<p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">রাজধানীতে পরিবহনে শৃঙ্খলা ফেরানোর চেষ্টা থাকলেও যোগফল কিছুতেই মেলাতে পারছেন না সংশ্লিষ্টরা। পরিবহনে শৃঙ্খলা ফেরাতে ঢাকা নগর পরিবহন নামে পরিচিত বাস রুট রেশনালাইজেশন উদ্যোগটির প্রথম চিন্তা করা হয় ২০০৪ সালে। কিন্তু কার্যকর নীতিমালা নির্ধারণ করতে না পারাতেই বারবার পিছিয়ে পড়তে হচ্ছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">জানা গেছে, ঢাকার বাসগুলোকে শৃঙ্খলায় আনতে সর্বপ্রথম ২০০৪ সালে ঢাকার জন্য করা ২০ বছরের পরিবহন পরিকল্পনায় </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বাস রুট রেশনালাইজেশন</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"> বা বাস রুট ফ্র্যাঞ্চাইজি চালুর পরামর্শ দেওয়া হয়। ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের তৎকালীন মেয়র ২০১৬ সালে এই বিষয়ে কাজ শুরু করেন। পরে ঢাকার শতাধিক বাস রুট বাদ দিয়ে শুধু পাঁচটি রুটে ভাগ করে পাঁচ রঙের বাস চালানোর পরিকল্পনা নেন। পরবর্তী সময়ে ২০১৮ সালে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়রকে সভাপতি করে বাস রুট রেশনালাইজেশন কমিটি করা হয়। আর ওই বাস রুট রেশনালাইজেশন বাস্তবায়নের লক্ষ্যে প্রাথমিকভাবে ৪২টি রুটের ২২টি কম্পানির অধীনে ৯টি ভিন্ন ভিন্ন রঙের বাস চালানোর প্রস্তাব দেয় ডিটিসিএ।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><img alt="নীতিমালায় আটকে সম্ভাবনার পথ" height="427" src="https://asset.kalerkantho.com/public/news_images/share/photo/shares/1.Print/2024/11. january/04-01-2025/77788888.jpg" style="float:left" width="346" />পরবর্তী সময়ে ২০২১ সালের ২৬ ডিসেম্বর ৫০টি বাস নিয়ে ঘাটার চর-কাঁচপুর রুটে মতিঝিল ও সাইনবোর্ড হয়ে ট্রায়াল রান শুরু করা হয়। প্রাথমিকভাবে প্রকল্পটি সফল হওয়ার সম্ভাবনা জাগালেও বেসরকারি অপারেটরদের সক্রিয় অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে না পারায় উদ্যোগটি হোঁচট খায়।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">মূল বাধা ছিল একই রুটে অনুমোদনবিহীন অনেক বাস চলাচল। ধীরে ধীরে অনুমোদনবিহীন বাসের অবাধ চলাচলে নগর পরিবহনের বাসে যাত্রী কমতে থাকে। একটা সময় ব্যবস্থাপনায় সমস্যা ও আর্থিক সংকটের কারণে চালক ও সহকারীদের বেতন দেওয়ার ক্ষেত্রে বিপাকে পড়েন কর্তৃপক্ষ। আবার কিছু পরিবহন মালিক নিজের স্বার্থে এ উদ্যোগের বিরোধিতা করেন।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষের (ডিটিসিএ) নির্বাহী পরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) নীলিমা আখতার কালের কণ্ঠকে বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">সড়কের শৃঙ্খলা ফেরানোর সব সময় চেষ্টা ছিল। কী কারণে সফলতা আসেনি সেটা সবার জানা। এখন সময় বদলেছে, আমরা বিষয়টি নিয়ে কাজ করছি। সবার পরামর্শক্রমে যা করলে নগর পরিবহনে শৃঙ্খলা আসবে, সেটি করার পথে রয়েছি আমরা।