<p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">মূল্য সংযোজন কর (মূসক) বা ভ্যাট বাড়িয়ে সরকারের রাজস্ব আহরণের পদ্ধতি সঠিক হতে পারে না। এটা সেই পুরনো আমলাতান্ত্রিক পদ্ধতি। একই সঙ্গে সরাসরি জনগণের কাছ থেকে বা প্রত্যক্ষ কর আদায় না বাড়িয়ে বিভিন্ন পণ্যের ওপর ভ্যাট বাড়িয়ে পরোক্ষ কর আদায়ের সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে, যা নৈতিকভাবে অন্যায় বলে মনে করেন বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ও দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি বিষয়ক শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটির প্রধান ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য। গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় কালের কণ্ঠের সঙ্গে এক আলাপে তিনি এই মতামত দেন।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">চলতি অর্থবছর (২০২৪-২৫) শেষ হওয়ার আগেই ৬৫ পণ্যের ওপর ভ্যাট বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার, যার মধ্যে রয়েছে ওষুধ, গুঁড়া দুধ, বিস্কুট, জুস, ফল, সাবান, মিষ্টি, এলপি গ্যাস, আচার, টমেটো কেচাপ বা সস, সিগারেট, টিস্যু পেপার, ডিটারজেন্ট পাউডার, স্যান্ডেল, বিমানভাড়া, হোটেল-রেস্তোরাঁ, যা পরোক্ষ কর হিসেবে বিবেচিত। অর্থাৎ এসব কর দেশের মানুষ সরাসরি দেয় না। পণ্য বা সেবা কিনলে তখন তার সঙ্গে কর যুক্ত হয়। এই পদ্ধতিতে কর না বাড়ানোর কথা বলেছেন দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য। তিনি জোর দিয়েছেন, বর্তমান করকাঠামো সংস্কার করে প্রত্যক্ষ কর বাড়ানোতে।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">দেবপ্রিয় কালের কণ্ঠকে বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">সরকারের করকাঠামো সংস্কার দরকার। সেখানে প্রত্যক্ষ করের ওপর জোর দেওয়া দরকার। যারা কর দেওয়ার উপযুক্ত, যাদের কর দেওয়ার কথা, তাদের সংখ্যা কিভাবে বাড়ানো যায়, সেটার লক্ষ্যমাত্রা না দিয়ে পরোক্ষ করের মাধ্যমে রাজস্ব আয়ের সহজ রাস্তায় গেল। এটা তো পুরনো আমলাতান্ত্রিক পদ্ধতি। এটা অন্তর্বর্তী সরকারের কর আহরণ পদ্ধতি হতে পারে না। প্রত্যক্ষ কর বাড়ানোর জন্যও আইএমএফের চাপ আছে। কিন্তু মূল্য সংযোজন কর (মূসক) বা ভ্যাট বাড়িয়ে কর আহরণের জন্য তথাকথিত সহজ পথ বেছে নিয়েছেন তাঁরা। বর্তমানের করকাঠামো সংস্কার না করে, প্রত্যক্ষ করের ভূমিকা না বাড়িয়ে, পরোক্ষ কর দিয়ে সামনে আসা নৈতিকভাবে অন্যায়।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">তিনি বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">গণ-অভ্যুত্থান-পরবর্তী অন্তর্বর্তী সরকার অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে যে ধরনের র‌্যাডিক্যাল পরিবর্তনের কথা বলেছিল, আমরা কার্যত সেটা পাচ্ছি না এখন। নতুনভাবে ব্যবসায়ী, বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে নিয়ে যে একটি সংস্কারের বাজেট নিয়ে আসবে, সেটার লক্ষণ এখনো দেখছি না। অথচ আমলারা তাঁদের পদ্ধতিতে পরোক্ষ কর বাড়ানোয় লেগে গেলেন। অগ্রাধিকার হওয়া উচিত ছিল প্রত্যক্ষ কর কিভাবে বাড়বে। যারা টিআইএন নিয়েছে, কিন্তু কর দেয় না বা যারা কর দেওয়ার উপযুক্ত, কিন্তু টিআইএন নেয়নি, সেই মানুষগুলো গেল কোথায়? তাদের খুঁজে বের করার চেষ্টা না করে পরোক্ষ কর বাড়ানো তো খুব সহজ ব্যাপার। একইভাবে অন্যদিকে শুল্ক কমিয়ে দিল। কলমের খোঁচায় যে কাজ করা যায়, সেটা কোনো বড় সংস্কার নয়।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">অন্যদিকে অর্থবছরের মাঝে এসে কোনো স্টেকহোল্ডারের সঙ্গে আলোচনা না করে ভ্যাট বাড়ানোয় ক্ষুব্ধ হয়েছেন সংশ্লিষ্ট খাতের ব্যবসায়ীরা। বাংলাদেশ রেস্তোরাঁ মালিক সমিতির মহাসচিব ইমরান হাসান কালের কণ্ঠকে বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">এভাবে ভ্যাট বাড়ানো হলে স্মরণকালের চরম জুলুম করা হবে। বাংলাদেশে এখন ব্যবসা করে টিকে থাকাই কষ্ট। এই মুহূর্তে যেখানে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে নেই, সাধারণ মানুষের জীবনে নাভিশ্বাস, সেখানে ৫ শতাংশ ভ্যাটও আমাদের জন্য বেশি। কিন্তু করা হচ্ছে ১৫ শতাংশ! এসব পরামর্শ আসে আমলাদের মাধ্যমে। এর আগেও আমলারা ছোট ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে কাজ করেছেন। তাঁরা করপোরেটদের হাতে ব্যবসা তুলে দিতে চান। এতে ছোট উদ্যোক্তারা ঝরে পড়বে। আর আমাদের মতো ছোট উদ্যোক্তারা, যারা জীবন যুদ্ধে টিকে আছি, তাদের নিঃশেষ করবে।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">অন্যদিকে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ গত বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">যেসব পণ্যের ওপর ভ্যাট বাড়ানো হয়েছে, তাতে মনে হয় না যে মানুষের কষ্ট হবে। জিনিসপত্রের দামের ওপরে তেমন প্রভাব পড়বে না। কারণ অত্যাবশ্যকীয় জিনিসপত্রের ওপর সব ভ্যাট শূন্য করে দিয়েছি। মূল্যস্ফীতির মূল ইন্ডিকেটর হচ্ছে চাল, ডাল ইত্যাদি। যেসব জিনিসের দাম বাড়িয়েছি সেগুলো আমাদের দৈনন্দিন জীবনে খুবই ইনসিগনিফিকেন্ট।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"> </p>