে বাতাস বয়ে যাওয়ার পূর্বাভাস রয়েছে।
১০ বছরের মধ্যে এই প্রথম ঝড়ো হাওয়ার জন্য একটি কমলা সতর্কতা জারি করেছে বেইজিং; যা চার স্তরের আবহাওয়া সতর্কতা ব্যবস্থার দ্বিতীয় সর্বোচ্চ স্তর।
মঙ্গোলিয়া থেকে শক্তিশালী বাতাস এই সময়ে অস্বাভাবিক কিছু নয়।
বেইজিংয়ের তাপমাত্রা ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ১৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত কমতে পারে। শনিবার সবচেয়ে প্রবল বাতাস আঘাত হানবে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
বেইজিং আবহাওয়া দপ্তর জানিয়েছে, এই বাতাস অত্যন্ত তীব্র, দীর্ঘস্থায়ী, ব্যাপক এলাকাজুড়ে প্রভাব ফেলে এবং উচ্চমাত্রার ক্ষতি করতে সক্ষম।
চীন বাতাসের গতি ১ থেকে ১৭ স্তরে পরিমাপ করে। স্তর ১১-এর বাতাস ‘গুরুতর ক্ষতিকর’, আর স্তর ১২ মানেই ‘চরম বিপজ্জনক’।
এই সপ্তাহান্তে বাতাসের গতি স্তর ১১ থেকে ১৩-এর মধ্যে থাকবে বলে পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে।
সপ্তাহান্তে আয়োজিত বেশ কিছু ক্রীড়া প্রতিযোগিতা স্থগিত করা হয়েছে, যার মধ্যে বিশ্বের প্রথম হিউম্যানয়েড রোবট হাফ ম্যারাথনও রয়েছে—যেটি ১৯ এপ্রিল অনুষ্ঠিত হবে।
পার্ক ও পর্যটনকেন্দ্র বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে এবং জনগণকে বাইরের যেকোনো ধরনের কার্যক্রম এড়িয়ে চলতে বলা হয়েছে।
শহরজুড়ে হাজার হাজার গাছ পড়ে যাওয়ার ঝুঁকি থেকে বাঁচাতে বাঁধাই বা ছাঁটাই করা হয়েছে।
কর্তৃপক্ষ মানুষকে পাহাড় বা বন এলাকায় না যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছে, কারণ এসব জায়গায় দমকা হাওয়া আরো ভয়াবহ হতে পারে।
মানুষ যখন ঘরে অবস্থান করছে, তখন সোশ্যাল মিডিয়ায় অনেকে তাদের বাতিল হওয়া উইকেন্ড প্ল্যান নিয়ে রসিকতা করছে।
একজন উইবো ব্যবহারকারী লিখেছেন, ‘এই বাতাস তো বেশ বুদ্ধিমান—শুক্রবার সন্ধ্যায় শুরু হয়ে রোববার শেষ হচ্ছে, যাতে সোমবারের কাজকর্মে কোনো ব্যাঘাত না ঘটে।’
ঝড়ো হাওয়া ও ৫০ কেজির কম ওজন হলে উড়ে যাওয়ার আশঙ্কা—এ নিয়ে চীনা সোশ্যাল মিডিয়ায় নানা হ্যাশট্যাগ ট্রেন্ডিংয়ে রয়েছে। একজন উইবো ব্যবহারকারী রসিকতা করে লিখেছেন, ‘আমি এত খাই কেন জানো? এই দিনের জন্যই!’
বেইজিং বনাঞ্চলে আগুনের ঝুঁকি সম্পর্কেও সতর্কতা দিয়েছে এবং বাইরে আগুন জ্বালানো নিষিদ্ধ করেছে।
বাতাস রবিবার রাত থেকে ধীরে ধীরে কমে আসবে বলে জানানো হয়েছে।
সূত্র : বিবিসি