ঢাকা, সোমবার ১৪ এপ্রিল ২০২৫
৩০ চৈত্র ১৪৩১, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৬

ঢাকা, সোমবার ১৪ এপ্রিল ২০২৫
৩০ চৈত্র ১৪৩১, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৬

প্রতিকারের উপায় খুঁজতে হবে

  • বিদেশে চিকিৎসায় বছরে ৫০০ কোটি ডলার
শেয়ার
প্রতিকারের উপায় খুঁজতে হবে

বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি তথ্য দিয়েছেন, যা নিয়ে আমাদের গভীরভাবে চিন্তা-ভাবনা করা প্রয়োজন, পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন। তিনি বলেছেন, বিদেশে চিকিৎসা করাতে গিয়ে প্রতিবছর বাংলাদেশ থেকে পাঁচ বিলিয়ন ডলার দেশের বাইরে চলে যায়। যেখানে আমাদের বার্ষিক রপ্তানি আয় মাত্র ৬০ বিলিয়ন ডলারের মতো, যেখানে লাখ লাখ প্রবাসী কর্মী সারা বছরে রেমিট্যান্স পাঠান ২৩ বিলিয়ন ডলারের মতো, সেখানে চিকিৎসার পেছনে পাঁচ বিলিয়ন ডলার বাইরে চলে যাওয়া অনেক বড় একটি বিষয়। রবিবার পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউট (পিআরআই) বাংলাদেশ আয়োজিত ক্রস বর্ডার ডাটা ফ্লো : বাংলাদেশ প্রেক্ষাপট শীর্ষক কর্মশালায় ড. মনসুর আরো বলেন, এই তথ্যও চূড়ান্ত নয়।

অনেকে ট্যুরিস্ট ভিসায় বিদেশে গিয়ে চিকিৎসা করায়।

বাংলাদেশ থেকে প্রতিবছর অনেক রোগী ভারত, থাইল্যান্ড, সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, এমনকি ইউরোপ-আমেরিকায় গিয়েও চিকিৎসা করায়। মেডিক্যাল ভিসায় না গিয়ে তারা ট্যুরিস্ট বা অন্যান্য ভিসায় গিয়ে চিকিৎসা করায়। ফলে অনেকেই মনে করে, চিকিৎসার কারণে বৈদেশিক মুদ্রা দেশের বাইরে চলে যাওয়ার পরিমাণ আরো অনেক বেশি হবে।

তা ছাড়া চিকিৎসার জন্য দেশের বাইরে যাওয়া মানুষের সংখ্যা দিন দিনই বাড়ছে। কিন্তু কেন এমন হচ্ছে? মানুষ চিকিৎসার জন্য কেন এভাবে বাইরে যাচ্ছে? দেশের চিকিৎসাব্যবস্থার ওপর মানুষের আস্থা কেন কমে যাচ্ছে? এই বিষয়গুলো আমাদের ভাবতে হবে এবং প্রতিকারের উদ্যোগ নিতে হবে।

আমাদের স্বাস্থ্য খাতে বাজেট নেহাত কম নয়। প্রায় ৪০ হাজার কোটি টাকা।

তার পরও সরকারি স্বাস্থ্য ব্যবস্থার ওপর মানুষের আস্থা দিন দিন কমছে। উপজেলা হেলথ কমপ্লেক্সের চিকিৎসাব্যবস্থা নিয়ে অভিযোগের অন্ত নেই। চিকিৎসক থাকেন না। রোগ পরীক্ষার যন্ত্রপাতি নেই অথবা অচল। অ্যাম্বুল্যান্সসেবা তো প্রায় নেই-ই।
উপজেলায় বা স্থানীয় পর্যায়ে চিকিৎসা না পাওয়ায় ঢাকা বা বড় শহরের সরকারি হাসপাতালে রোগীর অস্বাভাবিক ভিড় থাকে। এখানেও প্রাইভেট প্র্যাকটিসের চাপে হাসপাতালের চিকিৎসাসেবার মান নিয়ে থাকে অনেক প্রশ্ন। বেসরকারি হাসপাতালগুলোর চিকিৎসার মান নিয়েও রয়েছে প্রশ্ন। আর বড় বেসরকারি হাসপাতালগুলোর খরচ এত বেশি যে অনেকেই বলে থাকে, এর চেয়ে কম খরচে ভারতে গিয়ে চিকিৎসা করানো যায়। অন্যদিকে পরিবেশদূষণ, ভেজাল খাদ্যসহ নানা রকম কারণে রোগব্যাধিতে আক্রান্তের হারও ক্রমেই বাড়ছে। ক্যান্সার, হৃদরোগ, পাকান্ত্রিক রোগব্যাধিসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্তের হার আশঙ্কাজনকভাবে বাড়ছে।

