<p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার চরপোড়াগাছা ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য (মেম্বার) আবুল কালাম ভুলুয়া নদীতীরের মাটি কেটে ভাটায় ইট তৈরি করছেন। এরই মধ্যে তিনি নদীর কয়েক একর এলাকা থেকে মাটি নিয়ে গেছেন। কালের বিবর্তনে শুকিয়ে যাওয়া এই নদী এখন ইটভাটা মালিক ও প্রভাবশালীদের দখলে। কেউ কেউ নদীতীর দখল করে স্থাপনা নির্মাণ করছেন। নদী বাঁচাতে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের কোনো উদ্যোগ নেই বলে অভিযোগ স্থানীয় সচেতনমহলের। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, চরপোড়াগাছা ইউনিয়ন পরিষদের ১ নম্বর ওয়ার্ডের চরকলাকোপা গ্রামে ভুলুয়া নদীতীর ঘেঁষেই কালামের ইটভাটা ফাতেমা ব্রিকস। তাঁর ইটভাটায় বড় বড় মাটির স্তূপ দেখা গেছে। এ স্তূপগুলোর কারণে ভাটার সামনে দাঁড়ালে নদীর চিহ্নটুকু দেখা যায় না। নদীর পারেই সদ্য কাটা মাটির স্তূপ পড়ে রয়েছে। মাটির জন্য নদীর কূলেই আরো বড় একটি পুকুর কাটা হচ্ছে। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">এদিকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এস এম শান্তুনু চৌধুরী জানিয়েছেন, ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে হাতেনাতে মাটি কাটার সময় ধরতে পারলেই তাঁরা ব্যবস্থা নিতে পারবেন। এ ছাড়া কোনো ব্যবস্থা নেওয়ার সুযোগ নেই। তবে কেউ যদি লিখিত অভিযোগ করেন, তাহলে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">অন্যদিকে আবুল কালাম ইউপি সদস্য ও স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা। তিনি উপজেলা আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ নেতাদের আশ্রয়ে-প্রশ্রয়ে রয়েছেন। তাঁর ইটভাটায় আশপাশের অনেক লোকই কাজ করেন। এতে স্থানীয়রা ভয়ে তাঁর বিরুদ্ধে কোনো কথা বলতে রাজি হচ্ছে না। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">অভিযোগ রয়েছে, কালাম উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুল ওয়াহেদ ও সাংগঠনিক সম্পাদক রাহিদ হোসেনের মদদপুষ্ট। রাহিদ আবার উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান। তাঁদের ওপর ভর করেই কালাম ভুলুয়া নদী থেকে মাটি কেটে কোটি কোটি টাকা আয় করছেন। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তিন বৃদ্ধ লোক জানান, কালাম এখানে প্রভাবশালী লোক। তাঁর বিরুদ্ধে কথা বলা যায় না। উপজেলা আওয়ামী লীগের লোকজন তাঁকে মদদ দিয়ে আসছেন। তাঁর বিরুদ্ধে কথা বললেই বিপদে পড়তে হয়। এ জন্য তাঁর বিরুদ্ধে কেউ কথা বলতে পারছে না। ভুলুয়া খনন প্রয়োজন ঠিকই, কিন্তু এই অজুহাতে মাটি কেটে নিয়ে কালাম টাকার পাহাড় বানাবেন</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">—</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">এটা ঠিক নয়। তাঁর বিরুদ্ধে প্রশাসনিকভাবে ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">ইউপি সদস্য ও ইটভাটা মালিক আবুল কালাম বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">পানি উন্নয়ন বোর্ড নদী খনন করবে বলে করছে না। এদিকে কৃষকরা পানিসংকটে চাষাবাদ করতে পারেন না। এ জন্য আমি ভুলুয়া নদীর মাটি কেটে ইটভাটায় ব্যবহার করছি। কৃষকরাও পানি পাচ্ছেন।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span> </span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান রাহিদ হোসেন বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">জনপ্রতিনিধি হিসেবে সবার সঙ্গেই আমার সম্পর্ক থাকবে</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">—</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু ভুলুয়ার মাটি লুটে কালামকে আমি মদদ দিচ্ছি</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">—</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">এটা ঠিক নয়। একটি চক্র আমাকে রাজনৈতিকভাবে হেয়প্রতিপন্ন করার উদ্দেশ্যেই এ গুজব রটাচ্ছে।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span> </span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক আবদুল ওয়াহেদ বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">একসময় শুনেছি কালাম ভুলুয়ার মাটি কেটে ইট তৈরি করছেন। তাঁকে ভ্রাম্যমাণ আদালত জরিমানাও করেছেন একাধিকবার। এর পরও ভুলুয়ার মাটি কেটে ইটভাটায় ব্যবহার করে কালাম অন্যায় করেছেন।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span> </span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">রামগতি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এস এম শান্তুনু চৌধুরী বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">কালাম ভুলুয়া নদীর মাটি কেটে ইটভাটায় নিয়ে যাচ্ছেন। ঘটনাটি স্থানীয়ভাবে শুনে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে হাতেনাতে ধরে এক-দুই লাখ টাকা জরিমানাও করা হয়েছে। হাতেনাতে না ধরা ছাড়া ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা যায় না। এ ছাড়া মাটি কেটে নেওয়ার ব্যাপারে কেউ লিখিত অভিযোগ দিলে তাঁদের বিরুদ্ধে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ ঘটনায় উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান জড়িত আছেন কি না তা আমার জানা নেই। এ ব্যাপারে কেউ এখন পর্যন্ত আমার কাছে কোনো অভিযোগ করেননি।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span></span></span></p>