<p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">দেড় বছর আগে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনা ঘটে। দুই দফায় তদন্ত শেষে বিমানের তৎকালীন উপমহাব্যবস্থাপক (ডিজিএম) মেজর তাইজ ইবনে আনোয়ারসহ ৩০ জনকে অভিযুক্ত করা হয়। তাঁদের মধ্যে ২৭ আসামি জামিনে রয়েছেন। তবে এ মামলার প্রধান আসামি মেজর তাইজ এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে রয়েছেন। তাঁর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি ও ক্রোকি পরোয়ানা দিলেও তা কার্যকর হয়নি। সর্বশেষ আদালতে হাজিরে জাতীয় দুটি পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দিলেও তিনি অধরা রয়েছেন। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">আদালত সূত্রে জানা গেছে, গত ২০ মে আদালত এ মামলার সম্পূরক অভিযোগপত্র আমলে গ্রহণ করেন আদালত। একই সঙ্গে পলাতক আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি ও ক্রোকি পরোয়ানা জারি করা হয়। পরে গত ৯ জুন এ মামলার প্রধান আসামি মেজর তাইজ ইবনে আনোয়ারের স্থায়ী ঠিকানা ফরিদপুরের কোতয়ালি থানায় এ পরোয়ানা পাঠানো হয়। তবে তিন মাস পার হলেও থানা থেকে কোনো পরোয়ানা ফেরত আসেনি। এ জন্য গত ১৪ আগস্ট আদালত ন্যায়বিচারের স্বার্থে পলাতক আসামিদের নামে দুটি জাতীয় পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের নির্দেশ দেন। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">২০২২ সালের ২৬ অক্টোবর প্রশ্ন ফাঁসের ঘটনায় বিমানবন্দর থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করা হয়। তদন্ত শেষে গত বছরের ২২ জুন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও গোয়েন্দা লালবাগ বিভাগের পরিদর্শক আলমগীর হোসেন পাটোয়ারী আদালতে চার্জশিট জমা দেন। গত বছরের ৭ আগস্ট ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক এ এম জুলফিকার হায়াত এ মামলার অভিযোগপত্র আমলে গ্রহণ না করে অধিকতর তদন্তের নির্দেশ দেন। পরে অধিকতর তদন্ত শেষে গত ২২ এপ্রিল গোয়েন্দা লালবাগ বিভাগের সহকারী পুলিশ কমিশনার ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. ফজলুর রহমান আদালতে সম্পূরক অভিযোগপত্র দাখিল করেন। তবে মামলার ঘটনা ২০১৮ সালের ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের আওতায় না পড়ায় পেনাল কোডের ৪২০/৪০৩/৪০৬/৪১১/১০৯ ধারায় অভিযোগপত্র দেওয়া হয়।  </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">তাইজ বাদে অন্য আসামিরা হলেন বিমানের সিডিউলিং সুপারভাইজার মাহবুব আলম শরীফ, সিকিউরিটি গার্ড আইউব উদ্দিন, এমটি অপারেটর মহসিন আলী, মিজানুর রহমান, ফারুক হোসেন, নজরুল ইসলাম, ফিরোজ আলম, জাহাঙ্গীর আলম, মো. মাসুদ, মো. মাহবুব আলী, এনামুল হক, মাহফুজুল আলম, ট্রাফিক হেলপার আল আমিন, আ. মালেক, আলমগীর হোসেন, গাড়িচালক আব্দুল্লাহ শেখ, সাজ্জাদুল ইসলাম, এমএলএসএস তাপস কুমার মল্ল, জাহিদ হাসান, হারুন অর রশিদ, সমাজু ওরফে সোবাহান, জাকির হোসেন, বিএফসিসি অপারেটর সুলতান হোসেন, মুরাদ শেখ ওরফে মোস্তাফিজুর রহমান, বাংলাদেশ বেতারের গাড়িচালক ফারুক হোসেন, জুয়েল মিয়া, রাজিব মোল্লা, অফিস সহায়ক আওলাদ হোসেন ও হেলপার জাবেদ হোসেন। এদের মধ্যে তাইজ, জুয়েল ও রাজিব পলাতক রয়েছেন। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">মামলার অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, ২০২২ সালের ১৯ অক্টোবর আনোয়ারসহ নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র প্রণয়ন কমিটির চার সদস্য বিমানের জিএসই পদসহ অন্য পদের লিখিত পরীক্ষার প্রশ্নপত্র তৈরির কাজ শুরু করেন। ওই দিন বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস ট্রেনিং সেন্টারের প্রিন্সিপাল নজমুল হুদা ও ইঞ্জিনিয়ার কায়সার জামান নিজেদের অংশের প্রশ্নপত্র পেনড্রাইভে নিয়ে আসেন। তার কিছু সময় পরে আনোয়ার জিএমের রুমে আসেন। তারা প্রশ্নপত্র সেট করার পর মেজর তাইজ ইবনে আনোয়ারকে এর ভুলত্রুটি সংশোধনের জন্য দেখতে বলেন। তখন আনোয়ার বলেন, ল্যাপটপের স্ক্রিনে দেখতে সমস্যা হচ্ছে বলে প্রিন্ট কপি দেন। তাঁকে প্রিন্ট কপি দেওয়া হলে তিনি ২০-২৫ মিনিট ধরে সোফায় বসে চেকব্যাক করেন। প্রশ্নপত্র চেকব্যাকের সময় মেজর আনোয়ার গোপনে মোবাইল ফোনে প্রশ্নটির ছবি তুলে নেন। পরে তিনি প্রশ্নের প্রিন্টকপি আসামি গাড়িচালক মাসুদ এবং জাহাঙ্গীর আলমকে অর্থের বিনিময়ে সরবরাহ করেন। আসামি জাহাঙ্গীর ও মাসুদ অর্থের বিনিময়ে অন্য আসামিদের কাছে অর্থের বিনিময়ে নিয়োগপত্রের প্রশ্নপত্র বিক্রি করেন। মেজর আনোয়ার যে প্রশ্নপত্র ফাঁস করেন সেটির কপি জাহাঙ্গীর আলম, হারুন অর রশিদ, মাহফুজুল আলম ও আওলাদ হোসেনের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়। এ ছাড়া প্রশ্নটির ছবি আসামি জাহাঙ্গীর, মাসুদ, হারুন, এনামুল, মাহফুজুল, জাহিদ, জাবেদেরও মোবাইল ফোনে পাওয়া যায়। এ ছাড়া ২০২২ সালের ২০ অক্টোবর সকালে বিমানের প্রধান কার্যালয়ে জুনিয়র অপারেটর (জিএসই) ক্যাজুয়াল পদের প্রশ্নপত্র ফটোকপির সময় এর ছবি তুলে নেন এমএলএসএস জাহিদ হাসান। পরে তা আওয়াদ ও সমাজুকে সরবরাহ করেন।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বিমানবন্দর থানার সাধারণ নিবন্ধন শাখার কর্মকর্তা উপপরিদর্শক মোজাফফর হোসেন বলেন, এ মামলায় মেজর তাইজ ইবনে আনোয়ারসহ তিনজন পলাতক থাকায় তাঁদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারিসহ ক্রোকি পরোয়ানা জারি রয়েছে</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:Vrinda">৷</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">পরোয়ানার বিষয়ে ফরিদপুরের কোতয়ালি থানার ওসি মো. আসাদুজ্জামানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি কোনো তথ্য দিতে পারেননি। তবে পরে তথ্য দিতে চাওয়ায় একাধিকবার কল দিলেও তাঁকে পাওয়া যায়নি। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">পত্রিকার বিজ্ঞপ্তির বিষয়ে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের নাজির রেজোয়ান খন্দকার বলেন, আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী গত ২৯ আগস্ট এ মামলার পলাতক আসামিদের হাজিরে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়েছে।</span></span></span></span></p>