<p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">রাজস্ব খাত সংস্কারের পরামর্শ থাকলেও বাস্তবায়নের রূপরেখা নেই শ্বেতপত্রে। প্রতিবেদনে অভ্যন্তরীণ রাজস্ব আদায় টেকসই করতে স্বল্পমেয়াদি, মধ্যমেয়াদি ও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা তুলে ধরা হয়েছে। রূপরেখায় দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রণালয় কোনটি, কোন দপ্তর নেতৃত্ব দেবে, কিভাবে করা হবে, কত সময়ের মধ্যে করা হবে এবং এতে কী লাভ হতে পারে ইত্যাদি দেখানো হয়েছে। এতে আরো বলা হয়েছে, অর্থ মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে এক বছরের মধ্যে রাজস্বনীতি ইউনিট তৈরি করতে হবে। এতে সামগ্রিকভাবে রাজস্বনীতি ও প্রশাসন পরিচালনার মান উন্নত হবে। তবে কী প্রক্রিয়ায় হবে তার সুনির্দিষ্ট পথনকশা নেই।</span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">জানা যায়, রাজস্ব খাতের বাজেট ও নীতি প্রণয়নের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত থাকে এনবিআরের আয়কর, ভ্যাট ও কাস্টমসের নীতি শাখা। এই শাখাগুলোতে যুক্ত থাকে একজন সংশ্লিষ্ট নীতির সদস্য, প্রথম সচিব, দ্বিতীয় সচিব ও তার দল। এই শাখার কর্মকর্তারা সারা বছরই নীতি প্রণয়ন ও বিভিন্ন বিষয়ে নীতিগত জটিলতা হলে আইন অনুযায়ী সেই বিষয়ের ব্যাখা দিয়ে থাকেন।</span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">শ্বেতপত্র কমিটি বর্তমানে এই কাজ যারা করছেন, তাদের কাজের কোনো ত্রুটি উল্লেখ করেনি। অথচ প্রতিবেদন বলছে, পরিবর্তনে সামগ্রিকভাবে রাজস্বনীতি ও প্রশাসন পরিচালনার মান উন্নত হবে। এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটির একজন সদস্য কালের কণ্ঠকে বলেন, </span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">‘</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">আমরা যেসব সুপারিশ দিয়েছি তা এনবিআর চেয়ারম্যানের সঙ্গে পরামর্শ করেই করেছি। সাধারণত এনবিআর চেয়ারম্যান যেহেতু প্রশাসন ক্যাডার থেকে আসেন, সেহেতু এনবিআর চেয়ারম্যান হিসেবে কাউকে নিয়োগ দিলে যাতে কমপক্ষে তিন বছরের জন্য করা হয়।</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">’</span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">এই প্রতিবেদনে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন এনবিআর কর্মকর্তারা। নাম প্রকাশ না করার শর্তে কালের কণ্ঠকে তারা বলেন, </span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">‘</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">নীতি ও প্রশাসন এখন তো আলাদাই আছে। মাঠ পর্যায়ে কাজ না করলে কেউ বিষয়ভিত্তিক জ্ঞান অর্জন করতে পারে না। এনবিআরের আয়কর, ভ্যাট ও কাস্টমস শাখার খুঁটিনাটি সমস্যা নিয়ে অংশীজনরা আমাদের কাছে এলে অনেক ক্ষেত্রে তার সমাধানের জন্য সংশ্লিষ্ট ক্যাডারের কয়েকজন কর্মকর্তার সমন্বয়ে কমিটি করে সিদ্ধান্ত নিতে হয়। এখন অন্য ক্যাডারের একজন এই কাজ করবেন কিভাবে?</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">’</span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">সামগ্রিক রাজস্ব খাতে মোটাদাগে ছয়টি সমস্যা তুলে ধরেছে শ্বেতপত্র কমিটি। সেগুলো হলো : দুর্বল কর-জিডিপি অনুপাত, রাজস্ব আদায়ে পরোক্ষ করের আধিক্য, করজালের বিস্তারে ব্যর্থতা, রাজনৈতিক বিবেচনায় প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ করে ব্যাপক ছাড়, এনবিআর ও এনবিআরবহির্ভূত রাজস্ব আদায়ে ঘাটতি।