দেশের চিকিৎসাব্যবস্থার ওপর মানুষের আস্থা কমে যাওয়াকে ঠেকাতে হবে। কাঙ্ক্ষিত মাত্রায় দেশের চিকিৎসাব্যবস্থার উন্নয়ন ও সেবার মান বাড়াতে হবে। তা না হলে দেশ থেকে বৈধ বা অবৈধ উপায়ে চিকিৎসার জন্য বৈদেশিক মুদ্রা বাইরে চলে যাওয়ার পরিমাণ দিন দিন বাড়তেই থাকবে।

 

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে

    কমছে না মানবপাচার
শেয়ার
কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে

মানবপাচার আমাদের বড় সমস্যাগুলোর একটি। বেকারত্বের অভিশাপ ঘোচাতে কিংবা কিছুটা উন্নত জীবন পেতে প্রতিবছর বহু তরুণ অবৈধভাবে বিদেশে যেতে চায় এবং পাচারকারীদের শিকারে পরিণত হয়। এসব তরুণ বা তাদের পরিবার শুধু আর্থিক ক্ষতিরই মুখোমুখি হয় না, অনেককে বেঘোরে প্রাণও দিতে হয়। রবিবার কালের কণ্ঠে উপকূলীয় এলাকায় মানবপাচার সংক্রান্ত তিনটি আলাদা প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে।

প্রতিবেদনগুলোতে পাচারকারীচক্রের বেপরোয়া কর্মকাণ্ডের পাশাপাশি উঠে এসেছে তাদের খপ্পরে পড়া অসহায় মানুষের আর্তি।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, টেকনাফ সীমান্তেই মানবপাচারে জড়িত আছে ১৫টি চক্র। এসব চক্রের তিন শতাধিক সদস্য রয়েছে। তারা শুধু রোহিঙ্গা নয়, বাংলাদেশিদেরও নানা কৌশলে পাচার করছে।

নৌবাহিনী গত মঙ্গলবার বঙ্গোপসাগর থেকে এফভি কুলসুমা নামের মাছ ধরার একটি নৌকা জব্দ করেছে। মালয়েশিয়াগামী ওই নৌকা থেকে মোট ২২১ জনকে উদ্ধার করা হয়। উদ্ধারকৃতদের মধ্যে ১৬৭ জনই ছিল রোহিঙ্গা, বাংলাদেশি ছিল ৪২ জন, ১২ জন ছিল দালাল। সূত্র জানায়, পাচারকারীচক্রে যেমন বাংলাদেশিরা জড়িত আছে, তেমনি আছে রোহিঙ্গারাও।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার বাহারছড়া ইউনিয়নের মেরিন ড্রাইভ সংলগ্ন পাঁচটি স্থান মানবপাচারের অন্যতম পয়েন্ট। উদ্ধারকৃত অনেকে পুলিশকে জানিয়েছে, বাহারছড়া ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের কচ্ছপিয়া গ্রামে পাচারকারীচক্রের বিশাল আস্তানা আছে। আছে কমপক্ষে ছয়টি বন্দিশালা। বিভিন্ন এলাকা থেকে লোকজনকে এনে এখানে আটক করে রাখা হয়। টেকনাফ থানার পুলিশ গত জানুয়ারিতে অভিযান চালিয়ে বন্দিশালা থেকে পাচারের জন্য আটকে রাখা কয়েকজন রোহিঙ্গাসহ ১৬ জনকে উদ্ধারও করেছিল।

জানা যায়, কচ্ছপিয়া গ্রামের সংঘবদ্ধ পাচারকারীদের হাতে গত তিন মাসে দুই ব্যক্তি নিহত হয়েছেন।

মানবপাচার প্রতিরোধে আমাদের আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলো খুব একটা সফল নয়। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের বার্ষিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, মানবপাচার নির্মূলে বাংলাদেশ ন্যূনতম মানও অর্জন করতে পারেনি, তবে কিছু ক্ষেত্রে অপর্যাপ্ত পদক্ষেপ রয়েছে। কক্সবাজারের পুলিশ সুপার জানান, গত দুই বছর তিন মাসে ১৫৫ জন পাচারকারীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং উদ্ধার করা হয়েছে পাচারের শিকার ৫০০ জনকে। অভিযোগ রয়েছে, ছোটখাটো মানবপাচারকারী গ্রেপ্তার হলেও রাঘব বোয়ালরা ধরাছোঁয়ার বাইরেই থেকে যায়। আবার বিচারকাজে দীর্ঘসূত্রতাও রয়েছে। জামিনে বেরিয়ে এসে অনেকে আবার একই কাজ করে।

মানবপাচার একটি গুরুতর অপরাধ। এর সঙ্গে রাষ্ট্রের মর্যাদার প্রশ্নও জড়িত আছে। তাই মানবপাচারের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে। জড়িতদের দ্রুত বিচারের মাধ্যমে কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। পাশাপাশি অবৈধ পথে বিদেশে না যাওয়ার জন্য ব্যাপক সচেতনতামূলক প্রচারণাও চালাতে হবে।

মন্তব্য

আনন্দ উৎসবে মেতে উঠুক দেশ

    স্বাগত ১৪৩২ সাল
শেয়ার
আনন্দ উৎসবে মেতে উঠুক দেশ

স্বাগত ১৪৩২ সাল। আজ পহেলা বৈশাখ, বাংলা নববর্ষের প্রথম দিন। আবির রাঙানো উষার আলোতে অবগাহন করে বাঙালি মেতে উঠবে প্রাণের উৎসবে। ঐতিহ্যের ধারাবাহিকতায় মিলিত হবে বর্ষবরণের আনন্দ-হিল্লোলে।

গানে, কবিতায়, শিল্পকলা ও চিত্রকলায়, আচারে-অনুষ্ঠানে, প্রথায়নানাভাবে দেশব্যাপী বরণ করা হবে নতুন বছরকে। সব মানুষের কল্যাণ কামনায় বেরোবে বর্ষবরণ আনন্দ শোভাযাত্রা। শহর-নগর-গ্রামেগঞ্জে বসবে বৈশাখী মেলা। প্রভাতের প্রথম কিরণে কোটি বাঙালির কণ্ঠ থেকে নিঃসৃত হবে সেই উজ্জীবনী আবাহন, এসো হে বৈশাখ, এসো এসো
কামনা করা হবে, জীর্ণ-পুরাতনকে দূরে সরিয়ে আনন্দের ডালি নিয়ে আসুক নতুন বছর।

নববর্ষ বরণের সংস্কৃতি চিরন্তন, সর্বব্যাপী। সব দেশ, সব জনগোষ্ঠী নিজ নিজ নতুন বছরে এভাবেই মেতে ওঠে বর্ষবরণের নানা আয়োজনে। বাংলা নববর্ষেও একই রীতি চলে আসছে হাজার বছর ধরে।

মেলা-উৎসবের আয়োজন, হালখাতা তৈরি, মিষ্টান্ন বিতরণ, ভালো ভালো খাবার পরিবেশনএসব বাংলার লোকায়ত ঐতিহ্যেরই অংশ। এই একটি দিনে বাংলার মুসলমান, হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টানে কোনো ভেদাভেদ থাকে না। গত তিন বছর করোনা মহামারির কারণে বাঙালির প্রাণের এই উৎসবে কিছুটা ভাটা পড়েছিল। এবার করোনার প্রকোপ কমে যাওয়ায় পুরো জাতি ভাসবে নববর্ষের আনন্দ উৎসবে, উৎসব হয়ে উঠবে সর্বজনীন।

আজ কিছু মানুষ বাঙালির সুপ্রাচীন এই ঐতিহ্য অস্বীকার করতে চাইছে।

সাম্প্রদায়িক বিভেদের দেয়াল তুলে দিতে চাইছে বর্ষবরণের উৎসবে। বাংলার মানুষ, বাঙালি জাতি এই সর্বজনীন উৎসবের ঐতিহ্যকে অক্ষুণ্ন রাখবে। তাই প্রাণের টানেই বাংলার প্রতিটি প্রান্তে প্রতিটি ঘরে উদযাপিত হবে নববর্ষের উৎসব। একইভাবে পৃথিবীর যেখানেই বাঙালির বসবাস রয়েছে, সেখানেই দৃশ্যমান হবে এমন আয়োজন। প্রকাশ ঘটবে নিজের ইতিহাস ও ঐতিহ্যের প্রতি এক অকৃত্রিম ভালোবাসার।

বাঙালির সংস্কৃতি ধ্বংসের যে অপচেষ্টা তদানীন্তন পাকিস্তানে শুরু হয়েছিল, তার প্রতিবাদ জানাতে গিয়ে ১৯৬৭ সালে রমনার বটমূলে যে আনুষ্ঠানিকতা শুরু করেছিল ছায়ানট, তা আজও বাঙালির এক অমলিন ঐতিহ্য হয়ে টিকে আছে। রাজধানীতে দিন শুরু হবে রমনায় ছায়ানটের বর্ষবরণ অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে। জঙ্গিবাদী অপশক্তির বোমা হামলাও ছায়ানটের এই যাত্রাকে থামাতে পারেনি। অন্যদিকে বাঙালির যে ঐতিহ্য আজ বিশ্ব ঐতিহ্যের অংশ হয়ে গেছে, সেই শোভাযাত্রাও রয়েছে আরো বেশি বর্ণাঢ্য আয়োজনে। রমনায় ছায়ানটের বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে যেমন লাখো মানুষের ঢল নামবে, একই চিত্র দেখা যাবে চারুকলা ইনস্টিটিউটের উদ্যোগে আয়োজিত শোভাযাত্রায়ও। রাজধানীজুড়েই থাকবে উৎসবের আমেজ। থাকবে বন্দরনগরী চট্টগ্রাম, সিলেট, রাজশাহী, খুলনাসহ দেশের বড় শহরগুলোতে। থাকবে গ্রামবাংলায়ও। বর্ষবরণ উৎসবের ক্ষেত্রে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীগুলোকে সর্বোচ্চ পেশাদারির পরিচয় দিতে হবে। প্রাণের উৎসবের স্বতঃস্ফূর্ততায় কোনো শঙ্কা যেন না থাকে।

আজকের এই বিশেষ দিনে সবার একটাই চাওয়া, মুছে যাক গ্লানি, ঘুচে যাক জরা/অগ্নিস্নানে শুচি হোক ধরা। নববর্ষে আমাদের অগণিত পাঠক, বিজ্ঞাপনদাতা ও শুভানুধ্যায়ীকে জানাই নতুন বছরের আন্তরিক শুভেচ্ছা। শুভ নববর্ষ।

মন্তব্য

ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করুন

    পেঁয়াজ নিয়ে অস্বস্তিতে কৃষক
শেয়ার
ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করুন

পেঁয়াজ একটি নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য। সাধারণত মৌসুমে এর দাম কমে যায়। মৌসুম শেষে দাম বাড়তে থাকে। নিকট অতীতে বেশ কয়েকবারই পেঁয়াজের দাম মানুষের উদ্বেগের কারণ হয়েছে।

বর্তমানে পেঁয়াজের ভরা মৌসুম। বাজারে পেঁয়াজের দাম অনেকটাই কমে এসেছে। আর সে কারণে দেখা দিয়েছে ভিন্ন ধরনের সংকট। দাম কমে যাওয়ায় এখন অস্বস্তিতে রয়েছেন কৃষকরা।
গতকাল কালের কণ্ঠে পেঁয়াজের ফলন ও দাম নিয়ে উদ্বেগে কৃষক শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জানা যাচ্ছে, এবার বিঘাপ্রতি ফলন কম হয়েছে। গত বছর যে জমিতে ৯০ মণ পেঁয়াজ হয়েছে, এবার সেখানে পেঁয়াজ হয়েছে ৫০ মণ। এর ওপর দামও অনেক কম। গত বছর এ সময়ে প্রায় দুই হাজার টাকা মণ দরে পেঁয়াজ বিক্রি করলেও এ বছর এক হাজার ২০০ টাকায় বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন।
এতে প্রতি বিঘা জমিতে কৃষকের ক্ষতি হচ্ছে আট থেকে ১০ হাজার টাকা।

চাষিরা বলছেন, বীজ প্রতারণা ও প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে এবার ফলন কম। তাঁদের অভিযোগ, মৌসুমের শুরুতে ভর্তুকির পেঁয়াজবীজ নিয়ে অনেক কৃষক প্রতারিত হন। পরে সরকার পুনরায় কৃষকদের বীজ দিয়েছে। কিন্তু এবার বৃষ্টিপাত কম হওয়ায়, বালাইনাশক ও ওষুধের দাম বেশি হওয়ায় এবং পোকার আক্রমণের কারণে ফলন কম হয়েছে।

পেঁয়াজ তোলার সময় শ্রমিকপ্রতি ৮০০ থেকে ৯০০ টাকা খরচ করতে হয়েছে। সব মিলিয়ে এ বছর যে উৎপাদন খরচ হয়েছে, বিক্রি করতে হচ্ছে তার চেয়ে অনেক কম দামে। কৃষকরা বলছেন, পেঁয়াজের দাম দুই হাজার টাকার ওপরে হওয়া প্রয়োজন।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য মতে, বাংলাদেশে দুই ধাপে পেঁয়াজ উৎপাদন হয়। মুড়ি কাটা বা মূল কাটা পেঁয়াজ, যা গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ নামে পরিচিত। অন্যটি শীতের পেঁয়াজ। পেঁয়াজের উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য বেছে নেওয়া হয় গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজকে। দুই মৌসুম মিলে গত অর্থবছরে দেশে পেঁয়াজ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল ৩৬ লাখ টন। উৎপাদিত হয়েছিল ৩৪ লাখ ১৭ হাজার টন।

পচনশীল বলে কৃষকরা দীর্ঘ সময় পেঁয়াজ ধরে রাখতে পারেন না। সংরক্ষণব্যবস্থা বা হিমাগারের অভাব রয়েছে। এতে বছরে কয়েক লাখ টন পেঁয়াজ পচে নষ্ট হয়। ফলে চাহিদার তুলনায় বেশি উৎপাদিত হলেও প্রতিবছর প্রচুর পেঁয়াজ আমদানি করতে হয়। আর চাষিরা বাধ্য হন মৌসুমে কম দামে বা লোকসানে হলেও পেঁয়াজ বিক্রি করে দিতে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, পেঁয়াজে স্বয়ংসম্পূর্ণ হতে সারা দেশে গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজের আবাদ বাড়াতে হবে। উচ্চফলনশীল বিভিন্ন জাত, বিশেষ করে বারি-৫ জাতের পেঁয়াজের চাষ সারা দেশে দ্রুত ছড়িয়ে দিতে হবে। এ ছাড়া কৃষককে আর্থিক সুবিধা দিতে স্বল্প সুদে কৃষিঋণ বিতরণ করা এবং মৌসুুমে ভালো দামের নিশ্চয়তা দিতে হবে। পেঁয়াজ সংরক্ষণ করার আধুনিক ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে।

প্রাসঙ্গিক
মন্তব্য

কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে

    সুন্দরবন ও কক্সবাজারে জলদস্যু আতঙ্ক
শেয়ার
কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে

সুন্দরবন ও কক্সবাজার এলাকায় জলদস্যুদের উৎপাত অনেক বেড়ে গেছে। জেলে, বাওয়ালি, মৌয়ালসহ বিভিন্ন পেশার লোকজনের মধ্যে রীতিমতো আতঙ্ক বিরাজ করছে। অনেককে ধরে নিয়ে যাচ্ছে। নির্যাতন করে মুক্তিপণ আদায় করছে।

অনেককে হত্যাও করছে। গতকাল কালের কণ্ঠে প্রকাশিত প্রতিবেদনে দেখা যায়, সুন্দরবন ও কক্সবাজার এলাকায় যে দেড় শতাধিক জলদস্যু অস্ত্রসহ আত্মসমর্পণ করেছিল, তারাও আবার নতুন করে দস্যুতায় নেমেছে। বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, এরই মধ্যে সুন্দরবনে নতুন করে অন্তত ১০টি জলদস্যু বাহিনী গড়ে উঠেছে। গত দুই মাসে সুন্দরবনে অন্তত ১৫০ জন জেলেকে অপহরণ করে ১০ হাজার থেকে এক লাখ টাকা পর্যন্ত মুক্তিপণ আদায় করা হয়েছে।

