নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের রূপসীতে গাজী টায়ার কারখানায় অগ্নিকাণ্ডের পর চার দিন পার হলেও এখনো উদ্ধারকাজ শুরু না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন নিখোঁজদের স্বজনরা। ছয়তলা কারখানা ভবনের সামনে স্বজনরা এখনো নিখোঁজদের সন্ধানে অপেক্ষায় আছেন। স্বজনদের এই অপেক্ষা কবে শেষ হবে, সবার কাছে ওই একটিই প্রশ্ন। নিখোঁজ রাশিদা বেগমের মেয়ে রুমী বলেন, ‘আমার মা বালুর গদিতে কাজ করে আমাগো তিন বোনরে মানুষ করছে।
চার দিনেও উদ্ধারকাজ শুরু হয়নি, স্বজনদের ক্ষোভ
রাসেল আহমেদ, রূপগঞ্জ

এদিকে গতকাল বুধবার বিকেলে নারায়ণগঞ্জ জেলার অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট হামিদুর রহমানের নেতৃত্বে আট সদস্যের তদন্ত কমিটি পুড়ে যাওয়া কারখানাটি পরিদর্শন করে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, বর্তমানে কারখানা ভবনের আগুন নিভলেও কিছু কিছু অংশ দিয়ে এখনো ধোঁয়া বের হচ্ছে। ছয়তলা ভবনটির তৃতীয় তলা, চতুর্থ তলা, পঞ্চম তলা ও ষষ্ঠ তলার ছাদের বেশ কিছু অংশ ধসে পড়েছে। গতকাল সকাল থেকে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা যেসব জায়গা দিয়ে ধোঁয়া বের হচ্ছিল, সেসব স্থানে পানি ছিটাচ্ছিল।
এদিকে গতকাল বিকেলে কারখানাটি পরিদর্শন শেষে সন্ধ্যা ৬টার দিকে তদন্ত কমিটির সদস্য ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ড্রোন উড়িয়ে ভবনের ভেতরে দেখার চেষ্টা চালান। তবে ড্রোনে ভবনের ভেতরে পোড়া স্তূপ ছাড়া অন্য কিছুই দেখা যায়নি।
নিখোঁজ আবু সাইদের স্ত্রী নাসরিন বেগম বলেন, ‘আমার স্বামী চুরি করতে এসেছিল মানলাম, তাই তাদের পুড়িয়ে মারতে হবে! এটা কেমন বিচার! আমরা ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত চাই।
নোয়াপাড়া এলাকা থেকে আসা জনি মিয়া জানান, তাঁর শ্বশুর ইসমাইল হোসেন স্থানীয় একটি টেক্সটাইল মিলে কাজ করতেন। ২৪ আগস্ট তাঁর শ্বশুর গাজী টায়ার কারখানায় গিয়ে আর ফিরে আসেননি। রাত ১টা থেকে তাঁর মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে।
দুই ছেলে বাবু ও সাব্বিরকে হারিয়ে পাগলপ্রায় মৈকুলী এলাকার কাইয়ুম মিয়া। তিনি বলেন, ‘আমার দুইটা পোলাই সম্বল আছিলো। কেডায় কইছে গাজীর মিলে মাল আনতে যাইতো। মাল আনতে যাওয়াই কাল অইলো আমার দুই পোলার লাইগা। চার দিন অইয়া গেলেও কেউ আমার পোলার লাশটা খুঁইজা আইনা দিতে পারতাছে না।’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ফায়ার সার্ভিসের একজন কর্মকর্তা বলেন, ভবনের যে অবস্থা দেখা যাচ্ছে, তাতে করে ভেতরে গিয়ে উদ্ধার অভিযান চালানো সম্ভব না। মঙ্গলবার রাতে ফায়ার সার্ভিসের কয়েকজন কর্মী সিঁড়ি দিয়ে ছয়তলা পর্যন্ত উঠে টর্চলাইট দিয়ে খোঁজাখুঁজি করলেও ছাইয়ের স্তূপ ছাড়া কিছু পাওয়া যায়নি। তবে দীর্ঘ সময় আগুন জ্বলার কারণে লোহা পর্যন্ত গলে গেছে। ভেতরে মানুষ থাকলে কী অবস্থা হতে পারে ভেবে দেখুন।
