<p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) চাপে অর্থবছরের মাঝামাঝি সময়ে ওষুধ, গুঁড়া দুধ, বিস্কুট, জুস, ফলমূল, সাবান, মিষ্টিসহ ৬৫ পণ্যে ভ্যাট বাড়ানোর সিদ্ধান্তে বিস্মিত ও ক্ষুব্ধ ব্যবসায়ীরা। অংশীজনদের সঙ্গে কোনো রকম পূর্ব আলোচনা ছাড়াই ভ্যাট বাড়ানোর সিদ্ধান্ত মেনে নিতে পারছেন না তাঁরা। এতে মানুষের ক্রয়ক্ষমতা কমার পাশপাশি নতুন করে চাপে পড়বে শিল্প।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের মাঝপথে এসে হঠাৎ ভ্যাট, সম্পূরক শুল্কসহ বিভিন্ন ধরনের কর বাড়িয়ে রাজস্ব বাড়ানোর উদ্যোগ নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। এরই অংশ হিসেবে তৈরি পোশাক, মিষ্টি, এসি রেস্তোরাঁ, নন-এসি হোটেলসহ ৬৫ ধরনের পণ্য ও সেবায় ভ্যাট বেড়ে ১৫ শতাংশ হতে পারে। মূল্য সংযোজন কর ও সম্পূরক শুল্ক (সংশোধনী) অধ্যাদেশ, ২০২৫-এর খসড়ায় সংসদবিষয়ক বিভাগের ভেটিং সাপেক্ষে গত বুধবার উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">সরকারের রাজস্ব আদায়ের বড় মাধ্যম ভ্যাট। বর্তমানে ভ্যাট নিবন্ধিত প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা পাঁচ লাখ ২৫ হাজার। এর মধ্যে গড়ে সাড়ে তিন লাখ প্রতিষ্ঠান নিয়মিত ভ্যাট দেয়। এর বাইরে এখনো লাখ লাখ প্রতিষ্ঠান রয়েছে, সেসব প্রতিষ্ঠানকে ভ্যাটের আওতায় আনতে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কার্যকর উদ্যোগ কম।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">ব্যবসায়ী নেতারা বলছেন, ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর ব্যবসা-বাণিজ্য খাত বড় ধরনের ধাক্কা খায়। সেই ক্ষতি কাটিয়ে ওঠা যায়নি। উচ্চ মূল্যস্ফীতিও নিয়ন্ত্রণে আসছে না। এমন পরিস্থিতিতে ভ্যাট বাড়ানোর সিদ্ধান্ত মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">রেস্তোরাঁয় খাবারের বিলের ওপর ১৫ শতাংশ ভ্যাট দিতে হবে। এত দিন এসি রেস্তোরাঁয় খাবারের বিলের ওপর ৫ শতাংশ হারে ভ্যাট নেওয়া হতো। সেটি বাড়িয়ে ১৫ শতাংশ করার নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">এর প্রভাব সম্পর্কে জানতে চাইলে বাংলাদেশ রেস্তোরাঁ মালিক সমিতির মহাসচিব ইমরান হাসান বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">রেস্তোরাঁ মালিকেরা উদ্বিগ্ন। একধাক্কায় ভ্যাট তিন গুণ বাড়ানো হলে ব্যবসায় ভয়াবহ প্রভাব পড়বে। ভ্যাটের সঙ্গে আয়করও বেড়ে যাবে। যাঁরা সব নিয়ম-কানুন মেনে ব্যবসা করেন, তাঁদের ওপরই সব সময় জুলুম হয়। আসলে আইএমএফের পরামর্শে ব্যবসায়ীদের পথে বসানোর পাঁয়তারা চলছে।