<p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর সহচরবৃন্দ হলেন সাহাবায়ে কিরাম রাদিয়াল্লাহু আনহুম। তারা জীবন বাজি রেখে ইসলামের জন্য আমৃত্যু কাজ করেছেন। তাদের মাধ্যমেই উম্মতের কাছে পৌঁছেছে কোরআন ও সুন্নাহ তথা ইসলামের পুরো শিক্ষা। কাজেই ইসলামে তাদের বিশেষ মর্যাদা রয়েছে।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">সাহাবি বলা হয় তাকে, যিনি ঈমানের সঙ্গে রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে দেখেছেন এবং ইসলামের ওপর ইন্তেকাল করেছেন। ইবনে কাসির (রহ.) বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">যে ব্যক্তি মুসলিম অবস্থায় রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে দেখেছেন তিনিই সাহাবি; যদিও তার দীর্ঘ সাহচর্য নেই বা তার থেকে কোনো হাদিসের বর্ণনা নেই। তবে রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর সাহচর্যের সময় অনুপাতে তাদের সাহাবিত্বের মর্যাদা নির্ণয় করা হয়। ইমাম বুখারি (রহ.) তার সহিহ বুখারির সাহাবিদের মর্যাদা পরিচ্ছেদে বলেছেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">যে ব্যক্তি রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর সাহচর্য লাভ করেছেন অথবা যে মুসলিম তাকে দেখেছেন, তিনি সাহাবিদের অন্তর্ভুক্ত।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"> (বুখারি, পরিচ্ছেদ : সাহাবিদের মর্যাদা)</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">সাহাবিরা আল্লাহর সন্তুষ্টিপ্রাপ্ত : সাহাবিরা মহান আল্লাহর এমন সুপথপ্রাপ্ত বান্দা, যাদের প্রতি আল্লাহ সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন এবং তারাও মন থেকে ইসলাম পেয়ে ও অনুসরণ করে আল্লাহর প্রতি সন্তুষ্ট হয়েছেন। আল্লাহ তাআলা বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">তাদের অন্তরে আল্লাহ ঈমান লিখে দিয়েছেন এবং তাদের শক্তিশালী করেছেন তার অদৃশ্য শক্তি দ্বারা। তিনি তাদের জান্নাতে দাখিল করবেন, যার তলদেশে নদী প্রবাহিত। তারা তথায় চিরকাল থাকবে। আল্লাহ তাদের প্রতি সন্তুষ্ট এবং তারা আল্লাহর প্রতি সন্তুষ্ট। তারাই আল্লাহর দল। জেনে রেখো, আল্লাহর দলই সফলকাম হবে।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">(সুরা : মুজাদালাহ, আয়াত : ২২)</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">সাহাবিরা ক্ষমাপ্রাপ্ত : সাহাবিরা নির্ভুল কিংবা মাসুম ছিলেন না, তবে মাগফুর বা ক্ষমাপ্রাপ্ত ছিলেন। তাই সাহাবিদের কারো কোনো ভুল বা গুনাহ হওয়া স্বাভাবিক। কিন্তু সেই ভুলের ব্যাপারে বেশির ভাগ সাহাবির ভিন্নমত ছিল এবং তা শরিয়তের বিচারে মীমাংসিত। সেই মীমাংসিত সত্যকে ধারণ করার মাধ্যমে সাহাবিদের অনুসরণ করতে হবে; ভুলকে নয়। মনে রাখতে হবে, আল্লাহ আয়াত নাজিলের মাধ্যমে নবীজিকেও সংশোধন করেছিলেন। সেই সংশোধিত বিষয়কেই সত্য হিসেবে গ্রহণ করতে হয় উম্মতকে। সাহাবায়ে কিরামের জন্য আল্লাহর ক্ষমার ঘোষণা রয়েছে। আল্লাহ বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">আল্লাহ অনুগ্রহপরায়ণ হয়েছেন (তাওবা কবুল করেছেন) নবীর প্রতি এবং মুহাজির ও আনসারদের প্রতি, যারা সংকটকালে তাকে অনুসরণ করেছিল। এমনকি তাদের মধ্যে কিছু লোকের অন্তর বেঁকে যাওয়ার উপক্রম হওয়ার পরও আল্লাহ তাদের ক্ষমা করে দিয়েছিলেন। তিনি তাদের প্রতি বড়ই স্নেহশীল, বড়ই দয়ালু।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"> (সুরা : তাওবা, আয়াত : ১১৭)</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">সাহাবিরা যেভাবে সত্যের মাপকাঠি : আহলে সুন্নাত ওয়াল জামা</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">আতের অন্যতম আকিদা হলো, সাহাবায়ে কিরাম সত্যের মাপকাঠি। আল্লাহ বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">অতএব, তারা যদি ঈমান আনে তোমাদের (সাহাবিদের) ঈমান আনার মতো, তাহলে তারা সুপথ পাবে। আর যদি মুখ ফিরিয়ে নেয়, তাহলে তারাই হঠকারিতায় রয়েছে। সুতরাং এখন তাদের জন্য আপনার পক্ষ থেকে আল্লাহই যথেষ্ট। তিনিই শ্রবণকারী, মহাজ্ঞানী।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"> (সুরা : বাকারাহ, আয়াত : ১৩৭) </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">আয়াতে মহান আল্লাহ্ সাহাবায়ে কিরামের ঈমানকে হিদায়াতপ্রাপ্তির মাপকাঠি ঘোষণা করেছেন এবং বলেছেন যে মহান আল্লাহর কাছে সেই ঈমানই গ্রহণযোগ্য, যা রাসুল (সা.) ও সাহাবায়ে কিরাম এনেছিলেন। অন্যত্র আল্লাহ তায়ালা বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">আর যখন তাদের বলা হয়, অন্যরা (সাহাবিরা) যেভাবে ঈমান এনেছে তোমরাও সেভাবে ঈমান আনো, তখন তারা বলে, আমরাও কি ঈমান আনব বোকাদেরই মতো! মনে রেখো, প্রকৃতপক্ষে তারাই বোকা, কিন্তু তারা তা বোঝে না।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">(সুরা : বাকারাহ, আয়াত : ১৩)</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">আয়াত দ্বারা বোঝা যায়, কোনো ব্যক্তির ঈমানের দাবি সঠিক কি না, তা যাচাই করার মাপকাঠি হচ্ছে সাহাবায়ে কিরামের ঈমান। সুতরাং যার ঈমান কোনো বিষয়ে সাহাবায়ে কিরামের ঈমানের সঙ্গে মিলবে না, তার ঈমান আল্লাহ ও তার রাসুল (সা.)-এর কাছে গ্রহণযোগ্য হবে না।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">লেখক : সহযোগী অধ্যাপক, আরবি বিভাগ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়</span></span></span></span></p>