পরিদর্শন শেষে সংবাদ সম্মেলনে নারায়ণগঞ্জ জেলার অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট হামিদুর রহমান বলেন, ‘আমি ফায়ার সার্ভিসের সঙ্গে কথা বলেছি, তারা উদ্ধার কার্যক্রম চালাতে পারবে কি না। তারা আমাকে জানিয়েছে চার, পাঁচ ও ছয়তলার ফ্লোরটি ধসে গেছে এবং এখনো আগুন রয়েছে। এই মুহূর্তে উদ্ধার কার্যক্রম চালানো সম্ভব না।’
তিনি আরো বলেন, ‘অগ্নিকাণ্ডের বিষয়ে টেকনিশিয়ানরা আমাদের মতামত দেবে। এ ছাড়া লোকালি যাঁরা ফায়ার সার্ভিসের দায়িত্বে রয়েছেন তাঁরা উদ্ধার কার্যক্রম চালাতে পারবেন কি না তা জানাবেন। নয়তো আমরা ন্যাশনালি সাপোর্টের জন্য সুপারিশ জানাব। আশা করি, ১০ দিনের মধ্যে একটি তদন্ত রিপোর্ট দিতে পারব।’
নিখোঁজদের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘নিখোঁজদের নাম-ঠিকানা লিপিবদ্ধ করে রাখা হচ্ছে। আসলে কয়জন ভেতরে ছিল বা কয়জন মারা গেছে, আমরা সঠিকভাবে বলতে পারছি না। আমাদের ফায়ার সার্ভিসের যে ড্রোন, সেই ড্রোন দিয়ে তারা দেখেছে। ভেতরে লাশ কিন্তু দেখেনি। আমরা মনে করছি, এখানে যেভাবে কেমিক্যাল পুড়েছে, যদি আদৌ লাশ থেকে থাকে সেগুলো আর পাওয়ার সম্ভাবনা নেই। কারণ ২১ থেকে ২২ ঘণ্টা আগুন জ্বলেছে।’
সম্পর্কিত খবর

বাটা কোন দেশের, জানে না লুটপাটকারীরা
- ভাঙচুরের ঘটনায় গ্রেপ্তার ৭২
ওমর ফারুক

খুলনার খালিশপুরের সাজিদ (২০) গত সোমবার যোগ দিয়েছিলেন খুলনা শহরে ইসরায়েলবিরোধী বিক্ষোভ মিছিলে। সেই বিক্ষোভ থেকেই কিছু সুযোগসন্ধানী লোক খুলনা শহরে বাটার শোরুমে প্রথমে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে ভাঙচুর করে। এরপর লুটপাট চালায়। সেই লুটপাটকারীদের মধ্যে ছিলেন সাজিদও।
পুলিশ সাজিদের মতো আরো অনেকের কাছেই জানতে চেয়েছিল, বাটা কোন দেশের প্রতিষ্ঠান। তাঁরা কেউই জানাতে পারেননি। তাহলে কেন তাঁরা হামলা ও লুটপাট করেছেন? এমন প্রশ্নের জবাবে তাঁরা জানান, অনেকেই লুটপাট করেছে, এ কারণে তাঁরাও লুটপাটে যোগ দিয়েছেন।
এ বিষয়ে খুলনার সোনাডাঙ্গা থানার ওসি মো. শফিকুল ইসলাম মোবাইল ফোনে কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘ঘটনার সময় কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। এরপর ভিডিও ফুটেজ দেখে শনাক্ত করে জড়িত আরো অনেককে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। আমরা এখন পর্যন্ত ৩৩ জনকে গ্রেপ্তার করেছি। অন্যদের চিহ্নিত করা হচ্ছে।
