<p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">মালয়েশিয়া ও সিঙ্গাপুরে প্রথম নিপাহ ভাইরাস শনাক্ত হলেও আক্রান্তের সংখ্যায় শীর্ষে রয়েছে বাংলাদেশ। ২০০১ সাল থেকে এ পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছে ৩৪৩ জন। এর মধ্যে চলতি বছরই আক্রান্ত হয়েছে পাঁচজন, যাদের সবাই মারা গেছে। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">তবে প্রথম আক্রান্ত হওয়া দুই দেশ মিলিয়ে আক্রান্তের সংখ্যা ২৭৬ জন। এরপর ভারতে আক্রান্ত হয়েছে ১০৪ জন আর ফিলিপাইনে ১৫ জন। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল ১১টায় সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইডিসিআর) অডিটরিয়ামে </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">নিপাহ ভাইরাসের বিস্তার ও ঝুঁকি বিষয়ক মতবিনিময়সভায়</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"> এই তথ্য জানানো হয়।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">সভায় বিশেষজ্ঞরা জানান, দেশে নিপাহ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু ঘটলেও এ নিয়ে সচেতনতা কম। খেজুরের রস একেবারে না খাওয়াটাই যেখানে বাঁচার উপায়, সেখানে রীতিমতো উৎসব করে রস খাওয়ার আয়োজন করছে নানা প্রতিষ্ঠান। আর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার-প্রচারণা তো আছেই। একে নিপাহ ভাইরাস ছড়ানোর একটি বিপদ হিসেবে দেখছেন তারা। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">মতবিনিময়সভায় দেশে নিপাহ ভাইরাসের সার্বিক পরিস্থিতি তুলে ধরেন সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইইডিসিআর) পরিচালক অধ্যাপক ডা. তাহমিনা শিরীন।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">তিনি বলেন, ২০০১ সাল থেকে এ পর্যন্ত বাংলাদেশে ৩৪৩ জন নিপাহ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে। এর মধ্যে ২৫৫ জনের মৃত্যু হয়েছে, যা মোট আক্রান্তের ৭১ শতাংশ। ৮৮ জন্য বেঁচে থাকলেও তারা বিভিন্ন শারীরিক জটিলতায় ভুগছে। আক্রান্তদের মধ্যে পুরুষ ৬২ শতাংশ এবং নারী ৩৮ শতাংশ।  </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"> </p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><strong><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">আক্রান্তের ৪১ শতাংশ শিশু-কিশোর</span></span></strong></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">ডা. তাহমিনা শিরীন জানান, শিশু-কিশোরদের মধ্যে নিপাহ ভাইরাসে আক্রান্ত বেশি, যা মোট আক্রান্তের ৪১.৩৯ শতাংশ, যাদের বয়স ১৮ বছরের নিচে। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">০ থেকে পাঁচ বছর বয়সী আক্রান্ত ৩৩ জন, ছয় থেকে ১৭ বছরের ১০৯ জন, ১৮ থেকে ৩০ বছরের ৭৯ জন, ৩১ থেকে ৪০ বছরের ৬০ জন, ৪১ থেকে ৫০ বছরের ৩৪ জন, ৫১ থেকে ৬০ বছরের ২০ জন এবং ষাটোর্ধ্ব আটজন। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">তিনি আরো বলেন, ১৯৯৮-৯৯ সালে মালয়েশিয়া থেকে নিপাহ ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ে</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:Vrinda">৷</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"> পরে সিঙ্গাপুরে এটি দেখা দেয়। ২০১৪ সালে ঘোড়া থেকে মানুষে ছড়ায়। বাংলাদেশ ও ভারতে ২০০১ সাল থেকে ভাইরাসটির প্রকোপ দেখা দেয়। খেজুরের রসের মাধ্যমে এই ভাইরাস ছড়ায়। এ ছাড়া মায়ের বুকের দুধ পানে শিশু নিপাহ ভাইরাসে আক্রান্ত হচ্ছে। আবার মানুষ থেকে মানুষের মধ্যেও ছড়াচ্ছে। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">দেশের ৩৪ জেলায় নিপাহ ভাইরাস ছড়িয়ে পড়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ১২টি টার্শিয়ারি হাসপাতালে নিপাহ ভাইরাসে আক্রান্তদের পর্যবেক্ষণকেন্দ্র রয়েছে।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">এ সময় ভাইরাসটিতে আক্রান্ত রোগীদের প্রাথমিক লক্ষণ হিসেবে বিশেষজ্ঞরা জানান জ্বর হওয়ার ব্যাপকতা (১০০ শতাংশ)। জ্বরের তাপমাত্রা থাকবে ১০১.৩ ডিগ্রি ফারেনহাইট। জ্বরে আক্রান্ত ব্যক্তির খেজুরের রস খাওয়ার ইতিহাস থাকলে সে নিপাহ ভাইরাসে সংক্রমিত হয়েছে বলে ধরে নিতে হবে।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">এ ছাড়া ৯০ শতাংশ ক্ষেত্রে লালা বৃদ্ধি, ৮০ শতাংশ ক্ষেত্রে অজ্ঞানতা, ৭৫ শতাংশের দুর্বলতা, ৭০ শতাংশের মাথা ব্যথা, ৬০ শতাংশের শ্বাসকষ্ট, ৫৫ শতাংশের বমি, ৫০ শতাংশের কাশি, তন্দ্রাভাব ও খিঁচুনির সমস্যা থাকে। এ ছাড়া ব্যক্তিত্বের পরিবর্তন হওয়া, পেশি ব্যথা, বিরক্তি, ডায়রিয়া, জয়েন্টে ব্যথা, শক্ত ঘাড় ইতাদি লক্ষণ দেখা দেয়। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">ডা. তাহমিনা শিরীন বলেন, খেজুরের রস খাওয়ার আট দিনের মধ্যে নিপাহ ভাইরাসের লক্ষণ দেখা দিতে পারে। আক্রান্তদের নিউরোলজিক্যাল সমস্যা দেখা দেয়।   দীর্ঘদিন এই সমস্যা থাকতে পারে।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">অনুষ্ঠানে বলা হয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ (ঢাবি) বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে রস উৎসব হচ্ছে। উৎসবে কাঁচা রসের ব্যাপারে মানুষ আকৃষ্ট হচ্ছে। এতে নিপাহ ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বাড়ছে, যা উদ্বেগের বিষয়।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">অনলাইনসহ বিভিন্ন মাধ্যমে খেজুরের রস বিক্রি, বিশেষ করে বিদেশে রপ্তানি করার ক্ষেত্রে সতর্ক হওয়ার আহ্বান জানান রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের সংক্রামক ব্যাধি বিভাগের সহযোগী বিজ্ঞানী ডা. সৈয়দ মইনুদ্দিন সাত্তার। তিনি বলেন, কাঁচা রস রপ্তানি করা হলে বিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হবে।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">এ সময় নিপাহ থেকে বাঁচতে খেজুরের রস খাওয়ার ব্যাপারে সাবধানতা অবলম্বনের পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, কাঁচা রস খাওয়া বন্ধে প্রয়োজনে প্রজ্ঞাপন দেওয়া যেতে পারে। পাশাপাশি এ ব্যাপারে সচেতনতা সৃষ্টিতে ইসলামসহ বিভিন্ন ধর্মীয় নেতাদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তিনি।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">ডা. সৈয়দ মইনুদ্দিন সাত্তার বলেন, ১৫ মিনিটের মধ্যে নিপাহ ভাইরাস শনাক্ত করা সম্ভব হবে। আগামী বছরের মধ্যে এই প্রযুক্তি দেশের স্বাস্থ্যসেবায় যুক্ত হবে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন আইইডিসিআরের এই বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"> </p>