<p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলার প্রত্যন্ত গ্রাম সেরাল। এই গ্রামে উঁচু প্রাচীরঘেরা একটি দোতলা ভবন। বাড়ির সামনে কোনো নামফলক না থাকলেও সবাই জানে এটি </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">ভাইয়ের বাড়ি</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">। তিনি ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ফুফাতো ভাই আবুল হাসানাত আবদুল্লাহ। বরিশালে এসে তিনি থাকতেন এই বাড়িতে। তখন বাড়িটি গভীর রাত পর্যন্ত সরগরম থাকত। বাড়ির সামনে দেখা যেত জনপ্রতিনিধি আর প্রশাসনের কর্মকর্তাদের গাড়ির সারি। রাস্তায় থাকত পুলিশ পাহারা। শেখ হাসিনার সরকারের পতনের আগেই হাসানাত দেশ ত্যাগ করেন। সেই থেকে বাড়িটিতে ভূতুড়ে পরিবেশ। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">১৫ বছর ধরে বরিশাল অঞ্চলের </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">সব ক্ষমতার</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"> কেন্দ্রবিন্দু ছিল এই বাড়ি। হাসানাত এই বাড়িতে বসেই বিভাগের ২১টি সংসদীয় আসনের মধ্যে ১৫টি নিয়ন্ত্রণ করতেন। মন্ত্রী-এমপি থেকে শুরু করে ইউপি চেয়ারম্যানরা আসতেন ভাইয়ের বাড়িতে। বরিশাল অঞ্চলের আওয়ামী লীগে পদ বণ্টন থেকে শুরু করে সব রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালিত হতো এই বাড়ি থেকে। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><strong><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">রাজনীতিতে যেভাবে উত্থান</span></span></strong></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বঙ্গবন্ধুর ভাগ্নে হাসানাত পারিবারিক প্রভাবে ১৯৭৩ সালে বরিশাল উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। পৌরসভারও চেয়ারম্যান ছিলেন। ১৯৯১ সালে বরিশাল-১ (গৌরনদী-আগৈলঝাড়া) আসন থেকে প্রথম সংসদ সদস্য (এমপি) নির্বাচিত হন তিনি। ১৯৯৬ সালে একই আসনে জয়ের পর হন চিফ হুইপ। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">২০০১ সালের নির্বাচনে পরাজয়ের পর ভারতে চলে যান হাসানাত। বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে তাঁর বিরুদ্ধে দুটি মামলায় ৩৩ বছরের কারাদণ্ডাদেশ হয়। এতে ২০০৮ সালের নির্বাচনে তিনি অংশ নিতে পারেননি। মামলা প্রত্যাহারের পর ২০০৯ সালের ১৩ অক্টোবর বরিশালে ফেরেন। তারপর ধারাবাহিকভাবে টানা তিনবার এমপি হয়েছেন। তিনি পার্বত্যচুক্তি বাস্তবায়ন ও পরিবীক্ষণ কমিটির আহ্বায়ক (মন্ত্রীর পদমর্যাদা) ছিলেন। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><strong><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">নিয়ন্ত্রণে ছিল ১৫ আসন </span></span></strong></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">১৯৮১ সালের ১৭ মে শেখ হাসিনা দেশে ফিরলে হাসানাত আওয়ামী লীগে সক্রিয় হতে থাকেন। দক্ষিণাঞ্চলে আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ নেতা হয়ে ওঠেন। ২০১২ সালের ২৭ ডিসেম্বর তিনি জেলা সভাপতি হন। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">প্রায় ১৫ বছর বরিশাল বিভাগের ছয় জেলা ও ৪২টি উপজেলায় বেশির ভাগ কমিটিই হয়েছে হাসানাতের পছন্দে। স্থানীয় সরকার নির্বাচনে তিনি মনোনয়ন বোর্ডের সদস্য ছিলেন। সেই ক্ষমতাবলে মনোনয়ন বাণিজ্য করতেন। অভিযোগ রয়েছে, তিনি আওয়ামী লীগ ও তার সহযোগী এবং ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের পদ বিক্রি করতেন। এভাবে তিনি দক্ষিণাঞ্চলে আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">গডফাদার</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"> বনে যান।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বরিশাল মহানগর আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মীর আমিন উদ্দীন বলেন, হাসানাত নিজেই শুধু গডফাদার ছিলেন না, তিনি বিভাগজুড়ে অন্তত অর্ধশতাধিক গডফাদার তৈরি করেন। স্থানীয় ওই গডফাদাররা টাকার বিনিময়ে দলীয় পদ বিক্রি করতেন। শুধু দলীয় নয়, তাঁরা মনোনয়ন বাণিজ্যও করতেন। তাঁরা ১৫ বছরে  স্থানীয় পর্যায়ে এহেন কোনো দুর্নীতি, অপকর্ম নেই</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">—</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">যা করেননি। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><strong><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">টাকার বিনিময়ে মনোনয়ন</span></span></strong></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">হাসানাতের গঠিত সিন্ডিকেট স্থানীয় সরকার নির্বাচনে মনোনয়ন পাইয়ে দিত। আওয়ামী লীগের অনেক নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, টাকার বিনিময়ে হাসানাত নৌকার মনোনয়ন পাইয়ে দিয়েছেন। হাসানাত পরিবারকে টাকা না দেওয়ায় বিগত ১৫ বছরে আওয়ামী লীগের অনেক প্রবীণ নেতা স্থানীয় সরকার নির্বাচনে মনোনয়ন পাননি। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বরিশাল-৪ (হিজলা-মেহেন্দিগঞ্জ) আসনের সাবেক এমপি পঙ্কজ নাথ বিভিন্ন সভা-সমাবেশে হাসানাতকে ইঙ্গিত করে বলতেন, উড়ে এসে জুড়ে বসা প্রার্থী টাকার বিনিময়ে দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন। কিন্তু তৃণমূলের নেতাকর্মীরা নৌকা নয়, টাকার বিনিময়ে চুরি করা নৌকা উদ্ধারের জন্য তাঁদের ভোট দিয়ে বিজয়ী করবেন। পঙ্কজ ভোটের মাঠে সেটা প্রমাণ করেন। দুই উপজেলার অন্তত ১১ জন নৌকার প্রার্থীকে বিপুল ভোটে হারিয়ে বিদ্রোহীরা বিজয়ী হয়েছিলেন।  </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">হাসানাতের প্রভাবে ২০২১ সালের ইউপি নির্বাচনে আগৈলঝাড়া ও গৌরনদী ইউপিতে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় অন্তত ৯ জন চেয়ারম্যান হন। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">দলের একটি সূত্র জানায়, ২০১৬ সালের ইউপি নির্বাচনে মনোনয়নের জন্য প্রত্যেক চেয়ারম্যান প্রার্থীর কাছ থেকে ৫০ লাখ টাকা নেয় হাসানাতের পরিবার। ২০২২ সালের ইউপি নির্বাচনে মনোনয়নের জন্য তাঁদের দিতে হয়েছে এক কোটি টাকা করে। বিষয়টি তখন ওপেন সিক্রেট ছিল। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">স্থানীয় সরকার নির্বাচনে বরিশালের বিভিন্ন উপজেলার ইউপি চেয়ারম্যান, উপজেলা চেয়ারম্যান ও মেয়র পদে মনোনয়ন পেতে টাকা দিতে হতো। গৌরনদী পৌরসভার সাবেক মেয়র ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হারিছুর রহমান এবং আগৈলঝাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবু সালেহ মো. লিটনের মাধ্যমে হাসানাত এই টাকা নিতেন। দুজনই আত্মগোপনে থাকায় তাঁদের সঙ্গে এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><strong><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">ঠিকাদারি নিয়ন্ত্রণ</span></span></strong></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">দলীয় নেতাকর্মী ও ঠিকাদারির সঙ্গে জড়িত অনেকের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, পৌরসভাসহ সরকারের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের উন্নয়ন প্রকল্পের কোনো কাজ কে পাবেন, সেটাও ঠিক করে দিত হাসানাত পরিবার। উন্নয়নকাজের দরপত্র বণ্টন ও কমিশন আদায়ের দায়িত্ব ছিল হারিছুর রহমান হারিছের।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">গৌরনদী পৌর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক পৌর কাউন্সিলর গোলাম আহাদ মিয়া বলেন, হারিছুর রহমানের মাধ্যমে হাসানাতকে ১০ শতাংশ কমিশন দিয়ে তিনি ঠিকাদারি কাজ নিয়েছিলেন। এর বাইরেও মধ্যস্থতাকারী হারিছুরকে দিতে হয়েছে আরো ৪ শতাংশ কমিশন।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">নাম প্রকাশ না করার শর্তে এলজিইডির একাধিক প্রকৌশলী বলেন, তাঁদের সব দরপত্র অনলাইনে জমা দিতে হয়। এখানে যোগসাজশের কোনো সুযোগ নেই। হাসানাত পরিবারের কমিশন আদায়ের বিষয়টা তাঁদের জানা নেই।  </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><strong><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">গায়ের জোরে জমি দখল </span></span></strong></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">কখনো প্রভাব খাটিয়ে, কখনো ভয়ভীতি দেখিয়ে, আবার কখনো নামমাত্র মূল্যে হাসানাত বিগত ১৫ বছরে অনেক জমি দখল করেন। শুধু গৌরনদীতেই হাসানাতের নামে দুই একর ১৮ শতাংশ জমির রেকর্ড হয়েছে। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">ঐতিহ্যবাহী </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">দ্য লক্ষণ দাস সার্কাস</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">-এর মালিক অরুণ দাস। ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের পাশে ৩৪ শতাংশ জমির ওপর তাঁর নির্মীয়মাণ </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">লীলা সিনেমা হল</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">। তিনি অভিযোগ করেন, হাসানাতের পক্ষে আওয়ামী লীগ নেতা আবুল হোসেন মোল্লা ওই জমি বিক্রির প্রস্তাব দেন। তিনি রাজি না হওয়ায় হাসানাত আবদুল্লাহ প্রশাসনকে ব্যবহার করে সার্কাসের শো বন্ধ করে দেন। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">দীর্ঘদিন সার্কাস বন্ধ থাকায় শিল্পী-কলাকুশলীরা সমস্যায় পড়েন। পাশাপাশি সার্কাসের পশুর খাবারের ব্যয় বহন করা তাঁর জন্য কষ্টসাধ্য হয়ে পড়ে। এমন পরিস্থিতিতে তিনি প্রায় দেড় কোটি টাকা মূল্যের নির্মীয়মাণ ওই ভবনসহ জমি মাত্র ৩৬ লাখ টাকা হাসানাতকে লিখে দেন। ওই ঘটনার পর ৯৬ শতাংশ জমির ওপর থাকা দিঘি লিখে নেওয়ার জন্য হাসানাত পুনরায় চাপ সৃষ্টি করেন। অপারগতা প্রকাশ করায় উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক লুৎফর রহমান অরুণ দাসকে প্রাণনাশের হুমকিতে তিনি গৌরনদী যাওয়া বন্ধ করে দেন।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">শুধু সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের জমি নয়, হাসানাতের বিরুদ্ধে দলীয় নেতাকর্মীদের জমি দখলেরও অভিযোগ রয়েছে। পৌর যুবলীগের সদস্য ফিরোজ হাওলাদার বলেন, দক্ষিণ পালরদীর বসতবাড়ির ৫৬ শতাংশ জমি হাসানাত তাঁর নামে দলিল করে দিতে চাপ দেন। রাজি না হওয়ায় বসতভিটার চারপাশ দিয়ে প্রাচীর তুলে দেন। সেই থেকে বসতভিটায় চার দেয়ালে বন্দি অবস্থায় পরিবারটি বাস করছে। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">অভিযোগের বিষয়ে কথা বলার জন্য আওয়ামী লীগ নেতা আবুল হোসেন মোল্লা ও ছাত্রলীগ নেতা লুৎফর রহমানের মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তাঁরা ফোন ধরেননি। তাঁরা দুজন ৫ আগস্টের আগেই এলাকা ছেড়ে আত্মগোপনে চলে গেছেন বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন।  </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><strong><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">কথা না শুনলেই বদলি, মামলা-নির্যাতন</span></span></strong></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) গাজী তারিক সালমন আট মাস আগৈলঝাড়া কর্মরত ছিলেন। সরকারি বিভিন্ন প্রকল্পের কাজ সঠিকভাবে সম্পন্ন করতে তিনি তৎপর ছিলেন। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় নিয়মিত ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করতেন। পরীক্ষায় অসদুপায় অবলম্বনের ঘটনায় সেরনিয়াবাত পরিবারের এক সদস্যকে তিনি জেলেও পাঠান। এসব কারণে হাসানাত তাঁর ওপর ক্ষুব্ধ ছিলেন।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">এ থেকেই বঙ্গবন্ধুর ছবি দিয়ে আমন্ত্রণপত্র ছাপানোয় ছবি বিকৃতির অভিযোগে তাঁর বিরুদ্ধে মানহানি এবং ক্ষতিপূরণের মামলা হয় ২০১৭ সালের ৭ জুন। বরিশাল আইনজীবী সমিতির সভাপাত সৈয়দ ওবায়দুল্লাহ সাজু মামলা করেন। পরে তারিক সালমনকে বরগুনা সদরের ইউএনও হিসেবে বদলি করা হয়। মামলায় জামিন নিতে ১৯ জুলাই তিনি বরিশাল আদালতে আসেন। আদালত তাঁর জামিন নামঞ্জুর করেন। একই সঙ্গে ইউএনও তারিক সালমনকে হাতকড়া পরিয়ে জেলে নিয়ে যাওয়া হয়। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">ঘটনাটি জনপ্রশাসনের কর্মকর্তাদের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে। তাঁদের একটি সংগঠনের পক্ষ থেকে ঘটনার নিন্দা জানিয়ে বিবৃতি দেওয়া হয়। এমনকি তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও অসন্তোষ প্রকাশ করেন। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">হাসানাতের ছেলে সাবেক সিটি মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ অন্তত দুজন ইউএনওকে লাঞ্ছিত করেন। সেই ঘটনা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) বরিশাল মহানগর  শাখার সম্পাদক রফিকুল আলম বলেন, রাজনৈতিক দুর্বৃত্তায়নের চিত্র সারা দেশে একই ছিল। তারই অংশ হিসেবে বিভাগজুড়ে আওয়ামী লীগের অনেক নেতা ও জনপ্রতিনিধি ক্ষমতার অপব্যবহার করেছেন। যাঁরা দুর্বৃত্তায়ন করেছেন, তাঁরা বরিশাল ছেড়ে পালিয়েছেন। তাঁদের অপকর্মের কারণে আওয়ামী লীগের অনেক নিরীহ নেতাকর্মী এখন ভুক্তভোগী।</span></span></span></span></p>