ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভোলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, ইউক্রেন শান্তি চায় এবং এই যুদ্ধ দীর্ঘায়িত হওয়ার একমাত্র কারণ রাশিয়া। যুদ্ধ বন্ধে সৌদি আরবে মার্কিন কর্মকর্তাদের সঙ্গে শান্তি আলোচনার এক দিন আগে গতকাল সোমবার তিনি এ কথা বলেন। এদিকে ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক পুনরুদ্ধারের প্রাথমিক পর্যায়ে আছে রাশিয়া।
পূর্ব নির্ধারিত সফর অনুযায়ী গতকাল সোমবার রাতে সৌদি আরবে পৌঁছানোর কথা জেলেনস্কির।
সেখানে সৌদি আরবের যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের সঙ্গে সাক্ষাতের কথা রয়েছে তাঁর। অন্যদিকে আজ মঙ্গলবার রাশিয়ার সঙ্গে যুদ্ধ বন্ধে মার্কিন কর্মকর্তাদের সঙ্গে ইউক্রেনীয় কর্মকর্তাদের বৈঠক হওয়ার কথা। যদিও এই বৈঠকে অংশ নেবেন না জেলেনস্কি।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে জেলেনস্কি বলেন, যুদ্ধের শুরু থেকেই ইউক্রেন শান্তি চাইছে এবং আমরা সব সময় বলে এসেছি যে এই যুদ্ধ অব্যাহত থাকার একমাত্র কারণ রাশিয়া।
এদিকে ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেছেন, দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক পুনরুদ্ধারের প্রাথমিক পর্যায়ে আছে রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্র। এটি একটি দীর্ঘ ও কঠিন পথ হতে চলেছে। তবে উভয় প্রেসিডেন্ট একই দিকে যাওয়ার রাজনৈতিক ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন।
তিনি আরো বলেন, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দায়িত্ব গ্রহণের পর তাঁর সঙ্গে মাত্র একবার ফোনে কথা বলেছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।
ওই কথোপকথন যোগাযোগ ও সমস্যা সমাধানের জন্য যথেষ্ট গঠনমূলক ছিল। শান্তি চুক্তির বিষয়ে পেসকভ বলেন, যুক্তরাষ্ট্র সম্ভবত ইউক্রেনের কাছ থেকে শুনতে চাইছে যে তারা শান্তির জন্য প্রস্তুত। সম্ভবত সবাই এটির জন্যই অপেক্ষা করছে।
অন্যদিকে সৌদি আরবে মার্কিন কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনার সময় কিয়েভ রাশিয়ার সঙ্গে আকাশ ও নৌ যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব দেবে বলে জানিয়েছেন ইউক্রেনের এক কর্মকর্তা। নাম প্রকাশ না করার শর্তে তিনি বলেন, আমাদের কাছে আকাশ ও নৌ যুদ্ধবিরতির একটি প্রস্তাব আছে।
কারণ যুদ্ধবিরতির এই বিকল্পগুলো কার্যকর ও পর্যবেক্ষণ করা সহজ এবং এগুলো দিয়ে যুদ্ধবিরতি শুরু করা সম্ভব।
আলোচনা সম্পর্কে অবগত সূত্রের বরাতে ব্রিটিশ পত্রিকা ফিন্যানশিয়াল টাইমস জানিয়েছে, কিয়েভ আংশিক যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব দেবে। তারা আশা করছে যে ওয়াশিংটন সামরিক সহায়তা এবং গোয়েন্দা তথ্যবিনিময় পুনরায় শুরু করবে।
তবে ইউক্রেনের বিরোধীদলীয় আইনপ্রণেতা ওলেক্সি গনচারেঙ্কো আকাশ ও নৌপথের পাশাপাশি স্থল যুদ্ধবিরতিরও দাবি জানিয়েছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যপ্রাচ্যবিষয়ক প্রতিনিধি স্টিভ উইটকফ বলেন, ওয়াশিংটন শান্তি চুক্তির জন্য একটি কাঠামো তৈরি করতে এবং যুদ্ধবিরতির জন্য এই আলোচনাকে ব্যবহার করতে চায়।
গতকাল মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কোর রুবিওর সৌদি আরবে পৌঁছার কথা। এ ছাড়া ট্রাম্পের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মাইক ওয়াল্টজ বৈঠকে অংশ নেওয়ার কথা নিশ্চিত করেছেন।
জেলেনস্কি বলেছেন, ইউক্রেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আন্দ্রি সিবিগা, প্রতিরক্ষামন্ত্রী রুস্তেম উমেরভ, চিফ অব স্টাফ আন্দ্রি ইয়ারমাক, সামরিক কমান্ডার পাভলো পালিসা বৈঠকে অংশ নেবেন।
ইউক্রেন শান্তি চুক্তিতে স্বাক্ষর করবে কি না—এমন প্রশ্নের জবাবে উইটকফ বলেন, আমার মনে হয়, জেলেনস্কি চুক্তি স্বাক্ষরের প্রস্তাব দিয়েছেন। আমরা দেখব যে তিনি তা অনুসরণ করেন কি না। সূত্র : এএফপি, বিবিসি