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">রেস্তোরাঁর পাশাপাশি পোশাক কেনার ক্ষেত্রেও ভ্যাটের হার বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। বর্তমানে তৈরি পোশাকের আউটলেটের বিলের ওপর সাড়ে ৭ শতাংশ ভ্যাট রয়েছে। এটি বাড়িয়ে ১৫ শতাংশ করা হতে পারে। এতে পোশাক কেনার খরচও বাড়বে। এ ছাড়া মিষ্টি কিনতে গেলেও খরচ বাড়তে পারে ভোক্তার। কারণ মিষ্টি কেনায় ভ্যাটহার সাড়ে ৭ শতাংশ থেকে দ্বিগুণ করার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">জানতে চাইলে ফ্যাশন হাউস উদ্যোক্তাদের সংগঠন বাংলাদেশ ফ্যাশন উদ্যোক্তা সমিতির (এফইএবি) সভাপতি আজহারুল হক আজাদ বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">জুলাই-আগস্টে বড় ক্ষতির মুখে পড়তে হয়েছে। সেটি এখনো কাটিয়ে ওঠার সুযোগ হয়নি। ব্যবসা-বাণিজ্য টিকিয়ে রাখতে হলে ভ্যাটের হার বাড়ানোর সুযোগ নেই। এ ক্ষেত্রে ভ্যাটের আওতা বাড়ানোর ওপর জোর দিতে পারে এনবিআর।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বাংলাদেশ মিষ্টি উৎপাদক সমিতির সাবেক সভাপতি মাধব চন্দ্র ঘোষ বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">এমন বড় সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলা উচিত ছিল। আগে একসময় ১৫ শতাংশ ভ্যাট ছিল। সেটি কমিয়ে সাড়ে ৭ শতাংশ করার পর ভ্যাট আদায় বেড়েছিল। কারণ ভ্যাট কম হলে মানুষ স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করে।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">রেস্তোরাঁ, পোশাক, হোটেল ছাড়াও অন্য যেসব খাতে ১৫ শতাংশ ভ্যাট বসতে যাচ্ছে, এর মধ্যে অন্যতম হলো উৎপাদন পর্যায়ে বিস্কুট, আচার, সিআর কয়েল, ম্যাট্রেস, ট্রান্সফরমার, টিস্যু পেপার ইত্যাদি। আকাশপথে ভ্রমণের খরচও বেড়ে যেতে পারে। কারণ আবগারি শুল্ক বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া ড্রাইভিং লাইসেন্সের কার্ড বানানোর সময় ১৫ শতাংশ ভ্যাট আরোপের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">ভ্যাট বাড়ানোর উদ্যোগের পাশাপাশি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের বার্ষিক লেনদেন ৩০ লাখ থেকে ৫০ লাখ টাকা হলেই টার্নওভার কর দিতে হতে পারে। বর্তমানে ৫০ লাখ থেকে তিন কোটি টাকা পর্যন্ত টার্নওভারে কর দিতে হয়। নতুন প্রস্তাব অনুসারে, বার্ষিক লেনদেন ৫০ লাখ টাকা পেরোলে পণ্য ও সেবা বেচাকেনায় ১৫ শতাংশ হারে ভ্যাট বসতে পারে। এ ছাড়া মদের বিলের ক্ষেত্রে সম্পূরক শুল্ক বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো ড. মুস্তাফিজুর রহমান কালের কণ্ঠকে বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">অর্থবছরের মাঝে ভ্যাট বাড়ানো, এটা চাপেই করতে হয়েছে। উচ্চ মূল্যস্ফীতির বাজারে এটা অবশ্যই একটা বাড়তি চাপ তৈরি করবে ভোক্তা ও উৎপাদক পর্যায়ে। সিগারেট বা মদে কর বাড়ানো যৌক্তিক। এ ছাড়া কিছু পণ্য উচ্চমধ্যবিত্তরা ব্যবহার করে। কিন্তু বাকিগুলো নিম্নমধ্যবিত্তরা ব্যবহার করে। এখানে ভ্যাট না বাড়িয়ে কিভাবে প্রত্যক্ষ করের আওতা বাড়াতে পারি, সেই দিক বিবেচনা করা উচিত ছিল। একই সঙ্গে পরোক্ষ কর, যা সর্বস্তরের মানুষের ওপর প্রভাব বিস্তার করে, সেটা কমানোর দিকে জোরালো পদক্ষেপ নেওয়া দরকার।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"> </p> <p style="text-align:left"> </p>