এক প্রশ্নের জবাবে শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করছি। তারা জানায়, বাটা ইসরায়েলি পণ্য কি না তারা তা জানে না।’ তিনি আরো বলেন, ‘ঘটনার পর আশপাশের এলাকায় কিছু জুতা পড়ে ছিল, সেগুলো শিক্ষার্থীরা উদ্ধার করে থানায় জমা দেয়। আর যেগুলো লুট হয়েছে সেগুলো আমরা উদ্ধারের চেষ্টা করছি। এখন পর্যন্ত পাঁচ জোড়া জুতা উদ্ধার করা গেছে।
সোনাডাঙ্গা থানার পুলিশ সদস্যরা জানান, গত মঙ্গলবার রাত থেকে গতকাল বুধবার পর্যন্ত পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাঁদের মধ্য রয়েছেন খালিশপুরের বাসিন্দা মো. সাইদ তালুকদার (১৮), খান জাহানআলী থানার বাড়ৈপাড়ার মৃত আনন্দ দাসের ছেলে সবুজ দাস ওরফে মো. আবদুল্লাহ (২৬), খালিশপুরের রাজ শিকদার (২১), মো. আশরাফ হোসেন (২৬) এবং সোনাডাঙ্গার মো. লাল মিয়া (৫২)।
ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে ভাঙচুরের ঘটনায় ৭২ জন গ্রেপ্তার : প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম গতকাল সাংবাদিকদের জানান, গাজায় গণহত্যার প্রতিবাদে গত সোমবার অনুষ্ঠিত বিক্ষোভের সময় দেশের বিভিন্ন স্থানে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ভাঙচুর ও হামলার ঘটনায় ১০টি মামলা করা হয়েছে। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৭২ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
পুলিশ সদর দপ্তরের তথ্যের বরাতে প্রেস সচিব জানান, গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের মধ্যে খুলনায় ৩৩ জন, সিলেটে ১৯ জন, চট্টগ্রামে পাঁচজন, গাজীপুরে চারজন, নারায়ণগঞ্জে চারজন, কুমিল্লায় তিনজন এবং কক্সবাজারে চারজন রয়েছেন। এসব ঘটনা সংক্রান্তে এখন পর্যন্ত মোট ১০টি মামলা করা হয়েছে।
খুলনা থেকে কালের কণ্ঠের খুলনা ব্যুরো প্রধান এইচ এম আলাউদ্দিন জানান, কেএফসি, ডমিনোস পিত্জা ও বাটা শোরুমে হামলা-ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনায় পৃথক তিনটি মামলা করা হয়েছে। তিন মামলায় মোট আসামির সংখ্যা প্রায় তিন হাজার। তবে আসামিরা সবাই অজ্ঞাতপরিচয়। এ ঘটনায় প্রথম দিন ৩১ জনকে গ্রেপ্তার করার পর আরো পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ নিয়ে মোট গ্রেপ্তার হলো ৩৬ জন।

সবিশেষ
বিলুপ্ত ‘ডায়ার উলফ’ ফেরালেন বিজ্ঞানীরা
কালের কণ্ঠ ডেস্ক

টেলিভিশন সিরিজ ফ্যান্টাসি ড্রামা ‘গেম অব থ্রোনস’ বিশ্বজুড়ে জনপ্রিয়তা এনে দিয়েছে ডায়ার উলফকে। এবার জিন প্রযুক্তিবিদ্যায় (জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং) ভর করে প্রায় সাড়ে ১২ হাজার বছর পরে পৃথিবীতে ফিরে এলো নেকড়ের এই প্রজাতি, আদতে যা বিলুপ্ত একটি বিশেষ প্রজাতির সাদা নেকড়ে, যার বিজ্ঞানসম্মত নাম অ্যায়োনোসিয়ন ডায়ারাস।
যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাস অঙ্গরাজ্যের ডালাসভিত্তিক ‘কলোসাল বায়োসায়েন্সেস’ নামের একটি বায়োটেক সংস্থার কর্মকর্তাদের দাবি, জিন প্রযুক্তিবিদ্যার সাহায্যে বিজ্ঞানীরা বিশ্বের প্রথম বিলুপ্ত প্রাণী পুনরুদ্ধারের (ডি-এক্সটিংকশন) কাজটি সফলভাবে সম্পন্ন করেছেন। সফলভাবে পরীক্ষাগারে তিনটি ডায়ার উলফ ছানার জন্ম হয়েছে।

বর্ষবরণের প্রস্তুতি


তবু ফিটনেসহীন গাড়ি বেড়ে ছয় লাখ
- অনুপযুক্ত গাড়ি দেড় বছরে বেড়েছে লাখের ওপরে
ঈদ মৌসুমে ৩১৬ দুর্ঘটনা
বিশেষ প্রতিনিধি

ফরিদপুর সদরের বাখুণ্ডা শরিফ জুট মিলের সামনে গত মঙ্গলবার সকালে চালক নিয়ন্ত্রণ হারালে খাদে পড়ে যায় যাত্রীবাহী বাস। তাতে বাবা-ছেলেসহ প্রাণ হারান সাতজন। পরে যাচাই করতে গিয়ে বিআরটিএ ফরিদপুর কার্যালয়ের কর্মকর্তারা দেখতে পান, বাসের ফিটনেস সনদের মেয়াদ গত ৫ মার্চ শেষ হয়েছে। বিআরটিএ ফরিদপুর কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক নাসির উদ্দিন গতকাল দুপুরে কালের কণ্ঠকে বলেন, হাইডেক্স পরিবহনের এই বাসের ফিটনেস ছিল না।
নিরাপদ ঈদ যাত্রার জন্য ফিটনেসহীন গাড়ি চলাচল রোধে যৌথ অভিযান শুরু করা হয়েছিল গত ২২ মার্চ। বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ-বিআরটিএর হিসাবে গত ১২ মার্চ পর্যন্ত দেশে ফিটনেসহীন গাড়ি ছিল ছয় লাখ ১১ হাজার ১৪১টি। তবে অভিযান চালানোর পরও এ ধরনের অনুপযোগী গাড়ি বাড়ছেই।
গত ১৯ ডিসেম্বর রাজধানীতে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে পরবর্তী এক মাসের মধ্যে রাজধানীতে চলাচলকারী সব ধরনের যানবাহনের ফিটনেস নিশ্চিত করা না হলে বিআরটিএর বিরুদ্ধে ‘কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে’ বলে সতর্ক করেছিলেন সড়ক পরিবহন ও সেতু উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান।
বিআরটিএ ঢাকা বিভাগীয় কার্যালয়ের ফিটনেস শাখার দায়িত্বে থাকা সহকারী পরিচালক মো. রুহুল আমীন গত সন্ধ্যায় কালের কণ্ঠকে বলেন, বিআরটিএর ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানকালে ফিটনেসহীন গাড়ি আটক করে ডাম্পিংয়েও পাঠানো হয়। ২০২৩ সাল থেকে খেলাপি মালিকদের নিয়মিত চিঠিও দেওয়া হচ্ছে। তিনি স্বীকার করেন, ঢাকায়ও ফিটনেসহীন গাড়ি বাড়ছে।
‘সড়ক পরিবহন আইন ২০১৮’-এর ২৫ ধারা অনুযায়ী, বিআরটিএ থেকে মোটরযানের ফিটনেস সনদ নেওয়ার বিধান রয়েছে।
বিআরটিএর সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, দফায় দফায় কর মওকুফের পরও মালিকরা গাড়ির ফিটনেস হালনাগাদ করছেন না। বারবার অভিযান চালানোর পরও এসব গাড়ির মালিকরা কৌশলে গাড়ি চালানোর ব্যবস্থা টিকিয়ে রেখেছেন। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এসব গাড়ির জন্য সড়কে দুর্ঘটনা ও প্রাণহানি বাড়ছে। বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) দুর্ঘটনা গবেষণা ইনস্টিটিউটের হিসাবে, ১৯৯৮ থেকে ২০১৩ পর্যন্ত সংঘটিত সড়ক দুর্ঘটনাগুলোর অন্যান্য কারণের মধ্যে ছিল ৬৬ হাজার ৬৬১টি অনুপযোগী (ফিটনেসবিহীন) গাড়ি। এখনও সড়ক দুর্ঘটনার অন্যতম কারণ এটি। সড়ক নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ড. হাদিউজ্জামান বলেন, সড়কে দুর্ঘটনা বেড়ে যাওয়ার অন্যতম কারণ ফিটনেসহীন গাড়ি। বাস ও ট্রাকের মতো ভারী গাড়ির ফিটনেস তুলনামূলকভাবে কম। গবেষণায় দেখতে পেয়েছি, ২০১৯ সালে সড়ক দুর্ঘটনায় ভারী গাড়ি, বাস ও ট্টাকের সংশ্লিষ্টতা ছিল ৪৩.৪ শতাংশ। ২০২০ সালে তা বেড়ে হয় ৪৪.৫ শতাংশ। এখন তা আরো বেড়েছে।
বিআরটিএর মোটরযান পরিদর্শকরা জানান, কোনো গাড়ি সড়কে চলাচলের উপযোগী কি না, তা যাচাই করার জন্য গাড়ির ৩২টি বিষয় পর্যবেক্ষণ করতে হয়। সব বিষয় খালি চোখে ধরা পড়ে না। মিরপুর ছাড়া বাকি অন্য সব সার্কেলে গাড়ির ফিটনেস পরীক্ষা করা হয় চোখে দেখে। চোখে শুধু গাড়ির বডি, চেসিস নম্বর, ইঞ্জিনের অবস্থা, হেডলাইট ও লুকিং গ্লাস এ ধরনের ছয়-সাতটি অবস্থা দেখে ফিটনেস সনদ দেওয়া হয়। গাড়ির ফিটনেস পরীক্ষা যান্ত্রিকভাবে সম্পন্ন করতে ১৯৯৪ সালে প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়। ২০০৪ সালে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) অর্থায়নে ১০০ কোটি টাকা ব্যয়ে মোট পাঁচটি সেমি অটোমেটিক (আধা-স্বয়ংক্রিয়) ভেহিকল ইন্সপেকশন সেন্টার (ভিআইসি) বা যানবাহন পরীক্ষণকেন্দ্র স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া হয়। শেষ পর্যন্ত শুধু বিআরটিএর মিরপুর কার্যালয়ে এ কেন্দ্র চালু হয়।
ঈদ মৌসুমে ৩১৬ দুর্ঘটনা
যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী। গতকাল বুধবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনি মিলনায়তনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে জানান, ঈদুল ফিতরের আগে-পরে দেশের বিভিন্ন সড়কে ৩১৫টি দুর্ঘটনা ঘটেছে। এসব দুর্ঘটনায় ৩২২ জন নিহত হয়েছেন। প্রতিবারের মতো দুর্ঘটনার শীর্ষে রয়েছে মোটরসাইকেল।
সংবাদ সম্মেলনে দুর্ঘটনার কারণ হিসেবে ফিটনেসহীন গাড়ির কথাও উল্লেখ করা হয়েছে। বলা হয়েছে, দেশের সড়ক-মহাসড়কে মোটরসাইকেল, ব্যাটারিচালিত রিকশা, অটোরিকশা অবাধে চলাচল; জাতীয় মহাসড়কে রোডসাইন বা রোড মার্কিং, সড়কবাতি না থাকায় হঠাৎ ফিডার রোড থেকে যানবাহন উঠে আসা; সড়কে মিডিয়ামে রোড ডিভাইডার না থাকা, অন্ধবাঁকে গাছপালায় দৃষ্টিপ্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি; মহাসড়কের নির্মাণ ত্রুটি, যানবাহনের ত্রুটি, ট্রাফিক আইন অমান্য করার প্রবণতা—উল্টোপথে যানবাহন, সড়কে চাঁদাবাজি, পণ্যবাহী যানে যাত্রী পরিবহন; অদক্ষ চালক, ফিটনেসবিহীন যানবাহন, অতিরিক্ত যাত্রীবহন ও বেপরোয়া যানবাহন চালানো এবং একজন চালক অতিরিক্ত সময় ধরে যানবাহন চালানোয় দুর্ঘটনা ঘটছে।