</span></span></span></span></span></p> <p> </p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><strong><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">সরকারি বিনিয়োগ-দুর্নীতির শেকড়</span></span></span></strong></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">বিগত ১৫ বছরে দেশে বিভিন্ন ধরনের অবকাঠামো নির্মাণ করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে ব্রিজ, রাস্তা, হাইওয়ে, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি, এক্সপ্রেসওয়ে, শহুরে পরিবহন। এসব প্রকল্প বাস্তবায়নের নামে দেশের অভ্যন্তরীণ ও বিদেশি ঋণের পরিমাণ বেড়েছে। ফলে বর্তমানে দেশের ঋণের পরিমাণ ১৫৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। এর ৬০.৭৩ শতাংশ অভ্যন্তরীণ এবং বাকি ৩৯.২৭ শতাংশ বিদেশি ঋণ। এখন দেশের প্রতিটি মানুষের ঘাড়ে ৯৮ হাজার ৫৫৪ টাকার ঋণ। এই টাকা বিগত সরকারের প্রত্যক্ষ মদদে রাজনীতিবিদ, সরকারি কর্মকর্তা ও অন্য অংশীজনরা ভাগবাটোয়ারা করে নিয়েছেন।</span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">টিআইবির ২০২১ সালের গবেষণা প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে শ্বেতপত্রে বলা হয়েছে, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থার সেবায় ৭৪.৪ শতাংশ, পাসপোর্টে ৭০.৫ শতাংশ, বিআরটিএ সেবায় ৬৮.৩ শতাংশ, বিচারিক সেবায় ৫৬.৮ শতাংশ, স্বাস্থ্যসেবায় ৪৮.৭ শতাংশ, স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানে ৪৬.৬ শতাংশ এবং ভূমি সেবায় ৪৬.৩ শতাংশ মানুষকে ঘুষ দিতে হয়েছে। জনপ্রতি গড়ে ঘুষ দিতে হয়েছে ছয় হাজার ৬৩৬ টাকা। মোট ঘুষের পরিমাণ প্রায় ১০ হাজার ৮৩০.১ কোটি টাকা, যা ২০২০-২১ অর্থবছরের জাতীয় বাজেটের ৫.৯ শতাংশ ও জিডিপির ০. ৪ শতাংশ।</span></span></span></span></span></p> <p> </p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><strong><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">পাচারের টাকা ফেরানোর পরামর্শ</span></span></span></strong></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">বিভিন্নভাবে দেশের বাইরে পাচার হয়ে গেছে অনেক টাকা। এই টাকা কিভাবে ফেরত আনা যায় সে বিষয়ে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে প্রতিবেদনে। সরকারি কর্মকর্তারা তাদের সম্পদের হিসাব দিতে অনিচ্ছা প্রকাশ করছেন। তারাই বিভিন্নভাবে যত সব দুর্নীতি করা হয়েছে তার সঙ্গে যুক্ত। সরকারি কর্মকর্তা, প্রকল্প পরিচালক, মন্ত্রী, এমপিরা টাকা পাচার করে তাদের পরিবারের নামে কানাডা, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, সিঙ্গাপুরের মতো দেশে পাঠিয়েছেন। </span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">এ ছাড়া জিডিপি প্রবৃদ্ধি, মূল্যস্ফীতি, বৈদেশিক ভারসাম্য, ব্যাংকিং খাতের পরিস্থিতি, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি পরিস্থিতি, সরকারের ঋণ, পরিসংখ্যানের মান, বাণিজ্য, রাজস্ব, ব্যয়, মেগাপ্রকল্প, ব্যবসার পরিবেশ, দারিদ্র্য ও সমতা, পুঁজিবাজার, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, নারী, জলবায়ু ইস্যুসহ বিভিন্ন বিষয়ে পর্যবেক্ষণ দিয়েছে কমিটি। পদ্মা সেতু, রেল সংযোগ, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র, মাতারবাড়ী বিদ্যুৎকেন্দ্র ও কর্ণফুলী টানেলের মতো মেগাপ্রকল্পের ওপর তাদের পর্যবেক্ষণ তুলে ধরা হয়েছে। কমিটির পর্যবেক্ষণ বলছে, রাষ্ট্রীয় ভুল নীতি ও ফ্যাসিস্ট সরকারের প্রত্যক্ষ মদদে প্রতিটি ক্ষেত্রেই সীমাহীন লুটপাট ও অনিয়ম হয়েছে।</span></span></span></span></span></p>