ইউক্রেনে সম্ভাব্য শান্তিচুক্তির লক্ষ্যে গতকাল সোমবার সৌদি আরবে বৈঠক করেছেন যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। জ্বালানি স্থাপনায় হামলা বন্ধে সমঝোতার পর এবার সাগরপথে যুদ্ধবিরতি অর্জনের লক্ষ্যে বৈঠক করছেন তাঁরা। মূলত কৃষ্ণ সাগরে চলাচলকারী নৌযানের নিরাপত্তা নিশ্চিত করাই এই বৈঠকের লক্ষ্য।
এর আগে গত রবিবার রাতে একই প্রসঙ্গে ইউক্রেন ও মার্কিন কর্মকর্তাদের পৃথক বৈঠক হয়েছে।
ইউক্রেনের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রুস্তেম উমেরভ ওই আলোচনাকে ইতিবাচক ও ফলপ্রসূ আখ্যা দিয়েছেন।
রিয়াদের রিটজ-কার্লটন হোটেলে বৈঠকটি হচ্ছে। ইউক্রেনের প্রতিনিধিরাও একই ভবনে অবস্থান করছেন। তবে তাঁদের সঙ্গে রাশিয়ার প্রতিনিধিদের সাক্ষাতের কোনো পরিকল্পনা নেই।
গতকালের বৈঠকে রুশ প্রতিনিধিদলের নেতৃত্বে ছিলেন দেশটির আইনসভার উচ্চকক্ষের আন্তর্জাতিক বিষয়ক কমিটির প্রধান গ্রিগরি কারাসিন। তাঁর সঙ্গে ছিলেন রাশিয়ার নিরাপত্তা সংস্থা এফএসবি প্রধানের উপদেষ্টা সের্গেই বেসেদা।
কারাসিনকে উদ্ধৃত করে বার্তা সংস্থা ইন্টারফ্যাক্স বলেছে, আলোচনা সৃজনশীল উপায়ে এগিয়ে চলছে এবং যুক্তরাষ্ট্র ও রুশ প্রতিনিধিদল পরস্পরের দৃষ্টিভঙ্গি বোঝে।
মার্কিন প্রতিনিধিদলের নেতৃত্বে ছিলেন হোয়াইট হাউসের জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের ঊর্ধ্বতন পরিচালক অ্যান্ড্রু পিক এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা মাইকেল অ্যান্টন।
এবারের আলোচনার উদ্দেশ্য হচ্ছে রাশিয়াকে সাগরপথ বিশেষ করে কৃষ্ণ সাগরে যুদ্ধবিরতিতে রাজি করানো। পশ্চিমা গণমাধ্যমগুলো একে ‘সিজফায়ার লাইট’ অভিহিত করছে।
ওয়াশিংটন ও কিয়েভ চাইছে যে কৃষ্ণ সাগরে উভয়পক্ষ সব ধরনের হামলা থেকে বিরত থাকবে। অন্যদিকে রাশিয়ার উদ্দেশ্য হচ্ছে ২০২২ সালে হওয়া শস্যচুক্তি পুনরুজ্জীবিত করা, যার আওতায় ইউক্রেনের শস্যবাহী নৌযান হামলার বাইরে থাকবে। বিনিময়ে রাশিয়া কৃষ্ণ সাগর দিয়ে কৃষিপণ্য ও সার রপ্তানি করবে, যা পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা থেকে মস্কোকে কিছুটা স্বস্তি দেবে।
নিষেধাজ্ঞা বহাল রাখার অভিযোগ তুলে ২০২৩ সালে চুক্তি থেকে বেরিয়ে যায় রাশিয়া।
সৌদি আরবে আলোচনার মধ্যেও রাশিয়া ও ইউক্রেনের পাল্টা হামলা থেমে নেই। কিয়েভের দাবি, গত রবিবার রাতভর ইউক্রেনের সেনাবাহিনী ও বিভিন্ন স্থাপনা লক্ষ্য করে ৯৯টি ড্রোন ছুড়েছে রাশিয়া। এর মধ্যে ৫৭টি ভূপাতিত করা হয়েছে। আর মস্কো বলছে, তারা ইউক্রেনের ২৮টি ড্রোন ধ্বংস করেছে। ইউক্রেন জানিয়েছে, তারা যুক্তরাষ্ট্রের দেওয়া হিমারস ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করে রাশিয়ার বেলগোরদ এলাকায় চারটি রুশ সামরিক হেলিকপ্টার ভূপাতিত করেছে। সূত্র : বিবিসি