দাবি আদায়ে গতকাল রবিবারও রাজধানীর নীলক্ষেত মোড় অবরোধ করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) অধিভুক্ত সরকারি সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা। দুপুর ১২টা থেকে সন্ধ্যা প্রায় ৭টা পর্যন্ত এ অবরোধ কর্মসূচি চলে।
আন্দোলন চলাকালে হেক্সিসল পান করে দুই শিক্ষার্থী আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। এ ছাড়া গরমে অসুস্থ হয়ে পড়েন আরো ছয়জন শিক্ষার্থী।
তাঁদের ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়। সন্ধ্যা ৭টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন শিক্ষার্থীদের মৌখিকভাবে দাবি আদায়ের আশ্বাস দিলে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা অবরোধ তুলে নেন।
সিজিপিএ শর্ত শিথিল করে সর্বোচ্চ তিন কোর্স পর্যন্ত মানোন্নয়ন দিয়ে পরবর্তী বর্ষে প্রমোশন দেওয়ার দাবিতে বেশ কিছুদিন ধরে মিছিল, সমাবেশ, অবস্থান কর্মসূচি ও সড়ক অবরোধ পালন করছেন সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা।
আন্দোলন স্থগিত করে ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থী শাহরিয়ার মাহমুদ অপু বলেন, ‘সকাল থেকে আন্দোলনে আমাদের ১৩ জন শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি আছে।
আমাদের আন্দোলনে সকাল থেকেই কোনো কর্তৃপক্ষ আসেনি। তবে শেষবেলায় তারা আমাদের নোটিশ দিয়েছে। নোটিশে সাত কলেজের অনার্স তৃতীয় বর্ষের পরীক্ষার সময়সূচি স্থগিত করা হয়েছে। পরীক্ষার ও ফরম পূরণের পরিবর্তিত সময়সূচি পরে জানানো হবে।’
কবি নজরুল সরকারি কলেজের ২০১৮-১৯ সেশনের শিক্ষার্থী মুন্না ইসলাম বলেন, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আমাদের বলছে, পরবর্তী বর্ষের পরীক্ষার প্রস্তুতি নিতে। আমাদের দাবি আদায়ের মৌখিক আশ্বাস দিয়েছে তারা। মঙ্গলবার আমাদের দাবির বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানাবে। আমরা সেই আশ্বাসে আজকে (গতকাল) এখান থেকে সরে যাচ্ছি।’
যানজটে অচল সড়ক
এদিকে নীলক্ষেত মোড়ে শিক্ষার্থীদের অবস্থানের কারণে মিরপুর রোডে যান চলাচল স্থবির হয়ে পড়ে।
সায়েন্সল্যাব-আজিমপুর সড়ক ও নীলক্ষেত-পিলখানা রোডে যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকে। আজিমপুর থেকে কোনো বাস নিউ মার্কেটের দিকে যেতে পারেনি। ফলে সড়কের এই অংশটি ছিল একেবারে ফাঁকা। ভিন্নচিত্র ছিল উল্টো পথে। নীলক্ষেত মোড়ে এসে আজিমপুরমুখী সব গাড়ি আটকে যাওয়ায় এই পথে যানজট দীর্ঘ হয়েছে।
শিক্ষার্থীরা অসুস্থ
গতকাল আন্দোলন চলাকালে ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থী শাহরিয়ার মাহমুদ অপু (২৪) ও কবি নজরুল সরকারি কলেজের তাকিবুর রহমান বাপ্পি (২৫) হেক্সিসল পান করে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। তাঁদের দুজনকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগে ভর্তি করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা. মো. আলাউদ্দিন। তিনি বলেন, ‘অসুস্থরা কী খেয়েছেন তা জানা যায়নি, বলেওনি। তাই তাঁদের পাকস্থলী ওয়াশ না করে মেডিসিন বিভাগে পাঠানো হয়েছে।’
তাঁদের হাসপাতালে নিয়ে আসা এক শিক্ষার্থী জানিয়েছেন, দুই শিক্ষার্থী হেক্সিসল খেয়েছেন। তাঁদের মুখে গন্ধ পাওয়া গেছে। এ ছাড়া বাকি ছয়জনকে জরুরি বিভাগে অবজারভেশনে রেখে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
তাঁরা হচ্ছেন বেগম বদরুন্নেসা কলেজের সোনিয়া আক্তার (২৩), কবি নজরুল সরকারি কলেজের সাদেক বাপ্পি (২৪) ও মরিয়ম (২২); সরকারি তিতুমীর কলেজের মাহাবুব প্লাবন (২৫), সরকারি বাঙলা কলেজের রাজিব (২৩) ও ঢাকা কলেজের ইয়াসিন আলী সাগর (২৩)।
ঢামেক পুলিশ ক্যাম্পের পুলিশ পরিদর্শক বাচ্চু মিয়া বলেন, অসুস্থ হয়ে আসা শিক্ষার্থীরা জরুরি বিভাগে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন।