<p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বাংলাপিডিয়ার তথ্য মতে, একটা সময় বিশ্বে ১,৮১,০০০ বর্গকিলোমিটার এলাকাজুড়ে ম্যানগ্রোভ বন ছিল। বর্তমানে এ বনের মোট আয়তন ১,৫০,০০০ বর্গকিলোমিটারেরও কম। এখন পর্যন্ত ১০২টি দেশে ম্যানগ্রোভ বনের অস্তিত্ব পাওয়া গেলেও মাত্র ১০টি দেশে আছে বেশির ভাগ অংশ। ম্যানগ্রোভ অঞ্চলে ১২০টির মতো উদ্ভিদের প্রজাতি আছে, যেগুলো অন্য কোথাও পাওয়া যায় না। বিশ্বজুড়ে উপকূলীয় অঞ্চলগুলোতে গড়ে ওঠা বিশেষ ধরনের বন ম্যানগ্রোভ বন হিসেবে খ্যাত। এটি শুধু প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের আধার নয়, উপকূলীয় বাস্তুতন্ত্রের অন্যতম রক্ষাকবচ। বাংলাদেশে সুন্দরবন এর শ্রেষ্ঠ উদাহরণ। এই বন জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবেলা এবং উপকূলীয় জনগোষ্ঠীর টিকে থাকার ক্ষেত্রে অনন্য ভূমিকা পালন করছে। ম্যানগ্রোভ বন সাধারণত লবণাক্ত বা অর্ধলবণাক্ত জলাভূমিতে গড়ে ওঠে। এই বনের উদ্ভিদ প্রজাতি বিশেষ ধরনের শ্বাসমূলের সাহায্যে পানি ও লবণ সহ্য করতে পারে। ম্যানগ্রোভ বন উপকূলীয় অঞ্চলকে প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে রক্ষা করে। ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছ্বাস ও সুনামির মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় বনটি ঢাল হিসেবে কাজ করে, ঢেউয়ের শক্তি শোষণ করে এবং ক্ষয়ক্ষতি কমায়। একই সঙ্গে ম্যানগ্রোভ বন মাটির ক্ষয়রোধ করে। কার্বন ডাই-অক্সাইড শোষণ করে জলবায়ু পরিবর্তনের গতি কমাতে সহায়তা করে। সুন্দরবন ইউনেসকোর বিশ্ব ঐতিহ্য তালিকায় অন্তর্ভুক্ত এবং জীববৈচিত্র্যের অনন্য এক ভাণ্ডার। এই বন রয়েল বেঙ্গল টাইগার, চিত্রা হরিণ, মেছো বাঘ, কুমির, ডলফিনসহ অসংখ্য প্রাণীর আবাসস্থল। এটি শুধু বন্য প্রাণীর জন্যই নয়, লাখো মানুষের জীবিকার সঙ্গেও ওতপ্রোতভাবে জড়িত। মধু সংগ্রহ, মাছ ধরা এবং পর্যটন এসবের মাধ্যমে স্থানীয় জনগোষ্ঠী উপার্জন করে। সুন্দরবন ছাড়া কক্সবাজারে মাতামুহুরী নদীর মোহনায় ম্যানগ্রোভ বন আছে, এটি </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">চকোরিয়া সুন্দরবন</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"> নামে পরিচিত। বঙ্গোপসাগরে সেন্ট মার্টিন দ্বীপের দক্ষিণাংশেও আছে ছোট একটি ম্যানগ্রোভ বন।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বিগত কয়েক দশকে বিশ্বব্যাপী ম্যানগ্রোভ বন দ্রুত ধ্বংস হচ্ছে। অবকাঠামোগত উন্নয়ন, চিংড়ি চাষ এবং দূষণের কারণে এই বন প্রতিনিয়ত সংকুচিত হচ্ছে। জাতিসংঘের প্রতিবেদন অনুযায়ী, প্রতিবছর ১ থেকে ২ শতাংশ হারে ম্যানগ্রোভ বন হারিয়ে যাচ্ছে। এর ফলে জীববৈচিত্র্যের ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে এবং উপকূলীয় অঞ্চলের প্রাকৃতিক রক্ষাকবচ দুর্বল হয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশও এই সংকট থেকে মুক্ত নয়। সুন্দরবনের আশপাশে শিল্পকারখানা স্থাপন এবং বন উজাড়ের কারণে এই মূল্যবান সম্পদ হুমকির মুখে। তেল ও কয়লা পরিবহনসংক্রান্ত দুর্ঘটনা সুন্দরবনের পরিবেশের ওপর মারাত্মক প্রভাব ফেলেছে।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:right"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><strong><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">আল সানি</span></span></strong></span></span></span></p>