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বাস রুট রেশনালাইজেশন প্রকল্পের পরিচালক ধ্রুব আলম কালের কণ্ঠকে বলেন, নীতিমালা আগে থেকেই ছিল। তিনি বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">আমরা নতুন করে কাজ শুরু করেছি। আগে বাস মালিকরা আগ্রহী না হলেও এখন আগ্রহ দেখাচ্ছেন। যাঁরা শর্ত পূরণ করতে পারবেন তাঁরা থাকবেন। এ ছাড়া ঢাকায় বিদ্যমান বৈধ-অবৈধ মিলিয়ে ৩৮৮টি রুটকে সমন্বয় করে ৪০ থেকে ৪৫টি রুটে পুনর্বিন্যাস করা হচ্ছে। এই রুটগুলোয় গণপরিবহনের তথ্য বিশ্লেষণ করা হচ্ছে। কয়েক মাস সময় লাগবে।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">এসব বিষয়ে বাস মালিক সমিতির আহ্বায়ক সাইফুল আলম কালের কণ্ঠকে বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">আমরা চাই একটি সঠিক নীতিমালার আলোকে রাজধানীর গণপরিবহন ব্যবস্থার পরিবর্তন ঘটুক। শুধু মুখে মুখে পরিকল্পনা করে নীতিমালা ছাড়া রোড চালু করে লাভ হবে না।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">নগরপরিকল্পনাবিদদের সংগঠন বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্লানার্সের (বিআইপি) সাধারণ সম্পাদক শেখ মুহম্মদ মেহেদী আহসান কালের কণ্ঠকে বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">নীতিমালা না থাকলে বা অসম্পূর্ণ নীতিমালা থাকলে বাস্তবায়ন কঠিন হয়ে পড়ে। তবে এটিই একমাত্র কারণ নয়। নীতিমালার পাশাপাশি রাজনৈতিক ইচ্ছাশক্তি, সামাজিক প্রতিবাদ, আর্থিক ব্যয়, প্রযুক্তিগত সীমাবদ্ধতা এবং দুর্নীতিও এর জন্য দায়ী।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><strong><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">ফেব্রুয়ারি থেকে ৯ রুটে কম্পানিভিত্তিক বাস চালুর ঘোষণা</span></span></strong></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">সম্প্রতি সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান পরিবহন মালিকদের জানিয়েছেন, আগামী ২৫ ফেব্রুয়ারি থেকে বাস রুট রেশনালাইজেশনের আওতায় ৯টি রুটে পরীক্ষামূলকভাবে কম্পানিভিত্তিক বাস পরিচালনা শুরু হবে। আগামী মে মাসের মধ্যে ২০ বছরের পুরনো বাস ঢাকা থেকে তুলে দিতে হবে। এ ক্ষেত্রে কেউ ব্যাংকঋণ পেতে আগ্রহী হলে সরকার ব্যবস্থা করবে। এ ছাড়া আগামী এক মাসের মধ্যে সেবায় উন্নতি করতে না পারলে বিআরটিএ চেয়ারম্যানসহ সব স্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">গত ১১ নভেম্বর বাস রুট রেশনালাইজেশন কমিটির ২৯তম সভা শেষে ডিএসসিসি প্রশাসক ও কমিটির সভাপতি জানান, বাধ্যতামূলকভাবে ঢাকার সব বাস কম্পানি বিলুপ্ত করে একটি কম্পানির আওতায় চলতে হবে। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">সূত্র জানায়, শহরের বাইরের সঙ্গে সংযোগকারী পরিবহনের নাম হবে শহরতলী পরিবহন। ৩৪টি রুট নগরের ও আটটি রুট শহরতলীর। কম্পানির নামে বাস রেজিস্ট্রেশন করতে হবে, ব্যক্তি নামে আর কোনো বাসের রেজিস্ট্রেশন ও রুট পারমিট দেওয়া হবে না। কাউন্টার ও টিকিট ব্যতীত কোনো বাস চলবে না। টিকিটের সঙ্গে পরবর্তী সময়ে র‌্যাপিড পাস ব্যবহারের সুযোগ রাখা হবে। নতুন করে বাস মেরামত করা হবে। বাসগুলোতে ধাপে ধাপে স্বয়ংক্রিয় দরজা লাগানো হবে, আসনবিন্যাস করা হবে এবং সিঁড়ির ধাপ বাড়বে। এ ছাড়া ক্যামেরা বসবে, ড্যাশক্যাম থাকবে। স্টপেজেও ক্যামেরা রাখা হবে। ড্রাইভার ও হেলপার নিয়োগ হবে কম্পানি থেকে, তারা ভাড়া আদায় করবে না।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"> </p>