গত শুক্রবার সন্ধ্যায় কোস্ট গার্ডের মিডিয়া কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কমান্ডার সিয়াম উল হক কালের কণ্ঠকে বলেন, ২০১৮ সালের ১ নভেম্বর সুন্দরবন দস্যুমুক্ত ঘোষণা হওয়ায় এ অঞ্চলের জেলেরা ভালোই ছিল, কিন্তু সম্প্রতি আবারও বন ও জল দস্যুদের তৎপরতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। তিনি বলেন, বাংলাদেশ কোস্ট গার্ডের অধীন এলাকাগুলো মৎস্যজীবীদের নিরাপত্তা বিধান, জলদস্যু ও বনদস্যু দমন এবং নিরাপদ সুন্দরবন নিশ্চিত করতে ২৪ ঘণ্টা টহল অব্যাহত রাখা হয়েছে। সবার সহযোগিতা নিয়ে আমরা আবারও জলদস্যুমুক্ত করব। জানা যায়, সর্বশেষ গত বুধবারও ছয়জন নারীসহ ৩৩ জন জেলেকে অপহরণ করা হয়েছে।

পরে কোস্ট গার্ড তৎপর হয়ে তাঁদের উদ্ধার করে।

বরগুনার সকিনার মোহনাসংলগ্ন বঙ্গোপসাগরে ডাকাতের কবলে পড়া চারটি ফিশিং ট্রলারসহ ৬৭ জন জেলেকে উদ্ধার করেছে বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড। শুক্রবার বিকেলে কোস্ট গার্ডের মিডিয়া কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কমান্ডার সিয়াম উল হক এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, গত ২ এপ্রিল বরগুনা জেলার পাথরঘাটা থেকে চারটি ফিশিং ট্রলার (এমভি তারেক, আব্দুল্লাহ তুফান, এমভি মা ও জুনায়েদ ইসলাম) ৬৭ জন জেলেসহ মাছ শিকারের উদ্দেশ্যে গভীর সমুদ্রে যায়। এরপর গত ৯ এপ্রিল আনুমানিক রাত ১১টায় বরগুনার তালতলী উপজেলাধীন সকিনার মোহনাসংলগ্ন বঙ্গোপসাগরে জলদস্যুরা ট্রলারগুলোতে আক্রমণ করে।

এতে দুই জেলে গুলিবিদ্ধ হন এবং যাওয়ার আগে জলদস্যুরা ট্রলারগুলোর ইঞ্জিন বিকল করে দেয়। পরে ১০ এপ্রিল দুপুর ১২টায় ট্রলার মালিক সেলিম চৌধুরী বিষয়টি কোস্ট গার্ডকে জানান। প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে কোস্ট গার্ড স্টেশন পাথরঘাটার একটি উদ্ধারকারী দল অতি দ্রুত ওই এলাকায় যায় এবং চারটি ফিশিং ট্রলারসহ ৬৭ জন জেলেকে জীবিত উদ্ধার করে নিয়ে আসে। এদিকে গত বৃহস্পতিবার সুন্দরবনে কাঁকড়া ধরতে গিয়ে জাহিদ হাসান (২৬) নামের এক যুবক গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। তাঁর দাবি, সুন্দরবনের গহিনে দুই দল বনদস্যুর গোলাগুলির মধ্যে তিনি পড়ে গিয়েছিলেন। এখন খুলনা মেডিক্যাল কলেজ (খুমেক) হাসপাতালে তিনি চিকিৎসাধীন। প্রতিনিয়ত এ রকম অনেক ঘটনা ঘটছে।

জেলে, মৌয়ালদের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড ছাড়াও সুন্দরবন ও কক্সবাজারে প্রচুর পর্যটক যাওয়া-আসা করে। অর্থনীতিতে তারও বড় অবদান আছে। জলদস্যুদের উৎপাত বন্ধ করতে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে।

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